শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫ | ১৩ আষাঢ় ১৪৩২
Dhaka Prokash

সুরমা জাহিদ

কিশোরীদের দেখা একাত্তরের ভয়াবহ স্মৃতি

মধুবন্তী ডায়েসের গল্প

[শেষ পর্ব]

 পরদিন বাড়িতে আবার মিলিটারি এসে হামলা করে। ঐ দিন আমরা ঘরে ছিলাম, আমাদের বাড়িতে একটা ঘর ছিল। সেটাতে কেউ থাকত না। ঐ ঘরে বসে দাদা কাজকর্ম করাতেন। বাচ্চারা মাঝে মাঝে খেলাধুলা করে। ঘরটা অনেক লম্বা ছিল। ঘরের ভেতরে এক পাশে ছিল অনেক বড় একটা ধানের গোলা। গোলার পিছনে  ছিল কিছু অপ্রয়োজনীয় হাবি-জাবি জিনিসপত্র। তারপর চেয়ার, টেবিল, টুল। তারপরও কিন্তু খেলা যেত। সেই ঘর এত বড় ছিল। যখন মিলিটারি বাড়িতে এসেছে তখন অনেকে সেই ঘরে ছিলাম। হঠাৎ কেমন যেন একটা শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। তখনই বুঝতে পারি মিলিটারিদের জুতার শব্দ। তখন চিৎকার করে আমি বলছি, মিলিটারি আসছে, পালাও, পালাও। এই বলেই আমিও পালাতে চেস্টা করছি। বাহিরে তাকিয়ে দেখি মিলিটারিরা বেশ কাছাকাছি চলে এসেছে। আমি ঘর থেকে বাহির হয়ে দূরে কোথাও পালাতে পারবো না ভেবে আমি ঘরের ভেতরে পালাতে চেস্টা করি। প্রথম ধানের গোলার ভেতরে উঠতে চেস্টা করেছি, কিন্তু পারিনি। পরে গোলার নিচে গিয়ে শুয়ে পড়ি আর দুই একটা জিনিসপত্র আমার সামনে এনে রেখে দিয়েছি। ঘরের ভেতরে আমার সঙ্গে আরও দুই তিনজন ছিল । বাকিরা সবাই বাহির হয়ে গিয়েছিল। যারা ছিল তারা আর পালাতে পারেনি। মিলিটারিরা ঘরে ঢুকে পড়ে। আমার মনে হয় ঘর থেকে যে অনেকে বাহির হয়ে পালিয়ে গিয়েছিল তা দূর থেকে দেখেছে। তাই ঐ ঘরের ভেতর এসেছে। যারা ঘরের ভেতর ছিল তাদের মধ্যে একজনের বিয়ে হয়েছিল তার নাম ছিল খুব সম্ভবত: আলেয়া। আমাদের বাড়ির পাশেই ছিল তার বাড়ি। সে বাবার বাড়িতে এসেছিল বাচ্চা হবে তাই। তার দিন ঘনিয়ে এসেছিল। আর দুই জনের নাম ছিল হেলেনা আর রেখা। ওরা আপন দুই বোন ছিল।

মিলিটারিরা ঘরে ঢুকেই তাদের তিনজনকে ধরে ফেলে। তারপর তাদের পরনের কাপড় খোলে টানা ধর্ষণ করতে থাকে একজনের পর একজন। তিনজনকে পাশাপাশি মাটিতে ফেলে ধর্ষণ করেছে। মিলিটারিরা তো অনেকজন ছিল, তাই পালাক্রমে তারা তিনজনকে ধর্ষণ করেছে। তাদের কাজ শেষ হলে তারা চুপচাপ চলে যায়। আবার কি যেন মনে করে, ঘরের দরজা থেকে ফিরে আসে এবং হেলেনা ও রেখাকে তুলে নিয়ে যায়। আর আলেয়া পড়ে আছে। তাদের রক্ত বেয়ে বেয়ে সমস্ত ঘর ভিজে গিয়েছে। আমিও ভিজে গিয়েছি। এসব দেখে আমি ভয়ে আধ মরার মতন পড়ে আছি। এক সময় দেখি, আলেয়া ঘরে ছটফট করছে। তাদের রক্তে লাল হয়ে গিয়েছে সমস্তটা ঘর। আমি আমার সমস্ত শক্তি দিয়ে চেস্টা করছি উঠে আসতে এবং আলেয়াকে সাহায্য করতে, কিন্তু পারিনি। মনে হচ্ছে আমার সমস্ত শরীর মাটির সাথে লেগে গিয়েছে। কেউ বুঝি আঠা দিয়ে রেখেছে। আমার কানে বাজছে আলেয়ার করুণ আর্তনাদ। মনে হয় মাঝে মাঝে পানি পানি করছিল ।

বেলা গিয়ে সন্ধ্যা নেমে এল। দুই একজন করে বাড়ি ফিরছে। এক সময় কেন যেন এই ঘরে আসে। ঘরে এসেই চিৎকার করে উঠে। সর্বনাশ হয়ে গিয়েছে। আলেয়াকে পাওয়া গিয়েছে। তার মানে এতক্ষণ আলেয়াকে খুঁজে পাচ্ছিল না। কয়েকজন ঘরে এলো, সবাই ভয় পাচ্ছে, কত কথা বলছে। আলেয়াকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে। তখনও আমার মুখ দিয়ে কথা বাহির হচ্ছে না। আমি আমার শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে চিৎকার করছি। কিন্তু আমার গলা দিয়ে কোন শব্দ বাহির হচ্ছে না। আমি দেখছি সবাই আলেয়াকে নিয়ে ব্যস্ত এবং তাকে নিয়ে যাচ্ছে। তারপর তো ঘরে আর কেউ আসবে না। সারারাত আমাকে অন্ধকারে একাকী এখানে কাটাতে হবে। কেউ জানে না যে, আমি এখানে লুকিয়ে আছি। অনেক চেস্টা করেও যখন আমি শব্দ বের করতে পারিনি তখন আমি হাত দিয়ে এটা-সেটা নাড়াতে চেস্টা করতে থাকি। এক সময় একটা শব্দ হল। ঘরে যারা ছিল তারা শুনতে পেয়েছে। তখন তারা আমাকে উদ্ধার করে। তারপর আর আলেয়ার খবর জানি না।

সেদিনের পর বাড়ির সবাই বলছেন, আমাদের এখানে থাকা ঠিক হবে না। তিন চারদিন পর আমরা ভারতের উদ্দেশ্যে আবার রওনা দেই। আবার সেই পায়ে হেঁটে শত না, শত শত বললে ভুল হবে, হাজার হাজার নারী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধা লাইন ধরে হাঁটছে তো হাঁটছেই। মনে হয়, এত বড় লাইন যে, আমাদের দেশ থেকে লাইন শুরু হয়ে ভারতে গিয়ে শেষ হয়েছে।

ভারতে গিয়ে আমরা শরণার্থী শিবিরে উঠি। ঐখানে অবস্থা তো আরও বেশি খারাপ। ঐখানে শুধু জান-মান হারানোর ভয় নেই। তাছাড়া সব দিক দিয়ে অসুবিধা ছিল-থাকার, খাওয়ার, গোসল করার, ঘুমানোর। যে ঘরের ভেতরে ৫০ জন থাকতে পারে, সেখানে মনে হয় ১৫০ জন লোকের থাকতে হয়েছে। এত লোক থাকলে যা হয় তাই হয়েছে। যাই হোক জান মানের নিরাপত্তা ছিল। শত কস্টের মাঝ দিয়ে পাঁচ সাতটি মাস পার করেছি। এক সময় শুনি, আমাদের দেশ স্বাধীন হয়েছে। মুহুর্তের মধ্যেই সব দু:খ কস্ট ভুলে মনের ভেতর আনন্দের বন্যা বইতে শুরু করেছে। ভাবতেই কেমন যেন ভাল লাগছে যে আমরা স্বাধীন, আমাদের নিজের একটা দেশ হয়েছে, সেই দেশের মানুষ আমরা। বৃষ্টি হলে আষাঢ় মাসে ব্যাঙ যেভাবে ব্যাক ব্যাক করে ডেকে ডেকে লাফায়, ঠিক সেভাবে লাফাতে ইচ্ছে করছে, লাফিয়েছি অনেক। মনটা আকুল ব্যাকুল করছে, কখন স্বাধীন দেশে এসে পা রাখবো। মন অস্থির হয়ে আছে।

মাসখানেক পর আমরা আবার দেশে ফিরে আসি। বুক ভরা কত আশা-ভরসা, কত স্বপ্ন, কত কল্পনা। কিন্তু না, কিছুই পূরণ হল না। বাড়িতে এসে দেখে কোন ঘরবাড়ি নেই, সব পুড়ে ছাই। পুরো গ্রাম পুড়ে ছাই। একেবারে কিছুই নেই। তখন এমন একটা অবস্থা কে কাকে আশ্রয় দেয়। সবার তো একই অবস্থা। তারপরও আমার এক ফুপুর বাড়িতে গিয়ে আমরা কয়েকদিন ছিলাম। আর এদিক দিয়ে বাড়িতে ছোট ছোট করে কয়েকটা ছনের ঘর করে আমাদেরকে নিয়ে এল। আমরা থাকতে থাকি। দিন যাচ্ছে খুব কষ্টের মধ্য দিয়ে।

সেই যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে আব্বার সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছিল। তারপর আর আব্বার সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি। আব্বাতো জানেও না আমরা কোথায়, আমরা বেঁচে আছি না মরে গিয়েছি, কিছুই জানে না। না জেনে আব্বা অস্থির হয়ে পড়ে। দেশ স্বাধীন হলে পরের বছর আব্বা দেশে আসেন। এসে আমাদেরকে না পেয়ে পাগলের মতন হয়ে যায়। আব্বা তো ভাবতেও পারেনি আমরা দাদার বাড়িতে আছি। খুঁজতে খুঁজতে আব্বা এক ফুপুর বাড়িতে যায়, ঐখানে গিয়ে জানতে পারে, আমরা দাদার কাছে আছি, ভাল আছি। ফুপু আব্বাকে নিয়ে দাদার কাছে আসে । আব্বা মনে হয় দুই মাসের মতন ছিলেন। দুই মাস পর আব্বা চলে যায়। আব্বা যাওয়ার কয়েক মাস পরেই আমাদের কাগজপত্র সব চলে আসে। আমরা চলে যাই স্বাধীন বাংলাদেশ ছেড়ে, সকল রকমের সকল বন্ধন সব ফেলে অন্য দেশে। সাত সমুদ্র তের নদী পেরিয়ে।

আমরা যাওয়ার বছর খানেক পরেই জানতে পারি আমার দাদা খুব অসুস্থ। তারপর হঠাৎ একদিন জানতে পারি, দাদা মারা গিয়েছেন। দাদা মারা যাওয়ার খবরটা শোনার পর আমার ভেতরে কেমন যেন একটা ধাক্কা লেগেছিল। সেই ধাক্কার সুর যেন আমাকে শুধু অপরাধী বানিয়েছে। বয়স কম ছিল বলে কাউকে তেমন কিছু বলতেও পারিনি । কিন্তু আমি যখন বড় হয়ে কাজ করতে শুরু করি তখন থেকেই আলাদা করে টাকা জমিয়ে রাখি।

১৯৯১ সালে আমি আবার দেশে যাই। দাদার বাড়িতে যাই। এত বছর পর আসার একটাই কারন ছিল, সেটা হল, নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে, নিজের খরচে নিজে যেদিন দেশে যেতে পারব সেদিনই দেশে ফিরবো, এই অভিমান ছিল মনে। হয়ত দাদা বেঁচে থাকলে আরও আগে আসা হতো। আমার আব্বা মারা গিয়েছেন, আমি এত কষ্ট পাইনি, যে কষ্ট আমি পেয়েছি দাদার মৃত্যুর খবর শুনে।

১৯৯১ সালের পর দেশে গিয়েছি দুই বার। সামনে আবার যাব, অবশ্যই যাব। আমি দেশকে খুব ভালবাসি, খুব মিস করি। আমার ইচ্ছে আছে আর কয়েক বছর এখানে থেকে বাকি জীবনটা বাংলাদেশে থাকবো। 

 

লেখক: গবেষক ও প্রাবন্ধিক

Header Ad
Header Ad

সেই পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনাধীন

ছবি: সংগৃহীত

স্ট্রোক করা মাকে নিয়ে হাসপাতালে যান আনিসা আহমেদ নামে এক এইচএসসি শিক্ষার্থী। এজন্য পরীক্ষার হলে ঢুকতে দেরি হওয়ায় বসতে পারেননি পরীক্ষায়। তার পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরার (সি আর আবরার)।

শুক্রক্রবার (২৭ জুন) সকালে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের পাঠানো এক বার্তায় তা জানানো হয়।

বার্তায় বলা হয়, চলতি বছরের উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়েছে বৃহস্পতিবার (২৬ জুন)। অসুস্থ মাকে হাসপাতালে পৌঁছে দিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেরি হওয়ায় প্রথম দিনের এইচএসসি পরীক্ষায় রাজধানীর সরকারি মিরপুর বাঙলা কলেজ কেন্দ্রের এক শিক্ষার্থীর পরীক্ষা না দিতে পারার ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে এসেছে।

এ বিষয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা সিআর আবরার বলেন, মানবিক বিবেচনায় ওই শিক্ষার্থীর বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়টি পাবলিক পরীক্ষা গ্রহণ সংক্রান্ত আইন ও বিধির আলোকে সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। তার এ দুঃসময়ে আমরাও সমব্যথী। এ পরীক্ষার্থীকে উদ্বিগ্ন না হওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।

Header Ad
Header Ad

দেশজুড়ে রথযাত্রা উৎসব শুরু আজ

ছবি: সংগৃহীত

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় অনুষ্ঠান শ্রী শ্রী জগন্নাথদেবের রথযাত্রা উৎসব শুরু আজ। সনাতনী রীতি অনুযায়ী, প্রতি বছর আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে শুরু হয় জগন্নাথদেবের রথযাত্রা।

বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রাসহ নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠানমালার মাধ্যমে আনন্দমুখর পরিবেশে ৯ দিনব্যাপী শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা মহোৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। আগামী ৫ জুলাই বিকেল ৩টায় উল্টো রথের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে এই উৎসব শেষ হবে। এ বছর ঢাকাসহ সারা দেশে ইসকনের ১২৮টি মন্দির ও আশ্রমে এদিন রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে।

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, জগন্নাথদেব হলেন জগতের নাথ বা অধীশ্বর। জগৎ হচ্ছে বিশ্ব আর নাথ হচ্ছেন ঈশ্বর। তাই জগন্নাথ হচ্ছেন জগতের ঈশ্বর। তার অনুগ্রহ পেলে মানুষের মুক্তিলাভ হয়। জীবরূপে তাকে আর জন্ম নিতে হয় না। এই বিশ্বাস থেকেই রথের উপর জগন্নাথ দেবের প্রতিমূর্তি রেখে রথ নিয়ে যাত্রা করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।

শুভ রথযাত্রা উপলক্ষ্যে ঢাকায় আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) আয়োজিত ৯ দিনব্যাপী অনুষ্ঠান মালায় রয়েছে, হরিনাম সংকীর্তন, বিশ্ব শান্তি ও মঙ্গল কামানায় অগ্নিহোত্র যজ্ঞ, মহাপ্রসাদ বিতরণ, আলোচনা সভা, শোভাযাত্রা, পদাবলী কীর্তন, আরতি কীর্তন, ভগবত কথা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শ্রীমদ্ভাগবত গীতা পাঠ, ধর্মীয় চলচ্চিত্র প্রদর্শন ও ধর্মীয় নাটক মঞ্চায়ন।

ইসকন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক চারুচন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী জানান, ইসকন স্বামীবাগ আশ্রমে শুক্রবার সকাল ৮টায় বিশ্বশান্তি ও মঙ্গল কামনায় অগ্নিহোত্র যজ্ঞের মধ্য দিয়ে শুভ রথযাত্রা মহোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়ে দুপুর দেড়টায় আলোচনা সভা শেষে বিকেল ৩টায় রথের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার উদ্বোধন করা হবে।

ঢাকায় রথযাত্রার রুট উল্লেখ করে তিনি জানান, স্বামীবাগ আশ্রম থেকে রথযাত্রা শুরু হয়ে জয়কালী মন্দির, ইত্তেফাক মোড়, শাপলা চত্বর, দৈনিক বাংলা মোড়, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেট, পল্টন মোড়, জাতীয় প্রেস ক্লাব, কদম ফোয়ারা, হাইকোর্ট মাজার, দোয়েল চত্বর, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, জগন্নাথ হল, পলাশী মোড় হয়ে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে গিয়ে পৌঁছবে। পরে আগামী ৫ জুলাই বিকেল ৩টায় উল্টোরথের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা একই পথে বিপরীত দিক থেকে অর্থাৎ ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির থেকে স্বামীবাগ আশ্রমে আনা হবে।

এছাড়া পুরান ঢাকার তাঁতীবাজারের জগন্নাথ জিউ ঠাকুর মন্দির, জয়কালী রোডের রামসীতা মন্দির এবং শাঁখারীবাজার একনাম কমিটিসহ রাজধানীর অন্যান্য মন্দির ও দেশের বিভিন্ন মন্দিরেও রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে।

Header Ad
Header Ad

ইরানকে যুক্তরাষ্ট্রের ৩০ বিলিয়ন ডলারের গোপন প্রস্তাব

ছবি: সংগৃহীত

ইরানের সঙ্গে সমঝোতায় গোপনে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানকে আলোচনার টেবিলে ফিরিয়ে আনা এবং মার্কিনদের কথামতো চালাতে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন নানাভাবে চেষ্টা করছে। এ বিষয়ে চারটি সূত্র সিএনএনকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানিয়েছে।

সূত্র মতে, ট্রাম্প প্রশাসন ইরানকে বেসামরিক-শক্তি উৎপাদনকারী পারমাণবিক কর্মসূচি গড়ে তুলতে সহায়তা করার জন্য ৩০ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত অর্থ প্রদান, নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা এবং বিশ্বব্যাপী ইরানের ফ্রিজ হওয়া তহবিলের বিলিয়ন ডলার মুক্ত করার বিষয়ে আলোচনা করেছে। আর এ সবই করা হচ্ছে অত্যন্ত গোপনে।

যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যপ্রাচ্যের মূল খেলোয়াড়রা গত দুই সপ্তাহে ইরান ও ইসরায়েলে সামরিক হামলার মধ্যেও পর্দার আড়ালে ইরানিদের সঙ্গে কথা বলেছে। যুদ্ধবিরতি চুক্তির পর এই সপ্তাহেও আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।

ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা জোর দিয়ে বলেছেন, বেশ কয়েকটি প্রস্তাব উত্থাপিত হয়েছে। এগুলো প্রাথমিক ও ক্রমবর্ধমান। তবে একটি অ-আলোচনাযোগ্য শর্ত বহাল রয়েছে। তা হলো, ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ শূন্য হতে হবে। যদিও ইরান ধারাবাহিকভাবে বলেছে, তাদের প্রয়োজনে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ করা হচ্ছে তবুও চাপ প্রয়োগকারীরা এ শর্তে ছাড় দিতে নারাজ। দুটি সূত্র সিএনএনকে অন্তত একটি প্রাথমিক খসড়া প্রস্তাব সরবরাহ করেছে। এতে ইরানের জন্য বেশ কয়েকটি প্রণোদনা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

গত শুক্রবার হোয়াইট হাউসে মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ এবং উপসাগরীয় অংশীদারদের মধ্যে একটি গোপন বৈঠকে কিছু বিবরণ চূড়ান্ত করা হয়েছে। মার্কিন সামরিক হামলার আগের দিন ছিল কয়েক ঘণ্টার সেই বৈঠক সম্পর্কে জানা দুটি সূত্র সিএনএনকে এসব নিশ্চিত করেছে।

আলোচিত শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে, ইরানের একটি নতুন অ-সমৃদ্ধকরণ পারমাণবিক কর্মসূচির জন্য আনুমানিক ২০-৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হবে। এ কেন্দ্র বেসামরিক শক্তি উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হবে। ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তা এবং প্রস্তাব সম্পর্কে জানা সূত্রগুলো সিএনএনকে জানিয়েছে, অর্থ সরাসরি যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসবে না; বরং আরব অংশীদাররা এই বিল পরিশোধ করার পথ খোঁজা হচ্ছে। ইরানের পারমাণবিক শক্তি সুবিধাগুলোতে বিনিয়োগের বিষয়টি সাম্প্রতিক মাসগুলোতে পারমাণবিক আলোচনার পূর্ববর্তী রাউন্ডগুলোতেও আলোচিত হয়েছে।

ট্রাম্প প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা সিএনএনকে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এই আলোচনাগুলোর নেতৃত্ব দিতে ইচ্ছুক। পারমাণবিক কর্মসূচি গড়ে তুলতে কারও না কারও অর্থ প্রদান করতে হবে। তবে আমরা সেই প্রতিশ্রুতি দেব না।

অন্যান্য প্রণোদনার মধ্যে রয়েছে ইরানের ওপর থেকে কিছু নিষেধাজ্ঞা অপসারণের সম্ভাবনা এবং ইরানকে ৬ বিলিয়ন ডলার ফ্রিজ সম্পদ ব্যবহার করতে দেওয়া, যা বর্তমানে বিদেশি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে রয়েছে এবং তারা বহু বছর তা অবাধে ব্যবহার করতে পারছে না।

সূত্র সিএনএনকে বলেছে, বিভিন্ন মানুষের দ্বারা অনেক ধারণা উত্থাপিত হচ্ছে এবং তাদের অনেকেই সৃজনশীল হওয়ার চেষ্টা করছে। এখানে কী ঘটবে, তা সম্পূর্ণরূপে অনিশ্চিত। ইসরায়েলি ও মার্কিন হামলার আগে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইরানের মধ্যে প্রথম পাঁচ রাউন্ডের আলোচনা সম্পর্কে জানা একটি পৃথক সূত্রও একই তথ্য দিয়েছে।

উইটকফ বুধবার সিএনবিসিকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র একটি শান্তি চুক্তি চায়। সব প্রস্তাব ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র প্রাপ্তি থেকে বিরত রাখার জন্য নকশা করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র বলেছে , ইরান শান্তিপূর্ণ বেসামরিক উদ্দেশ্যে পারমাণবিক কর্মসূচি চালু রাখতে পারে। তবে সেই কর্মসূচির জন্য ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে পারবে না। পরিবর্তে ইরান সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম স্বল্প মাত্রায় আমদানি করতে পারবে। কতটুকু খরচ হচ্ছে, তা পর্যবেক্ষকদের নিয়মিত জানাতে হবে।

উইটকফ বলেন, এখন ইরানের সঙ্গে আলোচনা হওয়াটাই স্বাভাবিক। আমরা কীভাবে ইরানকে উন্নত বেসামরিক পারমাণবিক কর্মসূচি চালু রাখার সুযোগ দেব, সেটিই মুখ্য।

 

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সেই পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনাধীন
দেশজুড়ে রথযাত্রা উৎসব শুরু আজ
ইরানকে যুক্তরাষ্ট্রের ৩০ বিলিয়ন ডলারের গোপন প্রস্তাব
প্রত্যেক জেলায় হাসপাতালের মত সিনেমা হলও দরকার: জাহিদ হাসান
দেশে ফিরতে ইরান থেকে পাকিস্তান পৌঁছেছেন ২৮ বাংলাদেশি
যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সিইসির সাক্ষাৎ
খুলনায় বিএনপির নেতার বাড়ি ভাঙচুর, এসআই সুকান্ত চুয়াডাঙ্গায় গ্রেপ্তার
বিশেষ সুবিধা: ১ জুলাই থেকে সরকারি চাকরিজীবীদের কার কত বেতন বাড়ছে
হানিয়া আমিরের সঙ্গে সিনেমায় অভিনয়, ভারতে দিলজিৎকে নিষিদ্ধের দাবি
আমি যদি ভবিষ্যতে শেখ হাসিনার মতো করি, আমারও পতন হবে: কাদের সিদ্দিকী
চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে জোট গড়ছে না বাংলাদেশ: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের নামে থাকা ৯৭৭ স্থাপনার নাম পরিবর্তন
যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পেতে ‘পাবলিক’ রাখতে হবে সোশ্যাল মিডিয়ার প্রোফাইল
প্রকৃত ঘটনা জানলে হাসনাত আবদুল্লাহ তার ভুল বুঝতে পারবেন: দুদকের ডিজি
বিরামপুরে আন্তর্জাতিক মাদকবিরোধী দিবস পালিত
এনসিপির তুষারের বিরুদ্ধে ‘আপত্তিকর আলাপ’সহ যত অভিযোগ নীলা ইসরাফিলের
২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে ১৯ জনের করোনা শনাক্ত
প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ ১০ বছর নির্ধারণ করে স্বৈরাচারকে রুখে দেয়া হয়েছে: সালাহউদ্দিন আহমদ
নীরবতা ভেঙে খামেনি বললেন, ইরান ‘বিজয়’ অর্জন করেছে (ভিডিও)
সাংবাদিকতায় বাংলাদেশের মতো স্বাধীনতা উন্নত বিশ্বেও নাই: প্রেস সচিব