শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫ | ১৪ আষাঢ় ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব- ৩০

বিষাদ বসুধা

শাহবাজ খানের ফোন পেয়ে মোহিনী বিস্ময়ের সঙ্গে বললেন, কী আশ্চর্য! আমি তো তোমার কথাই ভাবছিলাম!
তাই নাকি? কী সৌভাগ্য!
কেন, সৌভাগ্য কেন?
তুমি আমার কথা ভাবছ! এটা আমার সৌভাগ্য নয়!
সত্যি বলছি। তোমাকে ফোন করব করব করছিলাম। এখন করব না দুপুরের দিকে করব এ রকম চিন্তা করতেই তোমার ফোন এল।
বাহ! খুব ভালো লাগল শুনে। তা হঠাৎ আমার কথা কেন মনে পড়ল শুনি!
আগে তোমার কথা শুনি। তারপর বলছি।
তুমি তো আমাকে ভুলেই গেছ। কতদিন কোনো যোগাযোগ নেই, কথাবার্তা নেই। কী হয়েছে তোমার? একটা ফোনও তো করতে পারতে!
এই অভিযোগ তো আমিও করতে পারি।
হ্যাঁ। তা পার। তবে আমার কথা শুনলে তুমিই বরং বলবে, যোগাযোগ করা উচিত ছিল।
তাই? তাহলে আগেই আমি সরি বলছি। কী হয়েছে বল তো?
মোহিনী কিছুটা অন্য রকম হয়ে গেলেন। তিনি কিছুক্ষণ চুপ করে রইলেন। তার কোনো সাড়া না পেয়ে শাহবাজ খান বললেন, হ্যালো! আছ তুমি?
মোহিনী আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বললেন, আরেফিন মারা গেছে!
শাহবাজ খান বিস্ময়ের সঙ্গে বললেন, কী! কী বললে তুমি! কী হয়েছিল তার!
সে তো চীনের উহানে ছিল। যেখানে করোনার উৎপত্তি।
মাই গড! কবে ঘটল এই ঘটনা!
দশ দিন হয়ে গেল।
ওহ! মন খারাপ কর না। বিধাতা যা করেন ভালোর জন্যই করেন।
সে-ই। দোয়া কর।
অবশ্যই। তোমার কথা শুনে মনটা খুব খারাপ হয়ে গেল।
তোমার খবর বল। তোমার ব্যবসাপাতি কেমন চলছে?
আর বল না! আমি তো ছাঁটাই করতে বাধ্য হলাম।
বল কী! তুমি ছাঁটাই করলে তো কেউ আর বাদ থাকবে না। সবাই শুরু করে দেবে!
শাহবাজ খান বললেন, কিছুই করার নেই বন্ধু। তিনটা গার্মেন্টস বন্ধই করে দিতে হয়েছে। তিনটাতে প্রায় সাতাশশ’ কর্মী ছিল। এতগুলো মানুষের বেতন দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব না। কয়েকশ’ গার্মেন্টস এরমধ্যেই বন্ধ হয়ে গেছে। আরও কতশত বন্ধ হয় তা আল্লাহ তায়ালাই জানেন। ভয়ানক অবস্থা তো! মোহিনী বললেন, বুঝতে পারছি। তোমার পত্রিকার খবর কী?
একই অবস্থা। পত্রিকার মাসিক আয় দুই কোটি টাকা কমে গেছে। বেসরকারি বিজ্ঞাপন এক ইঞ্চিও নেই। ফলে পত্রিকার প্রকাশনা টিকিয়ে রাখাই মুশকিল হয়ে গেছে।
মোহিনী বিস্ময়ের সঙ্গে বললেন, এ রকম অবস্থা?
তাহলে আর বলছি কী? সম্পাদককে ডেকে বললাম, লোক ছাঁটাই করেন। তা নাহলে পত্রিকা বন্ধ করে দিতে হবে। আমার পক্ষে এত খরচ দেওয়া সম্ভব না।
সম্পাদক কী বললেন?
উনি রাজি হচ্ছেন না। বললেন, এই মুহূর্তে ছাঁটাই করতে গেলে বদনাম হবে। আচ্ছা, আমি যদি বেতনই দিতে না পারি তাহলে ওসব বদনামের চিন্তা করে লাভ আছে?
তোমার পত্রিকাটা কিন্তু খুব ভালো। মানসম্পন্ন। রুচিশীল। আমি নিয়মিত পড়ি।
সেটা ঠিক আছে। কিন্তু খরচ তো অনেক বেশি। আয়-রোজগার না থাকলে টিকিয়ে রাখাই মুশকিল। তোমার অফিসের খবর কী?
আমি এখনো ছাঁটাই করিনি। চালিয়ে যাচ্ছি। মোহিনী বললেন।
শাহবাজ খান বিস্ময়ভরা কণ্ঠে বললেন, বাব্বা বল কী!
দোয়া কর যেন ছাঁটাই করতে না হয়। এই সময় লোকগুলো যাবে কোথায়! এই সময় কেউ চাকরি দেবে? সবাই টিকে থাকার লড়াই করছে।
হুম। তোমার কথা ঠিক। কিন্তু আমি এতবেশি খরচ বাড়িয়েছি! আর সামাল দিতে পারছি না।
বুঝতে পারছি। আচ্ছা শোন, ঈদের পর একদিন এস। অনেক দিন তোমাকে দেখি না।
ধন্যবাদ। আসব, অবশ্যই আসব। তুমি ভালো থেক। চিন্তা কর না। ধৈর্য ধর। সময়ই সব ঠিক করে দেবে।
ইনশাল্লাহ। তুমিও ভালো থেক।

মোহিনী ফোন রেখে কিছুক্ষণ চুপচাপ বসে থাকেন। ভাবেন শাহবাজ খানকে নিয়ে। এই ছেলেটির সঙ্গে তার স্কুল জীবন থেকে পরিচয়। কোনো একটা পারিবারিক অনুষ্ঠানে পরিচয় হয়েছিল। সেই সূত্রে ওদের মধ্যে কথাবার্তা হতো। কলেজে ওঠার পর শাহবাজ খান মোহিনীকে প্রেমের প্রস্তাব দিল। সেই প্রস্তাব মোহিনী গ্রহণ না করে বলেছিলেন, তোমার সঙ্গে বন্ধুত্ব হতে পারে, প্রেম নয়। সবার সঙ্গে প্রেম হয় না। প্রেমটা হচ্ছে অন্তরের ব্যাপার। হৃদয়ঘটিত ব্যাপার। হৃদয়ে হৃদয়ে মিলতে হয়। দুই হৃদয় এক না হলে প্রেম হয় না। তোমার মন আমাকে চাইলেও আমার মন সায় দেয় না। অন্য কেউ হয়তো আমার জন্য অপেক্ষা করছে।
তারপরও শাহবাজ খান বলেছিলেন, আমি অপেক্ষায় থাকব। সারাজীবন তোমার জন্য অপেক্ষা করব। যেদিন তোমার হৃদয় সায় দেবে সেদিন আমাকে বোলো আমি ছুটে আসব তোমার কাছে।
মোহিনী শাহবাজ খানের কথা শুনে শুধু হেসেছিলেন। সে কী হাসি! হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খেয়েছিলেন। আর মনে মনে বলেছিলেন, আহারে আমার মজনু রে!
শাহবাজ খান ভীষণ অপমানবোধ করেছিলেন। তিনি মনে মনে বলেছিলেন, কেন ওভাবে হাসল সে! আমাকে কেন ওর এত অপছন্দ? আমি কি দেখতে খারাপ? আমার কি অর্থ সম্পদের কোনো অভাব আছে? নাকি আমার ব্যবহার খারাপ? সমস্যা কী? কোথায় সে বিয়ে করে আমিও তা দেখে নেব।
শাহবাজ খান হাল ছাড়েননি। তিনি মোহিনীর জন্য অপেক্ষা করেন। নিয়মিত যোগাযোগ করেন। টেলিফোনে কথা বলেন। গল্প করেন। উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর শাহবাজ খান বিদেশে পড়তে চলে যান। সেটাই সম্ভবত দুজনের মধ্যে দূরত্ব তৈরি করে। অনেকদিন দুজনের মধ্যে কোনো যোগাযোগই ছিল না।
কথায় আছে না, এক হাতে তালি বাজে না! একপেশে ভালোবাসাও খুব বেশি দূর আগায় না। মোহিনীর প্রতি শাহবাজ খানের ভালোবাসাও হয়তো সে কারণেই স্থায়ী হয়নি। আস্তে আস্তে মোহিনীকে তিনি ভুলে যান। মোহিনীও ভুলে যান শাহবাজ খানকে।
শাহবাজ খান দেশে ফিরে মা বাবার পছন্দে বিয়ে করেন। ব্যবসায় মনোযোগ দেন। নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। মোহিনীও বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ চুকিয়ে বন্ধু আরেফিনকে বিয়ে করেন। পিতার ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে যোগ দেন। এক পর্যায়ে নিজেই আলাদাভাবে সু-ইন্ডাস্ট্রি গড়ে তোলেন। তরতর করে এগিয়ে যেতে থাকেন তিনি।
হঠাৎ একদিন মোহিনীর অফিসে এসে হাজির হন শাহবাজ খান। তাকে দেখে অবাক হন তিনি। কথাগুলো আজ বড় মনে পড়ছে মোহিনীর। উদাস হয়ে তিনি ভাবতে থাকেন। মনে মনে বলেন, জীবন বড় বিচিত্র।

মোহিনী নিজের অফিস কক্ষে পা দিয়ে চমকে ওঠেও। তার টেবিলের ওপর নানারকম তাজা ফুলের বিশাল একটি বাস্কেট। ফুল ভালোবাসে না এমন মানুষ বোধহয় পৃথিবীতে নেই। কিন্তু আজ মোহিনীর ভেতরে অন্যরকম একটা ভালো লাগা কাজ করছে। আজ তার জন্মদিন। ওই ফুলগুলোই তাকে সে কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছে। করোনার কারণে জন্মদিন পালন করবেন না বলে মোহিনী আগে থেকেই তার মা বাবাকে বলে রেখেছিলেন। তারা হয়তো সকালে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতেন। কিন্তু তাদের ঘুম ভাঙার আগেই মোহিনী বাসা থেকে বের হয়ে যান।
এর আগের বছরগুলোতে মোহিনীকে ওর মা-বাবা এবং বিয়ের পর আরেফিন সর্বপ্রথম জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতেন। তাদের পর বন্ধুবান্ধবরা শুভেচ্ছা জানাত। কেউ টেলিফোন করে। কেউ ফোনে ম্যাসেজ পাঠিয়ে। আজই জীবনে প্রথম অফিসে এসে ফুলের বাক্সেট দেখলেন তিনি।
মোহিনী ধীরে ধীরে ফুলগুলোর কাছে এগিয়ে যান। কে ফুল পাঠিয়েছে তা দেখেন। তিনি যা ভেবেছিলেন তাই! শাহবাজ খান পাঠিয়েছেন। ভীষণ একটা ভালোলাগা তাকে আচ্ছন্ন করে। তিনি মোবাইল বের করে শাহবাজকে ফোন করার জন্য। হাতে নিয়ে দেখেন ফোনটা বন্ধ। তিনি ফোনের সুইস অন করেন। সঙ্গে সঙ্গে অসংখ্য শুভেচ্ছা বার্তা আসতে থাকে তার ম্যাসেঞ্জারে। ম্যাসেঞ্জার দেখতে গেলে অনেক সময় লাগবে। তাই তিনি ম্যাসেঞ্জার না দেখে শাহবাজ খানকে ফোন করেন। তাকে তিনি ধন্যবাদ জানান। বিশেষ করে তার জন্মদিন মনে রাখার জন্য। এরমধ্যেই টেলিফোনে মোহিনীর বাবা মোহসীন আহমেদ, মা আনোয়ারা বেগম জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান। আসিফ আহমেদ এবং মোহিনীর অন্য কাছের বন্ধুরাও একের পর এক টেলিফোন করতে থাকে। জন্মদিনের শুভেচ্ছায় সিক্ত হন মোহিনী।
কিছুক্ষণের মধ্যেই মোহিনীর কক্ষে ফুল নিয়ে হাজির হয় তার অফিসের কর্মকর্তারা।
মোহিনী খুব বিনয়ের সঙ্গে কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বললেন, ফুল দেখলে আমি অন্য রকম হয়ে যাই। আমি আপনাদের শুভেচ্ছায় অভিভূত। তবে করোনার সময় ফুলগুলো না আনলেও পারতেন। আপনারা এমনিতে শুভেচ্ছা জানালেও আমি খুশি হতাম।
কর্মকর্তারা লজ্জিত ভঙ্গিতে বলল, সরি ম্যাম। ভুল হয়ে গেছে।
মুহূর্তের মধ্যে ফুলের বাস্কেটগুলো সরিয়ে নেওয়া হলো মোহিনীর কক্ষ থেকে। করোনার কারণে কাউকে মিষ্টি খাওয়ানো সম্ভব হলো না। মোহিনী কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বললেন, করোনা শেষ হোক। তারপর আমরা বেঁচে থাকলে সবাই একসঙ্গে খাব। আমরা এখন যে যার কাজে মনোযোগ দিই!
কর্মকর্তারা খুশি মনে মোহিনীর কক্ষ থেকে বের হলো। মোহিনী শাহনাজ বেগমকে ডেকে বললেন, তুমি একটা ঠিকানা লেখ তো!
শাহনাজ বেগম ডায়েরি খুলে কলম হাতে নিয়ে মোহিনীর টেবিলের সামনে দাঁড়াল। মোহিনী বললেন, আলী আকবর, গ্রাম: আজিমপুর, ডাকঘর: লতা, উপজেলা: মেহেন্দিগঞ্জ, জেলা: বরিশাল। তুমি আমার ব্যক্তিগত একাউন্ট থেকে প্রতি মাসে এই ঠিকানায় দশ হাজার করে টাকা পাঠাবে। বুঝতে পারছ? পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত পাঠাতেই থাকবে। প্রতি মাসে আমাকে যেন বলতে না হয়। পাঠিয়ে আমাকে জানাবে।
জি ম্যাম।
যাও। চলতি মাসেরটা এখনই পাঠিয়ে আমাকে জানাও।
শাহনাজ বেগম চলে গেল। মোহিনী অফিসের কাজে মনোযোগ দিতে গিয়েও পারছিলেন না। একের পর এক টেলিফোন আসার কারণে তিনি কিছুটা বিরক্তও হচ্ছিলেন। এক পর্যায়ে তিনি বললেন, কী ব্যাপার! করোনায় সবাইকে কর্মবিমুখ করে দিয়েছে নাকি! কাজ না থাকলে মানুষ এসব কাজে সময় নষ্ট করে। আর এটা যদি অভ্যাসে পরিণত হয়ে যায় তাহলেই সর্বনাশ!

চলবে...

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৯

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৮

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৭

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৬

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৫

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৪

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৩

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২২

বিষাদ বসুধা: পর্ব ২০

বিষাদ বসুধা: পর্ব ১৯

Header Ad
Header Ad

বিজ্ঞানীদের রক্তের নতুন গ্রুপের সন্ধান

গ্রুপটির নামকরণ করা হয়েছে—গোয়াডা নেগেটিভ। ছবি: সংগৃহীত

রক্তের নতুন একটি গ্রুপের সন্ধান পেয়েছে ফ্রান্সের জাতীয় রক্ত সঞ্চালন সংস্থা ‘দ্য ফ্রেঞ্চ ব্লাড এস্টাবলিশমেন্ট’। ফরাসি এক নারীর শরীরে থাকা রক্তের নতুন গ্রুপটির নামকরণ করা হয়েছে—গোয়াডা নেগেটিভ।

১৫ বছর আগে সংগ্রহ করা নমুনা বিশ্লেষণ করে এই রক্তের গ্রুপের খোঁজ মিলেছে। এ মাসে ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি অব ব্লাড ট্রান্সফিউশন আনুষ্ঠানিকভাবে রক্তের নতুন গ্রুপটিকে স্বীকৃতি দিয়েছে।

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, প্রায় ১৫ বছর আগে ক্যারিবীয় দ্বীপ গুয়াদেলুপ থেকে আসা এক ফরাসি নারীর অস্ত্রোপচারের আগে রক্ত সংগ্রহ করা হয়েছিল। সেই রক্ত পরীক্ষা করেই গোয়াডা নেগেটিভ নামের রক্তের নতুন গ্রুপের সন্ধান পাওয়া গেছে। নতুন রক্তের গ্রুপ শনাক্তের বিষয়ে দ্য ফ্রেঞ্চ ব্লাড এস্টাবলিশমেন্টের বিজ্ঞানী থিয়েরি পেয়ারার্ড জানিয়েছেন, ২০১১ সালে এক নারীর রক্তে বিরল এক অ্যান্টিবডি শনাক্ত করা হয়েছিল। সে সময় রক্তের তথ্য বিশ্লেষণ করতে বিলম্ব হয়। এরপর ২০১৯ সালে ডিএনএ সিকোয়েন্স করে বিরল জেনেটিক মিউটেশন পাওয়া যায়।

মানুষের রক্তের গ্রুপকে চারটি বিস্তৃত ভাগে ভাগ করা হয়। এসব গ্রুপের নাম এ, বি, এবি আর ও গ্রুপ। এদের পজেটিভ ও নেগেটিভ দুটি ভাগে ভাগ করা হয়। যদিও মানুষের রক্তের গ্রুপ আসলে অনেক জটিল। বিজ্ঞানীদের ধারণা, বিরল কোনো রোগের কারণেই সেই নারীর শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। মা–বাবা উভয়ের কাছ থেকে পরিবর্তিত জিন বহন করছেন সেই নারী।

প্রথম রক্তের গ্রুপ প্রায় এক শতাব্দীর বেশি সময় আগে শনাক্ত করা হয়েছিল। জেনেটিক সিকোয়েন্সের সাম্প্রতিক অগ্রগতির ফলে নতুন ধরনের গ্রুপ আবিষ্কারের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণে অনেক বিরল রক্তের গ্রুপ সম্পর্কে জানা যাচ্ছে।

 

Header Ad
Header Ad

গোলাপ জলে গোসল করে রাজনীতি ছাড়লেন আওয়ামী লীগ নেতা

ছবি: সংগৃহীত

মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার বজ্রযোগিনী ইউনিয়নের চূড়াইন গ্রামে এক ব্যতিক্রমী ঘটনার সাক্ষী হলো এলাকাবাসী। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আলী হোসেন মৃধা (৪৮) গোলাপ জলে গোসল করে জনসমক্ষে ঘোষণা দিলেন— তিনি রাজনীতি থেকে স্বেচ্ছায় অবসর নিচ্ছেন।

শনিবার (২৮ জুন) দুপুরে নিজ বাড়ির উঠানে এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে এই ঘোষণা দেন তিনি। এই ঘোষণার মাধ্যমে একদিকে যেমন রাজনৈতিক মহলে আলোচনার জন্ম দিয়েছেন, অন্যদিকে নিজ গ্রামে নানা প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

আলী হোসেন মৃধা ছিলেন বজ্রযোগিনী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। এর আগে তিনি ওই ওয়ার্ডের নির্বাচিত ইউপি সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। চূড়াইন গ্রামের প্রয়াত আব্দুল খালেক মৃধার সন্তান আলী হোসেন মূলত পেশায় একজন ডেকোরেটিং ব্যবসায়ী।

তিনি জানান, ২০১৬ সালে রাজনীতিতে যোগ দিয়েছিলেন এবং তখনই আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড কমিটির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান।

গোলাপ জলে গোসল করে রাজনৈতিক জীবনের ইতি টেনে আলী হোসেন মৃধা বলেন, “আমি মূলত ব্যবসায়ী মানুষ। রাজনীতি আমাকে কখনো খুব টানেনি। তবে এলাকার মানুষের অনুরোধে ও সময়ের প্রেক্ষাপটে আমি যুক্ত হয়েছিলাম।”

তিনি আরও বলেন, “গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সরকারের পতনের পর আমার ভেতরে একটি পরিবর্তন আসে। আমার মনে হয়েছে, রাজনীতি আমার পথ নয়। অনেকেই পালিয়ে গেছেন, কিন্তু আমি এলাকায় থেকে গেছি। আমি কখনো দুর্নীতি বা অনিয়মে জড়াইনি।”

আলী হোসেন মৃধার ভাষায়, এটি ছিল তাঁর ‘বোধোদয়’—একটি আত্মচিন্তার ফল। তিনি স্পষ্টভাবে জানান, “আমি আর রাজনীতি করবো না। আওয়ামী লীগও করবো না। এখন থেকে শুধু ব্যবসা নিয়েই থাকতে চাই।”

স্থানীয়ভাবে এই ঘোষণা বেশ আলোড়ন তুলেছে। কেউ কেউ বলছেন, এটি হয়তো রাজনৈতিক কৌশল, আবার কেউ বলছেন এটি একজন সাধারণ কর্মীর বিবেকের জাগরণ।

অনেকেই মনে করছেন, দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে ব্যক্তি পর্যায়ে এমন অবস্থান নতুন আলোচনার জন্ম দিতে পারে। গোলাপ জলে গোসল করে রাজনীতি ছাড়ার ঘটনা হয়তো বিরল, কিন্তু তা কেবল এক ব্যক্তির সিদ্ধান্ত নয়—বরং এটি একটি সময়ের প্রতিচ্ছবি, যেখানে রাজনীতি নিয়ে মানুষের দ্বিধা, আস্থা ও প্রত্যাশার জায়গাগুলো স্পষ্টভাবে প্রকাশ পাচ্ছে।

Header Ad
Header Ad

সাগরতীরে বিলাসবহুল রিসোর্ট উদ্বোধন করলেন কিম জং উন

ছবি: সংগৃহীত

উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উন ছয় বছর বিলম্বে উদ্বোধন করলেন দেশের অন্যতম বৃহৎ পর্যটন প্রকল্প— ওনসান কালমা সমুদ্র সৈকত রিসোর্ট। পূর্ব উপকূলে অবস্থিত এই বিলাসবহুল রিসোর্টটি আগামী জুলাই মাস থেকে দেশীয় পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা কেসিএনএ। তবে বিদেশি পর্যটকদের জন্য এটি কবে উন্মুক্ত হবে, সে বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি।

গত ২৪ জুন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কিম জং উনের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন তার স্ত্রী রি সল জু এবং কন্যা কিম জু এ। ২০২৪ সালের শুরু থেকে এটি ছিল রি সল জুর প্রথম প্রকাশ্য উপস্থিতি। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার ম্যাটসেগোরাসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরাও, যা উত্তর কোরিয়ার কূটনৈতিক বার্তাও বহন করছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

এক সময় ওনসান শহরটি পরিচিত ছিল উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার ঘাঁটি হিসেবে। কিন্তু কিম জং উন এখন সেই শহরকেই রূপ দিচ্ছেন পর্যটন নগরীতে। নিজের শৈশব কাটানো এলাকা ওনসানে অভিজাতদের ব্যক্তিগত বাড়ি থাকলেও এবার সাধারণ পর্যটকদের জন্যও খুলে দেওয়া হলো সমুদ্রতীরবর্তী বিলাসবহুল রিসোর্টটি।

কেসিএনএর দাবি অনুযায়ী, রিসোর্টটি দৈর্ঘ্যে প্রায় ৪ কিলোমিটার এবং এতে প্রতিদিন ২০ হাজার পর্যটক অবস্থান করতে পারবেন। এতে থাকছে হোটেল, রেস্তোরাঁ, ওয়াটার পার্ক, শপিং মলসহ নানা বিনোদন সুবিধা। তবে এই তথ্যগুলো স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ওনসান রিসোর্টের উদ্বোধন কিম সরকারের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের নতুন কৌশলের অংশ হতে পারে। যদিও উত্তর কোরিয়ায় পর্যটন নিয়ন্ত্রণের কড়াকড়ি রয়েছে, তবুও বিদেশি পর্যটক বিশেষ করে চীন ও রাশিয়া থেকে আসা পর্যটকদের নির্ভরযোগ্য উৎস হিসেবে বিবেচনা করছে দেশটি।

২০২০ সালে কোভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়ার পর কঠোর সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে পিয়ংইয়ং। প্রায় তিন বছর পর, ২০২৩ সালে কিছুটা শিথিলতা আসে এবং ২০২৪ সালে রাশিয়ার পর্যটকদের জন্য সীমান্ত খোলা হয়। তবে ইউরোপীয় ও অস্ট্রেলিয়ান পর্যটকদের জন্য সীমান্ত খোলার ঘোষণা এলেও কিছু সপ্তাহ পরেই সেটি আবার বন্ধ করে দেওয়া হয়, যা উত্তর কোরিয়ার পর্যটন নীতির অনিশ্চয়তা ও অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণের ইঙ্গিত দেয়।

কেসিএনএ জানিয়েছে, ওনসান রিসোর্ট উদ্বোধন “সমগ্র দেশের জন্য একটি মহান ও শুভ ঘটনা” এবং এটি উত্তর কোরিয়ার পর্যটনে “একটি নতুন যুগের সূচনা”।

প্রথমে ২০১৯ সালের অক্টোবরে এই রিসোর্ট খোলার কথা থাকলেও, নির্মাণে বিলম্ব ও কোভিডের অভিঘাতের কারণে তা সম্ভব হয়নি।

ওনসান কালমা রিসোর্টের উদ্বোধন কেবল পর্যটকদের জন্যই নয়, বরং আন্তর্জাতিক সমাজের দৃষ্টিতে উত্তর কোরিয়ার কৌশলগত অর্থনৈতিক মনোযোগেরও প্রতিফলন। বিদেশি পর্যটকদের জন্য এটি কতটা সহজলভ্য হবে এবং আদৌ কি তা বৈদেশিক রাজস্বে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে— তা সময়ই বলে দেবে। তবে রিসোর্টের ছায়ায় লুকিয়ে থাকা রাষ্ট্রীয় ‘নিয়ন্ত্রণ’ ও ‘গোপনতা’ এখনো উত্তর কোরিয়ার পর্যটনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে রয়ে গেছে।

সূত্র: ইনসাইডার, কেসিএনএ

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

বিজ্ঞানীদের রক্তের নতুন গ্রুপের সন্ধান
গোলাপ জলে গোসল করে রাজনীতি ছাড়লেন আওয়ামী লীগ নেতা
সাগরতীরে বিলাসবহুল রিসোর্ট উদ্বোধন করলেন কিম জং উন
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে একজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ২৬২
কূটনৈতিক অস্ত্র পানি নিয়ে ভারতের কঠোর অবস্থান, শঙ্কায় বাংলাদেশ ও পাকিস্তান
পশ্চিমবঙ্গে পদ্মশ্রীপ্রাপ্ত সন্ন্যাসীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও প্রতারণার অভিযোগে তোলপাড়
দুধ আমদানি করা লজ্জার বিষয়: উপদেষ্টা ফরিদা
পাকিস্তানে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ১৩ সেনা নিহত
ছায়ানটের সভাপতি হলেন ডা. সারওয়ার আলী, কার্যনির্বাহী কমিটিতে নতুন মুখ
জুলাই যোদ্ধাদের যথাযথ মর্যাদা দিতে চাই: রিজভী
৮ অঞ্চলে ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস, নদীবন্দরে সতর্কতা
সিন্ধু পানি চুক্তি নিয়ে হেগে পাকিস্তানের আইনি জয়, রায় প্রত্যাখ্যান করল ভারত
আগস্টে ঢাকার ৩ এলাকায় চালু হবে ই-রিকশা
বিনিয়োগকারীদের জন্য বিডার নতুন ওয়েবসাইট চালু
টাঙ্গাইলে যৌনপল্লীতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, ১২টি ঘর পুড়ে ছাই
আবাসিক হোটেল থেকে আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেপ্তার
মেয়াদোত্তীর্ণ ভিসাধারীদের খুশির খবর দিল সৌদি আরব
চীন সফর অত্যন্ত ‘সফল’ ও ‘ফলপ্রসূ’ হয়েছে: মির্জা ফখরুল
ইরানে আবারও বোমা হামলার হুমকি দিলেন ট্রাম্প
ইনিংস ব্যবধানে হারের পরই টেস্ট অধিনায়কত্ব ছাড়লেন শান্ত