রাজধানী
আন্দোলনরত এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ওপর পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড-লাঠিচার্জ
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ২০ শতাংশ হারে বাড়িভাড়া ও চিকিৎসাভাতা বৃদ্ধির দাবিতে ঢাকায় আন্দোলন কর্মসূচিতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
রোববার (১২ অক্টোবর) দুপুর ১টা ৫০ মিনিটের দিকে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান নেওয়া শিক্ষকদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ জলকামান ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করে। পরে লাঠিচার্জ করে তাদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুরের দিকে পুলিশ প্রথমে জলকামান ছুড়ে আন্দোলনকারীদের পিছু হটতে বাধ্য করে। এরপর একাধিক সাউন্ড গ্রেনেডের শব্দে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। শিক্ষকেরা ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলেও কিছুক্ষণ পর আবারও রাস্তায় ফিরে এসে “আমাদের ন্যায্য দাবি মানতে হবে”, “শিক্ষকদের অবমূল্যায়ন চলবে না”—এমন স্লোগান দিতে থাকেন।
শিক্ষকরা জানান, মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া ও চিকিৎসাভাতা বৃদ্ধির দাবিতে তারা লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছেন। রোববার সকাল ১০টা থেকে সারাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত শিক্ষকরা প্রেস ক্লাবের সামনে সমবেত হতে থাকেন। এতে পল্টন মোড় থেকে হাইকোর্টের কদমফোয়ারা পর্যন্ত যান চলাচল ব্যাহত হয়।
এই কর্মসূচির আয়োজন করে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোট। সংগঠনের নেতারা জানান, সরকারের দেওয়া আশ্বাস বাস্তবায়ন না হওয়ায় তারা বাধ্য হয়ে রাস্তায় নেমেছেন।
উল্লেখ্য, গত ১৩ আগস্ট জাতীয় প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত শিক্ষক সমাবেশে সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা শিক্ষকদের দাবির বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেসিকের ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া, ১,৫০০ টাকা চিকিৎসাভাতা এবং কর্মচারীদের উৎসবভাতা ৭৫ শতাংশে উন্নীত করা হবে।
কিন্তু দুই মাসেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও প্রতিশ্রুতির কোনো বাস্তবায়ন হয়নি। বরং গত ৫ অক্টোবর শিক্ষক দিবসে অর্থ মন্ত্রণালয় মাত্র ৫০০ টাকা বাড়িভাড়া বৃদ্ধির প্রজ্ঞাপন জারি করে, যা আন্দোলনরত শিক্ষকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা সৃষ্টি করে।
শিক্ষক নেতাদের অভিযোগ, “এটি সরকারের দেওয়া আশ্বাসের সঙ্গে প্রতারণা। শিক্ষক সমাজের প্রতি এভাবে অবজ্ঞা করা চলতে পারে না।”
পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের পরও শিক্ষকেরা জানিয়েছেন, তাদের আন্দোলন চলবে। তারা ঘোষণা দেন, “দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত প্রেস ক্লাবের সামনেই অবস্থান অব্যাহত থাকবে।”