শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০
Dhaka Prokash

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৫

ওয়াদি এল রায়ান থেকে তিউনিস ভিলেজের দূরত্ব ত্রিশ কিলোমিটার। হাতের ডাইনে দীর্ঘ কারুন হ্রদ এবং মাঝে মাঝে মরুদ্যান আর বাঁ দিকে বহুদূর বিস্তৃত মরুভূমি পেছনে ফেলে আমরা এগোতে থাকি। 

এক সময় মরুদ্যান ছাড়িয়ে আবারো কিছু দূর ধু ধু মরুপ্রান্তর পেরিয়ে যাবার পরে দেখা দেয় জনপদের চিহ্ন। দুপাশে একটি মরু মফস্বলের চেহারা স্পষ্ট হতে থাকে। একদিকে সুদৃশ্য মসজিদ এবং অন্যদিকে কয়েকটি দোকান বাঁয়ে রেখে আমরা প্রায় জনশূন্য একটা ছোট শহরের মতো এলাকায় ঢুকে পড়ি। পথের পাশে গাড়ি মেরামতের দোকান এবং রেস্তোরাঁর সাইন বোর্ড দেখে বুঝতে পারি এটিই তিউনিস গ্রাম। নামে গ্রাম হলেও এটি যে আসলেই মরুদ্যানের ছোট শহর তা বুঝতে বাকি থাকে না। অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই বাসুনি যে রেস্তোরাঁর সামনে এসে দাঁড়াল তার নাম নিউ তিউনিসিয়া রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড ক্যাফে! এতোক্ষণ তো ভাবছিলাম গ্রামের নামে শহর! এখন দেখা গেল পুরো একটা দেশের নামই নিয়ে নিয়েছে এই গ্রাম! 

            তিউনিসের বন্ধ রেস্তোরাঁ

রেস্তোরাঁর বাইরে থেকে দরজা কপাট বন্ধ দেখেই সন্দেহ হয়েছিল, তারপরেও মোহামেদ সাদেক খোঁজ নিতে গাড়ি থেকে নেমে গেল। একটু পরে এসে জানাল দুবছর আগে করোনা মহামারির শুরুতে বন্ধ যাওয়া তিউনিসিয়া রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড ক্যাফে আর চালু হয়নি। পরপর আরও গোটা দুই সরাইখানার বন্ধ দরজার সামনে দাঁড়িয়ে করাঘাত করেও কোনো সাড়া পাওয়া গেল না। 

ওমর খৈয়াম সম্ভবত এই রকম পরিস্থিতিতেই লিখেছিলেন ‘ভোরের পাখি শিস দিয়ে যেই উঠলো চারিধারে/পান্থশালার দ্বারে দাঁড়িয়ে ছিল যারা, বলল হেঁকে তারা/দুয়ার খোলো দুয়ার খোলো ভাই, সময় যে আর নাই।’ 
আমাদের এখানে ভোরের পাখি ডাক দেয়নি বরং দুপুর গড়িয়ে বিকেল হলেও খাদ্যের অন্বেষণে পান্থশালা থেকে পান্থশালায় ঘুরে বেড়ালেও কেউ দরজা খোলেনি। 

         মৃৎ পাত্রের কারখানায়

তিউনিস কুমোরদের গ্রাম নামেই পরিচিত। কাজেই এখানে এসে মৃৎশিল্পের কর্মকাণ্ডের অন্তত একটি নমুনা না দেখে, শিল্পীদের নির্মাণ শৈলীর সাথে একটু পরিচিত না হয়ে ফিরে যাওয়াটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। অতএব নেমে গেলাম সাদেকের নির্দেশনা অনুসারে। ভেতরে প্রবেশ করে বুঝলাম আমাদের কুমোর পাড়া, পালপাড়ার মৃৎশিল্পীরা যেমন মাটি ছেনে, চাক ঘুরিয়ে, আগুনে পুড়িয়ে লাল টুকটুকে হাড়ি পাতিল কিংবা কালো কলস তৈরি করে তার সাথে এর কোনো সম্পর্ক নেই। এটি খুব বড় না হলেও মাঝারি আকারের সিরামিকের কারখানা। ভেতরে হাতে নকশা কেটে তৈজসপত্র তৈরির কাজ চলছে, এখানেও আগুনে পুড়ে নতুন রূপ লাবণ্যে ঝলসে উঠছে মাটির পাত্র! কিন্তু নির্মিত পেয়ালা-পিরিচ, থালা-বাসন যতোই ঝকঝক করুক বাইরের দিকে শো-রুমে দাঁড়িয়ে থাকা বিরস বদন বালিকাকে দেখে অনুমান করা যায় বেচা কেনা তেমন নেই।   

        আল মালাকের উদ্যানে     

তিউনিস গ্রামের পথে দু পাশের বর্ণহীন বাড়িগুলোর মধ্যে চোখে পড়ে দুই একটি সুদৃশ্য বাড়ি, কোনো কোনো বাড়ির দেয়াল থেকে ঝুলছে সবুজ লতাপাতাসহ ফুলের ঝাড়। মাঝে মাঝে দু চারটি সাজানো দোকান আর পথে দু চারজন বিদেশি পর্যটক। রংপুরের সতরঞ্চির মতো রঙিন সতরঞ্চি সাজিয়ে একটা দোকানে বসে আছে বিষন্ন কিশোর। সেই দোকানের সামনে দাঁড়াতেই একটু উৎসাহিত হয়েছিল ছেলেটি। কিন্তুতাকে হতাশ করেই আমরা এগোতে থাকি। শেষ পর্যন্ত বাসুনি বেশ কিছুটা সামনে এগিয়ে গাড়ি নিয়ে যেখানে সটান ঢুকে গেল তার চেহারা দেখেই বলে দেয়া যায় এটি একটি উচুঁ মানসম্পন্ন রিসোর্ট কাম রেস্টুরেন্ট। প্রবেশ পথে আল মালাক নামের হোটেলের সাইনবোর্ড পছন্দ হলো না। কিন্তুপাথরে বাঁধানো পথ দিয়ে হেঁটে দুপাশের সবুজ গাছপালা এবং সারি সারি রঙিন ফুলের ঝোপঝাড় পেরিয়ে যেখানে পৌঁছলাম মরুদ্যানে তেমন প্রাকৃতিক পরিবেশ আশা করিনি।

       কাতরানি ক্যাম্প

চারিদিকে দীর্ঘ সবুজ গাছের বেস্টনি দেওয়া মাঠের একদিকে সুইমিং পুল এবং অন্যদিকে ছোট ছোট আবাসিক কুটির। এশিয়া ইওরোপের যে কোনো দেশের বিলাসবহুল হোটেলে সামনে পেছনে খোলা মাঠের চারিদিকে বাগানে ফুটে থাকা ফুলের সমারোহ দেখে অবাক হবার কিছু থাকে না। কিন্তুএখানে এই দিকচিহ্নহীন মরুপ্রান্তরের এক চিলতে মরুদ্যানে পুষ্প পাতার অভাবনীয় দৃশ্য কেবলই আমাদের বিস্মিত করে। ঘাসের সবুজ গালিচায় এক একটি টেবিল ঘিরে পেতে রাখা কয়েক সেট গার্ডেন চেয়ারের তিনটি দখল করে বসে পড়লাম। শুরু হলো মোহামেদ সাদেকের সাথে রেস্তোরাঁর পরিবেশকের কথপোকথন। আমি এরই মধ্যে মাঠের আর এক প্রান্তে চমৎকার প্রক্ষালন কক্ষ থেকে হাত মুখ ধুয়ে রীতিমতো তরতাজা হয়ে ফিরে এসেছি। মরুর দেশে তরু পল্লবে ঘেরা উদ্যানে বসে বিকেলের মৃদুমন্দ হাওয়া মন্দ লাগছিল না। কিন্তু সাদেকের কথা শুনে আমাদের চক্ষু চড়কগাছ! খাবারের মূল্যের কথা বাদ দিলাম, একদিন না হয় একটু বেহিসাবী হওয়া গেল, কিন্তু সময়ের মূল্য পরিশোধ করবে কে! খাবার তৈরি হয়ে টেবিলে পরিবেশনের জন্যে মাত্র দেড় ঘণ্টা সময় চেয়েছে আল মালাক! 

            তাঁবু রাত্রি যাপন

মালাকের কথা শুনে মোহামেদ সাদেক সিদ্ধান্ত দিয়ে দিল, ’এখান থেকে আধা ঘণ্টার দূরত্বে বেদুঈনদের একটা ক্যাম্প আছে কাতরানিতে। সেখানে ফোনে খবর দিয়ে খাবার তৈরি করতে বলে দিই, আমাদের পৌঁছাতে যে সময় লাগবে তার মধ্যে আশা করা যায় লাঞ্চ রেডি হয়ে যাবে।’ সাদেকের কথায় তথাস্তু বলে উঠে পড়লাম। মাঝখান থেকে তিউনিসের চমৎকার গ্রামে প্রায় অকল্পনীয় একটি রিসোর্টের অবিশ্বাস্য বাথরুম বিনামূল্যে ব্যবহারের অভিজ্ঞতা হলো! গাড়িতে উঠবার আগেই সাদেক তার নির্দেশনা দিয়ে নিশ্চিত হলো। বিকেল সাড়ে তিনটা বাজলেও ক্ষুৎ পিপাসায় কাতর হয়ে গেছি তা বলা যাবে না, তবে কাতরানি পৌঁছে খাবার না পেলে হয়তো সত্যিই কাতরানি শুরু হয়ে যাবে, তাই এই সতর্কতা। 

          কাতরানিতে ক্যাম্প ফায়ার

বিকেলের সূর্যের তেজ কমে যাবার সাথে সাথে বাসুনির তেজও কিছুটা কমে এসেছে মনে হলো। তাই চড়াই উৎরাই পেরিয়ে আঁকাবাঁকা পথে না ছুটে সে পিচঢালা সোজা পথ ধরে প্রায় পঁচিশ মিনিট চলার পরে ডাইনে ঘুরে গেল। এখানে আবার সেই বালির মধ্যে দুপাশে পাথরের টুকরো বসানো পথের নিশানা। বালির উঁচু নিচু টিলা এবং ভাস্কর্য পেরিয়ে মিনিট পাঁচেক পরে যেখানে পৌঁছলাম সেটি যে আসলেই বেদুঈনের পান্থশালা তা কাউকে বলে দিতে হয় না। এখানে বাঁধানো সড়ক নেই, সবুজের চিহ্ন মাত্র নেই, ইট পাথরের ঘর দরজা নেই। চারিদিকে বালির সমুদ্রের মধ্যে সারি সারি সাদা তাঁবু আর কাঠ বাঁশের তৈরি কিছু অস্থায়ী চালাঘর। বসার ব্যবস্থা  ফালি করে কাটা দীর্ঘ কাঠের বেঞ্চে। মরুভূমিতে নিশি যাপনের জন্যে তাঁবুতে রাত্রিবাসের ব্যবস্থা তো আছেই।

          কাতরানির মরু কুটির

এ ছাড়াও ইচ্ছে করলে বালির পাহাড়ের গায়ে খোড়লের ভেতরে রাত কাটানো যায়। সম্ভবত ‘নাইট লাইফ’ উদযাপনের জন্যে বালির উঠানে মাঝখানে আগুন জ্বালাবার ব্যবস্থাসহ বৃত্তাকারে সতরঞ্চি পেতে আসর সাজানো আছে। উদর পূর্তির পাশাপাশি নৈশ্যভোজে উদর নৃত্যের ব্যবস্থা আছে কিনা তা অবশ্য তখনো জানতে পারিনি।   আমরা বালির আঙ্গিনা জুড়ে পেতে রাখার কাঠের লম্বা বেঞ্চে বসে পড়লাম। মোহামেদ সাদেক কিছুক্ষণ পরেই এসে জানালো খাবার তৈরি হচ্ছে। বুঝলাম ফোনে আধা ঘণ্টা বললেও আরো খানিকটার সময় দিতে হবে। অপেক্ষার সময়টা চারিদিকে ঘুরে ফিরে কাটানো যায়। বিরান বালুর মাঠেও দেখলাম পাশাপাশি গোটা দুই দোলনা ঝুলছে। একটাতে বোরকা পরা তরুণীকে দোল দিচ্ছে জুব্বাধারী এক তরুণ। চমৎকার দৃশ্যটি দেখে মনে হলো মিশরীয় ইসলামে তাহলে দোলনায় দোল খাওয়া হারাম নয়! কিছুদিন আগে এক হুজুরের ওয়াজে শুনেছিলাম ’দোলনা হচ্ছে শ্রী কৃষ্ণ ও রাধার লীলা খেলা, ইসলামে দোলনা দোলানোর কোনো জ্ঞান নাই!’ এরা বাংলাদেশি ইসলামে আরও কতো কিছু যে নিষিদ্ধ করবে আল্লাহই জানে। হেনাকে বললাম, ‘যাও কিছুক্ষণ দোলনায় দোল খেয়ে এসো।’ সে বললো, ‘দেখছো না ওখানে এখন হুজুরদের দোলে দোদুল ঝুলে ঝুলনা চলছে।’ বললাম, ‘একটা তো খালি আছে।’ হেনা বললো, ‘এখন আর দোল খেতে চাই না, খাবার খেতে চাই।’খাবার খেতে চাইলেই তো হয় না, এই পাণ্ডব বর্জিত ধু ধু বালুর চরে কে আমাদের জন্যে খাবার নিয়ে বসে আছে! আমরা দুজন চারিপাশটা ঘুরে দেখতে বেরোলাম।

        বালি পাহাড়ের কোটরে বিছানা-বালিশ

রানা ভাই যথারীতি এই বেদুঈন ক্যাম্পের সামান্য ইংরেজি জানা কর্মচারিকে পাকড়াও করে আলাপ শুরু করেছেন। তাঁবুগুলোকে পেছনে ফেলে ডান পাশে বালির টিলাগুলো রেখে সামনে এগিয়ে গেলেই ছড়িয়ে আছে দীর্ঘ জলাধার কারুন হ্রদ। কিন্তুশান্ত স্বচ্ছ এই হ্রদের আশেপাশে কোথাও কোনো সবুজ গাছ পালার ছিটে ফোঁটাও নেই। বিচিত্র ভাস্কর্যের মতো দেখতে লাইম স্টোনের পাহাড় কেটে কোথাও কোথাও সিঁড়ি চলে গেছে অনেক উপরে। আবার কোথায় নরম বালু মাটির সিঁড়িগুলোকে আটকে রাখার জন্যে ধাপে ধাপে বসিয়ে দেয়া হয়েছে খেজুর গাছের গুড়ি। এইসব সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে দেখালাম সতরঞ্চি এবং বিছানা বালিশ পাতা  একেকটি আবাসিক কক্ষ। লতাপাতা, বাঁশ কিংবা কাঠ খড় দিয়ে তৈরি ঘরগুলোকে নাম দেয়া যায় ‘মরু কুটির’ আর পাহাড়ের খোলের ঘরগুলো ‘গুহাগৃহ!’  আমরা ‘মরু কুটির’ ‘গুহাগৃহ’, মরু কুটিরের বহিরাবরণের আদলে তৈরি প্রাক্ষলণ কক্ষ এবং তাঁবু বাসের ব্যবস্থা সরে জমিনে দেখে এসে যখন টেবিলে বসলাম তখনও খাবারের খবর নেই। 

            বেদুঈনের তাঁবুতে বিলম্বিত লাঞ্চ

রানা ভাই এরই মধ্যে কাতরানি ক্যাম্পের কিছু তথ্য যোগাড় করে ফেলেছেন। আল ফাইয়ুম শহর থেকে প্রায় বিশ কিলোমিটার দূরে লেক কারুনের তীর ঘেষে কয়েক একর জায়গা সরকারের কাছে থেকে লিজ নিয়ে এই তাঁবু বাসের আয়োজন। উচুঁ নিচু পাহাড়ের সারিতে সর্বোচ্চ গিরিশৃঙ্গের উচ্চতা সাড়ে তিনশ মিটার। মরুভূমির প্রাকৃতিক পরিবেশে হাইকিং, ট্রেকিংয়ের জন্যেও অনেকেই, বিশেষ করে তরুণ ব্যাক-প্যাকাররা চলে আসে এখানে। এখানে পাহাড়ের মাথায় সোলার প্যানেল লাগিয়ে সীমিত বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকলেও ঘরে ঘরে বিদ্যুতের ব্যবস্থা নেই, তবে টয়লেট বাথরুম যথেষ্ট আধুনিক এবং প্রবহমান পানির ব্যবস্থাও আছে। তাঁবু অথবা পাহাড়ের খোলে দুজনে রাত্রি যাপনের জন্যে গুণতে হবে ৩০ থেকে ৪০ মার্কিন ডলার। ট্যুরিস্ট সিজনে বিপুল সংখ্যক পর্যটক উন্মুক্ত বালিয়াড়িতে ক্যাম্প ফায়ারে মেতে ওঠে আর অনেকেই আসে খোলা আকাশের নিচে শুয়ে তারা ভরা আকাশ দেখতে। 

গল্পে আড্ডায় সময় কাটালেও আমাদের দৃষ্টি ছিল কখন কিচেন থেকে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যাবে! অবশেষে এল সেই মাহেন্দ্রক্ষণ, হাত মুখ ধুয়ে আমাদের খাবারের খুপরিতে আসন নেওয়ার খবর এল। অবাক হয়ে দেখলাম মরুভূমিতে ভোজনের আয়োজন যেমনই হোক, বেসিনের উপরে ট্যাপ ঘুরিয়ে হাত ধোবার ব্যবস্থা আছে। বাড়তি হিসাবে বেসিনের উপরে আয়নায় নিজের চেহারাটাও একবার দেখে নেওয়া গেল। পাহাড়ের খোলে সতরঞ্চি পেতে মাঝখানে সামান্য উচ্চতার একটা টেবিল রেখে জাপানি কায়দায় পরিবেশিত হলো মিশরীয় খাবার। কে জানে মরু অঞ্চলের পরিবেশন রীতিও জাপানিদের মতো কিনা! পরিবেশন পদ্ধতি যাই হোক, খিচুড়ির মতো হলদে রঙের ভাত, গ্রিলড চিকেন, আধা সেদ্ধ আলুর তৈরি সবজি এবং টমেটো শশার সালাদের মধ্যে উঁকি দেওয়া ধনেপাতা দেখে মনে হলো বিলম্বিত লাঞ্চটা নেহায়েত মন্দ হবে না। শেষ পর্যন্ত অবশ্য এই দর্শনধারী দ্বিপ্রাহরিক আহার দেখতে যেমনই হোক, খেতে ততোটা সুস্বাদু মনে হয়নি। তবুও বিরানভূমিতে আমাদের প্রাণ রক্ষার আয়োজনের জন্যে কাতরানি ক্যাম্প ধন্যবাদ পেতেই পারে। 

আমরা যখন লাঞ্চ শুরু করেছি, ঘড়িতে তখন পৌনে পাঁচটা বাজে। অর্থাৎ এরা দেড় ঘণ্টা না হলেও সময় নিয়েছে সোয়া ঘণ্টা। কায়রোর পথে এগিয়ে আসার আধা ঘণ্টা এই পনের মিনিটের সাথে যোগ করলে আমাদের লভ্যাংশে আছে পুরো পঁয়তাল্লিশ মিনিট। তবে সবচেয়ে বড় লাভ কাতরানির এই বেদুঈন ক্যাম্প। তিউনিসের আল মালাকে লাঞ্চ করে কায়রো ফিরে গেলে মরু প্রকৃতির মাঝখানে এই অসামান্য সৌন্দর্যের আবাসভূমি অদেখাই থেকে যেত। লাঞ্চ শেষে আমরা যখন গাড়িতে উঠতে যাচ্ছি তখন চারিদিকে সন্ধ্যা নেমে এসেছে।  হঠাৎ করেই মাথার উপরে ঝরে পড়ল কয়েক ফোঁটা বৃষ্টি। মোহামেদ সাদেক বলল, ‘এখানে প্রায় কখনোই বৃষ্টি হয় না। তোমরা নেহায়েত ভাগ্যবান!’ 

চলবে...

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৪    

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-২০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা: পর্ব-১৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১

আরএ/

আজকের সেহরির শেষ সময় (ঢাকা)

0

ঘণ্টা

0

মিনিট

0

সেকেন্ড

ডিজিটাল হুন্ডির মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকা পাচার, গ্রেপ্তার ৫

চক্রের পাঁচজন গ্রেপ্তার। ছবি: সংগৃহীত

দুবাইয়ে বসে ‘জেট রোবোটিক’ নামে একটি অ্যাপস ও নিজস্ব এজেন্টের মাধ্যমে প্রবাসী বাংলাদেশিদের চাহিদা অনুযায়ী রেমিট্যান্স পাঠানোর দায়িত্ব নিতেন কুমিল্লার শহিদুল ইসলাম ওরফে মামুন। ২০২০ সাল থেকে তিনি দুবাইয়ে থাকেন। গত তিন থেকে সাড়ে তিন মাসে জেট রোবোটিক অ্যাপসের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার সমমূল্যের রেমিট্যান্স ব্লক করেছেন মামুন।

তবে তিনি ঠিকই চাহিদা অনুযায়ী গন্তব্যে টাকা পাঠিয়েছেন। এজন্য ব্যবহার করা হয়েছে চট্টগ্রামের মোবাইল ব্যাংকিং ডিস্ট্রিবিউশন হাউজ তাসমিয়া অ্যাসোসিয়েটসকে। প্রতিষ্ঠানটির ৪৮টি মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্ট সিমে আগে থেকেই সমপরিমাণ বা বেশি অনলাইনে টাকা সংগ্রহ করে রাখা হয়। এরপর সংগ্রহ করা টাকা এজেন্ট সিম থেকে অ্যাপের ব্যবহার করে প্রবাসীদের আত্মীয়দের নম্বরে অর্থ পাঠিয়ে দিয়ে আসছিল সংঘবদ্ধ একটি চক্রটি বলে দাবি করেছে সিআইডি।

বুধবার (২৭ মার্চ) রাতে ঢাকা ও চট্টগ্রামে পৃথক অভিযান চালিয়ে এই চক্রের পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে হুন্ডির কাজে ব্যবহৃত মুঠোফোন, সিমকার্ড ল্যাপটপ ও ২৮ লাখ ৫১ হাজার নগদ টাকা উদ্ধার করা হয় এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

সিআইডি বলছে, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) প্রায় এক মাস ধরে অনুসন্ধান করে এই চক্রের সন্ধান পায়। এই চক্রের কারণে রেমিট্যান্স থেকে বঞ্চিত হচ্ছিল দেশ। অনেকের অবৈধ উপার্জনের টাকা এই চক্রের মাধ্যমে বৈধ হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বিকেলে মালিবাগে নিজ কার্যালয়ে সিআইডি প্রধান মোহাম্মদ আলী এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন নাসির আহমেদ (৬২), ফজলে রাব্বি সুমন (৩২), মো. কামরুজ্জামান (৩৩), খায়রুল ইসলাম (৩৪) ও জহির উদ্দিন (৩৭)। তাদের মধ্যে নাসির ডিস্ট্রিবিউশন হাউসের মালিক। ফজলে রাব্বি ও মো. কামরুজ্জামান ডিস্ট্রিবিউশন হাউজে কাজ করেন। আর পরের দুজন দুবাই থেকে শহিদুলের পাঠানো প্রবাসীদের আত্মীয়স্বজনের অ্যাকাউন্টে টাকা পৌঁছে দিতেন।

সিআইডির প্রধান পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ আলী মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, এই চক্র দুই ভাগে হুন্ডির কাজ পরিচালনা করে। দুবাইয়ে থাকা চক্রের সদস্যরা প্রবাসীদের কাছ থেকে বিদেশি মুদ্রা সংগ্রহ করেন। আর দেশে থাকা চক্রের সদস্যরা ওই প্রবাসীর দেশে থাকা আত্মীয়স্বজনদের এমএফএস অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠিয়ে দেয়। এতে প্রবাসীদের মাধ্যমে যে রেমিট্যান্স আসত, সেটা ব্যাহত হচ্ছে। পাশাপাশি দেশের কালোটাকার মালিকেরা এই চক্রের মাধ্যমে তাদের অবৈধ উপার্জন বৈধ করছেন। আর এই পুরো কাজটি পরিচালিত হতো জেট রোবোটিকস অ্যাপের মাধ্যমে।

সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির প্রধান আরও বলেন, চক্রের সঙ্গে এমএফএস কোম্পানির চট্টগ্রামের তাসনিমা অ্যাসোসিয়েট নামের একটি ডিস্ট্রিবিউশন হাউসের লোকজন জড়িত। তাদের কাছ থেকে কম লেনদেন হয় এমন এমএফএস এজেন্ট অ্যাকাউন্ট সংগ্রহ করতেন চক্রের সদস্যরা। বিনিময়ে ডিস্ট্রিবিউশন হাউজের লোকজন হুন্ডির লাভের টাকার একটি ভাগ পেতেন।

সিআইডির প্রধান ও অতিরিক্ত আইজি মোহাম্মদ আলী মিয়া। ছবি: সংগৃহীত 

 

মোহাম্মদ আলী বলেন, এই চক্রের মূলহোতা শহিদুল ইসলাম ওরফে মামুন। তিনি ২০২০ সাল থেকে দুবাই বসবাস করেন। মালয়েশিয়ান একটি সফটওয়্যার কোম্পানির মাধ্যমে অ্যাপটি তৈরি করে দুবাই বসে শহিদুল হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ করতেন। এই অ্যাপের সঙ্গে একটি এমএফএস কোম্পানির ৪১টি অ্যাকাউন্ট নম্বরের সংযোগ ছিল। গত তিন মাসে ওই ডিস্ট্রিবিউশন হাউসের প্রায় ১৫০টি এজেন্ট অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেছে চক্রটি।

সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ আলী বলেন, একটি ডিস্ট্রিবিউশন হাউসের অধীন প্রায় ১ হাজার ১০০ এজেন্ট থাকে। যেসব এজেন্ট অ্যাকাউন্টে লেনদেন কম হয়, সেই সব অ্যাকাউন্ট হুন্ডির কাজে ব্যবহার করা হয়। এ ক্ষেত্রে এমএফএস কোম্পানির নজরদারির ঘাটতি রয়েছে।

নতুন নতুন অ্যাপসের মাধ্যমে কৌশলে এ ধরনের ডিজিটাল হুন্ডি কার্যক্রম চলতে পারে উল্লেখ করে সিআইডি প্রধান বলেন, এ ধরনের কার্যক্রমরোধে সিআইডিসহ সব দায়িত্বরত প্রতিষ্ঠানকে ইন্টেলিজেন্স, মনিটরিং আরও বাড়াতে হবে।

তিন মাস ধরে অস্বাভাবিক লেনদেন, রেমিট্যান্স ব্লক হলো অথচ বাংলাদেশ ব্যাংক টের পেল না? তাদের তো একটা শক্তিশালী মনিটরিং সেল আছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যর্থতা কি-না জানতে চাইলে সিআইডিপ্রধান বলেন, ব্যর্থতা বলবো না, সার্ভিলেন্স সিস্টেমকে কতটা পেট্রলিং করছে সেটা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা আমাদের পেট্রলিংয়ে এটা ধরতে পেরেছি। এর দায়িত্ব শুধু সিআইডি’র নয়, ডিবি, র‌্যাব, বাংলাদেশ ব্যাংকেরও।

হুন্ডি তো আগেও হতো, এটাকে ডিজিটাল হুন্ডি বলছেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এ সিস্টেম আসলেই ডিজিটাল হুন্ডি। আগে ফোন করে বলে দিতো অমুকের টাকা অমুককে দিয়ে দাও। এটা ম্যানুয়াল সিস্টেমে। কিন্তু এখন এসবের দরকার নেই। ফোন বা লোকাল এজেন্ট অথবা ডিস্টিবিশন হাউজ দরকার পড়ে না। অ্যাপস যেভাবে ইনস্ট্রাকশন দেবে সেভাবে নম্বরে নম্বরে টাকা চলে যায়।

দূষণে বাংলাদেশে বছরে ২ লাখ ৭২ হাজার মানুষের অকালমৃত্যু: বিশ্বব্যাংক

ছবি: সংগৃহীত

অনিরাপদ পানি, নিম্নমানের স্যানিটেশন, হাইজিন, বায়ু ও সীসা দূষণ বছরে বাংলাদেশে ২ লাখ ৭২ হাজারের বেশি অকালমৃত্যুর কারণ। এসব পরিবেশগত কারণে ২০১৯ সালে বাংলাদেশের জিডিপির ১৭ দশমিক ৬ শতাংশ সমপরিমাণ ক্ষতি হয়েছে। এরমধ্যে ঘরে ও বাইরের বায়ুদূষণ স্বাস্থ্যের ওপর সবচেয়ে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে, যা ৫৫ শতাংশ অকালমৃত্যুর জন্য দায়ী এবং যা ২০১৯ সালের জিডিপির ৮ দশমিক ৩২ শতাংশের সমপরিমাণ ক্ষতি করেছে।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে ‘দ্য বাংলাদেশ কান্ট্রি এনভায়রনমেন্ট অ্যানালাইসিস (সিইএ)’ নামে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে বিশ্বব্যাংক।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বায়ুদূষণ, অনিরাপদ পানি, নিম্নমানের স্যানিটেশন ও হাইজিন এবং সিসা দূষণ বছরে ২ লাখ ৭২ হাজারের বেশি মানুষের অকালমৃত্যুর কারণ। এর ফলে বছরে ৫.২ বিলিয়ন দিন অসুস্থতায় অতিবাহিত হয়। এসব পরিবেশগত কারণে ২০১৯ সালে বাংলাদেশের জিডিপির ১৭.৬ শতাংশ সমপরিমাণ ক্ষতি হয়েছে। ঘরের এবং বাইরের বায়ুদূষণ স্বাস্থ্যের ওপর সবচেয়ে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে, যা ৫৫ শতাংশ অকালমৃত্যুর জন্য দায়ী এবং যা ২০১৯ সালের জিডিপির ৮.৩২ শতাংশের সমপরিমাণ।

এতে আরও বলা হয়েছে, পরিবেশদূষণ শিশুদের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। সিসা বিষক্রিয়া শিশুদের মস্তিকের বিকাশে অপরিবর্তনীয় ক্ষতি করছে। এর ফলে বছরে প্রাক্কলিত আইকিউ ক্ষতি হচ্ছে প্রায় ২০ মিলিয়ন পয়েন্ট। গৃহস্থালিতে কঠিন জ্বালানির মাধ্যমে রান্না বায়ুদূষণের অন্যতম উৎস এবং তা নারী ও শিশুদের বেশি ক্ষতি করছে। শিল্পের বর্জ্য এবং অনিয়ন্ত্রিত প্লাষ্টিকসহ বিভিন্ন বর্জ্য এবং অন্যান্য উৎস থেকে আসা অপরিশোধিত ময়লাযুক্ত পানির কারণে বাংলাদেশের নদীগুলোর পানির গুণগত মানের মারাত্মক অবনতি ঘটেছে।

বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে সময়মতো এবং জরুরি হস্তক্ষেপ, উন্নত পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিন (ওয়াশ) এবং সিসা দূষণ নিয়ন্ত্রণ প্রতি বছর ১ লাখ ৩৩ হাজারের বেশি অকালমৃত্যু ঠেকাতে পারে। সবুজ বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিনিয়োগ, রান্নায় সবুজ জ্বালানি ব্যবহার এবং শিল্প-কারখানা থেকে দূষণ রোধে কঠোর নিয়ন্ত্রণ বায়ুদূষণ কমাতে পারে।

এছাড়া পরিবেশগত ব্যবস্থাপনার জন্য সুশাসন জোরদার ও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়াতে এই রিপোর্টে পরিবেশগত অগ্রাধিকারসমূহ চিহ্নিত করা হয়েছে, বিভিন্ন পদক্ষেপের মূল্যায়ন এবং প্রয়োজনীয় সুপারিশ করা হয়েছে। সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে অগ্রাধিকার নির্ধারণ, পরিবেশ নীতি পদ্ধতিগুলোর বৈচিত্র্যকরণ ও জোরদারকরণ, সাংগঠনিক কাঠামো এবং প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা জোরদারকরণ এবং সবুজ অর্থায়নের জন্য সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে বাংলাদেশ এর পরিবেশকে রক্ষা করতে পারে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ এবং ভুটানে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ে সেক বলেন, বাংলাদেশের জন্য পরিবেশের ঝুঁকি মোকাবিলা একই সঙ্গে উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক অগ্রাধিকার। আমরা পৃথিবীর নানা দেশে দেখেছি যে, পরিবেশের ক্ষতি করে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হলে তা টেকসই হতে পারে না।

তিনি আরও বলেন, শক্তিশালী প্রবৃদ্ধির গতিপথ টেকসই রাখতে এবং শহর ও গ্রামাঞ্চলের মানুষের জীবনমানের উন্নতি করতে বাংলাদেশ কোনোভাবেই পরিবেশকে উপেক্ষা করতে পারবে না। উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার লক্ষ্য অর্জনে পরিবেশের ক্ষয় রোধ এবং জলবায়ু সহিষ্ণুতা নিশ্চিত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র পরিবেশ বিশেষজ্ঞ এবং এই রিপোর্টের সহ-প্রণেতা আনা লুইসা গোমেজ লিমা বলেন, সময়মতো এবং সঠিক নীতি ও কার্যক্রমের মাধ্যমে বাংলাদেশ পরিবেশ দূষণের ধারা পাল্টে ফেলতে পারে। পরিবেশ সুরক্ষা জোরদারে পদক্ষেপ এবং রান্নায় সবুজ জ্বালানির জন্য বিনিয়োগ ও অন্যান্য প্রণোদনা, সবুজ অর্থায়ন বাড়ানো, কার্যকর কার্বন মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং সচেতনতা বাড়ানো দূষণ কমাতে পারে এবং এর ফলে সবুজ প্রবৃদ্ধি অর্জন হতে পারে।

বরিশালে নামাজ চলাকালে মসজিদে এসি বিস্ফোরণ

নামাজ চলাকালে মসজিদে এসি বিস্ফোরণ। ছবি: সংগৃহীত

যোহরের নামাজ চলাকালীন বরিশালে জামে এবায়দুল্লাহ মসজিদে এসি বিস্ফোরণ হয়েছে। বরিশাল নগরীর ব্যস্ততম সড়ক চকবাজার এলাকার জামে এবায়দুল্লাহ মসজিদের দ্বিতীয় তলায় আজ বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

খবর পেয়ে বরিশাল ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পরে দ্রুত আগুন আনে তারা। এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

মুসল্লিদের দাবি, এসি বিস্ফোরণ মধ্য দিয়ে এ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত। তবে ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা বিস্ফোরণের কথা নিশ্চিত না করলেও এসি থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে জানিয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী মুসল্লিরা জানিয়েছেন, বেলা দেড়টার দিকে মুসলিরা জোহরের নামাজ আদায়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। আর তখন মসজিদের দোতলার একটি এসি চালুর জন্য মুয়াজ্জিন বৈদ্যুতিক সুইচ চালু করতেই স্পার্ক করে। পরে তিনি সেটি তাৎক্ষণিক বন্ধ করে দেন। এরপর সবাই নামাজে দাঁড়ালে কিছুক্ষণের মধ্যেই বিকট শব্দ হয়। পরে পাশের ইমামের কক্ষ থেকে ধোঁয়া বের হলে দেখা যায় সেখানে এসির কাছাকাছি আগুন জ্বলছে। তাৎক্ষণিক ফায়ার সার্ভিস ও থানায় বিষয়টি জানানো হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল আমিন জানান, হতাহতের ঘটনা ছাড়াই স্থানীয়দের সহযোগিতায় মুসলিরা নিরাপদে মসজিদ থেকে নামিয়ে আনা হয় এবং বরিশাল সদর ফায়ার স্টেশনের চারটি ইউনিট অল্প সময়ের চেষ্টায় আগুন নেভানো হয়। আগুনে ইমাম সাহেবের রুম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে কিছু বই ও আসবাবপত্র আগুনে পুড়ে গেছে।

এদিকে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স বরিশাল সদর স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার রবিউল আল আমিন জানান, মুসল্লিদের তথ্যানুযায়ী একটি এসি থেকে বিকট শব্দ হওয়ার পরপরই আগুনের সূত্রপাত হয়। তবে এ বিষয়ে নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না, তবে এসি থেকেই আগুনের সূত্রপাত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

তিনি বলেন, ফায়ার সার্ভিস পাশে থাকায় ব্যস্ততম এই ব্যবসায়িক এলাকাটিতে বড় ধরনের বিপদ ঘটেনি, অল্পতে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা গেছে।

রাস্তা সরু হওয়ায় ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি প্রবেশে কিছুটা বেগ পেতে হয় জানিয়ে তিনি বলেন, চকবাজারের সব রাস্তাগুলো সব সময় চালু রাখা উচিত, কোনো প্রতিবন্ধকতা থাকলে সেগুলো অপসারণের জন্য আমরা মসজিদ ও ব্যবসায়িক কমিটিকে অনুরোধ জানিয়েছি।

স্থানীয়রা বলছেন, চকবাজারের রাস্তা সরু হওয়ায় এখানে সব সময় যানজট লেগে থাকে, আর যেটুকু জায়গা খালি থাকে তা পার্কিং নয়তো হকরদের দখলে থাকে। এমনকি গোটা চকবাজারের ফুটপাতও দখলে রয়েছে বিভিন্ন পণ্যের পসরায়।

সহকারী পুলিশ কমিশনার (কোতোয়ালি) নাফিছুর রহমান জানান, ফায়ার সার্ভিস তাৎক্ষণিক সারা দেওয়ায় বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি, এমনকি নামাজের সময় হওয়ায় মুসল্লিরা মসজিদের ভেতরে থাকলেও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

সর্বশেষ সংবাদ

ডিজিটাল হুন্ডির মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকা পাচার, গ্রেপ্তার ৫
দূষণে বাংলাদেশে বছরে ২ লাখ ৭২ হাজার মানুষের অকালমৃত্যু: বিশ্বব্যাংক
বরিশালে নামাজ চলাকালে মসজিদে এসি বিস্ফোরণ
নওগাঁয় পরীক্ষার রুটিন পরিবর্তনের দাবিতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
গুলি করে মারা হলো বিশ্বের সবচেয়ে বড় সেই সাপটিকে
দুঃসময় অতিক্রম করছি, সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে: মির্জা ফখরুল
মাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ায় শিক্ষক কারাগারে
বাংলাদেশ থেকে আম-কাঁঠাল-আলু নিতে চায় চীন
ঢাবির ভর্তি পরীক্ষায় চার ইউনিটে প্রথম হলেন যারা
বাংলাদেশে আসছেন সংগীতশিল্পী আতিফ আসলাম
চট্টগ্রামে ফিশিং বোটে আগুন, দগ্ধ ৪
ঢাবি ভর্তি পরীক্ষার ৪ ইউনিটের ফল প্রকাশ, ৮৯ শতাংশই ফেল
ভারত থেকে ১ হাজার ৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে শুক্রবার!
৮ বছর পর বাঙলা কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা
‘নির্বাচনে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে, এটা তুলব, এটুক অন্যায় করবোই’
প্রথম বাংলাদেশি আম্পায়ার হিসেবে আইসিসির এলিট প্যানেলে শরফুদ্দৌলা
পাঁচ বছর আগে নিরুদ্দেশ হয়ে যাওয়া ভারতীয় নাগরিককে হস্তান্তর
কুড়িগ্রামে অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা ওয়াংচুক
শিগগিরই ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ভাতা বাড়ানো হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
রেলমন্ত্রীর সঙ্গে ভারতের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ