বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

প্রবীণ অধিকার ভাবনা

প্রবীণরা দূরে নয়- থাকুক পাশে

 

প্রবীণ জনগোষ্ঠী পরিবার ও সমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আজকের এই সমাজ ও সভ্যতার মূল কারিগর প্রবীণ ব্যক্তিবর্গ। সভ্যতার বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে সমাজ কাঠামোর যেমন পরিবর্তন ঘটেছে তেমনি বয়স্ক জনসংখ্যার আকার ও পরিধি ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশ স্বাধীন করেছেন তখনকার তরুণেরা অর্থাৎ আজকের প্রবীণেরা। দেশকে সম্মানজনক অবস্থানে পৌঁছে দিয়েছেন প্রবীণেরা। বর্তমানে যারা দেশ পরিচালনা করছেন সেখানেও মূল দায়িত্বে রয়েছেন প্রবীণেরা। তারপরেও প্রবীণেরা বর্তমানে ভালো নেই। তারা পারিবারিক-সামাজিক বা রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা বা মর্যাদা থেকে বঞ্চিত। আমরা আমাদের নৈতিক, মানবিক ও সামাজিক মূল্যবোধের ফলে পারিবারিক বন্ধন দিন দিন দুর্বল হয়ে পড়ছে। এমনকি শারীরিক ও আর্থিকভাবে সক্ষম ব্যক্তিরা অক্ষম বা দুর্বল প্রবীণদের সাহায্যে তেমন এগিয়ে আসছেন না। ফলে অধিকাংশ প্রবীণ ব্যক্তি বিশেষ করে সহায় সম্পদহীন, আত্মীয়-স্বজনহারা বয়স্ক মানুষ মানবেতর জীবন যাপন করতে বাধ্য হয়।

প্রতিটি দেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বয়স্ক লোকের সংখ্যাও ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভবিষ্যতে মানুষের গড় আয়ু আরও বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে প্রবীণদের মধ্যে অতি প্রবীণ জনগোষ্ঠীর উপস্থিতি ক্রমান্বয়ে বাড়বে। এভাবে জন্মহার ক্রমান্বয়ে কমে যাওয়ার ফলে ২০৫০ সাল নাগাদ ষাটোর্ধ্ব প্রবীণের সংখ্যা ১৫ বছরের কম বয়সি শিশুদের চেয়ে বেশি হবে। জাতিসংঘের এক হিসাবে দেখা যায়, ২০২০ থেকে ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশে ষাটোর্ধ্ব প্রবীণের সংখ্যা বাড়বে ২ দশমিক ৮ গুণ, সত্তরোর্ধ্ব প্রবীণের সংখ্যা বাড়বে ৩ দশমিক ৬ গুণ এবং ৮০ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সের প্রবীণের সংখ্যা বাড়বে ৪ দশমিক ৫ গুণ। নির্ভরশীল প্রবীণ জনগোষ্ঠীর ক্রমবর্ধমান ধারা জন্ম দিচ্ছে নতুন নতুন সমস্যা।

বাস্তবে অর্থনৈতিক, সামাজিক, মানসিক ও শারীরিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হওয়া বয়স্কদের জন্য সুযোগ-সুবিধা প্রদানের জন্য বা তাদের অধিকার আদায়ের জন্য আইনি পদক্ষেপ প্রয়োজন। মাদ্রিদ ইন্টারন্যাশনাল প্ল্যান অব অ্যাকশন ফর দ্যা প্রটেকশন অব এল্ডারলি রাইটস-এর ভিত্তিতে ২০১৩ সালে পিতা-মাতার ভরণ-পোষণ আইনটিও প্রণয়ন করা হয় যেখানে প্রবীণ পিতা-মাতার প্রতি ও পিতামাতার অবর্তমানে দাদা-দাদি ও নানা-নানিকে সন্তানের দেখভাল ও ভরণ-পোষণ করা আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

২০১৩ সালে বাংলাদেশ প্রথম জাতীয় প্রবীণ নীতি তৈরি হয়। ২০১৫ সালে জাতীয় প্রবীণ নীতিমালা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কর্মপরিকল্পনা গৃহীত হয় এবং পরবর্তীতে ২০১৭ সালে ও ২০২০ সালে পিতা-মাতার ভরণ-পোষণ বিধিমালার খসড়া প্রস্তুত করা হয়। এই বিধিমালা দেশের প্রবীণ ব্যক্তিদের কল্যাণে আইনের বাস্তবায়ন, তদারকি ও মূল্যায়নে বিভিন্ন পর্যায়ের কমিটি গঠন করেছে, যেমন- (১) প্রবীণ ব্যক্তিবিষয়ক জাতীয় কমিটি, (২) জেলা প্রবীণকল্যাণ কমিটি, (৩) থানা বা উপজেলা প্রবীণকল্যাণ কমিটি এবং (৪) পৌর ওয়ার্ড বা ইউনিয়ন প্রবীণকল্যাণ কমিটি। যদিও এসকল কমিটির কার্যক্রম এখনও দৃশ্যমান নয়। দেশে প্রবীণ অধিকার সুরক্ষায় ২০১৩ সাল থেকে বাংলাদেশে প্রবীণ অধিকার বিষয়ক নীতিমালা ও ভরণ-পোষণ আইন গৃহীত হলেও বাস্তবে প্রবীণ ব্যক্তিবর্গ তেমন কোনো সুফল ভোগ করতে পারছে না।

উন্নত দেশগুলোর তুলনায় স্বল্পোন্নত দেশে, বিশেষ করে বাংলাদেশে প্রবীণদের সংখ্যা, তাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থা, তাদের প্রতি পরিবার ও সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি, মানবিক অধিকার এবং তাদের কল্যাণার্থে পরিচালিত সরকারি ও বেসরকারি কার্যক্রম প্রায় ভিন্ন ধরনের। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে উন্নত দেশের মতো সেবা কার্যক্রম বা ব্যবস্থা বর্তমানে প্রচলিত নেই। বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন সংস্থা প্রবীণদের কল্যাণে কিছু কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। সমাজে নানামুখী সমস্যা এবং সমস্যা সমাধানে করণীয় বিষয় সম্পর্কে গণসচেতনতা সৃষ্টিতে সম্প্রতি কিছুটা সামর্থ্য হলেও এ সকল কার্যক্রম প্রয়োজনের তুলনায় সীমিত এবং অপর্যাপ্ত। উন্নত বিশ্বের ন্যায় পর্যাপ্ত অবসরকালীন ভাতা, প্রবীণ আশ্রয় কেন্দ্র ইত্যাদি ব্যবস্থাও বাংলাদেশে প্রচলিত নেই। বাংলাদেশের ৮০ শতাংশেরও বেশি প্রবীণদের বসবাস গ্রামে। তারা প্রায় সকলেই দরিদ্র ও কৃষি কাজের সঙ্গে জড়িত। পেনশন, গ্রাচ্যুইটি, কল্যাণ তহবিল ইত্যাদি যেসব কর্মসূচি তা কেবল সরকারি ও কিছু কিছু ক্ষেত্রে বেসরকারি কর্মচারীরা অবসর গ্রহণের পর পেয়ে থাকেন। গ্রামীণ বিপুল পরিমাণ দরিদ্র প্রবীণদের জন্য কার্যত তেমন কোনো কর্মসূচি নেই। এছাড়া সরকার কর্তৃক সময়ে সময়ে পরিচালিত হয় আশ্রয়, খাদ্য, শিক্ষা, বিনোদন, পোশাক ইত্যাদি প্রয়োজন পূরণের নিমিত্তে কিছু কার্যক্রম। ক্রমবর্ধমান এ সামাজিক সমস্যা মোকাবেলার জন্য বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী ও জাতীয় উদ্যোগ বহু আগে থেকেই বিশ্বে শুরু হয়েছে।

বাংলাদেশে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে সমাজসেবা অধিদপ্তর দরিদ্র বিধবা, প্রবীণ, দুঃস্থ ও প্রতিবন্ধী নারীদের জন্য বিভিন্ন ধরনের সামাজিক নিরাপত্তা ও কল্যাণমূলক প্রোগ্রামসমূহ এবং আশ্রয়কেন্দ্র পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে। এসব প্রোগ্রাম ব্যতীত প্রবীণ ব্যক্তিদের স্বার্থ সংরক্ষণ ও কল্যাণের জন্য অন্য কোনো সামাজিক ও অর্থনৈতিক সেবামূলক কার্যক্রম গৃহীত হয়নি। স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে সর্বপ্রথম সমাজসেবা অধিদপ্তরের অধীনে ১৯৯৮ সাল থেকে শুধু দরিদ্র প্রবীণদের জন্য ‘বয়স্ক ভাতা’ কার্যক্রম গৃহীত হয়েছে।

উল্লেখ্য, ইতোমধ্যেই সরকার ৩০ হাজার ভাতা ভোগকারীকে ডিজিটালি ভাতা পরিশোধ করেছে এবং অন্যান্য ভাতাভোগীর তথ্য ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের (ইউডিসি) মাধ্যমে সংগ্রহ করা হচ্ছে। ২০২১-২২ অর্থ বছরে এ খাতে বরাদ্দ রয়েছে ৩৪৪৪.৫৪ কোটি টাকা। ২০২১-২২ অর্থ বছরে ৫৭ লক্ষ ১ হাজার বয়স্ক ব্যক্তিকে জন প্রতি মাসিক ৫০০ টাকা হারে ভাতা প্রদান করা হচ্ছে। এটি অত্যন্ত প্রশংসনীয় উদ্যোগ হলেও প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে, বর্তমানে ষাটোর্ধ্ব প্রবীণদের মাত্র এক-চতুর্থাংশ এই সুবিধা ভোগ করছেন। এমনকি চরম দরিদ্র প্রবীণদের মধ্যেও ভাতাভোগীর সংখ্যা মাত্র এক-তৃতীয়াংশ। বর্তমান বাজারদর এবং প্রবীণদের প্রয়োজনের প্রেক্ষাপটে ভাতার পরিমাণ মাসিক ৫০০ টাকা খুবই কম। তারপরও এই সামান্য আর্থিক সহায়তা ভাতাভোগী প্রবীণদের অনেক স্বস্তি এবং সহায়তা দিয়ে থাকে। তাই প্রবীণকল্যাণ নিশ্চিতে ‘বয়স্ক ভাতার’ পরিধি এবং পরিমাণ দুটোই বৃদ্ধির দাবি রাখে।

অন্যদিকে সমাজ ও রাষ্ট্র সমৃদ্ধির বিনির্মাতারা আজ সমাজ থেকে বিতারিত হয়ে ঠাঁই হয়েছে প্রবীণ আশ্রয় কেন্দ্রে (বৃদ্ধাশ্রম), যদিও আইন অনুযায়ী পিতা-মাতার অনুমতি ব্যতীত সন্তানরা পিতা-মাতাকে কোনো আশ্রয় কেন্দ্রে বা অন্য কোনো স্থানে পৃথকভাবে রাখতে পারবে না। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ঢাকা, সিলেট, রাজশাহী, বাগেরহাট, চট্টগ্রাম ও বরিশালে ৬টি প্রবীণ নিবাস রয়েছে। সারা দেশে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে প্রায় ৩২টিরও বেশি বৃদ্ধাশ্রম রয়েছে। স্বেচ্ছাসেবী সমাজকল্যাণ সংস্থাসমূহ (রেজিস্ট্রেশন ও নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাদেশ, ১৯৬১ (বাংলা) এবং স্বেচ্ছাসেবী সমাজকল্যাণ সংস্থাসমূহ (রেজিস্ট্রেশন ও নিয়ন্ত্রণ) বিধি, ১৯৬২ অনুযায়ী এসকল বৃদ্ধাশ্রম প্রতিষ্ঠিত হয়।

অত্যন্ত দুঃখের বিষয় যে, প্রবীণদের জন্য এসকল আশ্রয় কেন্দ্র বা বৃদ্ধাশ্রম গঠন করার কোনো আইন এখনো তৈরি হয়নি। এ সকল কেন্দ্রে আপনজনহীন প্রবীণদের একেকটি জীবন যেন একেকটি নির্মমতার গল্প। এসকল বৃদ্ধাশ্রমের কার্যক্রমের তদারকি ও নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকারের কোনো কোনা নীতিমালা বা বিধি বা রেগুলেটরি বোর্ড নেই। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় এ প্রতিষ্ঠানের জন্য আরও অধিক সহযোগিতার হাত প্রসারিত করলে এ জাতীয় সংগঠন আরও বিকশিত হতে পারে। অবশ্যই সরকারকে এ লক্ষ্যে একটি নীতিমালা ও কৌশলপত্র প্রণয়ন করতে হবে। পাশাপাশি, প্রবীণদের অধিকার, স্বার্থ এবং সার্বিক কল্যাণ সংশ্লিষ্ট সরকারি ও স্বেচ্ছাসেবী কার্যক্রমগুলো সমগ্র বাংলাদেশে সম্প্রসারিত করা প্রয়োজন।

প্রবীণ অধিকার রক্ষায় কোনো আইন নেই। তবে সময় এসেছে প্রজন্মকে সঠিক পরামর্শ ও দিক নির্দেশনা দিয়ে সকল বয়সীদের জন্য উপযোগী এক সুন্দর বিশ্ব গড়ে তোলার। এ গুরুদায়িত্ব দেশের সকলকেই নিতে হবে। প্রবীণ জনগোষ্ঠীর বার্ধক্যের জীবন যেন স্বস্তিময় হয় সেজন্য সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে উদ্যোগ ও আইন কাঠামো তৈরি করতে হবে। সকল হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি ও প্রবীণদের চিকিৎসার সুবিধার্থে সকল হাসপাতলে পৃথক ‘জেরিয়েট্রিক বিভাগ’ স্থাপন এবং যতদ্রুত সম্ভব ‘স্পেশালাইজড জেরিয়েট্রিক হাসপাতাল’ নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। শিশু, যুব, মহিলা ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের ন্যায় পৃথক ‘প্রবীণ মন্ত্রণালয়’ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সকল প্রবীণদের জন্যে মর্যাদাপূর্ণ, অধিকারভিত্তিক এবং সমান উপভোগ্য পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।

জাপানের সমাজ ও সরকারের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে তারা তাদের দেশের প্রবীণদের ‘জীবন্ত শিল্প’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন ও কত বেশি সুযোগ-সুবিধা ও মর্যাদা দিচ্ছেন। প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত বা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রবীণদের যেভাবে সুযোগ-সুবিধা এবং মর্যাদা দেওয়া হয়- বাংলাদেশ কিন্তু তার ধারে কাছেও নেই। এত অবদানের পরেও দেশের প্রবীণ জনগোষ্ঠী কেনইবা এত অবহেলিত, বঞ্চিত ও কষ্টে থাকবেন? বিষয়টি সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে গভীরভাবে ভাবতে হবে।

পাশাপাশি জনমিতিক পরিবর্তন, আন্তর্জাতিক স্থানান্তর, আধুনিকায়ন, ভিন্ন সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ ইত্যাদির প্রভাবে বাংলাদেশে প্রবীণরা যেন কোনো অংশে অরক্ষিত, অসহায় ও বিচ্ছিন্ন না হয়ে পড়ে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। প্রবীণদের প্রতি বর্তমান সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি ও মনোভাব নৈতিক এবং মানবিক করতে হবে। প্রতিক্ষেত্রেই যেন প্রবীণদের অক্ষম, অসুস্থ, দুর্বল ও পরনির্ভরশীল হিসেবে গণ্য না করা হয়। পারিবারিক ক্ষেত্রে প্রবীণ স্বজনদের কিছুটা দেখভাল ও সেবা পরিচর্যার দৃষ্টিতে দেখা হলেও সামজিক ক্ষেত্রে তাদের প্রতি বৈষম্যময় আচরণ কমে যেত। সরকারি ও বেসরকারিভাবে প্রবীণদের বয়স্ক ভাতা, বৃদ্ধাশ্রম, চিকিৎসাসেবা ও অন্যান্য সামাজিক সুরক্ষার ব্যবস্থা জরুরি ভিত্তিতে গ্রহণের উদ্যোগ নিতে হবে। তরুণ প্রজন্মকে বার্ধক্য সম্পর্কে যথাসময়ে অবহিত, সচেতন আর সার্বিকভাবে প্রস্তুত করতে হবে। আজকের নবীনরাই আগামী দিনে প্রবীণ হবে। তাহলে কেবল বর্তমান প্রবীণরাই নয়, আগামী দিনের প্রবীণদেরও জড়িত করা যাবে। আর এতে করে সমাজ হবে সকল বয়সি প্রবীণদের জন্য সমান উপযোগী।

জাতীয় প্রবীণ নীতিমালা ২০১৩ ও পিতা-মাতার ভরণ-পোষণ আইন ২০১৩ প্রণয়ন করা হলেও প্রবীণদের জন্য সামাজিক কল্যাণমূলক কর্মপরিকল্পনার অভাব এবং আইনি সীমাবদ্ধতার কারণে এ সকল পদক্ষেপ যথাযথভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে না, যদিও সর্বক্ষেত্রেই কর্তৃত্ব এখনো প্রবীণদের হাতে। নাগরিক হিসেবে প্রবীণ ব্যক্তিগণ পূর্ণ অধিকার, সার্বিক নিরাপত্তা এবং মর্যাদা পাওয়ার অধিকারী। এই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশে প্রবীণ জনগোষ্ঠীর কল্যাণ ও অধিকার সুরক্ষার বিষয়টি সুপরিকল্পিতভাবে নিশ্চিত করতে হবে।

ড. নাহিদ ফেরদৌসী: অধ্যাপক (আইন), বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়

এসএন

Header Ad

বাংলাদেশের উন্নতি দেখে এখন লজ্জিত হই: পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ। ছবি: সংগৃহীত

অর্থনৈতিক দিক দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাপক উন্নতি করেছে, বাংলাদেশের দিকে তাকালে এখন লজ্জিত হই বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ।

দেশটির ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে বুধবার (২৪ এপ্রিল) এক মতবিনিময় সভায় এ কথা জানান তিনি। খবর ডন অনলাইনের।

১৯৪৭ সালে উপমহাদেশ ভাগ হওয়ার পর বাঙালিদের এ ভূখণ্ড পাকিস্তানের একটি অংশ হয়ে শাসিত হতে থাকে। কিন্তু সবকিছুতে এ জনপদের মানুষের ওপর ছিল বৈষম্য। পশ্চিম পাকিস্তানের অর্থনৈতিক ও সামাজিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে একসময় মুক্তির সংগ্রাম শুরু হয়, যার ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালে হয় স্বাধীনতার যুদ্ধ। দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ শেষে বিশ্ব মানচিত্রে স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে। স্বাধীনতার ৫৩ বছরে অর্থনীতির বিভিন্ন সূচকে পাকিস্তানের চেয়ে যোজন যোজন এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ।

মুক্তিযুদ্ধের আগের সময়ের প্রসঙ্গ টেনে শেহবাজ শরিফ বলেন, আমি তখন অনেক তরুণ ছিলাম...তখন আমাদের বলা হতো ওই অঞ্চল (বাংলাদেশ) আমাদের জন্য বোঝা। আজ আপনারা জানেন, সেই ‘বোঝা’ কোন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে (অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে)। তাদের দিকে তাকালে আমি এখন লজ্জিত হই।

অনুষ্ঠানে শেহবাজ শরিফ পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য সেদেশের ব্যবসায়ীদের রপ্তানি বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন পরামর্শ দেন। এসময় তিনি ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যের বিষয়েও কথা বলেন। এছাড়া দেশে ‘রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা’র জন্য পিটিআই প্রধান ইমরান খানের প্রতি তার নমনীয় দৃষ্টিভঙ্গিও প্রকাশ করেন শেহবাজ।

উল্লেখ্য, গত ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে জিতে প্রধানমন্ত্রী হন সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ভাই শেহবাজ। বেশ কিছু বছর ধরে পাকিস্তানের অর্থনীতি ধুঁকছে। মূল্যস্ফীতি, দারিদ্র্য বৃদ্ধি, দুর্নীতিসহ নানা সংকটের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছেন শেহবাজ শরিফ।

মৌসুমের সর্বোচ্চ ৩৯.২ ডিগ্রি তাপমাত্রায় পুড়ছে নওগাঁ

মৌসুমের সর্বোচ্চ ৩৯.২ ডিগ্রি তাপমাত্রায় পুড়ছে নওগাঁ। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

নওগাঁয় চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ ৩৯দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করেছে বদলগাছি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ অফিস। যা জেলায় মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বেলা তিনটায় এই তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।

বদলগাছি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক হামিদুল হক জানিয়েছেন, আজ জেলায় মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৯দশমিক ২ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় বাতাসের আর্দ্রতা ২৭ শতাংশে পৌঁছেছে। আকাশ পরিষ্কার থাকায় রোদ এর তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। আগামী কয়েকদিন জেলায় বৃষ্টির কোনো আগাম বার্তা নেই। দেশে যেহেতু হিট-অ্যালার্ট চলছে তাই খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বের না হওয়ায় ভালো।

এদিকে তীব্র তাপদাহে বিপাকে পড়েছে জেলার নিম্ন আয়ের মানুষ। তাপমাত্রা বেশি থাকায় দৈনন্দিন কাজ করতে তাদের ব্যাঘাত ঘটছে। অনেক স্থানে কাজ না থাকায় অলস সময় পার করছে তারা। তীব্র গরমে একটু গাছের ছায়ায় আশ্রয় নিচ্ছে অনেকে। জেলায় বর্তমানে ধান কাটাই মাড়াই এর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। তীব্র তাপমাত্রায় অতি হয়ে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ইসতিস্কার নামাজ আদায় করেছেন মুসল্লীরা। বৃষ্টির জন্য দুই হাত তুলে প্রার্থনা করেছেন তারা।

তীব্র গরমে বেশি বেশি পানি পান করার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। এছাড়াও হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচতে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণের কথা জানিয়েছেন তারা।

চেন্নাইয়ের হয়ে খেলা সবসময় স্বপ্ন ছিল: মোস্তাফিজ

মোস্তাফিজুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

চলমান আইপিএলে বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধিত্ব করছেন মোস্তাফিজুর রহমান। এবারের মৌসুমে তিনি চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে খেলছেন। তিনি বর্তমানে দলটির শীর্ষ উইকেট শিকারিও। চেন্নাইয়ের ডাক পাওয়ার পরের অনুভূতি, মহেন্দ্র সিং ধোনিদের সঙ্গে আলোচনা ও দলের অভ্যন্তরীণ আবহ নিয়ে কথা বলেছেন এই টাইগার পেসার।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) চেন্নাইয়ের মিডিয়া বিভাগকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই বাংলাদেশি পেসার বলেন, এটা চেন্নাইয়ের হয়ে আমার প্রথমবার খেলতে আসা। ২০১৬ সালে আইপিএলে আমার অভিষেক হয়, তবে সবসময় স্বপ্ন ছিল এই ফ্র্যাঞ্চাইজির (চেন্নাই) হয়ে খেলা।

মোস্তাফিজুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

‘যখন চেন্নাই টিম ম্যানেজমেন্টের কল আসে, এরপর থেকে সারারাত আর ঘুম আসতেছিল না। এক রকম উত্তেজনা কাজ করছিল। কিন্তু পরদিন নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলা ছিল, তাই ঘণ্টাখানেকের মতো ঘুমাই, এরপর থেকে শুধু মেসেজ আসছিল। রাত দেড়টার মতো বাজে তখন, সবাই আমাকে অভিনন্দন জানাতে থাকে।’

গত আসরগুলোতে মোস্তাফিজের ফিল্ড সেটাপ নিয়ে অভিযোগ তুলেছে অনেকেই। তবে এবারে আসরে সেই অভিযোগকে ভুল প্রমাণ করেছেন ধোনি। ফলে ধোনি-ব্রাভোদের সঙ্গে পারস্পরিক সম্পর্ক নিয়েও কথা বলেছেন ফিজ।

তিনি বলেন, এখানকার সবাই খুব আন্তরিক, বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের। জাতীয় দলে যেমন সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, তেমনি এখানেও শুরু থেকে আমার অস্বস্তি লাগেনি। এখানে বড় ভূমিকা ছিল মাহি (মহেন্দ্র সিং ধোনি) ভাইয়ের, ডিজে ব্রাভো (চেন্নাইয়ের বোলিং কোচ) এবং অন্যান্য কোচিং স্টাফের। ডেথ ওভারে ফিল্ডিং সেট-আপ থেকে শুরু করে ছোট ছোট কিছু বিষয় জানায়, সেগুলো আমার ডেথ ওভারের বোলিংয়ে খুব ভালো কাজে লাগে।’

ফিজ আরও বলেন, মাহি ভাইয়ের সঙ্গে বেশিরভাগ বোলিং নিয়েই কথা হয়, তবে যা হয় মাঠেই। এর বাইরে তেমন কথা হয় না। মাহি ভাই এসেই বলেন যে এটা (কৌশল) করলে ভালো হয়।

মোস্তাফিজুর রহমান এবং মহেন্দ্র সিং ধোনি। ছবি: সংগৃহীত

‘আইপিএলে খেললে একজন ক্রিকেটার অনেক আত্মবিশ্বাস পায়, পুরো টুর্নামেন্টে আন্তর্জাতিক সব তারকা ক্রিকেটাররা থাকে। এখানে যদি আমি সফল হই, যেকোনো জায়গায় সফল হওয়াটা সহজ হয়।’

জাতীয় দলের হয়ে খেলা এই টাইগার পেসার বলেন, যখন আমি বাংলাদেশের হয়ে খেলি তখন বাড়তি প্রেরণা কাজ করে। আর বিশেষ করে যখন ভারত, পাকিস্তানসহ অন্য বড় দলের সঙ্গে খেলি, যেখানে হাইলাইটস হয় বেশি, সবমিলিয়ে বড় দলের সঙ্গে খেলতে সবসময় ভালো লাগে। এসব ম্যাচে দর্শক থাকে অনেক বেশি। খেলা দেখি কম, তবে খেলতে পছন্দ করি।

সর্বশেষ সংবাদ

বাংলাদেশের উন্নতি দেখে এখন লজ্জিত হই: পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী
মৌসুমের সর্বোচ্চ ৩৯.২ ডিগ্রি তাপমাত্রায় পুড়ছে নওগাঁ
চেন্নাইয়ের হয়ে খেলা সবসময় স্বপ্ন ছিল: মোস্তাফিজ
বৃষ্টি কামনায় টাঙ্গাইলে ইস্তিস্কার নামাজ আদায়
মোবাইল ইন্টারনেট গতিতে আরও ৬ ধাপ পেছালো বাংলাদেশ
বৃষ্টি কবে হবে, জানাল আবহাওয়া অফিস
এফডিসিতে ইউটিউবার প্রবেশ নিষিদ্ধ চাইলেন অঞ্জনা
অনির্দিষ্টকালের জন্য চুয়েট বন্ধ ঘোষণা, ক্ষোভে বাসে আগুন দিল শিক্ষার্থীরা
থাইল্যান্ডে হিট স্ট্রোকে ৩০ জনের মৃত্যু
বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা
প্রতিটি সংসদীয় এলাকায় ‘এমপিরাজ’ তৈরি হয়েছে: রিজভী
অনুমতি মিললে ঈদের আগেই গরু আমদানি সম্ভব: ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত
আবারও ঢাকাই সিনেমায় কলকাতার পাওলি দাম
ময়মনসিংহে সড়ক দুর্ঘটনায় সাবেক কৃষকলীগ নেতাসহ নিহত ২
গোবিন্দগঞ্জে বৃষ্টির জন্য ইস্তিসকার নামাজ আদায়
বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যদের নগদ অর্থের তথ্য চেয়ে চিঠি দুদকের
ভূমি মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, নেবে ২৩৮ জন
জয়কে আজীবন বয়কট, ২ জনকে সাময়িক বহিষ্কার
বৃষ্টির আশায় নওগাঁর বিভিন্ন উপজেলায় ইসতিসকার নামাজ আদায়
নওগাঁয় ঔষধ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে হয়রানি মূলক মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন