কৃষি

দাম না বাড়ায় হিমাগারের আলু নিয়ে বিপাকে কৃষক-ব্যবসায়ী


ঢাকাপ্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯:৩৫ এএম

দাম না বাড়ায় হিমাগারের আলু নিয়ে বিপাকে কৃষক-ব্যবসায়ী
ছবি: সংগৃহীত

আলুর দাম আশানুরূপ না থাকায় নীলফামারীর সৈয়দপুরের কৃষক ও ব্যবসায়ীরা মারাত্মক বিপাকে পড়েছেন। মৌসুমের শেষভাগেও বাজারে আলুর দাম বাড়েনি। ফলে হিমাগারে মজুত করা আলু এখন তাদের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

খুচরা বাজারে বর্তমানে আলু বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ২০ থেকে ২৫ টাকায়। অথচ গত বছর একই সময়ে এ দাম ছিল ৫০ থেকে ৬০ টাকা। কৃষকদের হিসাব অনুযায়ী, মাঠে আলু উৎপাদনে কেজিপ্রতি খরচ হচ্ছে ১৮ থেকে ২০ টাকা। হিমাগারে রাখা, বস্তা, পরিবহন ও অন্যান্য খরচ যোগ করলে এ খরচ দাঁড়াচ্ছে ৩০ টাকার বেশি। কিন্তু বাজারে বিক্রি হচ্ছে অনেক কম দামে, যা চাষিদের লোকসান আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

সৈয়দপুরের তিনটি হিমাগার ঘুরে দেখা গেছে, সেখানে নেই কোনো কর্মচাঞ্চল্য। শেডগুলো ফাঁকা, বাজারে চাহিদা প্রায় নেই বললেই চলে। কৃষক ও ব্যবসায়ীরা আলু তুলতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।

কামারপুকুর এলাকার কৃষক হোসেন আলী বলেন, “এক কেজি আলু তুলতে আমার খরচ হচ্ছে ২০ টাকা। বস্তা আর গাড়ি ভাড়া মিলে খরচ দাঁড়াচ্ছে ৩০ টাকা। অথচ বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়। এতে আমরা চাষিরা মার খাচ্ছি।”

ব্যবসায়ী তোফায়েল আজম জানান, “মৌসুমের শেষভাগে দাম বাড়বে ভেবে অপেক্ষায় ছিলাম। কিন্তু এখনো হিমাগারে আমার ২০০ বস্তা আলু পড়ে আছে। দাম না থাকায় বিক্রি করতে পারছি না।”

হিমাগার মালিকদের আশঙ্কা, আগামী অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে নতুন আলুর চাষ শুরু হলে ৬০ দিনের মধ্যে তা বাজারে উঠবে। তখন পুরোনো আলু বিক্রি করা আরও কঠিন হয়ে পড়বে। তাদের হিসেবে এ বছর এখনো ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ আলু হিমাগারে রয়ে গেছে। বারবার তাগাদা দিলেও কৃষক ও ব্যবসায়ীরা লোকসানের ভয়ে আলু তুলতে আসছেন না।

সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ধীমান ভূষণ বলেন, “যদি সরকারিভাবে আলু কেনা হয়, তবে কৃষকরা উপকৃত হবেন। তবে এখনো সে বিষয়ে কোনো নির্দেশনা পাইনি। এ অবস্থায় আগামী মৌসুমে আলুর চাষ কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আমরা কৃষকদের পরিকল্পিতভাবে চাষাবাদের পরামর্শ দিচ্ছি।”