সামর্থ্য থাকার পরও কুরবানি না করলে কি গুনাহ হবে? কী বলছে ইসলাম

প্রতীকী ছবি। ছবি: এআই
ইসলামে কুরবানি শুধু একটি ধর্মীয় অনুশীলন নয়, বরং এটি তাকওয়া অর্জন ও আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায়। সামর্থ্যবান মুসলমানের জন্য কুরবানি ওয়াজিব (আবশ্যিক) হিসেবে গণ্য করা হয়। কুরআন ও হাদিসের আলোকে স্পষ্ট যে, প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থ-বিবেকসম্পন্ন কেউ যদি 'নিসাব' পরিমাণ সম্পদের মালিক হন, তাহলে তার ওপর কুরবানি করা ফরজ না হলেও ওয়াজিব বা অনিবার্য কর্তব্য।
নিসাব বলতে বোঝায়—সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ, সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপা অথবা এর সমপরিমাণ নগদ অর্থ বা সম্পদ।
পবিত্র কুরআনের হজ সূরার ৩৪ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে: “আমি প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্য কুরবানি নির্ধারণ করেছি, যাতে তারা আল্লাহর দেয়া চতুষ্পদ জন্তু জবেহ করার সময় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে...।”
আরেক আয়াতে (হজ: ৩৭) আল্লাহ বলেন: “আল্লাহর কাছে পৌঁছে না এগুলোর গোশত ও রক্ত, বরং তাঁর কাছে পৌঁছে তোমাদের তাকওয়া।”
এই আয়াতগুলো থেকে পরিষ্কার, কুরবানি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।
ইসলামি বক্তা ও গবেষক শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, অধিকাংশ ওলামায়ে কেরামদের মতে, যাদের সামর্থ্য রয়েছে কিন্তু তারা কুরবানি করেন না, তারা গুনাহগার হবেন। এটি একটি ওয়াজিব ইবাদত হিসেবে গণ্য হওয়ায় এর অবহেলা গুনাহর শামিল।
তবে কিছু আলেম কুরবানিকে সুন্নতে মুয়াক্কাদা (প্রবল সুন্নত) হিসেবে দেখেন। তাদের মতে, সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কুরবানি না করলে ওয়াজিব ত্যাগের গুনাহ না হলেও, সুন্নতে মুয়াক্কাদা অবহেলা করার গুনাহ হবে। অর্থাৎ, উভয় দিক থেকেই গুনাহ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-ও এ বিষয়ে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। হাদিসে এসেছে, "যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কুরবানি করে না, সে যেন আমাদের ঈদের মাঠের কাছেও না আসে।"
(ইবনু মাজাহ, হাদিস: ৩১২৩)
এ হাদিসের ভাষা থেকেই বোঝা যায়, কুরবানি না করা একটি গুরুতর অবহেলা।
সুতরাং, যাদের কুরবানি দেওয়ার সামর্থ্য আছে—তাদের উচিত এ ইবাদত যথাযথভাবে পালন করা। কারণ, এটি একদিকে যেমন আল্লাহর সন্তুষ্টির পথ, তেমনি অবহেলার ক্ষেত্রে রয়েছে কঠোর পরিণতির আশঙ্কা।
