শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-২২

বিষাদ বসুধা

আসিফ আহমেদ ঘুমাতে পারছেন না। তিনি কিছুতেই দুই চোখের পাতা এক করতে পারছে না। অফিসের চিন্তায় তার মাথা খারাপ অবস্থা। লোক ছাঁটাইয়ের চাপ তিনি আর নিতে পারছেন না। তার কেবলই মনে হয় কাজটা অমানবিক। এতোগুলো কর্মীকে বিদায় করে তিনি ঠ্যাং দুলিয়ে অফিস করবেন তা তার পক্ষে সম্ভব না।

অন্যের পেটে লাথি দেওয়া তার স্বভাব না। অমানবিক কাজ তাকে দিয়ে হবে না। তিনি মানুষকে চাকরি দিয়েছেন। কিন্তু কারো চাকরি খেয়েছেন তার কোনো নজির নেই। কেউ কোনো ভুল করলে, কিংবা ঠিকমতো অ্যাসাইনমেন্ট না করলে বকাবাজি করেন। রাগ করেন। কখনো কখনো কথা বলা বন্ধ রাখেন। কেউ বড় কোনো অন্যায় করলে তাকে শাস্তি হিসেবে বাধ্যতামূলক ছুটি কিংবা বড়জোর কয়েকদিনের বেতন কেটেছেন। সেটাও যে অহরহ ঘটেছে তা নয়। কেবলমাত্র নৈতিক স্খলন ছাড়া কাউকে চাকরিচ্যুত করেননি। অথচ সেই মানুষটাকেই ছাঁটাই করতে বলা হচ্ছে। কমপক্ষে একশ’ লোককে ছাঁটাই করতে হবে। তিনি নিজের অজান্তেই বলে ওঠেন, না না! এটা কী করে সম্ভব!

আসিফ আহমেদের অবস্থা দেখে তার স্ত্রী মুনমুন আহমেদ বললেন, কি হয়েছে আসিফ? ঘুম আসছে না? কেন, কি হয়েছে? তোমার তো এমন হয় না!
আসিফ শুকনো গলায় বললেন, অফিস নিয়ে খুব চিন্তায় আছি।
মুনমুন আহমেদ বিস্ময়ের সঙ্গে বললেন, কেন কী হয়েছে?
সংবাদ-কর্মী ছাঁটাইয়ের জন্য ব্যাপকভাবে চাপ দিচ্ছে।
এই সময় ছাঁটাই! এটা কেমন ধরনের কথা! এখন তো মানুষ মানুষের পাশে দাঁড়ায়! এ সময় কি কেউ চাকরিচ্যুত করে?
তাহলে বলো, এটা কি মানা যায়?
না না! তুমি এ কাজ কোরো না। যা হয় হবে। এটা করতে গেলে মানসিক যন্ত্রণায় ভুগবে। সেটা আরো বেশি খারাপ হবে।

আসিফ আহমেদ ধরা গলায় বললেন, সকালেই আমাকে তালিকা নিয়ে যেতে বলেছে। তালিকা দিতে হবে। আর ছাঁটাইয়ে রাজি না হলে পদত্যাগপত্র দিতে হবে। এ ছাড়া আর কি করব?
সেটাই ভালো। তুমি পদত্যাগ করো। শুধু শুধু মানসিক চাপ নেওয়ার কোনো দরকার নেই। মুনমুন আহমেদ বললেন।
ধন্যবাদ মুনমুন। তোমাকে অনেক ধন্যবাদ। আমি তোমার কাছ থেকে এটাই প্রত্যাশা করেছিলাম। তুমি চিন্তা করো, এই মানুষগুলো দশ বছর প্রতিষ্ঠানকে দিয়েছে। এখন একটা বিপদ এসেছে। প্রাকৃতিক বিপদ। এর জন্য কেউ দায়ী নয়। অথচ এর জন্য কর্মীদের বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়া হবে। এটা কী ধরনের আচরণ?
শোন, আমি তো তোমাকে চিনি। ছাঁটাই করে তুমি একদিনও অফিস করতে পারবে না। আর তোমার তো দীর্ঘ ক্যারিয়ার পড়ে আছে। তোমাকে চাকরি করেই যেতে হবে। সারাজীবন মানুষের কথা শুনতে হবে। সবাই বলবে, আপনি এতো এতো লোককে ছাঁটাই করেছেন নিজের চাকরি টেকাবার জন্য। আর যদি ছাঁটাই না করে নিজে পদত্যাগ করে চলে আসো তাহলে আর কেউ বদনাম রটাতে পারবে না।
ঠিক বলেছ। আমি নিজের জন্য আসলে কখনো ভাবিনি। সব সময় আমি কর্মীদের কথা ভেবেছি। তাদের সুযোগ-সুবিধা, পদোন্নতির কথা ভেবেছি। তুমি দেখ, বিগত আট বছরে আমার এক টাকাও বেতন বাড়েনি। অথচ পাঁচ বছর আগে একটা ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়ন করেছি। এরমধ্যে আরেকটি ওয়েজবোর্ড ঘোষণা করা হয়েছে। সেটা বাস্তবায়নের নামও নেইনি। অথচ কর্মী ছাঁটাইয়ের জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। এতোগুলো মানুষের অভিশাপ নিয়ে আমি অফিস করব!
বুঝতে পারছি। তুমি কোনো চিন্তা কোরো না। আমার চাকরি তো আছে! আশা করি অসুবিধা হবে না। তুমি এখন ঘুমাও।
ধন্যবাদ মুনমুন। এখন সত্যিই আমার ঘুম আসবে। আমি ঘুমাবো। নিশ্চিন্তে ঘুমাবো।

মুনমুন আসিফ আহমেদের মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন। চুলের ভেতরে আঙুল ঢুকিয়ে বিলি কেটে দেন। এক পর্যায়ে মুনমুন তাকে জড়িয়ে ধরে। ফিসফিস করে বলেন, শান্ত হও। শান্ত হয়ে ঘুমাও। তা না হলে শরীর খারাপ করবে। মাথা থেকে চিন্তা ঝেড়ে ফেলো। সময়টা পার হোক। নিশ্চয়ই আরো ভালো কিছু তোমার জন্য অপেক্ষা করছে। তোমার মন যে কাজটি করতে সায় দিচ্ছে না, সেই কাজ তুমি কেন করবে? আমি তোমায় কথা দিচ্ছি, সংসার নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবে না। আমি যা আয় করি তা দিয়ে খুব ভালোভাবেই আমাদের চলে যাবে।

আসিফ আহমেদ মুনমুনকে আবারও ধন্যবাদ জানালেন। সেই সঙ্গে কৃতজ্ঞতাও। এ রকম একটা জটিল সময়ে মুনমুনের এই সাপোর্ট তার দরকার ছিল। মুনমুন ঠিকই ওর মনের অবস্থা বুঝতে পেরেছে। এটাই তার সবচেয়ে ভালোলাগার একটা ব্যাপার। স্ত্রীকে স্বামীর সুবিধা-অসুবিধা বুঝতে হয়। স্বামীর সীমাবদ্ধতার জায়গাগুলো উপলব্ধি করতে হয়। একইভাবে স্ত্রীর সুবিধা-অসুবিধা কিংবা সীমাবদ্ধতা বুঝতে হয় স্বামীকে। তাহলেই একটা সুন্দর সংসার গড়ে ওঠে।

মুনমুনের সাপোর্টে আসিফ যে কতটা মানসিক শক্তি পেয়েছেন তা তিনি আজ টের পাচ্ছেন। তার মনোবল অনেকগুণ বেড়ে গেছে। তিনি মনে মনে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ছাঁটাই করবেন না। তিনি পদত্যাগই করবেন। স্ত্রীকে বলে দিয়েছেন কাল যদি আবার ছাঁটাইয়ের প্রসঙ্গ তোলে তাহলে তিনি বলবেন, আমার পক্ষে ছাঁটাই করা সম্ভব নয়। আমি নিজেই চলে যাচ্ছি। বার বার মনের মধ্যে এটাই তিনি রপ্ত করছেন। আগে নিজের সঙ্গে নিজে অনেক বোঝাপড়া করেছেন। অনেক হিসাব নিকাশ করেছেন। শেষ পর্যন্ত তিনি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছেন। মুনমুনও তাকে সেই পরামর্শই দিয়েছেন। শুধু পরামর্শই দেননি। তিনি পুরো সংসারের ভার নিজের কাঁধে নিয়েছেন। যতদিন আসিফের সুসময় না আসবে ততদিন সেই সংসার চালাবেন। এ নিয়ে আসিফের চিন্তা করতে হবে না। এর চেয়ে বড় স্বস্তির কথা আর কী হতে পারে!

অফিসের কথা ভাবতে ভাবতেই আসিফ ঘুমিয়ে পড়েন। সকালে মোবাইলে এলার্ম বাজার শব্দ পেয়ে তিনি ঘুম থেকে লাফিয়ে ওঠেন। সকাল তখন আটটা। কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি, শরীরচর্চা করে গোসলে যান। এরমধ্যে মুনমুনও ঘুম থেকে ওঠেন। গোসল সেরে তিনি নাশতা রেডি করেন। একসঙ্গে নাশতা খান। চা খেতে খেতে আবারও মুনমুন আসিফকে বললেন, চিন্তা করবে না। একদম চিন্তা করবে না। কোনো রকম মাথা গরম করবে না। ঠাণ্ডা মাথায় কাজ করবে। তোমার এমডি তো আজই যেতে বলেছে?
আসিফ আহমেদ মাথা ঝাঁকিয়ে জবাব দিলেন।
মুনমুন আবারও বললেন, অফিসে যাও। যদি যাকে তুমি সরাসরিই বলবে, তুমি ছাঁটাই করবে না। তুমিই পদত্যাগ করবে। আর তোমার ব্যক্তিগত জিনিসপত্র গুছিয়ে রেখ। আসার সময় সেগুলো নিয়ে এসো। গতকাল ব্যাগে করে কি এনেছিলে?
আমার ব্যক্তগত কিছু কাগজপত্র।
হুম। তার মানে তোমার মানসিক প্রস্তুতি আগে থেকেই ছিল?
হুম।
চলো তাহলে বের হই।
হুম। চলো।
আসিফ আহমেদ ও মুনমুন একসঙ্গে অফিসের উদ্দেশে বের হলেন।

আসিফ আহমেদ এগারো বছর আগে দেশের শীর্ষস্থানীয় পত্রিকা প্রথম আলো ছেড়ে নতুন উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হন। আসিফের শুভাকাঙ্ক্ষীরা তখন আপত্তি করেছিলেন। প্রতিষ্ঠিত পত্রিকা ছেড়ে কেন তিনি অনিশ্চিত একটা জায়গায় যাচ্ছেন? নতুন পত্রিকা যদি না দাঁড়ায়! যদি শুরুতেই হোঁচট খায়! তাহলে তো ক্যারিয়ারটাই শেষ!

আসিফ কারো কথায় কান দেননি। কারো পরামর্শই তিনি শোনেননি। তার নিজের কাছেই মনে হয়েছে ক্যারিয়ারের স্বার্থেই তাকে নতুন উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হতে হবে। নতুন জায়গায় নতুন সম্ভাবনা তৈরি হবে। নিজেকে তুলে ধরার সুযোগ তৈরি হবে। কিন্তু যোগ দিয়েই তিনি একটা গোলকধাঁধাঁয় পড়ে গেলেন। শুরুর সেই সময়গুলোর কথা আজ মনে পড়ছে তার। কত ঝড়-ঝাপটা যে তাকে সইতে হয়েছে। কত রকম ষড়যন্ত্রের শিকার হতে হয়েছে তাকে। নানামুখি ষড়যন্ত্র। কাজ জানা লোকদের এই হলো সমস্যা। অকাজের লোকরা সব সময়ই তাদের ঈর্ষা করে। সবাই মিলে তাদের টেনে-হিঁচড়ে নামানোর চেষ্টা করে। কথায় বলে না, সব শেয়ালের এক রা। সেটাই আজ পদে পদে প্রত্যক্ষ করছেন তিনি। তিনি জানেন, তাকে ধৈর্য ধরতে হবে। ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। তাই করেছিলেন তিনি।

আসিফ এমন এমন পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছিলেন যা তিনি কখনো কল্পনাও করেননি। তার কাছে মনে হয়েছে, জায়গা বড় আজব। এখানে বেশিদিন থাকলে তার ক্যারিয়ারটা শেষ হয়ে যাবে। তাই তিনি চাকরি ছেড়ে চলে যাবেন বলে মনস্থির করেন। অন্যত্র যোগ দেওয়ার কথা ভাবেন। তিনি তার শুভাকাঙ্ক্ষীদের বলেছেনও সে কথা। শুভাকাঙ্ক্ষীরাও তার জন্য চেষ্টা করেছেন। কিন্তু ভালো কোনো সুযোগ তৈরি হয়নি। তিনিও তখন মাটি কামড়ে পড়ে থাকার মতো পড়ে ছিলেন। কখনো কখনো চোখের পানি ফেলেছেন। কত ধৈর্য ধরবেন? ধৈর্যেরও তো একটা সীমা আছে! সেই কঠিন পরিস্থিতি ধীরে ধীরে কাটতে শুরু করে। আসিফও মনকে বোঝান, দেখলে তো সবুরে মেওয়া ফলে! ঘুরেফিরে সেই তো তোমার কাছেই দায়িত্ব এলো! কাজ করে যাও। তুমি জানো, তোমার চারপাশে শত্রু। তারা সর্বত্র কাঁটা বিছিয়ে রেখেছে। তোমাকে খুব সাবধানে, দেখেশুনে পদ চলতে হবে।

আসিফ সব সময় একটা ভরসাই করেছেন যে, তার ওপর মা বাবার দোয়া আছে। কাজেই কেউ তার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। কোনো ষড়যন্ত্রই কাজে আসবে না। বাস্তবে সেটাই হয়েছে। ষড়যন্ত্রকারীরা সব রকম চেষ্টা করেও আসিফকে তার অবস্থান থেকে সরাতে পারেনি। কিন্তু আজকে যে পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে সেটা তিনি কীভাবে মোকাবিলা করবেন? এটা একটা নীতি-নৈতিকতার প্রশ্ন, মানবিকতার প্রশ্ন। মনুষ্যত্বের প্রশ্ন। নিজের নীতি-নৈতিকতা জলাঞ্জলি দিয়ে তিনি সম্পাদকের পদ আকড়ে থাকবেন? এতোদিন তিনি প্রতিষ্ঠানের একটি বটবৃক্ষের মতো ছিল। সবাইকে তিনি ছায়া দিয়ে রেখেছেন। সেই ছায়াটা না দিতে পারলে তার থাকার কী মূল্য! তা ছাড়া মিডিয়াতে আসিফের একটা সুনাম আছে। সাংবাদিক-কর্মীবান্ধব সম্পাদক, আপাদমস্তক পেশাদার সম্পাদক বলে সবাই মনে করে। সেই ভাবমূর্তি মুহূর্তের মধ্যে ধুলোয় মিশে যাবে। সবাই ছি ছি করবে। সম্পাদক হিসেবে যতটুকু সুনাম অর্জন করেছিলেন তার চেয়ে দুর্নাম হবে অনেক বেশি। ক্যারিয়ারের চূড়ান্ত পর্বে এসে আপোস করবেন? একটা অশুভ, অসুর শক্তির সঙ্গে আপোস করবেন! যদিও সময়টা খুব খারাপ। চাকরি ছাড়ার জন্য তো আরো খারাপ! যে সময় মানুষ ছাঁটাই হচ্ছে সে সময় চাকরি ছাড়বেন!

আসিফ বারবার নিজের সঙ্গে বোঝাপড়া করেছেন। নিজের মনকে বারবার প্রশ্ন করেছেন যে তিনি ভুল সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন কি না! একবার নয়, দুইবার নয়। তিনি বারবার ভেবেছেন। শেষমেষ তিনি স্থির সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন, পদত্যাগই তার একমাত্র সমাধান। এর বিকল্প হচ্ছে ছাঁটাই। জীবনের মধ্য গগনে এসে ছাঁটাই করে তিনি কলঙ্কের বোঝা নিজের মাথায় নেবেন না।
অতঃপর আসিফ অফিসে বসে চেয়ারম্যান বরাবর একটি পদত্যাগপত্র লিখলেন।

চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২১

বিষাদ বসুধা: পর্ব ২০

বিষাদ বসুধা: পর্ব ১৯

জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস মারা গেছেন

শিব নারায়ণ দাস। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অন্যতম নকশাকার ও জাসদ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা শিব নারায়ণ দাস (৭৮) মারা গেছেন।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকাল ৯টা ২৫ মিনিটের দিকে তিনি রাজধানী ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেবিন ব্লকের আইসিইউতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

জানা গেছে, শিব নারায়ণ রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকদের পরামর্শে দ্রুত তাকে বিএসএমএমইউতে ভর্তি করা হয়।

১৯৭০ সালের ছয় জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইকবাল হলের (বর্তমান শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল) ১১৬ নম্বর কক্ষে রাত ১১টার পর পুরো পতাকার নকশা সম্পন্ন করেন। এ পতাকাই পরবর্তীতে ১৯৭১-এর দুই মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় উত্তোলিত হয়।

১৯৭০ সালের সাত জুন ঢাকার পল্টন ময়দানে অনুষ্ঠিত ছাত্রদের এক সামরিক কুচকাওয়াজে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অংশ গ্রহণের কথা ছিল। এই জন্য ছাত্রদের নিয়ে একটি জয়বাংলা বাহিনী, মতান্তরে 'ফেব্রুয়ারি ১৫ বাহিনী' গঠন করা হয়। ছাত্র নেতারা এই বাহিনীর একটি পতাকা তৈরির সিদ্ধান্ত নেন।

১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ পাকিস্তান দিবসে সমগ্র পূর্ব পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তানের জাতীয় পতাকার পরিবর্তে শিবনারায়ন দাশের নকশা করা বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়।

১৯৭২ সালে শেখ মুজিবুর রহমানের সরকার শিবনারায়ন দাসের নকশা করা পতাকার মধ্যে মানচিত্রটি বাদ দিয়ে পতাকার মাপ, রঙ, ও তার ব্যাখ্যা সংবলিত একটি প্রতিবেদন দিতে বলে পটূয়া কামরুল হাসানকে। কামরুল হাসান দ্বারা পরিমার্জিত রূপটিই বর্তমানে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা।

ক্ষেপণাস্ত্র হামলার খবর অস্বীকার ইরানের, তেহরানে বিমান চলাচল স্বাভাবিক

ছবি: সংগৃহীত

ইরানে ইসরায়েল ক্ষেপণাস্ত্র হামলার দাবিটি নাকচ করে দিয়েছে ইরান। তেহরানের দাবি, ইরানে কোনো ক্ষেপণাস্ত্রের হামলা হয়নি, তিনটি ড্রোন এসেছিল সেগুলো আকাশেই ধ্বংস করা হয়েছে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) এক ইরানি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। ইরানি ওই কর্মকর্তা বলেন, ইসফাহানের বিমানবন্দরে বিস্ফোরণের যে শব্দ পাওয়া গেছে তার কারণ ইরানের আকাশ সুরক্ষাব্যবস্থা সক্রিয় হয়ে ওঠা। ইরানে কোনো ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়নি।

এদিকে ইরানের মহাকাশ সংস্থার মুখপাত্র হোসেইন দালিরিয়ান সামাজিকমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছেন, এয়ার ডিফেন্সের মাধ্যমে বেশ কয়েকটি ড্রোন সফলভাবে ভূপাতিত করা হয়েছে। আপাতত কোনো ক্ষেপণাস্ত্র হামলার খবর নেই।

এর আগে ইসফাহান শহরের কাছে বিস্ফোরণের খবর পাওয়ার পর বিভিন্ন প্রদেশে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করে ইরান। একই সঙ্গে তেহরান, ইসফাহান এবং শিরাজের ফ্লাইট স্থগিত করা হয়। এবার তেহরানের প্রধান দুটি বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল শুরু হয়েছে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) এ খবর জানিয়েছে দেশটির সরকারি বার্তা সংস্থা ইরনা। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তেহরানের ইমাম খোমেনি ও মেহরাবাদ বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল শুরু হয়েছে।

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার (১৯ এপ্রিল) রাতে ইরানের ইসফাহান শহরে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। ইসফাহান শহরের কাছে বিস্ফোরণের খবর পাওয়ার পর বিভিন্ন প্রদেশে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করেছে ইরান। একই সঙ্গে তেহরান, ইসফাহান এবং শিরাজের ফ্লাইট স্থগিত করা হয়েছিল।

এর আগে, গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে হামলা চালায় ইসরায়েল। হামলায় ইরানের কয়েকজন শীর্ষ সেনা কর্মকর্তা নিহত হন। ওই হামলার জবাবে গত ১৩ এপ্রিল শনিবার রাতে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে তিন শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড কোর (আইআরজিসি)। এ হামলার প্রতিশোধ নিতে ইরানে পাল্টা হামলার কথা বলেছিল ইসরায়েল।

এর আগে, ইরান বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে জানায়, ইসরায়েলকে তাদের স্বার্থের বিরুদ্ধে সামরিক দুঃসাহসিকতা বন্ধ করতে বাধ্য করতে হবে।

নওগাঁয় ভুয়া সিআইডি কর্মকর্তা গ্রেপ্তার

নওগাঁয় ভুয়া সিআইডি কর্মকর্তা গ্রেপ্তার। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

নওগাঁর ধামুরহাটে ভুয়া সিআইডি কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে প্রতারণার অভিযোগে রেজওয়ানুল আহমেদ পিয়াল (২৫) নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরের দিকে উপজেলার রুপনারায়নপুর গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয় তাকে।

গ্রেপ্তারকৃত রেজওয়ানুল আহমেদ পিয়াল বগুড়া জেলার আদমদিঘী উপজেলার রিয়াজ আহমেদ এর ছেলে।

ভুক্তভোগী মানুয়েল তপন বলেন, ভয়ভীতি দেখিয়ে বিকাশ এবং নগদের মাধ্যমে ২৯,৫৩৮ টাকা গ্রহণ করে এবং আরো টাকা দাবি করলে স্থানীয় জনতা এই ভুয়া সিআইডি পুলিশ কর্মকর্তাকে চ্যালেঞ্জ করে ধামইরহাট থানায় খবর দেয়। বেশকিছু দিন ধরে আমার মতো এলাকার অন্য লোকজনের কাছেও বিভিন্ন ফন্দি এঁটে প্রতারণা করে এই প্রতারক।

নওগাঁয় ভুয়া সিআইডি কর্মকর্তা গ্রেপ্তার। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

পরে থানার এসআই (নিঃ) পরিতোষ চন্দ্র সরকার সঙ্গীয় কনস্টেবল মো. ইকবাল হোসেন, মো. নুর ইসলাম ও মো. ফরহাদ হোসেন গিয়ে ভুয়া সিআইডি কর্মকর্তা পরিচয়দানকারী প্রতারক রেজওয়ানুল আহমেদ পিয়ালকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসে।

এ প্রসঙ্গে ধামইরহাট থানার অফিসার ইনচার্জ মো. বাহাউদ্দিন ফারুকী বিপিএম, পিপিএম ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ভুয়া সিআইডি কর্মকর্তা পরিচয়দানকারী প্রতারক রেজওয়ানুল আহমেদ পিয়াল বিভিন্ন সময় বিভিন্ন এলাকায় নিজেকে সিআইডি কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করতেন। সিউডি কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও ভুয়া পরিচয় দিয়ে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা নিতেন। তার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ মামলা দায়ের হয়েছে।

সর্বশেষ সংবাদ

জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস মারা গেছেন
ক্ষেপণাস্ত্র হামলার খবর অস্বীকার ইরানের, তেহরানে বিমান চলাচল স্বাভাবিক
নওগাঁয় ভুয়া সিআইডি কর্মকর্তা গ্রেপ্তার
মানুষ এখন ডাল-ভাত নয়, মাছ-মাংস নিয়ে চিন্তা করে: প্রধানমন্ত্রী
দাঁড়িয়ে থাকা বাসকে পিকআপের ধাক্কা, ১০ পোশাককর্মী আহত
নতুন রেকর্ড গড়ে ইউরোপা লিগের সেমিতে লেভারকুসেন
ইরানে ইসরাইলের হামলা: লাফিয়ে বাড়ছে তেল ও স্বর্ণের দাম
মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এলেন আরও ১৩ বিজিপি সদস্য
চুয়াডাঙ্গায় স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করার লক্ষ্যে কিশোর-কিশোরীদের নিয়ে সেমিনার
ইরানে হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল
নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ, ডিপজলকে শোকজ
টাঙ্গাইলে সেরা ওসি হলেন আহসান উল্লাহ্, পেলেন শ্রেষ্ঠ সম্মাননা পুরস্কার
দেশে প্রতিদিন সড়কে প্রাণ হারাচ্ছেন ১৬ জনের বেশি
টানা তিনদিন চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড, হিট অ্যালার্ট জারি
তীব্র গরমে পশ্চিমবঙ্গে স্কুল ছুটি ঘোষণা
ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জাতিসংঘের 'প্রিমিয়াম টিম': সেনাপ্রধান
আগামীকাল ঢাকা মাতাবেন আতিফ আসলাম
এমপি-মন্ত্রীর স্বজনদের উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে আ.লীগের নির্দেশনা
নওগাঁয় শান্ত বাহিনীর শাস্তির দাবিতে ঝাড়ু মিছিল ও মানববন্ধন