বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৩৬

নেই দেশের নাগরিক

 

“মানুষ উদ্ধার।“
“মানুষ উদ্ধার! স্পিডবোডে আর ক-জন ধরবে? তা ছাড়া এখন তো সীমান্ত সিল। কোনো রোহিঙ্গাই তো আর নদী পেরিয়ে ইচ্ছেমতো এখানে আসতে পারবে না। বিজিবির কড়া নজরদারি রয়েছে। তাদের চোখে ধুলো দেওয়া মানে, নিশ্চিত মৃত্যু।“
“ধুলো দিতে হবে কী মূলো দিতে হবে, সেসব তোর ব্যাপার। আমাকে নাফ নদীতে যেতে হবে এবং আমার পরিবারকে উদ্ধার করে এখানে আনতে হবে, এটাই শেষ কথা। এবার কী করতে হবে না হবে সেটা তুই ভাব।“
“পরিবার! তোর পরিবার!” আকাশ থেকে পড়ল সাদ্দাম।
“হ্যাঁ, আমার পরিবার। আমার আব্বা, মা, ভাই, ভাবি, ভাইপো সবাই এখন নাফ নদীতে।“
“তুই বলছিস কী!”
“হ্যাঁ, আমি ঠিকই বলছি।“
“তা জানলি কী করে?”
“ফোনে। আব্বাদের নৌকোদের সঙ্গে একই সঙ্গে একটা নৌকো ছিল। সেই নৌকোর কোনো লোক ফোন করেছিল। আসলে, হয়েছিল কী, আমার কোনো ভাই হয়ত ওই লোকটার ফোন থেকে আমাকে ফোন করেছিল, তখন আমার ফোন বন্ধ ছিল। যেহেতু আমার ফোনে ‘মিসডকল অ্যালারট’ সার্ভিস অন ছিল, তাই পরে আমি ওই নম্বর থেকে ‘মিসডকল’ দেখতে পাই। আমি কার ফোন না কার ফোন বলে, কলব্যাক করি, তখন ওই ভদ্রলোক ফোনটা রিসিভ করেন এবং আব্বাদের নাফ নদীতে ভেসে থাকার ব্যাপারটা বলেন।“
“তোর বাড়ির কারোর সঙ্গে সরাসরি কথা হয়নি?”
“নাহ, লোকটাকে যখন আমি ফোন করি, তখন আমাদের বাড়ির নৌকোটা ওদের নাগালের বাইরে চলে গেছিল।“
“পরে আর কন্টাক করিসনি?”
“একবার নয়, দুবার নয়, বহুবার করেছি। পাইনি। বলছে, স্যুইচঅফ। আমার মনে হয়, মোবাইলে চার্জ নেই।“
“তাহলে তো একটা স্পিডবোড জোগাড় করতেই হয়।“ সাদ্দামের মনটা তড়াক করে ওঠে। সে যেন একটা নাড়ির টান অনূভব করে।
সাদ্দামের সঙ্গে আতিফের রক্তের কোনো সম্পর্ক নেই। সে মংডুর ফাতাংজার লোক। ‘রোহিঙ্গা জেহাদি ফৌজ’এ এসে তাদের আলাপ। সাদ্দাম মূলত আর জে এফ’এর হয়ে গুপ্তচরের কাজ করে। তরুণ ছেলেদের মগজ ধোলাই করে আর জে এফ’এ ঢোকানো তার কাজ। সে বয়সে আতিফের মাথামাথি। তার চিমটে শরীরের হাড়ে হাড়ে বুদ্ধি। তার চিথোল কপালের ডানদিকে একটা কাটা দাগ আছে। দাগটা অনেকটা ইংরাজি জে অক্ষরের মতো। উজ্জ্বল তামাটে রঙের সাদ্দামের মাথায় ঝাঁকড়া চুল। মুখে চাপ দাড়ি। হাল্কা ফিনফিনে গোঁফ।
ঝড়ের লেজের ঝাপটায় চটের দরজাটা উৎপটাং হয়ে সাদ্দামের পিঠের উপর দিয়ে উড়ে গিয়ে পেছনের চুলের হিপ্পিতে ঠেকল। ঠান্ডা হলহলে বাতাস হলহল করে ঘরে ঢুকছে। গায়ে কাঁটা দিচ্ছে আশ্বিনের কালহা। আতিফ উদেম দরজা দিয়ে বাইরে দেখছে, পলিথিনের ছাপুর ঘরগুলোর চালা ঝড়ের আউড়িবাউড়ি বেঁধে একে একে শুকনো পাতার মতো উড়ে যাচ্ছে। যেভাবে উড়ে যাচ্ছে ধানগাছের শীষ, পাতা। এই নদী তীরবর্তী পলিজমির ধানি ক্ষেতির মাঝে এই ত্রিপলের ছাউনিগুলো যেন আগাছার মতো মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে। যেন বড্ড বেমানান। আর ঝড় এসে সেই আগাছাগুলোকেই বেশি বেশি করে উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে। প্রকৃতি যেন এই অস্থায়ী বসতভিটের উপর রুষ্ট। কিন্তু মানুষ তো প্রকৃতি থেকে আলাদা কেউ নয়। মানুষ তো প্রকৃতিরই সন্তান। ধান যেমন মানুষের ফসল। ঠিক তেমনই মানুষ ঈশ্বরের ফসল। আর সব ফসলই প্রকৃতির কোলে বেড়ে ওঠে। পুষ্ট হয়। ফুল ফল দেয়। গন্ধ ছড়ায়।

আতিফ দেখছে, যেসব রোহিঙ্গারা এখনো এই অস্থায়ী মাথা গোঁজার চালাছাউনি পায়নি, তারা এই ঘোর দুর্যোগে ঘাসের, ধানের ঝোপ আঁকড়ে আকাশের দিকে পিঠ করে, উপুড় হয়ে শুইয়ে আছে। মাথার তলায় বাড়ি থেকে বয়ে নিয়ে আসা পোঁটলাপুঁটলির বালিশ। পিঠের উপর সাট করে পেড়ে রাখা বস্তার থলে। মানুষ কুকুর শেয়ালের থেকেও খারাপ ভাবে বেঁচে আছে। আতিফ ভাবে, এই শরীরে রুহু দাঁত কামড়ে কেন যে পড়ে আছে? এতে শরীরেরও ছড়াদ, জানেরও ছড়াদ। জীবন এখানে ডালের খোসা ছাড়ানোর মতো যাঁতাকলে অনবরত পেষন খাচ্ছে। পড়পড় করে উঠে যাচ্ছে, তার ছালচামড়া। তবুও এ শরীর রুহুকে ছাড়তে চায় না। রুহুকে আঁকড়ে ধরে রাখতে চায়। মাংস যায় যাক, চামড়া যায় যাক, রক্ত আর হাড় থাকলেই হল। ওতেই ঠনঠন করে বাড়ি মেরে বেঁচে থাকবে। থপথপ করে হাটবে জীবন। মাথার উপরের পড়পড়, টপটপ, সাঁ সাঁ, খচমচ শব্দ ধীরে ধীরে কমে আসছে। বাতাসের ঝাপটার বেগও একটু একটু করে মরে আসছে। আশ্বিনের সর্বনেশে ঝড়টার তেজ কমে আসছে। জানালার খোপ দিয়ে তার আধমরা আস্ফালনটা হুড়ুম হুড়ুম করছে।
“চাচাজির খবর কী? শরীরের অবস্থা?” জানতে চাইল সাদ্দাম।
“ভালো না। এমনিতে তো বিছানাগত ছিলই। লোকটা ফোনে যেটুকু আভাস দিয়েছিলেন, তাতে আব্বার কন্ডিশন খুবই সিরিয়াস। ‘যাই যাই’ অবস্থা। জানি না, আজ আর বেঁচে আছে কি না!” আতিফের গলা ভারী হয়ে ওঠে।
“তুই, টেনশান করিস না। চাচাজী সুস্থই থাকবেন।“
“এসব কথার কথা সাদ্দাম, বলতে হয় তাই বলছিস। বাস্তব তো অন্য কথা বলছে। আব্বার যা অবস্থা ছিল, তাতে তার পক্ষে আর বেঁচে থাকা কোনোমতেই সম্ভব নয়।“
“তুই এভাবে বলতে পারিস না। হায়াত-মউতের মালিক আল্লাহ। তিনি যদি বাঁচিয়ে রাখেন তো চাচাজি নিশ্চয় বেঁচে আছেন।“
“তোর কথায় যেন সত্যি হয়। আমাদের স্বাধীন দেশের জন্যে আব্বার বেঁচে থাকাটা যে খুবই জরুরি। আব্বার যে দাফনের মাটিটুকু পাওয়া বড্ড প্রয়োজন।“
“হ্যাঁ, তুই যেন স্বপ্নটার কথা একদিন বলছিলি। তুই এসব মানিস?”
“দেখ, আমি বিজ্ঞানের ছাত্র ঠিকই, কোনো বুজরকি, কুসংস্কারে আমি বিশ্বাস করি না। কিন্তু, এই ব্যাপারটা যেন আমার অন্তরকে অনবরত ভাবায়। আমার এতদিনের বদ্ধমূল ধারণায় অনবরত হাতুড়ি ঠুকে। কেমন যেন মনের মধ্যে একটু একটু করে বিশ্বাস জন্মে উঠছে। আমার ক্যালকুলাস, কোয়ান্টাম থিউরির উপর গেঁড়ে বসছে জিন-পরি, ফেরেশতা আর রাতের খোয়াব। আমি অলৌকিক বিশ্বাসে বিশ্বাসী হয়ে উঠছি।“
“মানুষের নিজের মন দুর্বল হয়ে গেলে, নিজে নিঃস্ব হয়ে গেলে, সে টাকায় নিঃস্ব নয়, ভাবনায়, আপনজনে, আত্মীয়-কুটুমে নিঃস্ব, একা হয়ে গেলে, মনে এসব বিশ্বাস দানা বাঁধে। মানুষ তখন, নিজের বুদ্ধিতে নয়, হাওয়া-বাতাসের কাছে নিজেকে সঁপে দেয়। তখন মাথার মগজের থেকে কাঁধের ফেরেশতার প্রতি বেশি বিশ্বাস জন্মায়। মানুষ তখন জিন-ফেরেশতার তুরকি নাচনে নাচে। হাঁটে। খায়। অর্থাৎ যাপন করে।“
“আব্বার স্বপ্নাদেশটা যাইই হোক, যত বুজরকি, শেরেকি হোক না কেন, আমাদের চেষ্টা করতে তো কোনো ক্ষতি নেই? কী আর দিতে হবে, হাতের তিনমুঠো মাটি। সাড়ে তিন হাত মাটির উপরে একটা কবর। এতে তো আর রাষ্ট্রও চলে যাচ্ছে না, রাজপাটও চলে যাচ্ছে না। ক-দিনের আর মাটি দখল? বড়জোর ছ-মাস, এক বছর, না হয় দু-বছরই হলো, পচে তো সেই মাটিই হয়ে যাবে? কবর কখনো চির দখলের জায়গা নয়। কানো মৌরসিপাট্টাও নয়। শুধু রক্ত-মাংসের দেহটা পচে মাটি হওয়া পর্যন্ত কদিনের ঠাঁই মাত্র।“
“একটা ‘কবর’ মানেই যে আজ একটা ‘দেশ’। কবরের মাটি পাওয়া মানেই তো দেশ পাওয়া। আল্লাহ যেন চাচাজির কপালে ‘দাফনের মাটি’ লিখে রাখেন।“
“ঝড় মনে হয় থেমে আসছে, তুই বোটটার ব্যবস্থা কর।“ বাইরের ঝড় থেমে আসলে, মনের ঝড় ওঠে। আতিফের মন তার পরিবারের জন্যে আনচান করে উঠল।
“কাজটা বড্ড কঠিন, তবে অসম্ভব নয়, দেখি, ব্যবস্থা করতে পারি কি না। বিজিবির নয়াপাড়া রিজিয়ন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট সৈয়দ হাসান মির্জা খুবই কড়া ধাতের, তাঁকে বশে আনা মুশকিল। কুতুপালং রিজিয়ন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল খন্দকার মারুফ হাসানকে দিয়ে কাজটা করাতে হবে। তাঁর টাকার উপর বড্ড লোভ। টাকার টোপ দিলেই হলো, ব্যস, কাজ হাশিল।“
“দেখ, এই এলাকায় কে কীসে মুখ দেন, ঘাসে না গোবরে, কে কীসে বশ হন, টাকায় না নারীতে, কে কীসের গন্ধে মজেন, নোটে না ঘোঁটে, সেসব নাড়িনক্ষত্র তোর হাড়ে হাড়ে জানা। ফলে, যা করবি, তুইই করবি, আমি তো এখানে ঠুঁটো জগন্নাথ। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখা ছাড়া তো কিছুই করার নেই।“
“সকাল হোক, ব্যবস্থা ঠিক একটা হয়ে যাবে। আপাতত যেখানে বসে আছিস, সেখান থেকে একটু সরে বস। ত্রিপল ফুটো হয়ে পানি পড়বে।“ সাদ্দামের কথায় পই করে মাথা তুলে উপরে ছাদের দিকে তাকাল আতিফ। এক নান জল ত্রিপলের উপর জমে কালো ত্রিপলটা ন-মাসের পোয়াতি মেয়ের পেটের মতো ফুলে উঠেছে! যেকোনো মুহূর্তে ভার সামলাতে না পেরে ত্রিপল ফুটো হয়ে নিচে পড়বে। টুলটা পাশে সরিয়ে বসল আতিফ। সাদ্দামকে বলল, “একটা কিছু দিয়ে উপরের দিকে ঠেলা দিয়ে পানিটা ফেলে দে।“
“হু, দিচ্ছি।“ বলেই সাদ্দাম ঘরের উত্তর-পশ্চিম কোণের দিকে গডগড করে হেঁটে গেল। গোপন আস্তানায় রাখা একটা এ কে সাতচল্লিশ রাইফেল হাতে নিয়ে, জলের ভারে ঝুলে থাকা ত্রিপলটার একটু পাশে দাঁড়িয়ে, রাইফেলের নলের ডগা দিয়ে উপরের দিকে মারল ঠেলা। আতিফ চোখ ছানাবড়া করে বলল, “পানি ফেলতেও এ কে ফট্টি সেভেন! এ তো কথাটা ঘুরে বললে, পানি মারতে কামান দাগা।“

চলবে…

আগের পর্ব পড়ুন

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৯

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৮

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৭

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১৯

এসএন  

আজকের সেহরির শেষ সময় (ঢাকা)

0

ঘণ্টা

0

মিনিট

0

সেকেন্ড

দুঃসময় অতিক্রম করছি, সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে: মির্জা ফখরুল

ইফতার মাহফিলে বক্তব্য রাখছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

দেশের মানুষ দুঃসময় অতিক্রম করছে উল্লেখ করে দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, আমরা একটা কঠিন সময় অতিক্রম করছি। একটা দুঃসময় অতিক্রম করছি। এসময়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) রাজধানীর লেডিস ক্লাবে এক ইফতার মাহফিলে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। রাজনৈতিক নেতাদের সম্মানে এ ইফতালের আয়োজন করা হয়।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা একটা কঠিন সময় অতিক্রম করছি। একটা দুঃসময় অতিক্রম করছি। ফ্যাসিবাদী শক্তি সমস্ত জাতির ওপর চেপে ধরে বসে আছে। আমাদের সকল আশা আকাঙ্ক্ষাগুলো ব্যর্থ করে দিয়ে এক দলীয় শাসন ব্যবস্থা চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এ অবস্থার প্রেক্ষিতে আমরা আন্দোলন-সংগ্রাম শুরু করেছি।

সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এক দফার আন্দোলনে সব গণতান্ত্রিক শক্তিকে সম্মিলিত করে। আমরা চূড়ান্ত আন্দোলনের জন্য কাজ করছি। সে আন্দোলনে বিজয় আমাদের হবেই, ইনশাআল্লাহ্।

অনুষ্ঠানে জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেন, ১৮ কোটি মানুষের দেশে মানুষ আজ মজলুম। পুরো দেশের মানুষ আজ জুলুমের শিকার। লড়াই আমাদের চালিয়ে যেতে হবে। বিজয় আমাদের হবেই, ইনশাআল্লাহ্।

এতে জামায়াত নেতাদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন- জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া মো. গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, নায়েবে আমীর সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, সেলিমা রহমান, বিএফইউজের একাংশের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, এবি পার্টির আহ্বায়ক এ এফ এম সোলায়মান চৌধুরী, এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত সেলিম, জাগপা একাংশের সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী ও নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না প্রমুখ।

উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ মাহমুদ চৌধুরী, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, জাতীয় পার্টির মহাসচিব আহসান হাবীব লিংকন, গণঅধিকার পরিষদ একাংশের আহ্বায়ক মশিউজ্জামান, জাগপার জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি রাশেদ প্রধান, কল্যাণ পার্টির মহাসচিব মুহাম্মদ আবু হানিফ, গণঅধিকার পরিষদ একাংশের সভাপতি নুরুল হক নুর, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, আহমেদ আযম খান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জাতীয় সংসদের সাবেক বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নাল আবদিন ফারুক, যুগ্ম-মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, নির্বাহী কমিটির সদস্য ফজলুর রহমান খোকন, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম ও ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির প্রমুখ।

মাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ায় শিক্ষক কারাগারে

গ্রেপ্তার শিক্ষক ছেলে জলিল মিয়া। ছবি: সংগৃহীত

জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে নিজের মাকে ভরণপোষণ না দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগে ছেলেকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সরিষাবাড়ী থানার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুশফিকুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে বুধবার (২৭ মার্চ) বিকালে উপজেলার মহাদান ইউনিয়নের বাশঁবাড়ী এলাকায় নিজ বাড়ি থেকে ছেলে জলিলকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই দিন রাতে তাকে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

অভিযুক্ত জলিল মিয়া পেশায় একজন শিক্ষক। তিনি উপজেলার মহাদান ইউনিয়নের শ্যামের পাড়া ফিরোজা মনিজা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক।

ভুক্তভোগী খোদেজা বেগম বলেন, আমার এক ছেলে ও এক মেয়ে। মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার পর থেকে মেয়েকে ওয়ারিশ থেকে বঞ্চিত করে সকল সম্পত্তি ছেলেকে লিখে দিতে বলে। এতে রাজি না হলে আমার খোঁজ খরব নেওয়া বন্ধ করে দেয়। সেই সাথে চিকিৎসা সেবাসহ কোন প্রকার ভরণপোষন দেয় না। বিভিন্ন সময় আমাকে মারপিট সহ শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে।এক পর্যায়ে আমাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। আমি বৃদ্ধ বয়সে নিরুপায় হয়ে আইনের আশ্রয় নেই।

এ বিষয়ে সরিষাবাড়ী থানার থানার ওসি মুশফিকুর রহমান বলেন, ভুক্তভোগী খোদেজা বেগম থানায় ২০১৩ সনের পিতা-মাতার ভরণ-পোষণ আইন ৫(১) ধারায় মামলা করেন। মামলার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে আবদুল জলিলকে গ্রেপ্তার করে।

বাংলাদেশ থেকে আম-কাঁঠাল-আলু নিতে চায় চীন

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ থেকে আম, কাঁঠাল, আলু, চামড়াজাত ও পাটজাত পণ্য আমদানি করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে চীন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব তপন কান্তি ঘোষ এবং ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন এ তথ্য জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তারা এ তথ্য জানান। বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) সই করতে যৌথভাবে খসড়া সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রতিবেদন বিনিময় নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

কবে নাগাদ এফটিএ সই হতে পারে- সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে এমন প্রশ্ন করা হলে সচিব বলেন, এখনো চুক্তি হয়নি। এখন আলোচনা শুরু হবে। আগামী তিন বছরের মধ্যে চুক্তি সম্পন্ন করতে পারলে ভালো। যদি না হয় আমাদের আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে। আলোচনা শেষ না হলে ততদিন যেন আমাদের এলডিসি হিসেবে এ সুবিধাগুলো দেয় তার জন্য বলব।

চুক্তির ফলে বাংলাদেশ কী ধরনের সুবিধা পাবে- জানতে চাইলে সচিব বলেন, আমাদের প্রধান রপ্তানি পণ্যের মধ্যে তৈরি পোশাক পণ্যের বাইরেও আরও কিছু পণ্য আছে। রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে যখন আলাপ করেছি। তিনি জানিয়েছেন আমের অনেক সম্ভাবনা আছে। পাটজাত পণ্যের অনেক সম্ভাবনা আছে। তারপর হস্তশিল্পের বিষয় আছে। এর বাইরে আরও পণ্য আছে। আমরা এরই মধ্যে চামড়া রপ্তানি করছি। আমরা মানসম্পন্ন চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি করতে পারি। চীনে ১৪০ কোটি মানুষ। সেখানে যদি আমরা বৈচিত্র্যময় পণ্য নিয়ে যেতে পারি তবে সেটা হতে পারে বিশাল বাজার। চুক্তি হয়ে গেলে বিনিয়োগ বাড়ারও সম্ভাবনা রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলন। ছবি: সংগৃহীত

 

তপন কান্তি ঘোষ বলেন, বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ বর্তমান সরকারের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রার উল্লেখযোগ্য অর্জন। এ অর্জন বিশ্বে বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি সৃষ্টি এবং বিনিয়োগ ও বাণিজ্যে নতুন সম্ভাবনা তৈরির পাশাপাশি বেশ কিছু চ্যালেঞ্জও তৈরি করবে।

তিনি আরও বলেন, যার মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ হিসাবে উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশে পণ্য রপ্তানির সময় শুল্কমুক্ত কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা ২০২৬ সালের পরে হারানো এবং মূল্য সংযোজনের হার অন্যতম। এর ফলে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যকে ওই সব দেশের বাজারে প্রবেশের সময় সাধারণভাবে আরোপিত শুল্কের সম্মুখীন হতে হবে উল্লেখ করে সচিব বলেন, ফলে ওই সব দেশে বাংলাদেশের রপ্তানি বাজার সংকোচনের সম্ভাবনা রয়েছে।

তপন কান্তি ঘোষ বলেন, আমরা প্রধানত তৈরি পোশাক রপ্তানি করি। ২০২২-২৩ অর্থবছরে আমরা চীনে ৬৭৭ মিলিয় মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছি। বিপরীতে চীন থেকে ২২ দশমিক ৯০ বিলিয়ন ডলার আমদানি করা হয়েছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, বাংলাদেশে চীনের বড় বিনিয়োগ রয়েছে। এখন চীন বাংলাদেশে দ্বিতীয় বৃহৎ বিনিয়োগকারী দেশ। এফটিএ সই হওয়ার পর বিনিয়োগ আরও বাড়বে। বাংলাদেশ চীনে আম, কাঠাল, আলু, পাটপণ্য, চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি করতে পারে।তিনি আরও বলেন, বর্তমান বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য এফটিএ করা প্রয়োজন।

সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর। ছবি: সংগৃহীত

 

অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এলডিসি উত্তরণ পরবর্তী সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকারের অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুসারে বাংলাদেশের রপ্তানি বাজার সংরক্ষণ এবং সম্প্রসারণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন দেশ ও ট্রেড ব্লকের সঙ্গে আঞ্চলিক বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

চীন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ অর্থনীতের দেশ এবং বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অংশিদার। চীনে বাংলাদেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণের জন্য একটি বাণিজ্য সম্ভাবনাময় এলাকা।

অনুষ্ঠানে আরও জানানো হয়, পণ্য ছাড়াও সেবা এবং বিনিয়োগ খাতেও চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের সম্ভাবনা রয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ এবং চীনের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রাথমিকভাবে দুই দেশের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।

এ উদ্যোগের অংশ হিসেবে ২০১৬ সালের ১৪-১৫ অক্টোবর চীনের রাষ্ট্রপতির বাংলাদেশ সফরকালে দু’দেশের মধ্যে এফটিএ স্বাক্ষরের বিষয়ে যৌথ সম্ভাব্যতা যাচাই সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করা হয়।

সর্বশেষ সংবাদ

দুঃসময় অতিক্রম করছি, সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে: মির্জা ফখরুল
মাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ায় শিক্ষক কারাগারে
বাংলাদেশ থেকে আম-কাঁঠাল-আলু নিতে চায় চীন
ঢাবির ভর্তি পরীক্ষায় চার ইউনিটে প্রথম হলেন যারা
বাংলাদেশে আসছেন সংগীতশিল্পী আতিফ আসলাম
চট্টগ্রামে ফিশিং বোটে আগুন, দগ্ধ ৪
ঢাবি ভর্তি পরীক্ষার ৪ ইউনিটের ফল প্রকাশ, ৮৯ শতাংশই ফেল
ভারত থেকে ১ হাজার ৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে শুক্রবার!
৮ বছর পর বাঙলা কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা
‘নির্বাচনে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে, এটা তুলব, এটুক অন্যায় করবোই’
প্রথম বাংলাদেশি আম্পায়ার হিসেবে আইসিসির এলিট প্যানেলে শরফুদ্দৌলা
পাঁচ বছর আগে নিরুদ্দেশ হয়ে যাওয়া ভারতীয় নাগরিককে হস্তান্তর
কুড়িগ্রামে অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা ওয়াংচুক
শিগগিরই ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ভাতা বাড়ানো হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
রেলমন্ত্রীর সঙ্গে ভারতের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ
একনেকে ৮ হাজার কোটি টাকার ১১ প্রকল্প অনুমোদন
বিএনপি নেতাদের স্ত্রীরা ভারতীয় শাড়িতে কাঁথাও বানায় না: রিজভী
ইভ্যালির রাসেল-শামিমার বিচার শুরু, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
বিশ্বকাপ না জিতলে আমি হয়তো জাতীয় দল ছেড়ে দিতাম: মেসি
জিম্মি নাবিকদের উদ্ধারে অনেক দূর এগিয়েছে সরকার: পররাষ্ট্রমন্ত্রী