চলতি বছরের হজ কার্যক্রমে অংশ নিতে সৌদি আরবে পৌঁছেছেন ৫১ হাজার ২৭৮ জন বাংলাদেশি হজযাত্রী। বাংলাদেশ থেকে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এখন পর্যন্ত ১৩০টি ফ্লাইটে এসব যাত্রী সৌদি আরবে পৌঁছেছেন। হজযাত্রী পরিবহনে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স পরিচালনা করেছে ৬৫টি, সৌদি এয়ারলাইন্স ৪৪টি এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইন্স ২১টি ফ্লাইট।
সরকারি ব্যবস্থাপনায় সৌদি গেছেন ৪ হাজার ৫৮৩ জন, আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪৬ হাজার ৬৯৫ জন হজযাত্রী। হজ ভিসা ইস্যু হয়েছে ৮৬ হাজার ৮২৫টি।
এদিকে হজ পালন করতে গিয়ে এখন পর্যন্ত ৯ বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৮ জন পুরুষ ও একজন নারী। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন জামালপুর, রাজবাড়ী, কিশোরগঞ্জ, পঞ্চগড়, ঢাকা, নীলফামারী, চট্টগ্রাম, গাজীপুর ও চাঁদপুর জেলার বাসিন্দারা।
হজ কার্যক্রম শুরু হয়েছে ২৯ এপ্রিল বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের প্রথম ডেডিকেটেড ফ্লাইট দিয়ে, যেখানে ৩৯৮ জন যাত্রী সৌদি যান। হজ ফ্লাইট চলবে ৩১ মে পর্যন্ত।
চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৫ হাজার ২০০ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৮১ হাজার ৯০০ জন হজ পালনে সৌদি যাবেন। হজ এজেন্সির সংখ্যা ৭০টি। সৌদি আরবে চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে আগামী ৫ জুন হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে।
ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে ১০ জুন থেকে এবং শেষ ফ্লাইট যাবে ১০ জুলাই।
ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে সরকারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ "পোস্ট ই-সেন্টার" প্রকল্পের আওতায় বগুড়ার সান্তাহার ডিজিটাল পোস্ট অফিসে বর্তমানে স্বল্পমেয়াদি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালু রয়েছে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হলো শহর ও গ্রামের মধ্যে প্রযুক্তিগত বৈষম্য হ্রাস করে সমানভাবে ডিজিটাল সুবিধা পৌঁছে দেওয়া। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে গঠিত প্রতিটি পোস্ট ই-সেন্টার পরিচালনা করেন একজন নারী ও একজন পুরুষ উদ্যোক্তা, যারা তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ ও শিক্ষাগতভাবে যোগ্য।
সান্তাহার পোস্ট ই-সেন্টারে স্থানীয় জনগণের জন্য অত্যন্ত স্বল্প খরচে ৩ মাস ও ৬ মাস মেয়াদী বিভিন্ন আইসিটি বিষয়ক কোর্স চালু রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
* কম্পিউটার সফটওয়্যার অ্যাপ্লিকেশন
* গ্রাফিক্স ডিজাইন
* ভিডিও এডিটিং
* ডিজিটাল মার্কেটিং
এই প্রশিক্ষণ কোর্সগুলোর মাধ্যমে স্থানীয় তরুণ-তরুণীরা প্রযুক্তি জ্ঞান অর্জন করে আত্মকর্মসংস্থানে সক্ষম হচ্ছেন। প্রশিক্ষণ শেষে অংশগ্রহণকারীদেরকে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে সরকারি স্বীকৃত সনদ প্রদান করা হচ্ছে, যা দিয়ে তারা অনলাইনে ফ্রিল্যান্সিং, আউটসোর্সিং কিংবা সরকারি-বেসরকারি চাকরির ক্ষেত্রে সহায়তা পাচ্ছেন।
সান্তাহার ডিজিটাল পোস্ট অফিস কেবল প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নয়, এটি একটি পূর্ণাঙ্গ অনলাইন নাগরিক সেবা কেন্দ্র হিসেবেও কাজ করছে। যে কোনো নাগরিক সে— যেমন জন্মনিবন্ধন, পাসপোর্ট আবেদন, বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ, সরকারি আবেদনপত্র পূরণসহ নানা ধরণের সেবা অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে প্রদান করছে এ কেন্দ্রটি।
ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে সান্তাহার ডিজিটাল পোস্ট অফিস একটি যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করছে- যা প্রযুক্তিনির্ভর দক্ষতা ও কর্মসংস্থানের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে।
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার মাথাভাঙ্গা নদীবেষ্টিত জিরাট গ্রামে গৃহবধূদের মুখে এখন সাফল্যের হাসি। পরিবারের পাশে দাঁড়াতে তারা বেছে নিয়েছেন হাঁস পালনকে। আমেরিকান পিকিং জাতের হাঁস পালনের মাধ্যমে নিজেরা যেমন স্বাবলম্বী হচ্ছেন, তেমনি যোগাচ্ছেন পরিবারের অতিরিক্ত আয়, মিটাচ্ছেন আমিষের চাহিদাও।
এই পরিবর্তনের গল্প শুরু হয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ওয়েভ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে। পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)-এর অর্থায়নে দশজন গৃহবধূকে ৫০টি করে পিকিং হাঁসের বাচ্চা, প্রশিক্ষণ, খাবার, ভ্যাকসিন এবং ঘর তৈরির জন্য কিছু নগদ অর্থ প্রদান করে ওয়েভ। মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে সেই গৃহবধূরা এখন হাঁস বিক্রি করে লাভের মুখ দেখছেন।
স্থানীয় গৃহবধূ নাসরিন আক্তার বলেন, “ওয়েভ ফাউন্ডেশন থেকে ৫০টি হাঁসের বাচ্চা, কিছু টাকা আর খাবার পেয়েছি। দু’মাস ধরে পালন করছি। এখন প্রতিটি হাঁসের ওজন দু’ থেকে আড়াই কেজি। কেজি প্রতি ৩০০ টাকা দরে বিক্রি করলেও ২০-২৫ হাজার টাকা লাভ থাকবে। এই লাভ দিয়ে ব্যবসা বাড়ানোর ইচ্ছে রয়েছে।”
আরেক গৃহবধূ আফসানা বলেন, “প্রথমে ভয় লাগলেও প্রশিক্ষণ ও নিয়মিত ভ্যাকসিন পেয়ে হাঁসগুলো বড় হয়েছে। এখন বিক্রি করে লাভ হচ্ছে। ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে করতে চাই।”
রেহানা ও শিরিনা খাতুন জানান, তারা হাঁস পালনের কৌশল ভালোভাবে শিখে নিয়েছেন। নিয়মিত পালন করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন তারা। শিরিনা বলেন, “আমাদের এলাকার আরও নারীদেরও যদি হাঁসের বাচ্চা দেওয়া হয়, তবে সবাই ঘরে বসেই উপার্জন করতে পারবে।”
ওয়েভ ফাউন্ডেশনের প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আবু সুফিয়ান জানান, “ নদীবেষ্টিত এলাকায় হাঁস পালন খুবই লাভজনক। নদীতে হাঁস নামালে খাবারের খরচ কমে যায় এবং হাঁস সুস্থ থাকে। আমরা নিয়মিত ভ্যাকসিন ও মনিটরিং দিয়ে গৃহবধূদের সহায়তা করি।”
ছবি : ঢাকাপ্রকাশ
দামুড়হুদা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নীলিমা আক্তার হ্যাপি বলেন, “গৃহবধূরা আমাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখলে আরও প্রশিক্ষণ ও কারিগরি সহায়তা দেওয়া হবে। ওয়েভ ফাউন্ডেশন প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিয়েছে। এতে গ্রামের নারীরা ঘরে বসেই স্বপ্ন দেখার সাহস পাচ্ছে।”
ওয়েভ ফাউন্ডেশনের সিনিয়র সমন্বয়কারী কর্মকর্তা কামরুজ্জামান যুদ্ধ বলেন, “এই প্রকল্প আরও সম্প্রসারিত হবে। যারা সফল হয়েছে, তাদের আবার হাঁসের বাচ্চা দেওয়া হবে। প্রতি ক্লাস্টারে ২০ জন করে নারীকে দুটি প্রশিক্ষণ, হাঁসের খাবার, ভ্যাকসিন ও নগদ অর্থ দিয়ে স্বাবলম্বী করার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।”
প্রকল্পের মাধ্যমে নারীরা শুধু আর্থিকভাবে সাবলম্বী হচ্ছেন না, বরং আমিষের ঘাটতি পূরণেও ভূমিকা রাখছেন।
ওয়েভ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মহসীন আলী বলেন, “পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়নে ৪০ জন নারী খামারিকে পিকেএসএফ-এর সহায়তায় পেকিন হাঁসের বাচ্চা দেওয়া হয়েছে। মাত্র তিন মাসেই প্রতিটি হাঁস ৩-৪ কেজি ওজনের হয় এবং বাজারে এর কেজি প্রতি দাম ৩০০-৩৫০ টাকা। এতে করে ৩০-৩৫ হাজার টাকা লাভ হওয়া সম্ভব। অনেক নারী এরই মধ্যে সফল হয়ে উঠেছেন।”
এই সাফল্য এখন ছড়িয়ে পড়ছে আশপাশের গ্রামেও। হাঁস পালনের এই সাফল্যের গল্প দেখে অন্যরাও উৎসাহী হচ্ছেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত
নির্বাচনকে পরিকল্পিতভাবে পিছিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, “ফ্যাসিবাদমুক্ত আধুনিক বাংলাদেশ গঠনের পথে এখন এক কালো ছায়া নেমে এসেছে। জনগণকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে সুপরিকল্পিতভাবে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে।”
মঙ্গলবার (২০ মে) বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে কর্মসূচি প্রণয়নে দলের যৌথসভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, “সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে মুখোমুখি করা হচ্ছে, জাতিকে বিভাজনের রাজনীতিতে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। সরকারের ভেতরে অনুপ্রবেশ করিয়ে রাষ্ট্রকে ভিন্ন পথে নিতে চেষ্টা চলছে।”
এসময় দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় বিএনপিকে সজাগ থাকতে হবে এবং রুখে দাঁড়াতে হবে। কেউ যেন দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব হরণ করতে না পারে, সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।”
উল্লেখ্য, জিয়াউর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে ৮ দিনের কর্মসূচি শুরু হবে ২৫ মে থেকে। এর মধ্যে ২৭ ও ২৮ মে ঢাকায় হবে তারুণ্যের সমাবেশ। ২৯ মে বিকেল ৩টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। তবে ওই দুই দিন শাহাদাত বার্ষিকীর অন্য কোনো কর্মসূচি থাকবে না। আর ৩০ মে সকালে জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন নেতাকর্মীরা।