রবিবার, ৫ মে ২০২৪ | ২১ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-৩০

আলেক্সান্দ্রিয়ায় আমাদের রাত্রিবাসের জন্যে সৌরভ আগে থেকেই হোটেল লে মেট্রোপলে বুকিং দিয়ে রেখেছিল। সাগর তীরের পায়ে চলার পথ থেকে নেমে রাস্তা পার হয়ে একটা ছোট পার্কের পাশ দিয়ে হেঁটে আমরা হোটেলে পৌঁছালাম। কয়েকটা সিঁড়ি ভেঙে লে মেট্রোপলে ঢুকেই বুঝলাম আমরা একটি প্রাচীন অভিজাত অতিথিশালায় ঢুকে পড়েছি। 

রিসেপশনের অংশটুকু দেখে শুধু অভিজাত না বলে বলা যায় রাজকীয়! রানা ভাইকে সে কথা বলতেই তিনি বললেন, ‘আসলেই তো আমরা কিং ফারুকের রয়্যাল গেস্ট হাউসের অতিথি।’ চারিদিকে তাকিয়ে দেখি দামি কাঠের টেবিলে শোভা পাচ্ছে শ্বেতপাথরের ভেনাসের মূর্তি, পরী-শিশুদের হাতের বাতিদানে জ্বলছে শ্বেতশুভ্র গোলক। উপর থেকে নেমে এসেছে স্ফটিকের ঝাড়বাতি, দেয়ালে দেয়ালে ঝুলছে প্রাচীন পেইন্টিং, সিলিংয়ের নিচেই দেয়ালে সোনালি কারুকাজ এবং সুদৃশ্য ভারী পর্দা আলোর প্রবেশাধিকার সীমিত করে ঘিরে রেখেছে বাইরের দিকের কাচের দেয়াল। তবে যে জিনিসটি সবচেয়ে বেশি মনোযোগ আকর্ষণ করেছে, তা হলো এই ভবনে উপরে ওঠার লিফট!

হোটেল মেট্রোপলের রিসেপশন

প্রাগৈতিহাসিক যুগের ঊর্ধ্বমুখী উত্তোলনের এই বাহন দেখেই অনুমান করা যায় লিফট ব্যবহারে পুরোনো দিনের রাজা বাদশাদের চেয়ে আমরা এ যুগের সাধারণ মানুষও অনেক ঝামেলাহীন জীবন পার করছি। লে মেট্রোপলের লিফটে ওঠার অভিজ্ঞতা ভীতিকর এবং এর পরিচালনা পদ্ধতি যথেষ্ট জটিল। একজন লিফটম্যান অবশ্য সার্বক্ষণিক দরজায় দাঁড়িয়ে থাকেন। দরজার বাইরে দাঁড়ানো ছাড়া কোনো উপায় নেই, কারণ চারজনের বেশি যাত্রীর একসঙ্গে সেই বাহনে স্থানসংকুলান হয় না।

লিফটটি চলার প্রস্তুতি হিসেবে একটি সোনালি ধাতব গেট টেনে দেবার পরে আরও একটি লোহার দরজা বন্ধ করে সিন্দুকের হাতলের মতো হাতল চেপে দিতে হয়। তারপরে কারুকাজ করা ফ্রেমে বাঁধানো বোতাম টিপে উপরে ওঠার ব্যবস্থা! ইষ্ট নাম জপতে জপতে তিনতলায় উঠে কার্পেট পাতা লম্বা করিডোর পেরিয়ে ঘরের দরজায় পৌঁছলাম। সারা পৃথিবীর আধুনিক হোটেলে কার্ডের চাবি চালু হলেও এখানে সেই প্রাচীনকালের ধাতব চাবি ঘুরিয়ে ঘরে ঢুকে দেখলাম বাদশাহ ফারুক তার ভবিষ্যতের অতিথিদের জন্যে এখানেও বাদশাহী এন্তেজাম করেই রেখেছেন।

খাট পালঙ্ক, চেয়ার টেবিলসহ আসবাবপত্র ও দরজা জানালায় সেই রাজকীয় বিত্ত বৈভবের আভাস। ঘরের মেঝে তো বটেই দেয়ালগুলোও চিত্রিত কার্পেটে মোড়া। সত্যি বলতে কী, রাজকীয় পরিবেশে অনভ্যস্ত আমার রীতিমতো অস্বস্তি লাগে। অনেক নামিদামি পাঁচতারা আধুনিক হোটেলে যে সমস্যা কখনো অনুভব করিনি তেমন এক ধরনের দম আটকানো অবস্থা থেকে দরজার ভারী পর্দা সরিয়ে ব্যালকনিতে বেরোতেই এক ঝলক বাইরের বাতাস ঘরে ঢুকে পড়ল। বাঁয়ে অল্প দূরেই নীল সমুদ্র আর সামনে কোলাহল মুখর শহরের একটি চত্বর ঘিরে যানবাহনের ব্যস্ত চলাচল। লাঞ্চের সময় পার হয়ে যাচ্ছে বলে খুব বেশিক্ষণ ব্যালকনিতে দাঁড়ানো হলো না। রানা ভাই দরজায় নক করে ১৫ মিনিটের মধ্যে ছয়তলার উপরে রুফটপ রেস্টুরেন্টে চলে আসতে বললেন। আমি ঘরে ঢুকে বিছানায় পড়েই ঘুমিয়ে গেলাম।

ব্যালকনি থেকে সমুদ্র

মিশরীয় রাজতন্ত্রের শেষ সম্রাট বাদশাহ ফারুকের দেড় যুগের রাজত্বকাল ১৯৫২ সালে এক রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানের ভেতর দিয়ে শেষ হলে শিগগিরই গামাল আবদেল নাসের দেশটিকে প্রজাতন্ত্র ঘোষণা করে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হিসাবে ক্ষমতা আসেন। পনের বছরের শাসনকালে সোভিয়েত ইউনিয়নের সহযোগিতায় আসোয়ান বাঁধ নির্মাণের মধ্য দিয়ে মিশরের অর্থনীতিতে নতুন প্রাণ সঞ্চারের পরপরই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে নাসেরের মৃত্যু হলে বৃটিশ তাড়ানো স্বাধীন মিশরের উন্নয়ন অনেকটাই স্তিমিত হয়ে যায়।

পরবর্তী সময়ে নামে অ্যারাব রিপাবলিক অব ইজিপ্ট হলেও নাসেরের পর থেকে আনোয়ার সাদাত কিংবা হুসনী মোবারক থেকে আবদেল ফাতাহ এল সিসি পর্যন্ত রাজনৈতিক পট-পরির্তনের দিকে চোখ রাখলে বোঝা যায় মিশরের প্রজাতন্ত্র আসলে গত ষাট বছর ধরেই সামরিক বাহিনী সমর্থিত স্বৈরতন্ত্র, বিরোধী মতবাদীদের দমন নিপীড়ন এবং আমলাতান্ত্রিক দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার বাইরে প্রায় কখনোই জনগণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হয়ে ওঠেনি। পাকিস্তানের ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খানের শাসনামলের মতোই বর্তমান মিশরে চলছে লৌহমানব ফিল্ড মার্শাল এল সিসির সামরিক-গণতান্ত্রিক শাসন।

নগরীর রেস্তোরাঁ

ঘুমটা খুব তাড়াতাড়ি ভেঙেছিল বলে দ্রুত উঠে সেই ভয়ঙ্কর লিফটে না উঠে সিঁড়ি দিয়ে ছয় তলার উপরে ছাদ রেস্তোরাঁয় পৌঁছালাম।  টেবিলে বসে সমুদ্র দর্শনের উদ্দেশ্যে দীর্ঘ দুই সারিতে পাতা টেবিলের খোলা দিকে বসেছিলাম। দৃশ্য চমৎকার ও বাইরে যথেষ্ট রোদের তাপ থাকলেও সমুদ্রের ঠান্ডা বাতাস কিছুক্ষণের মধ্যেই কাঁপ ধরিয়ে দিল। পরিবেশকদের একজন এসে গাড়ির কাচ নামানোর মতো ট্রান্সপারেন্ট শিল্ড নামিয়ে দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ থেকে রক্ষা করলে আমরা ফারুক সাহেবের রাজকীয় ভবনের রেস্তোরাঁয় বসে আলোচনা করছিলাম ভাগ্যহত বাদশা ফারুকের কথা।

ইতালিতে নির্বাসিত জীবনযাপনের সময় ভ্যাটিকান সিটির কাছে একটি ফরাসি রেস্তোরাঁয় এক গ্রান্ড পার্টিতে ভেড়ার ঠ্যাং চিবিয়ে খাওয়ার সময় হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মাত্র পঁয়তাল্লিশ বছর বয়সে ফারুকের মৃত্যু হয়। দু দুবার বিবাহ বিচ্ছেদের পরে তখন তার সঙ্গে ছিলেন স্বর্ণকেশী এক ইতালিয় সুন্দরী। মিশর ও সুদানের এক সময়ের একচ্ছত্র অধিপতি বেচারা ফারুকের এই মৃত্যু সম্ভবত তার চার পুত্র-কন্যা ছাড়া আর কাউকেই শোকাভিভূত করেনি।

কথা ছিল লাঞ্চের ঘণ্টাখানেক পরে নগর দর্শনে বেরিয়ে পড়ব। কিন্তু ঘুমিয়ে না পড়লেও রাজকীয় শয্যায় শুয়ে গড়াগড়ি করে দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়ে গেল। ধীরে সুস্থে ঘরে বসেই চা বানিয়ে খেয়ে সাহস করে লিফটে চেপে নিচে নেমে এলাম। লে মেট্রোপল চারতারা হোটেল হলেও সুইমিংপুল ও পার্কিংয়ের ব্যবস্থা হোটেলের বাইরে খানিকটা দূরে। কাজেই সেই পার্কিং থেকে গাড়ি নিয়ে আসতেও খানিকটা সময় গেল।

স্টেইনলি ব্রিজ

শেষ পর্যন্ত সৌরভ যখন স্টিয়ারিং হুইলে হাত রেখে আলেক্সান্দ্রিয়া নগরের পথে চলতে শুরু করল তখন রাস্তার দুপাশে সড়কবাতিগুলো জ্বলে উঠতে শুরু করেছে। আমরা যে পথ ধরে এগোচ্ছি সেটি ওয়ানওয়ে। হাতের ডান দিকে খ্যাতনামা বিপণী কেন্দ্রের পাশাপাশি অখ্যাত দোকানে ঝলমল করছে নাম ফলকের নিয়ন সাইন। বাঁ দিকের একমুখী রাস্তার ওপারে সমুদ্র। চলার পথে সৌরভ দেখিয়ে দিল আলেক্সান্দ্রিয়ার একটি ল্যান্ড মার্ক স্ট্যানলি ব্রিজ। মূল সড়কের যানজট কমানোর জন্যে নব্বই দশকের শেষ দিকে সমুদ্রের পাশ দিয়ে নতুন একটি রাস্তা তৈরির সময় দেখা গেল একটা জায়গায় শহরের স্থলভাগে ঢুকে পড়েছে ভূমধ্য সাগর। সেখানে সমুদ্রের দুই অংশ যুক্ত করে নির্মিত হয়েছিল এই সেতু।

আমার মনে হয়েছে প্রয়োজনের চেয়েও আলেক্সান্দ্রিয়া শহরের ঐতিহ্যের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে নির্মিত সেতুটি নগরের সৌন্দর্যে একটি নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে। মাত্র চারশ মিটার দৈর্ঘ্যের এই সেতুতে স্প্যানের সংখ্যা ছয়টি, এর চারটি টাওয়ার ইসলামি স্থাপত্য শিল্পের চমৎকার নিদর্শন। সন্ধ্যার শুরুতে দিনের আলোর পাশাপাশি সাগরের বুকে এই সেতু জুড়ে আলোর নান্দনিক ব্যবহার যে দৃশ্যপট রচনা করেছে তা দীর্ঘ সময় ধরে তাকিয়ে দেখার মতো। গাড়িয়ে থামিয়ে রেখে দেখার মতো অবস্থা না থাকায় আমরা সামনে এগোতে থাকি।

রাতের রাজপথ

আলোকোজ্জ্বল আলেক্সান্দ্রিয়ার প্রতিটি রাতই মনে হয় উৎসব মুখর। তাই শপিং এরিয়া কিংবা বাজার এলাকার আলোকসজ্জা দেখে ক্রিসমাস কিংবা ঈদের সময় বলে ভুল হতে পারে। আমরা অনেক দূরে থেকে ঘুরে এসে ফেরার পথে স্ট্যানলি ব্রিজের উপর দিয়ে পার হলাম।

এবারে হাতের ডানে ভূমধ্যসাগর। উৎসব নগরী এখানে সাগরের ভেতরে ঢুকে পড়েছে। ফুটপাথে যেমন বিভিন্ন বয়সের অসংখ্য নারী পুরুষ সমুদ্রের হাওয়া গায়ে মেখে সান্ধ্যকালীন পদচারণায় নেমেছেন, তেমনি সমুদ্রের বুকে সারি সারি রেস্তোঁরায় নৈশভোজের আয়োজনেও মানুষের কমতি নেই। এদের মধ্যে অনেকেই হয়তো পর্যটক, তবে আমরা পর্যটক হলেও রঙিন আলোর ঝলমলে আহ্বানে সাড়া না দিয়ে ঢুকলাম শহরের রেস্তোরা ক্যাফে ডিলা পাইতে। 
সৌরভ এমনিতেই স্বল্পাহারী, ওর রাতের খাবার শুধু খানিকটা পাস্তা। আমার জন্যে অর্ডার দিয়েছিলাম ফিশ ফিলে আর সবচেয়ে যিনি কম খান তিনি বললেন মিক্সড বিফ অ্যান্ড চিকেন ফাইতাস। টেবিলে খাবার এলে দেখা গেল গরু ও মুরগির গ্রিলের সঙ্গে যে পরিমাণ মেক্সিকান ফ্রাইড রাইস পরিবেশিত হয়েছে তা তিনজনের পক্ষেও শেষ করা সম্ভব নয়। অতএব স্যামন মাছ ও সেদ্ধ সবজির বেরসিক মেন্যুর সঙ্গে হেনার গ্রিল্ড বিফ ও ফ্রাইড রাইসের অনেকটাই আমার আহার্যে পরিণত হলো। চমৎকার একটা ডিনারের পরে ঘরে ফিরে ঘুমিয়ে পড়াটা কোনো কাজের কথা নয়। সৌরভ গাড়িটা পার্কিংয়ে রেখে এলে আমরা সমুদ্রের ধারে পাথরের বাঁধের উপরে উঠে বসলাম।

সমুদ্রের তীর থেকে লে মেট্রোপল

রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তায় গাড়ির চলাচল কমে এসেছে। যন্ত্রচালিত গাড়িগুলোর পাশাপাশি ঘোড়ার খুরে খটখট আওয়াজ তুলে চলে যাচ্ছে মন্থর গতির টাঙ্গা। ফুটপাথের টং দোকানে আগুনে পুড়িয়ে বিক্রি হচ্ছে ভুট্টা। হাত ধরাধরি করে হেঁটে যাচ্ছে তরুণ-তরুণী, আবার রাজ্যের ক্লান্তি নিয়ে দু-চারজন বৃদ্ধকেও পথ চলতে দেখা গেল। রানাভাই নিজেও হাঁটতে হাঁটতে অনেক দূরে চলে গেছেন। বাঁধের উপরে বসে সৌরভ বলছিল তার প্রথমবার আলেক্সান্দ্রিয়া আসার কথা। কেনিয়া থেকে সস্ত্রীক এসে ঠিক রাস্তার ওপারের হোটেলে সেবার থেকে গেছে। রাস্তা পেরিয়ে পার্কের ওপারেই আমাদের হোটেল মেট্রোপলও এখান থেকে দেখা যায়। 

কিন্তু আমাদের হোটেলের সামনে ভূমধ্যসাগরের তীরে যার ভাস্কর্য ঘিরে ছোট্ট এই উদ্যানটি গড়ে উঠেছে তার নাম কেউ জানে না। রানা ভাই ফিরে এলে জানলাম, মিশরের স্বাধীনতা সংগ্রামে বৃটিশবিরোধী আন্দোলনে যিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন এই মূর্তিটি সেই কীর্তিমান পুরুষ সাদ জগলুল পাশার! ১৯২৭ সালে জগলুল পাশার মৃত্যু হলে পরাধীন ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্ব শূন্যতায় হতাশ নজরুল তার ‘চিরঞ্জীব জগলুল’ নামের দীর্ঘ কবিতায় তাহলে এই মহাত্মার কথাই লিখে গেছেন। ‘তোমার বিদায়ে দূর অতীতের সেই কথা মনে পড়ে/মিসর হইতে বিদায় লইল মুসা যবে চিরতরে/সম্ভ্রমে সরে পথ করে দিল নীল দরিয়ার বারি/পিছু পিছু চলে কাঁদিয়া কাঁদিয়া মিসরের নরনারী?’ 

উদ্যানে নজরুলের জগলুল পাশা

তবে বর্তমান মিশরের নরনারীরা জগলুল পাশার জন্যে কান্নাকাটি করা তো দূরে থাক, তার নামই সম্ভবত শোনেনি। অন্যদিকে আলেক্সান্দ্রিয়ার নগর কর্তারা জগলুল পাশাকে সম্মান জানাতে গিয়ে তাকে উঁচু এক স্তম্ভের উপরে তুলে দিয়েছেন, কিন্তু পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা না থাকায় তার চেহারা দেখার কোনো উপায় নেই। স্তম্ভের পায়ের কাছে কিছু শুকনো ফুল পাতা পড়ে থাকলেও উৎকীর্ণ করা ফলক পাঠোদ্ধারের কোনো ব্যবস্থা তারা রাখেননি। 

রাতের রাজপথে ট্রাম

হোটেলে ফিরে আমরা আবার সেই ঐতিহাসিক লিফটে চড়ে সোজা রুফটপ রেস্তোরাঁয় চলে গেলাম। বেশ রাত হলেও রেস্তোরাঁ তখনো জমজমাট। চাঁদোয়া জুড়ে তারার মতো বাতি ঝিকমিক করছে আর কাচ দিয়ে ঘেরা লম্বা বাতিদানে মোমবাতির শিখার মতো দপদপ করে যে বাতি জ্বলছে তাকে প্রথমে কেরোসিনের প্রদীপ বলে ভুল করেছিলাম। এখানে দাঁড়িয়ে জগলুল পাশা পার্কের ওপারে অনেক দূর পর্যন্ত দেখা যায় রাতের সমুদ্র। অন্ধকার সাগরের বুকে মাঝে মাঝে জাহাজের দুই একটা বাতি জ্বলে উঠেই আবার নিভে যায়। আমরা ঘরে ফিরেও ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে অনেক রাত পর্যন্ত রাস্তায় ট্রামের চলাচল দেখি। ধীরে ধীরে প্রায় জনশূন্য হয়ে আসে আলেক্সান্দ্রিয়ার ব্যস্ত সড়ক, জনাকীর্ণ রাস্তা। 

চলবে...      

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৭ 

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৪    

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১

এসএন 

Header Ad

মিল্টন সমাদ্দারের মানবিকতার আড়ালে প্রতারণা, যা বললেন ব্যারিস্টার সুমন

ছবি: সংগৃহীত

হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট-মাধবপুর) থেকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন। সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা অনিয়মের প্রতিবাদ ও মানবিক স্টোরি তুলে ধরে ব্যাপক আলোচনায় আসেন এই সংসদ সদস্য।

বর্তমানে এমপি হলেও আগের মতো নানা ইস্যুতে আওয়াজ তুলেন ব্যারিস্টার সুমন। সেই ধারাবাহিকতায় মানবিকতার আড়ালে ভয়ংকর প্রতারক মিল্টন সমাদ্দারকে নিয়ে গণমাধ্যমে কথা বলেছেন তিনি।

মিল্টন সমাদ্দার মানবিক কাজ দিয়ে জনপ্রিয় হয়েছিলেন। বর্তমানে তার মানবিক কাজগুলোকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে, এ বিষয়ে কী বলবেন? জবাবে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, একটা বিষয় আমাদের মনে রাখা উচিৎ, যারা মানবিক কাজ করে মুখ দিয়ে নয়, হৃদয় দিয়ে করে। মুখ দিয়ে মানবিক কাজ করলে নানা প্রশ্নবিদ্ধ হবে কিন্তু হৃদয় থেকে করলে তাকে কেউ আটকাতে পারবে না।

মানবিক কাজগুলো প্রশ্নবিদ্ধ হলে সমাজে কী নীতিবাচক প্রভাব ফেলে না? এমন প্রশ্নের জবাবে এই সংসদ সদস্য বলেন, সমাজে নীতিবাচক প্রভাব ফেলতে ফেলতে এই পর্যায়ে আমরা দাঁড়িয়েছি। আর পেছনের যাওয়ার সুযোগ নেই, সামনের দিকে যেতে হবে। আমরা নষ্ট হওয়ার শেষ পেরিয়ে গেছি। এর থেকে বেশি নষ্ট হওয়ার সুযোগ নেই।

প্রসঙ্গত, দুস্থ, অসহায় ব্যক্তিদের আশ্রয় ও সাহায্যের মতো মানবিক কাজের কারণে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচিত পান মিল্টন সমাদ্দার।

সম্প্রতি গণমাধ্যমে এসব কাজের আড়ালে তার নানা অন্যায়-অনিয়মের অভিযোগ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। এরপর বুধবার এই মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

তার বিরুদ্ধে ডেথ সার্টিফিকেট জালিয়াতি, মানবপাচার, আশ্রয় দেওয়া অসহায়, দুস্থ ব্যক্তিদের মৃত্যুর পর তাদের কিডনি বিক্রি, জমি দখলসহ নানা অভিযোগ উঠেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের মুখোশ উন্মোচন হয়েছে: ইরান

ছবি: সংগৃহীত

চলমান ছাত্র বিক্ষোভে দমন-পীড়ন ও ধরপাকড়ের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের মুখ থেকে ভণ্ডামির মুখোশ সরে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসের কানানি। শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স বার্তায় এই মন্তব্য করেন তিনি। খবর ইরানি গণমাধ্যম ইরনার

যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভ দমন প্রসঙ্গে কানানি বলেছেন, বাকস্বাধীনতা ও মানবাধিকারের মিথ্যা রক্ষকদের মুখ থেকে ভণ্ডামির মুখোশ সরে গেছে। তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনপন্থি ছাত্রদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ঠেকাতে দমন-পীড়নকে ন্যায্যতা দেওয়ার জন্য সত্যকে বিকৃত করে শিক্ষার্থী ও একাডেমিক কর্মীদের প্রকৃত ক্ষোভ ও তাদের প্রতিবাদকে ইহুদিবিদ্বেষ হিসাবে বর্ণনা করছে মার্কিন সরকার।

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের হামলার প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রের কয়েক ডজন বিশ্ববিদ্যালয় উত্তাল। বিভিন্ন কর্মসূচির পাশাপাশি ক্যাম্পাসে তাঁবু টানিয়ে অবস্থান করছেন শিক্ষার্থীরা। এর জেরে ক্লাস-পরীক্ষা বাতিল করেছে কর্তৃপক্ষ। সে সঙ্গে ক্যাম্পাসে পুলিশ ডাকতেও বিন্দুমাত্র পিছপা হননি তারা।

এমনকি পুলিশ এসে শান্তিপূর্ণ শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও হয়েছে। গ্রেফতার করেছে দুই হাজারের বেশি শিক্ষার্থীকে। তবে এতকিছু করেও শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দমাতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা পুলিশ প্রশাসন। উলটো তা আরও বিশ্ববিদ্যালয়ে ছড়িয়ে পড়েছে। এমনকি মার্কিন শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ছাড়িয়ে এখন বৈশ্বিক রূপ ধারণ করেছে।

নিজের মান ইজ্জত রক্ষা করুন, মন্ত্রী-এমপিদের প্রতি ইসি রাশেদা

ছবি: সংগৃহীত

নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেছেন, যেকোন মূল্যে উপজেলা নির্বাচন হবে প্রভাবমুক্ত। সরকারের দায়িত্বে নিয়োজিত প্রভাবশালীরা এই নির্বাচনে প্রভাব খাটালে কমিশন প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে বিধিবিধান অন্যুায়ী ব্যবস্থা নিবে।

শনিবার দুপুরে রাজশাহী জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে রাজশাহীর চার জেলার প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থী ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাশেদা সুলতানা একথা বলেন।

রাশেদা সুলতানা বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি পছন্দের প্রার্থী পক্ষে নেক দৃষ্টি দিয়ে সরকারের অতি সুবিধাভোগি কিছু ব্যক্তিরা (মন্ত্রী-এমপি) এ নির্বাচনে প্রভাব খানাটোর চেষ্টা করছেন। ওই সমস্ত পদে যারা আছেন তাদের প্রতি অনুরোধ করবো- দয়া করে আপনারা আপনাদের জায়গায় থাকেন। আপনি এলাকার ভোটার আপনি আসবেন ভোট দিবেন চলে যাবেন। আপনি যে পর্যায়ে আছেন- আপনি আপনার মান ইজ্জত রক্ষা করবেন। আপনার ইজ্জত আপনি যদি রক্ষা না করেন তাহলে কিন্তু যে কোন মুহুর্তে বিপর্যয় ঘটে যেতে পারে। এর দায় কিন্তু আমরা নিব না। আপনাই সেটা বহন করবেন। আপনারা নিজের মর্যাদায় আসিন থেকে দ্বায়ীত্ব পালন করবেন।

প্রার্থীদের উদ্দেশ্যে ইসি রাশেদা সুলতানা আরও বলেন, ভোটারবিহীন নির্বাচনের সৌন্দর্য নেই, গ্রহনযোগ্যতা নেই, আনন্দও নেই। ১০ শতাংশ ভোট পেয়ে যেতা আর ৮০ শতাংশ ভোট পেয়ে জেতার মধ্যে প্রার্থক্য আপনারাই বুঝতে পারবেন। তাই আপনার চিন্ত করেন, পরিবেশ নষ্ট করে ১০ শতাংশ ভোটে জিততে চান ভোটার না এনে; ৮০ শতাংশ ভোটে জিততে চান। আপনাদের উপর এই ভারটা ছেড়ে দিলাম সিদ্ধান্ত নেয়ার।

ইসি বলেন, ভোটের দিন কোন রকম উশৃঙখলতা, বিশৃঙখলাতা, সহিংস আচরণ, ভোট কেন্দ্র দখল করার মত কোন দুঃসাহস করবেন না। আপনার অবৈধভাবে যে ব্যালটই রাখেন না কেন আমাদের কাছে তথ্য গেলে প্রমান পেলে সেই ভোট বাতিল করে দিব যেকোন মুহুর্তে। আর অসাধুচারণ করেন, আচরন বিধি ভঙ্গ করেন আমরা কিন্তু নির্বাচনের মুহুর্তেও প্রার্থীতা বাতিল করে দিব। ভোটের দিন যে কোন নৈরাজ্য মূলক আচরণ করলে আমরা কিন্তু নির্বাচন স্থগিত করবো, নির্বাচন বাতিল করবো, প্রার্থীতা বাতিল করবো।

তিনি আরও বলেন, গনতন্ত্রের মূল ভিত্তি হচ্ছে নির্বাচন। তাই নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ হয় সেজন্য নির্বাচন কমিশন কাজ করে যাচ্ছে। জনগনের মনে যেন গেঁথে থাকে এমন একটি নির্বাচন হবে এবার। তাই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা কমিশন চায় না।

নির্বাচনে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের উদেশ্যে রাশেদা সুলতানা বলেন, কোন প্রার্থী জিতল কোন প্রার্থী জিতল না এ নিয়ে ইসির কোন মাথা বেথা নেই। নির্বাচন কমিশনের একটি নির্দেশনা, আপনার সব প্রার্থীকে সমান চোখে দেখবেন, নিরপেক্ষতার সাথে দেখবেন, যে হাঙ্গামা করবে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন। তবে কমিশনার নির্দেশনা যিনি প্রতি পালন করবেন না তার দায়দায়িত্বও তিনি নিবেন। আপনাদের কৃতকর্মের দায় কমিশন বহন করবে না।

রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ ও জয়পুরহাটের উপজেলার প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থী ও কর্মকর্তাদের নিয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি আনিসুর রহমান, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর।

সর্বশেষ সংবাদ

মিল্টন সমাদ্দারের মানবিকতার আড়ালে প্রতারণা, যা বললেন ব্যারিস্টার সুমন
যুক্তরাষ্ট্রের মুখোশ উন্মোচন হয়েছে: ইরান
নিজের মান ইজ্জত রক্ষা করুন, মন্ত্রী-এমপিদের প্রতি ইসি রাশেদা
উদ্যোক্তারাই দেশের ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক অগ্রগতির কাণ্ডারী : স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
টানা ৬ দিন হতে পারে ঝড়বৃষ্টি জানাল আবহাওয়া অফিস
সেই ভাইরাল নেতা পাকিস্তান জামায়াতের আমির নির্বাচিত
টানা ৮ দফা কমার পর বাড়ল স্বর্ণের দাম
দিয়াবাড়ির লেক থেকে ২ শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার
রাজধানীবাসীর জন্য সুখবর দিল আবহাওয়া অফিস
মক্কায় প্রবেশে আজ থেকে কঠোর বিধি-নিষেধ
‘দাদাসাহেব ফালকে’ পুরস্কার জিতলেন মিথিলা
ঢাকায় অনুষ্ঠিত হলো বগুড়ার আলু ঘাঁটি উৎসব
টাঙ্গাইলে পাগলা কুকুরের কামড়ে শিশুসহ ২২ জন আহত
১৭ রোগীকে হত্যার দায়ে মার্কিন নার্সের ৭৬০ বছর কারাদণ্ড
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের দাবিতে ছাত্রলীগের কর্মসূচি ঘোষণা
দুবাইয়ের ‘গোল্ডেন ভিসা’ পেলেন শাকিব খান
সুন্দরবনের গহীনে ভয়াবহ আগুন, ছড়িয়েছে দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে
স্কুলে দেরি করে আসায় শিক্ষিকাকে ঘুষি মারলেন অধ্যক্ষ
আইপিএলের প্লে অফের দৌড়ে এগিয়ে কারা?
আবারও বাংলাদেশে প্রবেশ করল মিয়ানমারের ৪০ বিজিপি সদস্য