সারাবিশ্ব

রাজস্থানে সরকারি হাসপাতালের আইসিইউতে আগুন, ৮ রোগীর মর্মান্তিক মৃত্যু


সারাবিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশ: ০৬ অক্টোবর ২০২৫, ১১:১২ এএম

রাজস্থানে সরকারি হাসপাতালের আইসিইউতে আগুন, ৮ রোগীর মর্মান্তিক মৃত্যু
ছবি: সংগৃহীত

ভারতের রাজস্থান রাজ্যের রাজধানী জয়পুরের অন্যতম বড় সরকারি হাসপাতাল সোয়াই মান সিং (এসএমএস)-এ ঘটে গেল এক ভয়াবহ দুর্ঘটনা। হাসপাতালের নিউরো ট্রমা সেন্টারের আইসিইউ ইউনিটে লাগা আগুনে অন্তত আটজন গুরুতর রোগী প্রাণ হারিয়েছেন, যাদের মধ্যে তিনজন নারী। আহত হয়েছেন আরও অনেকে।

রোববার (৫ অক্টোবর) রাতে হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিটে হঠাৎ করে আগুনের সূত্রপাত হয়। স্থানীয় সময় রাত ১১টা ২০ মিনিটে হাসপাতালের নিউরো আইসিইউ ওয়ার্ডের স্টোর রুম থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা যায়। প্রত্যক্ষদর্শী ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বরাতে জানা গেছে, ওই স্টোর রুমে রাখা ছিল কাগজপত্র, চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং রক্তের নমুনা সংরক্ষণের টিউব। ধারণা করা হচ্ছে, একটি শর্ট সার্কিট থেকেই আগুনের উৎপত্তি। তবে নিশ্চিত হতে তদন্ত চলছে।

হাসপাতালের ট্রমা সেন্টারের ইনচার্জ ডা. অনুরাগ ধাকাড় জানান, আগুন লাগার সময় আইসিইউ ইউনিটে ১১ জন রোগী ভর্তি ছিলেন এবং পাশের ওয়ার্ডে আরও ১৩ জন। তাদের মধ্যে যাদের পক্ষে সম্ভব, দ্রুত বিছানাসহ সরিয়ে নেওয়া হয় পাশের করিডোর ও রাস্তায়। কিন্তু যারা লাইফ সাপোর্টে ছিলেন, তাদের অনেককে বের করে আনা সম্ভব হয়নি। আগুনের ধোঁয়ায় কিছুক্ষণের মধ্যেই পুরো ওয়ার্ড ভরে যায়।

আগুন নিয়ন্ত্রণে দমকল বাহিনী পৌঁছালেও, প্রথমেই দেখা দেয় প্রবল চ্যালেঞ্জ। ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তারা জানান, যখন তারা পৌঁছান, তখন আইসিইউর প্রায় সব প্রবেশপথ ধোঁয়ায় অচল। শেষমেশ ভবনের উল্টোপাশের জানালার কাচ ভেঙে ভেতরে পানি ছুড়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা চালাতে হয়। প্রায় দেড় ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

নিহতদের মধ্যে রয়েছেন- পিন্টু (সিকার), দিলীপ (জয়পুর), শ্রীনাথ (ভারতপুর), রুক্মণি (ভারতপুর), কুশমা (ভারতপুর), সর্বেশ (উত্তরপ্রদেশের আগ্রা), বাহাদুর (জয়পুর) এবং দিগম্বর ভার্মা। এদের অনেকেই নিউরো সার্জারি ও জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

এ দুর্ঘটনার পর পরই হাসপাতালে ছুটে যান রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ভজনলাল শর্মা, সংসদবিষয়ক মন্ত্রী যোগরাম প্যাটেল ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জওহর সিং বেধাম। তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন ও ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। তবে সেখানে উপস্থিত কিছু রোগীর স্বজন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, হাসপাতালে আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গেই অনেক স্টাফ পালিয়ে যান, কেউ উদ্ধার অভিযানে এগিয়ে আসেননি। তারা অভিযোগ করেন, ভেন্টিলেশনে থাকা রোগীদের বাঁচাতে কেউ সঠিক সময় উদ্যোগ নেননি।

আগুন লাগার প্রকৃত কারণ জানতে এরইমধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। একইসঙ্গে রাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগ সব সরকারি হাসপাতালে বিদ্যুৎ ও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা পর্যালোচনার নির্দেশ দিয়েছে।