সারাবিশ্ব

ফ্লোটিলার যাত্রীদের ওপর ভয়াবহ নির্যাতন, পান করতে হয়েছে টয়লেটের পানি


সারাবিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশ: ০৬ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:৩৫ পিএম

ফ্লোটিলার যাত্রীদের ওপর ভয়াবহ নির্যাতন, পান করতে হয়েছে টয়লেটের পানি
ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েলি সেনাদের হাতে আটক হয়ে অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন গাজামুখী ত্রাণবাহী ফ্লোটিলার যাত্রীরা। দীর্ঘ সময় ধরে না খেয়ে থাকতে বাধ্য করা হয়েছে তাদের। এমনকি তৃষ্ণায় পুড়ে মরার মতো পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়ে টয়লেটের পানি পান করতে হয়েছে বলেও জানিয়েছেন ফেরত আসা অধিকারকর্মীরা।

রোববার (৫ অক্টোবর) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানায়, গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা নামের মানবিক সহায়তাবাহী জাহাজে থাকা প্রায় ৪৫০ জনকে ১ থেকে ৩ অক্টোবরের মধ্যে আটক করে ইসরায়েলি বাহিনী। অবরুদ্ধ গাজায় ত্রাণ পৌঁছে দিতে গিয়ে তারা ইসরায়েলের নৌ অবরোধ ভেঙেছিল বলে দাবি করে ইসরায়েল।

ফেরত যাওয়া অধিকারকর্মীদের ভাষ্য মতে, বন্দিদশায় তারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা হাঁটু গেড়ে বসে থাকতে বাধ্য হন, মারধরের শিকার হন, চিকিৎসা বা খাবার না পেয়ে টয়লেটের পানি খেতে বাধ্য হন।

ইতালির অধিকারকর্মী সিজার তোফানি রোমের বিমানবন্দরে নেমে বলেন, “আমাদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করা হয়েছে। ইসরায়েলি সেনারা চিৎকার করেছে, অস্ত্র তাক করেছে, এমনকি ওষুধও আটকে রেখেছে।”

ইতালির সাংবাদিক সাভারিও টমাসি বলেন, “তারা আমাদের পশুর মতো ব্যবহার করেছে। এমনকি গ্রেটা থুনবার্গ ও নেলসন ম্যান্ডেলার নাতিকে পর্যন্ত ছাড় দেয়নি। বন্দিদের নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করেছে। এমনকি অনেকের টাকা ও জিনিসপত্রও চুরি করেছে তারা।”

তুরস্কের ইস্তানবুলে পৌঁছে মালয়েশিয়ার গায়িকা হেলিজা হেলমি ও তার বোন হাজওয়ানি হেলমি জানান, তিনদিন ধরে তারা না খেয়ে ছিলেন। হেলিজা বলেন, “আমি ১ অক্টোবর খেয়েছিলাম। এরপর শুধু টয়লেটের পানি খেয়েছি। আজ কয়েকদিন পর প্রথমবার খাবার পেলাম।” হাজওয়ানি আরও বলেন, “আমরা অসুস্থ ছিলাম, কিন্তু তারা বলেছে, ‘তারা মারা গেছে? যদি না হয়, এটা আমাদের সমস্যা না।’ এরা সত্যিই নিষ্ঠুর মানুষ।”

অধিকারকর্মীরা আরও জানান, সুইডিশ জলবায়ু কর্মী গ্রেটা থুনবার্গকে টেনেহিঁচড়ে মাটিতে ফেলে দেওয়া হয়েছে এবং ইসরায়েলি পতাকায় চুমু খাওয়ানো হয়েছে।

ইতালির আরেক কর্মী পাওলো ডি মন্টিস বলেন, “আমাকে জিপ টাই দিয়ে বেঁধে ঘন্টার পর ঘন্টা আটকে রাখা হয়েছিল। চোখ তুলে তাকালেই মাথায় মারধর করা হতো। আমাদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা হাঁটু গেড়ে বসিয়ে রাখা হয়েছিল।”