ক্যাম্পাস

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকাশ্যে ইসলামী ছাত্রী সংস্থা, ১১ দফা দাবিতে উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি


ঢাকাপ্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশ :২৯ মে ২০২৫, ০২:৫২ এএম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকাশ্যে ইসলামী ছাত্রী সংস্থা, ১১ দফা দাবিতে উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি
১১ দফা দাবিতে উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি দিচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামী ছাত্রী সংস্থা ।ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘদিন পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে এসেছে জামায়াতে ইসলামীর অঙ্গ সংগঠন ইসলামী ছাত্রী সংস্থা। দীর্ঘ সময় নির্যাতন ও নিপীড়নের কারণে সাংগঠনিক কার্যক্রম থেকে পিছিয়ে থাকলেও এবার শিক্ষার্থীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ১১ দফা দাবি নিয়ে আবারও সক্রিয় হয়েছে সংগঠনটি।

গতকাল বুধবার ঢাবি শাখার সভানেত্রী সাবিকুন্নাহার তামান্না ও সেক্রেটারি আফসানা আক্তার সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ-এর সঙ্গে দেখা করে ১১ দফা দাবির একটি স্মারকলিপি হস্তান্তর করেন। উপাচার্যের কার্যালয় সংলগ্ন আব্দুল মতিন ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে এই স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। পরে সাংবাদিকদের জন্য একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে বিষয়টি নিশ্চিত করেন সেক্রেটারি আফসানা আক্তার।

সভানেত্রী তামান্না জানান, “বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে নির্যাতন-নিপীড়নের কারণে দীর্ঘদিন ক্যাম্পাসে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা সম্ভব হয়নি। তবে ৫ আগস্টের পর কেন্দ্রীয় নির্দেশনায় আবারো আমরা কাজ শুরু করেছি। ইতোমধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রী সংস্থার প্রাথমিক কাঠামো গঠন করা সম্ভব হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে সভাপতি ও সেক্রেটারির নেতৃত্বে সংগঠনটির সাংগঠনিক কার্যক্রম চালু রয়েছে এবং খুব শিগগিরই শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করে বিস্তৃত কার্যক্রম শুরু করা হবে।

সেক্রেটারি আফসানা আক্তার বলেন, “ইসলামী ছাত্রী সংস্থা বাংলাদেশের একটি প্রাচীন ও বৃহৎ ছাত্রী সংগঠন। ১৯৭৮ সাল থেকে আমরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছাত্রীদের নিয়ে কাজ করে আসছি। অতীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছি। আজকের এই কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা নতুনভাবে শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ শুরু করলাম।”

স্মারকলিপিতে উত্থাপিত দাবিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে—ক্যাম্পাসে নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা জোরদার, যৌন হয়রানিমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিতকরণ, পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবারের সহজলভ্যতা, পর্যাপ্ত কমনরুম, নামাজরুম ও ওজুখানার ব্যবস্থা, আবাসন সংকট নিরসন, অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনে হলে প্রবেশাধিকার প্রদান, প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতকরণ এবং মাতৃত্বকালীন সহযোগিতা প্রদান।

আফসানা আক্তার বলেন, “ক্যাম্পাসে নারী শিক্ষার্থীদের জন্য একটি নিরাপদ, স্বাস্থ্যসম্মত ও সম্মানজনক পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নেবে বলেই আমরা আশাবাদী। সামনের দিনগুলোতে নারী শিক্ষার্থীদের অধিকার ও দাবি আদায়ে আমাদের ভূমিকা অব্যাহত থাকবে, ইনশাআল্লাহ।”

উল্লেখ্য, এর আগে গত ৫ আগস্ট ঢাবি উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নিয়ে আলোচনায় আসে জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবির। এবার ছাত্রী সংগঠনও প্রকাশ্যে এল। বিশ্লেষকদের মতে, এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতিতে একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে।