রাজনীতি

একসঙ্গে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট হলে আম-ছালা দুইটাই যাবে: ডা. তাহের


ঢাকাপ্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ০৬:১২ পিএম

একসঙ্গে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট হলে আম-ছালা দুইটাই যাবে: ডা. তাহের
ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নির্বাচনের দিন গণভোট আয়োজনের প্রস্তাবকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ ও অবাস্তব’ আখ্যা দিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী’র নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। তিনি সতর্ক করে বলেন, “জাতীয় নির্বাচনের দিন যদি গণভোট আয়োজন করা হয় এবং কোনো অস্থিতিশীলতা দেখা দেয়, তাহলে আম-ছালা দুইটাই যাবে।”

সোমবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন। বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এম এম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বে চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব উপস্থিত ছিলেন। জামায়াতের পক্ষ থেকে বৈঠকে অংশ নেন দলটির নায়েবে আমির ডা. তাহের, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ, অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন সরকার এবং মতিউর রহমান আকন্দ।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডা. তাহের বলেন, “গণভোট আয়োজনের চিন্তা করা যেতে পারে, তবে সেটা জাতীয় নির্বাচনের দিন নয়। কারণ, জাতীয় নির্বাচনের সময় পুরো দেশ একটি বড় প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যায়—রাজনৈতিক দল, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সবাই ব্যস্ত থাকে। এই সময় যদি গণভোটও যুক্ত হয়, তাহলে বিশৃঙ্খলা বা বিভ্রান্তি সৃষ্টি হতে পারে। এতে জাতীয় নির্বাচনও অনিশ্চিত হয়ে যাবে।”

তিনি আরও বলেন, “গণভোট একটি সহজ নির্বাচন প্রক্রিয়া। এটা আলাদা করে আয়োজন করলে আমরা একটি বাস্তব অভিজ্ঞতা (এক্সপেরিমেন্ট) পাব। এতে দেখা যাবে, পুলিশ ও প্রশাসন কীভাবে সমন্বয় করে কাজ করে। এজন্য আলাদা সময় নির্ধারণ করাই যুক্তিযুক্ত হবে।”

খরচ প্রসঙ্গে জামায়াত নেতা বলেন, “গণভোট আয়োজনের জন্য আলাদা করে বড় কোনো অর্থ ব্যয়ের প্রয়োজন নেই। জাতীয় নির্বাচনের জন্য যে ব্যালট বাক্সগুলো কেনা হবে, সেগুলোই ব্যবহার করা যাবে। শুধু অতিরিক্ত খরচ হবে ব্যালট পেপার, কালি, এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের যাতায়াত ও খাওয়ার খরচের জন্য। এর বাইরে বিশেষ কোনো ব্যয় নেই।”

জাতীয় নির্বাচনের সময় গণভোট আয়োজনের বিপক্ষে যুক্তি তুলে ধরে ডা. তাহের বলেন, “নির্বাচনের দিন সব দলই তাদের প্রার্থী ও প্রতীক নিয়ে ব্যস্ত থাকবে। ফলে সাধারণ ভোটার জাতীয় নির্বাচনের ভোট দিয়েই বাড়ি ফিরে যেতে পারেন। তখন গণভোটের ব্যালট কেউ ফেরত দেবেন না বা গুরুত্ব দেবেন না। এতে গণভোটের উদ্দেশ্যই ব্যর্থ হবে।”

তিনি আরও যোগ করেন, “গণভোট যদি আলাদা দিনে হয়, তাহলে মানুষ সেটি নিয়ে আগ্রহ দেখাবে, অংশগ্রহণ করবে। দেশের মানুষ সংস্কার চায়, তাই গণভোটের মতো প্রক্রিয়া সঠিকভাবে ও স্বচ্ছভাবে করতে হলে সেটি অবশ্যই জাতীয় নির্বাচন থেকে পৃথকভাবে আয়োজন করতে হবে।”