
বিজ্ঞান-তথ্যপ্রযুক্তি
কেন পড়ে গেল মুভিপাস?

আমরা হয়তো ‘মুভিপাস’র দিকে তাকিয়ে থাকতে, থাকতে ভাবতে পারি যে, ২০১৮ সালে হওয়া একটি সমঝোতা চুক্তি হলে আজকে খুব ভিন্ন পথ ধরতে পারত। এই বিষয়ে মুভিপাসের সাবেক সিইও মিচ লো তার বই ‘ওয়াচ অ্যান্ড লার্ন : হাউ আই টানর্ড হলিউড আপসাইড ডাউন উইথ নেটফ্লিক্স, রেডবুক অ্যান্ড মুভিপাস’-এ প্রকাশ করেছেন, যখন সিনেমা টিকেট কেনার এই কার্ডের সেরা সময় ছিল, হলিউডের প্রধান নির্বাহী আরি এমানুয়েল চেয়েছিলেন, তার কম্পানি ডব্লুএমই (উইলিয়াম মরিস এন্ডেভর) এই স্টার্টআপের একটি প্রধান অংশের মালিকানা লাভ করুক।
মিচ লোর বইটি ৬ সেপ্টেম্বর সবার কাছে যাবে।
‘আরি এবং আমি ন্যায্যভাবে নিয়মিত আলোচনা সভা শুরু করলাম ও আমি কৌশলগত কারণে কৌশলী হয়ে কয়েক ডজন ফোন করলাম তাকে। যাতে আলোচনা হয়, তার কয়েক বিলিয়ন ডলার দামের এজেন্সিতে আমরা কীভাবে মিশ্রিত হতে পারি। তিনি এমনকি আমার সঙ্গে তার পুরো প্রতিষ্ঠান নিয়ে আলোচনা করেছেন। তাতে তাদের প্রতিষ্ঠানের আমাদের কম্পানিটিকে অন্তভুক্ত করার স্বক্ষমতা সম্পর্কে ভালোভাবে বুঝতে পেরেছি’-নিজের বইতে লিখেছেন তিনি।
তারা দুজনে চুক্তি সম্পাদনের প্রায় প্রান্তে চলে গিয়েছিলেন।
লো আরো বলেছেন, “মাতৃপ্রতিষ্ঠান ‘হিলিয়স অ্যান্ড ম্যাথেসন অ্যানালিটিকস’র সিইও টেড ফার্নসওর্থ খুবই কঠিনভাবে আলোচনা করেছিলেন বলে এমানুয়েল এই আলোচনা থেকে সরে গিয়েছিলেন।”
‘আমি প্রস্তাবটি গ্রহণ করতে প্রস্তুত হয়েছিলাম কিন্তু টেড কয়েক মিলিয়ন ডলার নগদ চেয়েছিলেন। এই কাজটি করতে চাননি এমানুয়েল। কয়েক মাস আলোচনার পর অবশেষে এই চুক্তিটি বাতিল হয়ে গেল’-তিনি তার বইতে আরো বলেছেন।
তবে এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি টেড ফার্নসওর্থ।
এক বছর পর মুভি পাস বন্ধ হয়ে গেল এবং ২০২০ সালে মূল প্রতিষ্ঠান হিলিয়স অ্যান্ড ম্যাথেসন অ্যানালিটিকস দেউলিয়া ঘোষণা করার জন্য আবেদন জমা দিল।
সম্প্রতি ইনসাইডারের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে লো জানিয়েছেন, তিনি অনুভব করেছিলেন যে, ডব্লুএমই’র সঙ্গে চুক্তি হলে মুভিপাস বেঁচে থাকত।
“আমি জানি না কীভাবে এই মহামারি রোগটি মুভিপাসকে আক্রান্ত করত কিন্তু অবশ্যই এই প্রভাবের মধ্যেও চুক্তিটি হলে তা কাজ করত। আমি এই বইতে পরিচালকরা ও অন্যান্য যেসব ব্যক্তি সিনেমা ব্যবসায় যুক্ত আছেন, তারা যে উপলব্ধি করেছিলেন, মুভিপাস তাদের লাভ আনতে সাহায্য করত, তাদের কথা উল্লেখ করিনি। আর ডব্লুএমই হলো এমন একটি প্রতিষ্ঠান, যারা নিদিষ্ট অর্ধেকের বেশি তারকা ও পরিচালকের প্রতিনিধিত্ব করে। ফলে এই দিক বিবেচনা করেও চুক্তিটি অবশ্যই হওয়া প্রয়োজন ছিল। এজন্য সবকিছু করেছি। কত টাকা দামে হচ্ছে সেটিও আমি বিবেচনা করিনি। চুক্তি হলে আমরা এএমসি (আমেরিকান নেটওয়ার্ক, তাদের টিভি ‘কেবল টিভি এএমসি’)’র মতো প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে যে প্রতিরোধগুলোর মোকাবেলা করছিলাম এবং ব্যক্তিদের যে ব্যবসায় বাধার মধ্যে পড়ছিলাম, তার সবই পেছনে ফেলতে পারতাম। তাতে আমাদের অবিশ্বাস্য একটি ভবিষ্যত গড়ে উঠত”-তিনি বলেছেন।
আরো বলেছেন, ‘আমার মনে আছে আমাকে আরি এমানুয়েল বলেছিলেন, কোনো কিছু নিয়েই ভয় পাবেন না। আমরা এমন একটি জায়গায় যেতে চলেছি, যাতে সফল হলে সবকিছু কাজ করলে খাদের কিনারা থেকে মুভিপাসের শেয়ারহোল্ডারদের বের করে আনা সম্ভব হবে। তবে কিছু জায়গায় এই শর্তগুলো কাঠামোতে ফেলা কঠিন ছিল। ক্রেতারা প্রায়ই চালকের আাসনে থাকেন এবং স্থাপন করা মাইলফলকগুলো সম্পন্ন করাও কঠিন ছিল। তবে আমি মনে করি, সব ধরণের প্রতিরোধ ও অসুবিধাগুলো থেকে চুক্তিটি আমাদের বেরিয়ে আসার পথ ছিল।’
এই বিষয়ে ইনসাইডারকে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি আরি এমানুয়েল।
গেল বছরের শেষের দিকে মুভিপাসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা স্টেইসি স্পাইকস তার প্রতিষ্ঠানটিকে ফিরিয়ে এনেছেন। আমেরিকার লেবার ডে’র শুরু থেকে তিনি সেবাটি বেটাতে আবার চালু করেছেন। মুভিপাসকে তিনি ডালাস, কানসাস সিটি ও শিকাগোতে সবার নাগালে এনেছেন। সেবাপ্রদানের কার্ড সাভিসকে সামনের মাসগুলোতে আরো বিস্তৃত করবেন আরো শহরে-এই পরিকল্পনাও করেছেন।
ওএফএস।