শুক্রবার, ৯ মে ২০২৫ | ২৬ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৩০

নেই দেশের নাগরিক

 

“আর এই ঘাগুমাল’টাকে ‘আউট’ করতে না পারলে, তুই কিন্তু এই মাকড়সার জালের ঘেরাটোপ থেকে বেরোতে পারবি না। এই যে তুই ভাবছিস, দু’দিনের মধ্যে চুরি করে গোপনে এখান থেকে হুট করে তোর আব্বা-মা’দের হদিশ করতে যাবি, সেটা ও মাল বেঁচে থাকা অবধি হবে না। সেটা করতে হলে, ওকে ‘আউট’ করতেই হবে। ওর মৃত্যুই আমাদের সমাধান।“
“কিন্তু সেটা তো আরও মারাত্মক কঠিন কাজ। ব্যাপক ঝুঁকি। বিপদ একেবারে পায়ে পায়ে।“
“শোন, একটা কথা আছে না, বজ্র আঁটুনি ফস্কা গেরো।“
“হ্যাঁ, তা আছে।“
“তাহলে, আবার চিন্তা কীসের?”
“চিন্তা কীসের মানে? ‘প্রবাদ’ আছে মানেই কি ‘সমাধান’ আছে? ও তো কথার কথা। সব কথা কি সব জায়গায় খাটে?”
“ভুলে যাস না, ‘সমস্যা’ আছে মানেই ‘সমাধান’ আছে। শুধু খুঁজে বের করার বুদ্ধি লাগে, এই যা।“
“কিন্তু, এ যে অন্ধকার আর অন্ধকার, ঘুটঘুটে অন্ধকার। ওসব চক্রান্ত আর অভিসন্ধির কাঠখড়ও তো দেখতে পাওয়া যাবে না!”
“অন্ধকারকে দেখার জন্যেও আল্লাহ মানুষকে একটা চোখ দিয়েছেন। সে চোখ বন্ধ রাখলে হয় না। আর সেটা হলো, বুদ্ধির চোখ। বুদ্ধির চোখের সামনে সব অন্ধকারই আলো।“
“কিন্তু, এ সমস্যার মাথা তো বহুদূর লম্বা। তার নাগাল পাওয়া কি সম্ভব?”
“সমস্যার মাথা নয় বন্ধু, সমস্যার গোঁড়া কাটতে হয়। আর তার জন্যে শিকড়ে শিকড়ে চলতে জানতে হয়।“
“তোর অত ধাঁ ধাঁ’ওয়ালা কথা আমি বুঝতে পারছি না। কী করতে হবে এখন সেটাই বল।“ চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়াল আতিফ। জানালার কাছে গিয়ে বাইরের দিকে চোখ ফেলল। বাইরে ‘সকাল’ হামাগুড়ি দিয়ে উঠে, ‘হাঁটি হাঁটি পা পা’ করে কেবলই হাঁটছে। রোদের মাড়িতে গজাচ্ছে দাঁত। জানালার রডের ফাঁক দিয়ে তেরছা করে ঢুকছে ‘কিত কিত খেলা বয়সী দিন’।
“শোন আতিফ, আমি একটা প্ল্যান অলরেডি করে রেখেছি। তুই যদি সঙ্গ দিস, তবেই সেটা করা সম্ভব।“ আতিফের ঘাড়ের কাছে এসে দাঁড়ায় নবী। আতিফ তার দিকে মুখ তুলে দাঁড়ায়। থুতনি ছোট করে বলে, “কী প্ল্যান?”
“ওদিকে আয়।“ বলে নবী জানালার কাছ থেকে সরে এসে ঘরের আড়ালে এসে দাঁড়াল। আতিফও তার কদমে কদম মেলাল। “এখানে বোস” বলে সোফাটায় আলতো করে বসল নবী। আতিফ চেপে বসতে গিয়ে ‘কচ’ করে একটা মিহি শব্দ গেয়ে উঠল। নবী যেখানে বসেছিল সেখান থেকে কিছুটা সরে গিয়ে আতিফের গা ঘেঁষে বসল। তার দেহের ভারে কুঁচকে যাওয়া শোফার গদিটা তাওয়ায় ভাজা রুটির মতো ফুলে উঠল। “ভালো করে শোন, আতিফ।“ বলে নবী তার মনের মধ্যে আঁটা ষড়যন্ত্রের ‘ফন্দিফেউর’গুলো ফুসুরফুসুর করে বলতে লাগল। সেসব শুনতে শুনতে আতিফের থির চোখগুলো ঘুঘু পাখির মতো ঘোলা পাকিয়ে পাকিয়ে চিলের মতো ধারালো হয়ে উঠতে লাগল। পাকানো দড়ির মতো টান হয়ে উঠতে লাগল চোখের তটরেখার চামড়া। মণির নিচে রক্ত রঙের নালা। যেন রাগ আগুন হয়ে বেরিয়ে আসছে। কানের লতিকায় নেমে এসে জমছে প্রতিহিংসা।
“ঠিক আছে। তুই যা বললি, তাইই হবে। তোর কথামতোই কাজ হবে।“ গা ঝাড়া দিয়ে উঠল আতিফ।
“ও কে বন্ধু, চল, এবার গৃহযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ি।“ বলে হো হো করে হেসে উঠল নবী। আতিফের ঠোঁটের কলসা দিয়েও বেরিয়ে এল বাঁকা হাসি। চোখও ট্যারা করে ‘ফিক’ করে উঠল।
সাত
‘দেহ’টা গাড়ির ভেতরে ন্যাকড়ার মতো দুমড়ে মুচড়ে গেছে! সামনের ভিউকাঁচ ভেঙে চোখ ফুঁড়ে গেছে! ‘সেফটি বেল্ট’ ব্যবহার না করায়, শরীরটা হ্যাঁচকা টান সামলাতে না পেরে একেবারে ‘ঠক’ করে কাঁচে লেগে থেঁতলে একাকার! একেবারে স্পটডেথ! পেছনের সিটে বসে থাকা দু’জন নিরাপত্তাকর্মীর মাথা-বুক-পেট এফোঁড় ওফোঁড় হয়ে লোহালক্কড় ঢুকে একেবারে ছ্যাড়ড়া ব্যাড়ড়া হয়ে গেছে! মনে হয় ‘বাপ গো’ বলারও সময় পায়নি! ড্রাইভারের পেট চিরে ঢুকে পড়েছে ‘স্টেয়ারিং’। চোখের মণি ফুঁড়ে আটকে গেছে সম্মুখের কাবা শরীফের ছবি রাখা স্টিলের নকশাকাটা শো-পিসদানিটা। লালরঙের বিলাসবহুল ‘অডি এ সিক্স’ গাড়িটির চারজন সওয়ারিরই ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয়েছে। ঝাঁ চকচকে গাড়িটি চট্টগ্রাম-বান্দরবান মহাসড়ক থেকে ছিটকে পাশের নয়ানজলিতে মুখ থুবড়ে পড়েছে। গাড়িটা যেখানে আটকে আছে, সেখানে নাগবল্লীফুলের একটা ঘন ঝোপ। চারপাশকে ছেয়ে আছে পাহাড়ি ভাঁটফুল। দোপ হয়ে আছে জংলি ঝুমকা লতা। পুরো গাড়িটা ঠোঙার মতো দুমড়ে মুচড়ে গেছে। দশ চাকার পাথর বোঝায় ট্রাকটা পেছন থেকে অত্যন্ত দ্রুত গতিতে এসে সরাসরি ‘চারচাকা’ গাড়িটাকে ধাক্কা মেরে, ‘গ’ করে আরও হাইস্পিডে পিকআপ তুলে পালিয়েছে। জায়গাটা একটা ফাঁকা মাঠ। কাছের বাজারঘাট বলতে গেলে, সেই দূরে রোয়াংছড়ি পুলিশ-ফাঁড়ি। তাও সেটা কম করে আট দশ মাইল তো হবেই। রাস্তার দুপাশে সেরকম বাড়িঘরও নেই। মাইল খানেক দূরে একটা ধাবা গোধূলির আলোতে লুকোচুরি খেলছে। সন্ধ্যা কেবলই তার ঝাঁপি খুলছে। মাগরিবের আযান দেওয়া মিনিট কুড়ি মতো হলো। ‘অডি এ সিক্স’ গাড়িটা যখন পেছনের পাহাড়ের ঢালের হিন্দু গ্রাম ধোপাছড়ি ছেড়ে আসছিল, তখনই মিহি করে কানে ভেসে আসছিল শঙ্খধ্বনি। তাও সেটা আধঘণ্টা মতো হয়ে গেল। দুর্ঘটনাকবলিত গাড়িটাকে দেখে রাস্তায় চলন্ত দুএকটা গাড়ি ‘ঘ্যাঁচ’ করে থামল। কেউ জানালা দিয়ে মুখ বের করে দেখে চলে গেলেন। কেউ কেউ গাড়ি থেকে বেরিয়ে দুর্ঘটনাকবলিত গাড়িটার ফাঁকফোকর দিয়ে উঁকিঝুকি মারতে লাগলেন। তারপর আপন আপন গন্তব্যে কেটে পড়তে লাগলেন।
এদিক ওদিক হুচুক পুচুক করে, তিনটে রাস্তা বদলে একটানা প্রায় তিরিশ কিমি পথ পেরিয়ে একটা পেট্রোল পাম্পের কাছে এসে থামল ট্রাকটা। পাম্পটার গা লাগা একটা চাটাইয়ে ঘেরা চায়ের দোকান। গাড়িটা তখনো ‘কটকট’ করছে। পাকা ইটের রঙের ট্রাকটার ইঞ্জিনটা তেতে আগুন। পেট্রোল পাম্পের তালগাছের মতো লম্বা ল্যাম্পপোস্টের দুধ সাদা আলোতে গাড়ির পেছনের লোহার উপরে লেখাগুলো জ্বলজ্বল করছে। কালো কালি দিয়ে বড়বড় হরফে লেখা গাড়ির নম্বর। তার উপরে নীল কালি দিয়ে লেখা ‘ট্রাফিক আইন মেনে চলুন’। তার এক সিঁথি নিচে লাল রঙ ধেড়িয়ে লেখা, ‘ডোন্ট কিস মি’। ‘হড়াম’ করে বামদিককার গেট’টা খুলে লাফ মেরে নিচে নামল আতিফ। ডান দিকের ড্রাইভারের আসন থেকে পাদানিতে পা দিয়ে ‘থপ’ করে নামল নবী। দুজনের মুখেই সাফল্যের চওড়া হাসি। চোখে খুশির কাশফুল। আতিফ নবীর কাছে আসতেই, নবী বলল, “ব্যাটা খালাস।“
“খালাস মানে, একেবারে ভুউউ করে উপরে পাঠিয়ে দিয়েছি। সরাসরি আজরাইলের দরবারে।“ আতিফের ঠোঁটে যুদ্ধজয়ের হাসি।
“প্ল্যানিংটা কেমন ছিল, বল?” লাল রঙের গামছাটায় মুখ মুছতে মুছতে বলল নবী।
“ফাটাফাটি।“
“একেই বলে, লাঠিও ভাঙল না আবার সাপও মরল। তবে, সাবিরকে ধন্যবাদ জানাতেই হবে। ও একেবারে ঠিক ঠিক খবর দিয়েছে, কখন হোটেল থেকে বেরোলেন, কখন গাড়িতে উঠলেন, গাড়ির রঙ, নম্বর, রুট, সমস্ত কিছুর ব্যাপক টাইমিং করে দিয়েছে! ওর মতো পাকা ছেলে না থাকলে, আমরা এত সহজে কাজটা হাসিল করতে পারতাম না।“
“আসলে, সাবিরের ফোন মানে ছিল, বেটা জুনাইদ মোল্লার মৃত্যুর ফেরেস্তা আজরাইলের ফোনকল। হা হা।“ আতিফের ঠোঁটে বিদ্রুপের হাসি।
“আর আমরা হলেম কি সেই আজরাইলের নখ-দাঁত। হা হা।“ নবীর ঠোঁটেও তাচ্ছিল্যের হাসি।
“কেউ লরির নম্বরটা দেখে নেয়নি তো!” আতিফের চোখে সন্দেহের মেঘ।
“আরে না না, যখন ঘটনাটা ঘটে, তখন ওখানে কোনো জনমানুষ ছিল না। না ছিল মানুষ, না ছিল কোনো গাড়ি। আমি তো ওই জায়গাটার জন্যে অতক্ষণ পেছন পেছন যাচ্ছিলাম। আমি তো জানি ওই জাগাটায় সব থেকে ফাঁকা। ধাক্কা মেরে পালিয়ে আসার পক্ষে আদর্শ। আর কেউ যদি দূর থেকে দেখেও থাকে, কিচ্ছু কবলাবে না। আরে এখন কেউউ ঝুটঝামেলার মধ্যে ঢুকতে চায় না। সবাই আপন আপন গা বাঁচিয়েই চলে। সুতরাং ও টেনশন মনের মধ্যে পুষে রাখার কোনো দরকারই নেই। একেবারে ফ্রেস থাক।“
“ঠিক তো?”
“আলবাত ঠিক।“
“ওকে, তাহলে চল, এবার জম্পেস করে একটা চা খাই।“
“তা আর দেরি কেন? এক্ষণই চল।“ বলেই নবী চায়ের দোকানটার দিকে পা বাড়াল। যেতে যেতে আতিফ বলল, “তবে তুই যা ড্রাইভ করলি না, একেবারে পাকা ড্রাইভার। হেঁচিয়ে পেঁচিয়ে, এদিক ঘুরিয়ে ওদিক ঘুরিয়ে, হাইস্পিডে পিকআপ তুলে, গ গ করে যেভাবে গাড়ি টানলি, মায়রি, তুই এরোপ্লেন চালাতে পারবি।“
“ছোট থেকেই আমার গাড়ি চালানোর নেশা। আমাদের বাড়িতে একটা ট্রাক্টর ছিল, আমি মাঝেমধ্যেই চালাতাম। কতদিন ট্রাক্টরে করে জমি বাতাল করেছি। আর আর জে এফ’এ এসে তো হাতটা আরও পোক্ত করতে হলো। আমরা যে মুজাহিদ, আমাদের সবই শিখে রাখতে হয়।“ বাড়ির কথা বলতেই, আতিফের আব্বা-মা, ভাইয়েদের কথা মনে পড়ে গেল। ভারাক্রান্ত হয়ে উঠল মন। ভারী গলায় আতিফ বলল, “কাল সকালেই বেরিয়ে যাব। আর দেরি করা একদম ঠিক হবে না।“
“সেইই ভালো। আবার তো ফিরে আসার ব্যাপার আছে।“ আতিফ একটা তেলচিটচিটে কাঠের বেঞ্চের উপর পা ঝুলিয়ে বসল। নবী জলের জগটা হাতে নিয়ে ঝোপের আড়ালে চলে গেল। হাতের চেটোয় জল ঢেলে চোখে মুখে ছিটা দিল। পরপর তিনবার জলের ছিটা দিল মুখে। তিন সিকি ক্লান্তি যেন জলের মধ্যে দিয়ে ঝরে গেল। বেশ ফ্রেস লাগছে শরীরটা। জলের জগটা একটা কাঠের টুলের উপর রেখে আতিফের পাশে আরাম করে বসল। “তুই চোখে মুখে পানি দিবি না?” জিজ্ঞেস করল আতিফকে। “নাহ, এই ঠিক আছি। ঘরে গিয়েই গোসুল করে নেব।“ বলল আতিফ।
“এই দুটো দুধ চা।“ নবী হাঁক ছেড়ে চায়ের অর্ডার দিতেই আতিফ বলল, “অর্ডার দিয়ে দিয়েছি। চা বাদ দিয়ে অন্য কিছু খাবি কি?”
“নাহ, শুধু চা, তুই খেলে খা।“
“নাহ, আমিও কিচ্ছু খাব না, পেট’টা গুড়গুড় করছে। অনলি চা।“

চলবে...

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৯

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৮

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৭

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১৯

 
Header Ad
Header Ad

দেশের তীব্র তাপপ্রবাহ নিয়ে যা বলল আবহাওয়া অফিস

ছবি: সংগৃহীত

দেশজুড়ে শুরু হয়েছে তীব্র গরমের দাপট। চলতি মে মাসের শুরুতে আবহাওয়া তুলনামূলকভাবে সহনীয় থাকলেও গত বুধবার (৭ মে) থেকে বাড়তে শুরু করে তাপমাত্রা।

শুক্রবার (৯ মে) পর্যন্ত দেশের ৪৫টি জেলার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী রোববার (১১ মে) থেকে তাপমাত্রা ধীরে ধীরে কমে আসবে এবং বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে কিছু এলাকায়, যা কিছুটা স্বস্তি দিতে পারে জনজীবনে।

আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, এবার এপ্রিল মাসে সাধারণত যতোটা গরম পড়ে, তার তুলনায় এবারের উষ্ণতা ছিল তুলনামূলক কম। বর্ষার আগমনের আগে এই সময়টিতে স্বাভাবিকভাবেই গরম বাড়ে, তবে এবারের তাপপ্রবাহটি ব্যাপক বিস্তৃত হওয়ায় তা জনজীবনে ভোগান্তি বাড়িয়েছে। আবহাওয়াবিদ মো. হাফিজুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, এপ্রিল মাসে দেশে কিছু এলাকায় তাপপ্রবাহ থাকলেও তা এত বিস্তৃত ছিল না। বর্তমানে দেশের বেশিরভাগ স্থানে তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে রয়েছে।

আবহাওয়া অফিসের বুলেটিন অনুযায়ী, বর্তমানে রংপুর, দিনাজপুর, নীলফামারি, কুড়িগ্রাম, ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, ফেনী, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, বান্দরবান, বরিশাল ও পটুয়াখালীসহ মোট ৪৫ জেলার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।

তাপমাত্রা যদি ৩৬ থেকে ৩৭.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয় তবে তা মৃদু তাপপ্রবাহ হিসেবে ধরা হয়। ৩৮ থেকে ৩৯.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তা মাঝারি তাপপ্রবাহ এবং ৪০ থেকে ৪১.৯ ডিগ্রি হলে তীব্র তাপপ্রবাহ হিসেবে বিবেচিত হয়। এর চেয়ে বেশি হলে তা অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বলে ধরা হয়।

বুলেটিনে আরও বলা হয়, শুক্রবার সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে এবং রাতের তাপমাত্রাও সামান্য বাড়বে। আকাশ থাকবে আংশিক মেঘলা এবং আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকবে।

ঢাকায় এদিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা চলতি বছরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে গত ২৮ মার্চ রাজধানীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ৩৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকাল ৬টায় ঢাকার বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৭৮ শতাংশ এবং পশ্চিম বা দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে বাতাস বয়ে যাচ্ছিল ঘণ্টায় ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার বেগে।

চুয়াডাঙ্গায় এদিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৯.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অপরদিকে, দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল লালমনিরহাটের ডিমলায়—২২.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, বর্তমানে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল হয়ে পশ্চিমবঙ্গ থেকে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত একটি লঘুচাপের বর্ধিতাংশ বিস্তৃত রয়েছে। এর প্রভাবে আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে কিছু এলাকায় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে, যা তাপপ্রবাহ প্রশমনে সহায়ক হতে পারে।

এ অবস্থায় স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা প্রচণ্ড গরমে যথাসম্ভব রোদ এড়িয়ে চলা, হালকা ও ঢিলেঢালা পোশাক পরিধান, পর্যাপ্ত পানি পান এবং ঘন ঘন বিশ্রাম নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

Header Ad
Header Ad

আ.লীগ নিষিদ্ধে গুরুত্বের সাথে সরকার বিবেচনা করছে: সরকারের বিবৃতি

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সাধারণ জনগণের পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাস ও স্বৈরশাসনের অভিযোগে নিষিদ্ধ করার দাবি উঠেছে। এ দাবি সরকার গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র।

সরকার জানিয়েছে, এ বিষয়ে দেশের অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ইতোমধ্যে যোগাযোগ শুরু হয়েছে এবং আলোচনা শেষে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বিষয়টি নিয়ে জাতিসংঘের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনের উল্লেখও করা হয়েছে, যেখানে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিষয় তুলে ধরা হয়েছে।

এ পর্যন্ত সবাইকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছে সরকার। পাশাপাশি জনদাবির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এরই মধ্যে ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে বলে জানানো হয়।

মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেও জানা গেছে।

 

এছাড়া, ফ্যাসিবাদী সরকারের সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বর্তমানে হত্যা মামলার আসামি আবদুল হামিদের বিদেশ গমনের ঘটনায় জনগণের ক্ষোভের বিষয়টিও সরকার পর্যবেক্ষণ করছে। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানিয়েছে সরকার।

Header Ad
Header Ad

টাঙ্গাইলে নাশকতা মামলায় আ.লীগ নেতা রাজ্জাকসহ ২ জন গ্রেফতার

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নাশকতার অভিযোগে ডেভিল হান্টের অভিযানে টাঙ্গাইলের মধুপুরে নাশকতার মামলায় ভূঞাপুরে আওয়ামী লীগ নেতা মো. আব্দুর রাজ্জাকসহ ২ জনকে গ্রেফতার করেছে ভূঞাপুর থানা পুলিশ।

শুক্রবার (০৯ মে) সকালে ভূঞাপুর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) একেএম রেজাউল করিম এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গ্রেফতারকৃত আব্দুর রাজ্জাক উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। গত বৃহস্পতিবার (৮ মে) রাতে উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের বাগবাড়ী এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

তিনি টাঙ্গাইল-২ (ভূঞাপুর-গোপালপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য খন্দকার আসাদুজ্জামানের ছেলে খন্দকার মশিউজ্জামান রোমেলের অনুসারী ছিলেন।

অপরদিকে, একই মামলায় গত বুধবার রাতে উপজেলার গাবসারা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সস্পাদক আলমগীর নামে আরেক নেতাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তাকে গত বৃহস্পতিবার মধুপর থানায় সোপর্দ করা হয়।

এ বিষয়ে ভূঞাপুর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) একেএম রেজাউল করিম জানান, মধুপুর থানায় নাশকতার মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রাজ্জাক ও আলমগীরকে গ্রেফতারের পর মধুপুর থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে। এ ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

দেশের তীব্র তাপপ্রবাহ নিয়ে যা বলল আবহাওয়া অফিস
আ.লীগ নিষিদ্ধে গুরুত্বের সাথে সরকার বিবেচনা করছে: সরকারের বিবৃতি
টাঙ্গাইলে নাশকতা মামলায় আ.লীগ নেতা রাজ্জাকসহ ২ জন গ্রেফতার
অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত আইপিএল
এবার অপেক্ষা তারেক রহমানের ফেরার, চলছে জোরালো প্রস্তুতি
পদ্মার এক ইলিশের দাম সাড়ে ৮ হাজার টাকা
৫ মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে থানায় নেওয়া হলো আইভীকে
জুমার পর যমুনার সামনে বড় জমায়েতের ডাক হাসনাত আব্দুল্লাহর
প্রথম আমেরিকান পোপ হলেন রবার্ট প্রিভোস্ট
একের পর এক ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল ভারত, সীমান্তজুড়ে ব্ল্যাকআউট
নিষিদ্ধ হচ্ছে স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও যুবলীগ
অবশেষে গ্রেফতার আইভী
ভারতের সঙ্গে উত্তেজনার জেরে পিএসএলের বিদেশি ক্রিকেটারদের দেশত্যাগ শুরু
সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার মেয়াদ বাড়ল দুই মাস
মাহফুজ-আসিফ আ’লীগ নিষিদ্ধ চায়, কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে কারা: হাসনাত
জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সিইও পদ ছাড়লেন স্নিগ্ধ
আবদুল হামিদের দেশত্যাগ, ৩ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা
টাঙ্গাইলে ট্রাক-পিকআপের সংঘর্ষে ৩ জন নিহত
ভারতীয় অর্ধশত সৈন্যকে হত্যার দাবি পাকিস্তানের
নওগাঁর পতিসরে বিশ্বকবির কাছারি বাড়িতে জন্মবার্ষিকী ঘিরে উৎসবের আমেজ