ভারতে মাওবাদী বিদ্রোহীদের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধ, নিহত অন্তত ২৫

ছবি: সংগৃহীত
ভারতের মধ্যাঞ্চলীয় ছত্তিশগড় রাজ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে মাওবাদী বিদ্রোহীদের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষে অন্তত ২৫ জন বিদ্রোহী নিহত হয়েছেন। বুধবার (২১ মে) সকালে রাজ্যের নারায়ণপুর জেলার গভীর জঙ্গলে এই অভিযান চালানো হয়।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযানে অংশ নেয় দেশটির বিশেষ কমান্ডো ইউনিট। অভিযানের সময় মাওবাদীরা গুলি ছোড়লে পাল্টা গুলি চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এতে ঘটনাস্থলেই বহু বিদ্রোহী নিহত হয়।
ছত্তিশগড় রাজ্য পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বিবেকানন্দ সিনহা ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, এই সংঘর্ষে অন্তত ২৫ জনেরও বেশি মাওবাদী বিদ্রোহী নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে শীর্ষস্থানীয় নেতারাও থাকতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে, তবে তাদের পরিচয় এখনও নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।
চীনা বিপ্লবী নেতা মাও সেতুংয়ের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ১৯৬৭ সালে ভারতে গড়ে ওঠে এই সশস্ত্র মাওবাদী বিদ্রোহ। আদিবাসী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকার আদায়ের দাবিতে সশস্ত্র সংগ্রামে লিপ্ত এই বিদ্রোহীরা নকশাল নামেও পরিচিত। কয়েক দশক ধরে চলা এই গৃহযুদ্ধে ভারতজুড়ে মাওবাদী, নিরাপত্তা বাহিনী ও সাধারণ নাগরিকসহ প্রায় ১২ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।
বিশেষ করে ছত্তিশগড়, ঝাড়খণ্ড, উড়িষ্যা, অন্ধ্রপ্রদেশসহ ভারতের খনিজ-সমৃদ্ধ রাজ্যগুলোতে এই বিদ্রোহ দীর্ঘদিন ধরেই সক্রিয়। ২০০০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে মাওবাদী আন্দোলন চরমে পৌঁছায়। তখন প্রায় এক-তৃতীয়াংশ এলাকার নিয়ন্ত্রণ ছিল প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার সশস্ত্র মাওবাদী যোদ্ধার হাতে।
গত বছর ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এক বক্তব্যে মাওবাদী বিদ্রোহীদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানিয়ে সতর্ক করে দেন যে, তারা আত্মসমর্পণ না করলে সর্বাত্মক অভিযানের মুখোমুখি হতে হবে। একইসঙ্গে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, ২০২৬ সালের মার্চের মধ্যেই মাওবাদী বিদ্রোহ সম্পূর্ণরূপে দমন করা সম্ভব হবে।
এই সাম্প্রতিক সংঘর্ষ মাওবাদী বিরোধী অভিযানে ভারতের নিরাপত্তা বাহিনীর একটি বড় সাফল্য হিসেবেই দেখা হচ্ছে। তবে সংঘর্ষে হতাহতদের সংখ্যা ও পরিচয় সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য পেতে অপেক্ষা করতে হবে।
সূত্র: এএফপি
