বুকার পুরস্কার জিতে ইতিহাস গড়লেন ভারতীয় লেখক বানু মুশতাক

পুরস্কার হাতে বানু মুশতাক। ছবি: সংগৃহীত
কান্নাড়া ভাষার সাহিত্যকে আন্তর্জাতিক খ্যাতির শিখরে পৌঁছে দিলেন লেখক, আইনজীবী ও অধিকারকর্মী বানু মুশতাক। ছোটগল্পের সংকলন ‘হার্ট ল্যাম্প’-এর জন্য আন্তর্জাতিক বুকার পুরস্কার জিতে নিলেন তিনি। এ কৃতিত্বের মাধ্যমে কন্নড় ভাষার সাহিত্য প্রথমবারের মতো পেল এ মর্যাদাপূর্ণ স্বীকৃতি।
মঙ্গলবার (২০ মে) লন্ডনের টেট মডার্ন গ্যালারিতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ৭৭ বছর বয়সী বানু মুশতাকের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।
‘হার্ট ল্যাম্প’ বইটি ইংরেজিতে অনুবাদ করেছেন দীপা ভাস্তি। অনুবাদের গুরুত্ব বিবেচনায় পুরস্কারের অর্থমূল্য ৬৭ হাজার মার্কিন ডলার মুশতাক ও ভাস্তি সমান ভাগে ভাগ করে নেবেন।
১৯৯০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে লেখা ১২টি ছোটগল্প নিয়ে সাজানো হয়েছে ‘হার্ট ল্যাম্প’। দক্ষিণ ভারতের মুসলিম সমাজের দৈনন্দিন জীবন, পারিবারিক টানাপড়েন, সামাজিক বাস্তবতা ও সাংস্কৃতিক আবহ উঠে এসেছে এই গল্পগুলোতে।

বিচারকমণ্ডলীর সভাপতি ম্যাক্স পোর্টার বইটি সম্পর্কে বলেন, ‘এটি একটি বিপ্লবাত্মক অনুবাদ, যা ইংরেজি ভাষার বুননকেই নতুনভাবে ভাবতে শেখায়। “হার্ট ল্যাম্প” শুধু নতুন কণ্ঠস্বরই নয়, বরং অনুবাদ সাহিত্যের ধারণা এবং সম্ভাবনাকেও প্রসারিত করে।’
বিচারকদের মতে, মুশতাকের গল্পগুলো "মজার, প্রাণবন্ত, কথ্য, মর্মস্পর্শী এবং পারিবারিক ও সামাজিক টানাপড়েনের জীবন্ত প্রতিচ্ছবি।"
এর আগে ২০২২ সালে ভারতীয় লেখক গীতাঞ্জলি শ্রী ‘টোম্ব অব স্যান্ড’ বইয়ের জন্য বুকার জিতেছিলেন, যা হিন্দি ভাষা থেকে অনুবাদ করেছিলেন ডেইজি রকওয়েল। তার দুই বছর পর এবার পুরস্কার ঘরে তুললেন বানু মুশতাক।
পুরস্কার গ্রহণ করে বানু মুশতাক বলেন, ‘এ মুহূর্ত যেন আকাশজুড়ে হাজারো জোনাকি একসঙ্গে জ্বলে ওঠার মতো- ক্ষণিকের, উজ্জ্বল এবং সম্মিলিত চেষ্টার ফল।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই পুরস্কার আমার একার কণ্ঠের নয়, বরং বহু কণ্ঠের সম্মিলিত উচ্চারণ। আমাদের সাহিত্যই একমাত্র স্থান, যেখানে বিভাজনের দেয়াল পেরিয়ে আমরা পরস্পরের অন্তর্জগতে ঢুকতে পারি- এমনকি যদি সেটা কয়েকটি পাতার জন্য হয়।’
কর্ণাটকের বাসিন্দা বানু মুশতাক শুধু লেখক নন, তিনি একজন আইনজীবী ও অধিকারকর্মী। নারী অধিকার রক্ষা, ধর্মীয় ও সামাজিক বৈষম্য দূরীকরণে তিনি সক্রিয়ভাবে কাজ করে আসছেন।
