
ব্যাংকিং খাত সংস্কারে রাজনৈতিক সদিচ্ছা জরুরি
২৬ জানুয়ারি ২০২৩, ১২:৫১ পিএম | আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০২৩, ১২:৫০ পিএম

আমি মনে করি, সর্বোতভাবে আমাদের অবস্থা হলো, মূল্যস্ফীতি, রিজার্ভ কমে যাওয়া, রপ্তানি বাণিজ্য সংকোচন, মোটামুটিভাবে মন্থরগতিতে এগোচ্ছে দেশের অর্থনীতি। আমরা দেখছি সবদিকেই তার প্রতিফলন হচ্ছে। এমনকি অন্যান্য দেশেও তা হচ্ছে।
আমাদের জন্য সমস্যা হলো, আমাদের কাঠামোগত দিক, যেমন ব্যাংকিং খাতে সংস্কার জরুরি। এটি সমাধান করতে না পারলে খুব ফলপ্রসূ কিছু আশ করা যাবে না। অতএব, সহসা সবকিছুর সমাধান হয়ে যাবে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও নীতি নির্ধারকরা যা ভাবছেন তা সঠিক নয়।
দ্বীতিয়ত, আমাদের বৈদেশিক বিনিয়োগ যে খুব একটা হচ্ছে তা নয় এবং এখান থেকে সুফল আসার সম্ভাবনাও খুব একটা নেই। অন্যদিকে চায়না স্লো ডাউন হয়েছে। আমাদের সবদিক থেকেই অর্থাৎ আমাদের বহিঃবাণিজ্য এবং অভ্যন্তরীণ উৎপাদন উভয়ই দিন দিন সংকোচিত হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে অর্থের যোগান দেবে, সেটি বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারের যে মেগা প্রকল্প আছে, অর্থাৎ সেসব পাবলিক সেক্টরে যাবে। অর্থাৎ পণ্য উৎপাদন বেশি হবে না। সেক্ষেত্রে মূল্যস্ফীতি যে কমে যাবে সেটি ভাবারও অবকাশ নেই। আমাদের ধানের মৌসুম আছে, উৎপাদন ক্ষেত্রে সেটি অবশ্য কিছুটা ভালো প্রভাব রাখতে পারে।
আমি মনে করি, সবকিছু মিলিয়ে যেভাবে কর্ম তৎপরতাগুলো নেওয়া দরকার ছিল, বিশেষ সময়ে বিশেষ কার্যক্রম সেটিও খুব একটা আশাব্যাঞ্জক হয়নি। সেখানে যে খুব গতি সঞ্চালিত হয়েছে সেটিও নয়। কাজেই অর্থনীতি খুব সহজেই ভালো হবে এমন কিছু আশা করা ঠিক হবে না।
বাংলাদেশ ব্যাংক যদিও বাৎসরিক প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৭ শতাংশ বললেও বিশ্বব্যাংক বলছে ৫ দশমিক ২৫শতাংশের বেশি হবে না। আএমএফের প্রতিনিধি সফর শেষে তিনিও বলে গেলেন যে, সংস্কারগুলো জরুরি। তা না হলে ভালো কিছু আশা করা সমীচীন হবে না। সেক্ষেত্রে আমাদের রাজনৈতিক সদিচ্ছা খুবই জরুরি। তা না হলে যেমন চলছে, চলবে অথবা এমনিতেই সব ঠিক হয়ে যাবে, এই ধারণাগুলোই ঠিক নয়।
বিশ্বব্যাংকের এমডি আর্থিকখাতে কাঠামোগত সংস্কার, ভ্যাট ব্যবস্থা ও কর ব্যবস্থার সংস্কার, রপ্তানি আয় বাড়াতে পণ্যের বহুমুখীকরণ, অবকাঠামো খাতে উন্নয়ন নিশ্চিত এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় মনোযোগ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের উন্নয়নে বিশ্বব্যাংকের থেকে অর্থায়ন দেওয়া হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন। এ ছাড়া টেকসই অর্থনীতি নিশ্চিতে বেসরকারি খাতে নীতি সহায়তা অব্যাহত রাখার কথাও জানান তিনি।
অন্যান্য দেশগুলো কিন্তু মোটামুটি অর্থনৈতিক স্ট্যাবিলিটি বজায় রাখতে চেষ্টা করছে। উদাহরণ হিসেবে ভারতের কথা বলা যেতে পারে। মূল্যস্ফীতি অথবা রিজার্ভ উভয় ক্ষেত্রেই একটি ইতিবাচক অবস্থানে আছে। সেদিক বিবেচনায় নেপাল পাকিস্তান ও শ্রীলংকার অবস্থা বেশ খারাপ। আমাদের অবস্থা ততটা খারাপ না হলেও কিন্তু আমরা আশা করতে পারি না যে, সবকিছু খুব দ্রুত ঠিক হয়ে যাবে। আপাত দৃষ্টিতে আমরা যত ভালো বলি না কেন তার বাস্তবায়ন অর্থাৎ বাস্তবক্ষেত্রে তার প্রয়োগ না হলে কোনো লাভ হবে না। কাজেই সঠিক বাস্তবায়ন করে দেখাতে হবে। সেটি যে শুধু বাংলাদেশ ব্যাংক করবে তা নয়। এখানে একটু সমন্বয় করতে হবে।
এখন যেটি প্রতীয়মান হচ্ছে, নির্বাচনের দিকে সবার দৃষ্টি। তবে নির্বাচনকে ঘিরেই যে সবকিছু আবর্তিত হবে, সেটি কিন্তু ঠিক নয়। ইতিবাচক আশ্বাস থাকা ভালো। তবে আমি বলব শুধু ইতিবাচক কথা নয় অর্থনীতি রেমিট্যান্স রিজার্ভ পুনরায় স্থিতিশীল করতে কথা ও কাজের সঠিক বাস্তবায়নটুকু জরুরি।
ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ: সাবেক গভর্নর, বাংলাদেশ ব্যাংক।
এসএন

খালেদা জিয়াকে নিয়ে তুরস্কের গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ
০২ অক্টোবর ২০২৩, ০৮:৪৯ পিএম | আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০২৩, ০৯:৫১ এএম

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে তুরস্কের গণমাধ্যম। দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আনাদুলু এজেন্সি ‘বিরোধীদলীয় নেতাকে বিদেশে চিকিৎসা নিতে বাধা দিচ্ছে বাংলাদেশ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
সোমবার (২ অক্টোবর) প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, বিরোধীদলীয় নেত্রী ও দুইবারের প্রধানমন্ত্রী অসুস্থ খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে বাধা দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
প্রতিবেদনে চিকিৎসকদের বরাতে বলা হয়, গত ৯ আগস্ট থেকে ঢাকার একটি হাসপাতালে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে চিকিৎসাধীনে রয়েছেন ৭৮ বছর বয়সী খালেদা জিয়া।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে ফরোয়ার্ড করা আপিলকে ‘না’ জানিয়ে বলেছেন, মন্ত্রণালয় বিদ্যমান আইন অনুযায়ী তাকে বিদেশ ভ্রমণের অনুমতি দিতে পারে না। সরকারের আইনগত অনুমতি দেওয়ার সুযোগ নেই। সব কাজ আইনি কাঠামো অনুযায়ী করতে হবে। আইনকে বাইপাস করা, যে কোনো ক্ষেত্রেই একটি খারাপ উদাহরণ তৈরি করে।
প্রতিবেদনে বলা আরও বলা হয়, ৭৮ বয়সী বেগম জিয়া বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন গত ৯ আগস্ট থেকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এবং উচ্চ লিভার সিরোসিস, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ এবং শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন।
প্রতিবেদনে গত শনিবার ভয়েস অব আমেরিকায় প্রচারিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকারের কথা উল্লেখ করে বলা হয়, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিদেশে চিকিৎসার অনুমোদন নেওয়ার আগে খালেদা জিয়াকে অবশ্যই কারাগারে ফিরে যেতে হবে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়, জিয়ার দল অবশ্য তার বিরুদ্ধে আদালতের রায় প্রত্যাখ্যান করেছে এবং খালেদা জিয়াকে তার অবস্থা গুরুতর উল্লেখ করে অবিলম্বে বিদেশে পাঠানোর দাবি জানিয়েছে।
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেনের বরাতে বলা হয়, খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ড লিভার ট্রান্সপ্লান্টের সুপারিশ করেছে এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাকে বিদেশে একটি উন্নত মাল্টি-ডিসিপ্লিনারি সেন্টারে পাঠানো দরকার।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের বিধবা স্ত্রী দুর্নীতির দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। কোভিড মহামারি চলাকালে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ, বর্তমান সরকার তাকে একটি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে বাড়িতে থাকা এবং দেশ ছেড়া যাবে না এই দুই শর্তে মুক্তি দেওয়া হয়।

রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প অনুভূত
০২ অক্টোবর ২০২৩, ০৭:৩৯ পিএম | আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০২৩, ০৯:৫৩ এএম

রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। আজ সন্ধ্যা ৬টা ৪৭ মিনিটে এ ভূমিকম্প অনুভূত হয়। তাৎক্ষণিকভাবে এতে ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
এই ভূমিকম্পের উৎসস্থল ভারতের মেঘালয় রাজ্য। আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৩।
গত সেপ্টেম্বর মাসে তিনবার দেশে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এর মধ্যে গত ১৭ সেপ্টেম্বর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ২। এর উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকা থেকে ৫৯ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে টাঙ্গাইলে।
এর আগে ১১ সেপ্টেম্বর সিলেট অঞ্চলে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এর উৎপত্তিস্থল ছিল ভারত–মিয়ানমার সীমান্ত। এ ছাড়া ৯ সেপ্টেম্বর আরেকটি ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এর উৎপত্তিস্থল ছিল ভারতের আসামের কাছাড় এলাকা।
আগস্ট মাসে দুই দফায় বাংলাদেশে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এর মধ্যে একটি অনুভূত হয় ২৯ আগস্ট। এর উৎপত্তিস্থল ছিল সিলেট। এর আগে ১৪ আগস্ট আরেকবার ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এর কেন্দ্রস্থল ছিল বাংলাদেশ–ভারত সীমান্তবর্তী সিলেটের কানাইঘাট এলাকায়।

কোভিড-১৯ টিকার জন্য চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পেলেন দুই বিজ্ঞানী
০২ অক্টোবর ২০২৩, ০৪:২৬ পিএম | আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০২৩, ০৯:৫৩ এএম

চিকিৎসাবিজ্ঞানে অবদান রাখায় এ বছর নোবেল পুরস্কার জিতলেন কাতালিন ক্যারিকো ও ড্র ওয়াইজম্যান। সুইডেনের নোবেল অ্যাসেমব্লি অ্যাট ক্যারোলিনস্কা ইন্সটিটিউট সোমবার (২ অক্টোবর) বাংলাদেশ সময় বিকাল ৩টা ৪৫ মিনিটে তাদের নাম ঘোষণা করে।
নোবেল পুরস্কারের ওয়েবসাইটে জানানো হয়, নিউক্লিওসাইড বেজ মডিফিকেশন সংক্রান্ত আবিষ্কারের জন্য চিকিৎসায় ২০২৩ সালের নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়েছে কাতালিন কারিকো ও ড্রু ওয়েইজম্যানকে। তাদের এ আবিষ্কারের ওপর ভর করে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে কার্যকর এমআরএনএ টিকা উদ্ভাবন করা হয়।
১৯০১ সাল থেকে চিকিৎসায় নোবেল পুরস্কার দেয়া হচ্ছে। এ যাবত ১২ জন নারী চিকিৎসায় নোবেল পেয়েছেন।
চিকিৎসায় সর্বকনিষ্ঠ নোবেলজয়ী হরেন ফ্রেডরিক জি. ব্যান্টিং। তিনি ইনসুলিন আবিষ্কারের জন্য ১৯২৩ সালে নোবেল পেয়েছিলেন। চিকিৎসায় সবচেয়ে বেশি বয়সী নোবেলজয়ীর নাম পেটন রৌস। তিনি ৮৭ বছর বয়সে এ পুরস্কার পান।
সুইডিশ বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেলের নামে ও তার রেখে যাওয়া অর্থে ১৯০১ সাল থেকে নোবেল পুরস্কার দেয়া শুরু হয়। প্রতি বছর চিকিৎসা, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, সাহিত্য, শান্তি ও অর্থনীতিতে দেয়া হয় বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ এই পুরস্কার। ১৮৯৫ সালে এক উইলে ‘মানবজাতির সর্বোচ্চ সেবায় অবদান রাখা’ ব্যক্তিদের জন্য এই পুরস্কার নিবেদিত করেছেন তিনি।
নোবেল পুরস্কারের মধ্যে চিকিৎসাশাস্ত্রের পুরস্কারটি সোমবার সুইডেনের স্টকহোমে ঘোষণা করা হয়। মঙ্গলবার ঘোষণা করা হবে পদার্থবিজ্ঞানের পুরস্কার। বুধবার রসায়ন ও বৃহস্পতিবার ঘোষণা করা হবে সাহিত্যের পুরস্কার।
আগামী শুক্রবার অসলো থেকে ঘোষণা করা হবে বহুল কাঙ্ক্ষিত নোবেল শান্তি পুরস্কার। আর অর্থনীতির পুরস্কারটি ঘোষণা করা হবে ৯ অক্টোবর।