ছাত্রীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় ধরা রাবি শিক্ষক, ভিডিও ভাইরাল

ছাত্রীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় ধরা রাবি শিক্ষক। ছবি: সংগৃহীত
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক সহযোগী অধ্যাপক ছাত্রীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় ধরা পড়ার ঘটনায় শিক্ষাঙ্গনে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনার একটি ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে, যা নিয়ে শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা।
ঘটনাটি ঘটে রোববার (১২ মে) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকার সময়। শিক্ষার্থীদের দাবি, সেদিন বিকেল ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অ্যাকাডেমিক ভবনের ৩০৭ নম্বর কক্ষে এক ছাত্রীকে নিয়ে প্রবেশ করেন ফাইন্যান্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহ। এরপর তিনি কক্ষের বৈদ্যুতিক বাতি বন্ধ করে দেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কিছু শিক্ষার্থী কক্ষে গিয়ে দরজায় নক করেন। দীর্ঘ সময় পর দরজা খুলে দেওয়া হয়।
কক্ষে প্রবেশ করে তারা দেখেন, ছাত্রীটির হিজাব এবং ওড়না ছিল না। তার ব্যাগ, সেফটিপিনসহ বেশ কিছু ব্যক্তিগত সামগ্রী শিক্ষকের টেবিলে ছড়িয়ে ছিল। পাশে একটি বালিশও পড়ে থাকতে দেখা যায়। এ সময় কিছু শিক্ষার্থী মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করেন। ভিডিওতে দেখা যায়, শিক্ষক নিজেই ওই ছাত্রীর মাথায় একটি রুমাল দিয়ে ঢাকার চেষ্টা করছেন। তখন শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন তোলেন, কেন তিনি রুমাল পরাচ্ছেন? উত্তরে হেদায়েত উল্লাহ বলেন, “সে মেয়ে মানুষ, তাই।”
জানা গেছে, ওই ছাত্রী ফাইন্যান্স বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী এবং বেগম খালেদা জিয়া হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। তিনি স্নাতকে (বিবিএ) ভালো ফলাফল অর্জন করেছিলেন এবং বর্তমানে স্নাতকোত্তরে (এমবিএ) অধ্যয়নরত।
অভিযুক্ত শিক্ষক মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থী শিক্ষক সংগঠন ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ’-এর সক্রিয় সদস্য। কোটা আন্দোলনের সময় ছাত্র আন্দোলনের বিরোধিতায় আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের নানা কর্মসূচিতে তার অংশগ্রহণ ছিল।
এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহর মোবাইলে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
ফাইন্যান্স বিভাগের বর্তমান সভাপতি অধ্যাপক মো. শিবলী সাদিক বলেন, “এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তবে তার বিরুদ্ধে এর আগে এক ছাত্রী যৌন হয়রানির অভিযোগ দিয়েছিল। তখন বিভাগের সাবেক সভাপতি বিষয়টি বসে মীমাংসা করে দিয়েছিলেন।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মাহবুবর রহমান বলেন, “আমি এ বিষয়ে অবগত নই। কেউ এখনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি। তবে অভিযোগ পেলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, “আমি ঘটনাটি শুনেছি, তবে এখনো বিস্তারিত জানি না। আমি খোঁজ নিচ্ছি এবং বিষয়টি যাচাই করে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেব।”
