মঙ্গলবার, ১ জুলাই ২০২৫ | ১৭ আষাঢ় ১৪৩২
Dhaka Prokash

শীতকালের ইবাদাত ও আমলের বিধিবিধান

প্রাকৃতিক বৈচিত্র আল্লাহর দান। শীতকাল প্রকৃতির বিশেষ নেয়ামত। শীতকালের জন্য রয়েছে বেশ কিছু স্বতন্ত্র বিধিবিধান। আল্লাহ তায়ালা বলেন: 'আল্লাহ দিন ও রাতের আবর্তন ঘটান, নিশ্চয়ই এতে জ্ঞানীদের জন্য শিক্ষা রয়েছে।' (সূরা-২৪ নূর, আয়াত: ৪৪)। আল্লাহ তাআলা আরও বলেন: 'আর তিনি দিবা-রাত্রিকে পরস্পরের অনুগামী করেছেন, যে উপদেশ গ্রহণ করতে চায় অথবা কৃতজ্ঞ হতে চায় তার জন্য।' (সূরা-২৫ ফুরকান, আয়াত: ৬২)। হজরত ওমর (রা.) বলেন, ‘শীতকাল হলো ইবাদাতকারীদের জন্য গনীমতস্বরূপ।’ শীত তো এমন গনীমত (যুদ্ধলব্ধ সম্পদ), যা কোনো রক্তপাত কিংবা চেষ্টা ও কষ্ট ছাড়াই অর্জিত হয়। সবাই কোনো ক্ষয়ক্ষতি ছাড়াই এ গনীমত স্বতঃস্ফূর্তভাবে লাভ করে এবং কোনো প্রচেষ্টা বা পরিশ্রম ব্যতীরেকে তা ভোগ করে।

শীলকাল নফল রোজা রাখর জন্য সুবর্ণকাল। কাজা রোজা বাকি থাকলে তা আদায় করার জন্যও শীতের দিন অতি উপযোগী। আবু সাঈদ খুদরী (রা.) থেকে বর্ণিত, মহানবী (স.) বলেন, ‘শীতকাল হচ্ছে মুমিনের বসন্তকাল।’ (মুসনাদে আহমাদ)। বায়হাকীর বর্ণনায় রয়েছে, ‘শীতের রাত দীর্ঘ হওয়ায় মুমিন রাত্রিকালীন নফল নামাজ আদায় করতে পারে এবং দিন ছোট হওয়ায় রোজা রাখতে পারে।’ শীতকাল এলে হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলতেন- ‘হে শীতকাল! তোমাকে স্বাগতম! শীতকালে বরকত নাজিল হয়; শীতকালে রাত দীর্ঘ হওয়ায় নামাজ আদায় করা যায় এবং দিন ছোট হওয়ায় রোজা রাখা যায়।’ হাসান বসরি (রহ.) বলেন- ‘শীতকাল মুমিনের জন্য কতই না উত্তম! রাত দীর্ঘ হওয়ায় নামাজ পড়া যায় এবং দিন ছোট হওয়ায় রোজা রাখা যায়।’

আমের ইবনে মাসউদ (রা.) বর্ণনা করেন, নবীজি (স.) বলেছেন, ‘শীতল গনীমত হচ্ছে শীতকালে রোজা রাখা।’ (তিরমিজি: ৭৯৫)। হজরত মুআজ ইবনে জাবাল (রা.) এর মৃত্যুর সময় তাকে তার ক্রন্দনের কারণ জিজ্ঞেস করা হলে, তিনি বলেন- ‘আমি মৃত্যুর ভয়ে কাঁদছি না; বরং (রোজার কারণে) গ্রীষ্মের দুপুরের তৃষ্ণা, শীতের রাতের নফল নামাজ এবং ইলমের আসরগুলোতে হাজির হয়ে আলেমদের সোহবত হারানোর জন্য আমি কাঁদছি।’

আবু হুরায়রা (রা.) বলেন- ‘আমি কি তোমাদের শীতল গনীমত কি সেটা বলে দেব না?’ সাহাবীগণ বললেন অবশ্যই। তিনি বললেন, ‘সেটা হচ্ছে, শীতকালে দিনে রোজা রাখা ও রাতে নামাজ পড়া।’ আবু হুরায়রা (রা.) থেকে আরও বর্ণিত আছে, ‘নবী কারীম (স.) বলেছেন, যদি কোনো তীব্র ঠান্ডার দিন আল্লাহর কোনো বান্দা বলে- ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ (আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নাই), আজকের দিনটি কতই না শীতল! হে আল্লাহ! জাহান্নামের জামহারি থেকে আমাকে মুক্তি দিন।’ তখন আল্লাহ জাহান্নামকে বলেন- নিশ্চয়ই আমার এক বান্দা আমার কাছে তোমার জামহারি থেকে আশ্রয় চেয়েছে। আমি তোমাকে সাক্ষী রেখে বলছি, আমি তাকে আশ্রয় দিলাম। সাহাবায়ে কিরাম জিজ্ঞেস করলেন- জামহারি কী? নবীজি (স.) বললেন, জামহারি এমন একটি ঘর যাতে অবিশ্বাসী অকৃতজ্ঞদের নিক্ষেপ করা হবে এবং এর ভিতরে তীব্র ঠান্ডার কারণে তারা বিবর্ণ হয়ে যাবে। (আমালুল ইয়াওম ওয়াল লাইল: ৩০৬)।

শীতকালে সঠিকভাবে অজু করা, অজুর অঙ্গ ধোয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা; প্রতিটি অঙ্গের যতটুকু স্থানে পানি পৌঁছানো দরকার ততটুকু স্থানে পানি পৌঁছানো বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ আমল। রসূলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘তিনটি আমল পাপমোচন করে, ‘সঙ্কটকালীন দান, গ্রীষ্মের রোজা ও শীতের অজু।’ (আদ দোয়া লিত তাবরানী: ১৪১৪)। রসূলে আকরাম (স.) আরও বলেছেন, আমি কি তোমাদের জানাব না? কিসে তোমাদের পাপমোচন করবে! এবং মর্যাদা বৃদ্ধি করবে! সাহাবায়ে কিরাম বললেন- অবশ্যই! হে আল্লাহর রসূল (স.)! তিনি বললেন, ‘শীতের কষ্ট সত্ত্বেও ঠিকভাবে অজু করা।’ (মুসলিম: ২৫১; তাফসীরে কুরতুবী)।
অজুর ক্ষেত্রে পা না ধুয়ে মোজার উপর মাসেহ করার বিধানও রয়েছে। ‘মুসাফির’ (ভ্রমণরত) ব্যক্তি তিন দিন তিন রাত (৭২ ঘণ্টা) পর্যন্ত মাসেহ করে যেতে পারবেন এবং ‘মুকীম’ (সবাসে অবস্থানরত) ব্যক্তি এক দিন এক রাত (২৪ ঘণ্টা) মাসেহ করতে পারবেন। এ সময়সীমার পর অজুর প্রয়োজন হলে মোজা খুলে পা ধুয়ে অজু করতে হবে। অধিকাংশ মুজতাহিদ ফকীহ শুধু চামড়ার মোজার ওপর মাসেহ করাই অনুমোদন করেন। হজরত মুগিরা ইবনে শুবা (রা.) বর্ণনা করেন, রসূল (স.) কাপড়ের মোজা (জাওরাবাঈন) এবং জুতার উপরও মাসেহ করেছেন। (তিরমিজি: ৯৯; আবু দাউদ: ১৫৯)। এ হাদীসের ভিত্তিতে অন্যান্য মুজতাহিদ ফকীহগণ কাপড়ের মোজা ও পুরো পায়ের পাতা আবৃতকারী জুতার উপর মাসেহ করা অনুমোদন করেন।
প্রচন্ড শীতে কষ্ট হলে গরম পানি দিয়ে অজু করাতে কোনো বাধা নেই। অজুর পর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ মুছে ফেলাতেও সমস্যা নেই। শীতের তীব্রতা যদি কারও সহ্যের বাইরে চলে যায়, পানি গরম করে ব্যবহার করার সুযোগ না থাকে এবং ঠান্ডা পানি ব্যবহারে শারীরিকভাবে ক্ষতি হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা থাকে, তাহলে তিনি অজু বা গোসলের পরিবর্তে তায়াম্মুম করতে পারেন। (বায়হাকি, খন্ড: ১, হাদীস: ২২৬)।

শীতকালে গরম পোশাক পরিধান করা সুন্নাত। ওমর (রা.) তার শাসনামলে শীতের আগমন লগ্নে লিখতেন- ‘শীত কিন্তু এসে গেল, এ তোমাদের দেহের শত্রু। অতএব এর প্রতিরোধে পশমী বস্ত্র, মোজা, হাতমোজা ইত্যাদির প্রস্তুতি নাও। আর পশম দিয়ে গায়ের চামড়ায় এবং শরীরের পোশাকে শীতের আক্রমণ ঠেকাও। কারণ শীত খুব দ্রুত প্রবেশ করে, তবে সহজে বিদায় নেয় না।’

নেককার পুণ্যাত্মাগণ শীতের রাতগুলোয় সালাত ও জিকিরে রত হন। শীতকাল আগমন করলে উবাঈদ বিন উমাঈর (রা.) বলতেন- ‘হে কুরআনের ধারক! তোমাদের রাতগুলো তিলাওয়াতের জন্য প্রলম্বিত করা হয়েছে, অতএব তা পড়তে থাকো। আর রোজা রাখার জন্য তোমাদের দিনগুলো সংক্ষেপিত করা হয়েছে, তাই বেশি বেশি রোজা রাখো।’ কুরআনের ভাষায়, 'তারা রাতের সামান্য অংশই এরা ঘুমিয়ে কাটায়, আর রাতের শেষ প্রহরে এরা ক্ষমা চাওয়ায় রত থাকে।' (সূরা-৫১ জারিয়াত, আয়াত: ১৭-১৮)।

হজরত ওমর (রা.) তার ছেলেকে উদ্দেশ করে বলেন- ‘শীতের দিনে ভালোভাবে অজু করা বড় গুরুত্বপূর্ণ ও সওয়াবের কাজ।’ আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি (স.) বলেন- ‘আমি কি তোমাদের এমন কাজের কথা বলব না! যা দ্বারা গুনাহ মাফ হয় এবং মর্যাদা বৃদ্ধি হয়?’ সাহাবীগণ বললেন, অবশ্যই হে আল্লাহর রাসূল! তিনি বললেন, ‘মন না চাইলেও অজু করা, অধিক পদক্ষেপে মসজিদে যাওয়া এবং এক নামাজের পর আরেক নামাজের জন্য অপেক্ষা করা।’ (মুসলিম)।

লেখক: প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক, শেখ ছাদী (র.) ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ

টিটি/

Header Ad
Header Ad

ফাঁস হওয়া ফোনালাপের জেরে থাই প্রধানমন্ত্রী বরখাস্ত

থাই প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা। ছবি: সংগৃহীত

থাইল্যান্ডে রাজনৈতিক উত্তেজনা নতুন মোড় নিয়েছে। ফাঁস হওয়া এক ফোনালাপের জেরে দেশটির সংবিধানিক আদালত প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে। কম্বোডিয়ার সাবেক নেতা হুন সেনের সঙ্গে আলোচিত ওই কথোপকথনে পেতংতার্ন তাকে “চাচা” বলে সম্বোধন করেন এবং থাই সেনাবাহিনীর এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সমালোচনা করেন।

এই ফোনালাপ সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হলে জনমনে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ফলে তার অপসারণ দাবিতে একটি পিটিশন দায়ের করা হয়, যার প্রেক্ষিতে আদালত তার পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে। আদালতের নয়জন বিচারকের মধ্যে সাতজন বরখাস্তের পক্ষে রায় দেন। একই সঙ্গে তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য ১৫ দিনের সময় দেওয়া হয়েছে।

এ পরিস্থিতিতে উপ-প্রধানমন্ত্রী সুরিয়া জুংরুংরুয়াংকিত ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন।

এ ঘটনার মাধ্যমে থাই রাজনীতিতে প্রভাবশালী সিনাওয়াত্রা পরিবারের আরেক সদস্য ক্ষমতা হারানোর মুখে পড়লেন। পেতংতার্ন হতে যাচ্ছেন এই পরিবারের তৃতীয় সদস্য যিনি পূর্ণ মেয়াদ শেষ করার আগেই ক্ষমতা হারাবেন। এর আগে তার পিতা থাকসিন এবং ফুফু ইংলাক সিনাওয়াত্রা সামরিক হস্তক্ষেপে ক্ষমতা হারিয়েছিলেন।

পেতংতার্নের নেতৃত্বাধীন জোট সরকার ইতোমধ্যেই টালমাটাল অবস্থায় রয়েছে। দুই সপ্তাহ আগে একটি গুরুত্বপূর্ণ রক্ষণশীল মিত্র দল জোট ত্যাগ করেছে, ফলে সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর মুখে পড়েছে।

এই পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে, কারণ একই দিনে পেতংতার্নের পিতা, সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার বিরুদ্ধেও শুরু হয় রাজকীয় অবমাননার মামলা। অভিযোগ অনুযায়ী, তিনি নয় বছর আগে একটি দক্ষিণ কোরিয়ান সংবাদপত্রে রাজপরিবার সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করেছিলেন। বর্তমানে তিনি “লেসে মাজেস্তে” আইনের আওতায় বিচারাধীন।

থাকসিন থাইল্যান্ডের সবচেয়ে আলোচিত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের একজন। ১৫ বছর নির্বাসনে থাকার পর তিনি ২০২৩ সালে দেশে ফেরেন। তার ফেরার পেছনে রাজনৈতিক সমঝোতা কাজ করেছিল, যা হয়েছিল তার দল পিউ থাই পার্টি এবং সেনাবাহিনী ও রাজপরিবার ঘনিষ্ঠ রক্ষণশীল গোষ্ঠীর সঙ্গে।

 

থাই প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা। ছবি: সংগৃহীত

৩৮ বছর বয়সী পেতংতার্ন থাইল্যান্ডের ইতিহাসে দ্বিতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী এবং সবচেয়ে কমবয়সী প্রধান নির্বাহী। স্রেত্তা থাভিসিন বরখাস্ত হওয়ার পর তিনি প্রধানমন্ত্রী হন। তবে দায়িত্ব নেওয়ার শুরু থেকেই তিনি চাপে ছিলেন। দেশের দুর্বল অর্থনীতি চাঙ্গা করতে না পারায় জনপ্রিয়তা দ্রুত হ্রাস পায়—যেখানে মার্চে তার জনপ্রিয়তা ছিল ৩০.৯ শতাংশ, তা গত সপ্তাহে কমে দাঁড়ায় মাত্র ৯.২ শতাংশে।

ফাঁস হওয়া ফোনালাপের দায় স্বীকার করে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং বলেন, এটি ছিল সাম্প্রতিক সীমান্ত সমস্যা নিয়ে “কৌশলগত আলোচনা”। কিন্তু রক্ষণশীল রাজনীতিবিদরা বলছেন, এতে থাই সেনাবাহিনীর মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয়েছে এবং এটি ছিল কম্বোডিয়ার প্রতি অযথা নমনীয়তা।

সব মিলিয়ে থাইল্যান্ড এখন রাজনৈতিকভাবে একটি গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। পেতংতার্নের ভাগ্য নির্ধারণ করবে সংবিধানিক আদালতের চূড়ান্ত রায়, যা রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ ও উত্তেজনার জন্ম দিতে পারে।

Header Ad
Header Ad

স্বৈরাচার পতনে ১৬ বছর অপেক্ষা নয়, তাৎক্ষণিক প্রতিরোধ গড়ার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষার লক্ষ্যে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, "জুলাই শুধু একটি মাস নয়, এটি গণজাগরণ, ঐক্য ও গণতান্ত্রিক চেতনার প্রতীক। চলুন, সবাই মিলে এই জুলাইকে পরিণত করি গণজাগরণ এবং জাতীয় ঐক্যের মাসে।"

মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে মাসব্যাপী ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’ স্মরণ অনুষ্ঠানের উদ্বোধনে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করা হয় বাংলাদেশ টেলিভিশনে।

ড. ইউনূস আরো বলেন, স্বৈরাচার পতনের জন্য যেন ১৬ বছর অপেক্ষা করতে না হয়—এই লক্ষ্যেই কাজ চলছে। তিনি শক্ত কণ্ঠে বলেন, "আগামী দিনে কেউ যদি স্বৈরাচার হবার চেষ্টা করে, তাহলে জনগণ যেন সঙ্গে সঙ্গে তাদের পতন ঘটায়। কারণ যখন জনগণ রাস্তায় নামে, তখন কোনো শক্তিই তা থামাতে পারে না।"

তিনি জানান, আমরা ইতিহাস থেকে শিক্ষা গ্রহণ করছি যে, পথ যতই কঠিন হোক না কেন, জনগণের ঐক্য এবং গণজাগরণই শেষ পর্যন্ত বিজয়ী হয়। জুলাই আন্দোলনের মূল বিষয় ছিল—ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচার রুখে দিয়ে একটি নতুন বাংলাদেশ গঠনের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা। বর্তমান সরকারও সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে, যাতে আর কখনো স্বৈরাচার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে।

ড. ইউনূস স্মরণ করিয়ে দেন, ১৬ বছর আগে একটি ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বিদ্রোহ শুরু হয়েছিল। "আমরা তাৎক্ষণিকভাবে টার্গেট পূরণ করেছিলাম, কিন্তু মূল লক্ষ্য ছিল একটি নতুন রাষ্ট্রব্যবস্থার ভিত্তি নির্মাণ। আমাদের প্রত্যাশা, প্রতি বছর এই মাসটিকে স্মরণ করা হোক এবং স্বৈরাচারের ছায়া পড়লেই তাৎক্ষণিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা হোক।"

তিনি জুলাই আন্দোলনের সকল শহীদ ও অংশগ্রহণকারীর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, "মাসব্যাপী এই কর্মসূচি কেবল স্মৃতিচারণ নয়, এটি একটি নতুন শপথ—গণতান্ত্রিক অধিকারের প্রতি জনগণকে সচেতন করা, রাজনৈতিক দায়িত্ববোধ জাগানো এবং মুক্তির জন্য ত্যাগের স্মৃতি অমলিন রাখা।"

ড. ইউনূস আরও উল্লেখ করেন, "গত বছরের জুলাইয়ে দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়িয়েছে। সেই ঐক্য পুনরায় গড়ে তোলার সময় এসেছে। শিক্ষার্থীদের সাহসিক আন্দোলন আমাদের পথ দেখিয়েছে। চলুন এই জুলাইকে গণতন্ত্র রক্ষার নতুন প্রত্যয়ের মাস হিসেবে গড়ে তুলি।"

Header Ad
Header Ad

ক্লাব বিশ্বকাপে ম্যানসিটিকে কাঁদিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে আল হিলাল

ছবি: সংগৃহীত

ক্লাব বিশ্বকাপে এবার সবচেয়ে নাটকীয় ও রোমাঞ্চকর ম্যাচ উপহার দিল সৌদি আরবের ক্লাব আল হিলাল। সাত গোলের টান টান উত্তেজনার লড়াইয়ে ইংলিশ জায়ান্ট ম্যানচেস্টার সিটিকে ৪-৩ ব্যবধানে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালের টিকিট কেটেছে দলটি। মার্কোস লিওনার্দোর অতিরিক্ত সময়ের ১১২তম মিনিটে করা জয়সূচক গোলই সৌদি ক্লাবটিকে এনে দিয়েছে এই ঐতিহাসিক জয়।

ম্যাচের শুরুতে অবশ্য এগিয়ে গিয়েছিল সিটি। প্রথমার্ধে বার্নার্ডো সিলভার গোলে ১-০ ব্যবধানে লিড নেয় তারা। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে নাটকীয়ভাবে ম্যাচের মোড় ঘুরে যায়। আল হিলালের হয়ে মার্কোস লিওনার্দো ও ম্যালকম এবং সিটির পক্ষে এরলিং হালান্ডের গোলে ম্যাচ ২-২ সমতায় পৌঁছায়। এতে খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।

অতিরিক্ত সময়ের ৯৪তম মিনিটে হেডার থেকে গোল করে আল হিলালকে আবারও এগিয়ে দেন কালিদু কুলিবালি। কিন্তু ১০৪ মিনিটে ফিল ফোডেন গোল করে আবারও সিটিকে সমতায় ফেরান। তবে ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেন সেই মার্কোস লিওনার্দোই, যিনি ১১২ মিনিটে রিবাউন্ড থেকে গোল করে ৪-৩ ব্যবধানে আল হিলালকে এনে দেন অবিশ্বাস্য এক জয়।

ম্যাচ শেষে হতাশ সিটি কোচ পেপ গার্দিওলা বলেন, “আমরা অনেক সুযোগ তৈরি করেছিলাম, কিন্তু আজকের রাতটি ছিল আল হিলালের।” অন্যদিকে ম্যাচসেরা লিওনার্দো বলেন, “এটা আমার ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা মুহূর্ত।”

এই জয়ের ফলে আল হিলাল এখন কোয়ার্টার ফাইনালে মুখোমুখি হবে ব্রাজিলিয়ান ক্লাব ফ্লুমিনেন্সের। ক্লাব বিশ্বকাপে সৌদি আরবের প্রতিনিধি হিসেবে তাদের এমন সাফল্য দেশটির ফুটবলের জন্য একটি নতুন ইতিহাস রচনা করেছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

ফাঁস হওয়া ফোনালাপের জেরে থাই প্রধানমন্ত্রী বরখাস্ত
স্বৈরাচার পতনে ১৬ বছর অপেক্ষা নয়, তাৎক্ষণিক প্রতিরোধ গড়ার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
ক্লাব বিশ্বকাপে ম্যানসিটিকে কাঁদিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে আল হিলাল
যে বিশেষ গুণেই তাপসের হৃদয়ে জায়গা করে নেন বুবলী!
আগামী বছরের শুরুতেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ড. ইউনূস
বিসিবি সভাপতির উপদেষ্টা পদে থাকছেন না সামি, জানালেন কারণ
বছর ঘুরে ফিরল গণঅভ্যুত্থানের জুলাই
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৬ কোটি ১০ লাখ টাকার বাজেট পাস
সরকারি চাকরিতে ৪ লাখ ৬৮ হাজার পদ খালি
পুলিশ পরিচয়ে ব্যবহার করা যাবে না সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম: আরপিএমপি কমিশনার
ভোলায় চাঁদা না পেয়ে স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ
টাঙ্গাইলের নির্ধারিত স্থানে মডেল মসজিদ নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন (ভিডিও)
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ফোনালাপ
চুয়াডাঙ্গায় ট্রেন থেকে ফেলে পাউবো কর্মচারীকে হত্যা, পরিবারের মামলা
দেশে নতুন করে আরও ২১ জনের করোনা শনাক্ত
ঢাকার প্রতিটি ভবনের ছাদে সৌর প্যানেল বসানোর নির্দেশ হাইকোর্টের
লুঙ্গি পরে রিকশায় প্যাডেল মেরে ঢাকা থেকে বিদায় নিলেন জার্মান রাষ্ট্রদূত
ইসরায়েলের ৩১ হাজারেরও বেশি ভবন গুঁড়িয়ে দিয়েছে ইরান (ভিডিও)
ইরানের সাথে আলোচনা করছি না, তাদের কিছু দিচ্ছিও না: ট্রাম্প
আসিফ মাহমুদের অস্ত্রের লাইসেন্স নিয়ে প্রশ্ন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বললেন ‘আইনটা দেখিনি’