শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

সন্তান প্রতিপালনে বাবা মায়ের করণীয়

প্রথমে আমাদের জানতে হবে প্যারেন্টিং অথবা বাবা মায়ের ভূমিকা বলতে কি বুঝায়। সাধারণত আমরা সব বয়সের মানুষ পিতা-মাতাকে প্যারেন্ট হিসেবে চিনি। কিন্তু প্যারেন্ট বলতে যা বোঝায় একটি শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশে যাদের ভূমিকা থাকে এবং যাদের উপর শিশু নির্ভর করে থাকে তাদের প্যারেন্ট বলা হয়ে থাকে। যেমন-পরিবারের বাবা-মা, পালক বাবা মা, বড় ভাই-বোন, দাদা-দাদী, নানা-নানী নিকটাত্মীয় যাদের একটি শিশু নিরাপদ ও ভরসাযোগ্য আশ্রয়স্থল মনে করে থাকেন, তারাও একটি শিশুর জন্য বাবা মায়ের সমতুল্য হয়ে থাকেন এবং বাচ্চার শারীরিক ও মানসিক গঠনে যাদের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা থাকে একটি শিশুর জন্য তাদেরকে প্যারেন্ট বলা যেতে পারে।

একজন স্বামী এবং স্ত্রী যখন তাদের জীবনে শিশুর আগমন নিয়ে চিন্তা করে থাকেন, তখন থেকেই বাবা মাকে পারেন্টিংরোল এর মধ্য দিয়ে নিজেদেরকে তৈরি হতে হয়। তাই শুরু থেকেই স্বামী স্ত্রীকে আগে নিজেদের সম্পর্কের মধ্যে যদি কোন সমস্যা থাকে।

তা সঠিকভাবে সমাধান করে নেয়াটা জরুরী। আগে নিজেদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নশীল হবেন। আমাদের সমাজের একটি বহুলপ্রচলিত ভুল ধারণা বিদ্যমান আছে। আমরা মনে করে থাকি, একটি শিশুর জন্মের মধ্য দিয়ে বৈবাহিক সমস্যা গুলোর সমাধান হয়ে যাবে। কিন্তু পরিপ্রেক্ষিতে দেখা যায়, নিজেদের মধ্যকার সমস্যাগুলোই পরবর্তীতে শিশুর মানসিক সমস্যার কারণ হতে পারে। মনে রাখতে হবে, শিশুর জন্ম নেয়া মানে নিজেদের সমস্যার সমাধান নয়। শিশুর জন্মানোর মধ্য দিয়ে জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব শুরু হয় এবং সেই দায়িত্বের সাথে সম্পর্কিত কাজগুলো মধ্য দিয়ে নিজেকে পরিচয় করাতে হয়। প্যারেন্টিং রোলটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রত্যেক বাবা-মায়ের ক্ষেত্রে ।  

একটি বাচ্চাকে যথাযথভাবে বড় করার জন্য প্রত্যেকেরই কিছু প্রধান দায়িত্ব ও কর্তব্য থাকে। আমরা সংক্ষেপে ওই বিষয়গুলো সম্পর্কে জেনে নিব। প্রথমতঃআমাদের খেয়াল রাখতে হবে শিশুর যথাযথ শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের গঠন ও নিরাপত্তার উপর। দ্বিতীয়তঃ শিশুকে সক্ষম পূর্ণবয়স্ক মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে সাহায্য করা এবং সামাজিক মূল্যবোধ শিশুর মধ্যে তৈরি হতে সাহায্য করা। তৃতীয়তঃ শিশু এবং তার বাবা-মায়ের মধ্যকার সম্পর্কের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে।

একটি শিশুর জীবনে চলার পথে বাবা মায়ের উপর প্রতিটি পদক্ষেপেই নির্ভরশীল। তাই শিশু ছোট থেকে বড় হওয়া পর্যন্ত বাবা-মাকেই তার নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হয়। তাই বাবা-মাকে বেশ কিছু বিষয়ের উপর খেয়াল রাখতে হয়। যা বাবা মাকে একটু সুন্দর সুস্থ সন্তান তৈরিতে সাহায্য করবে।

একটি শিশু জন্মের পর থেকে তাকে দেখাশোনার কাজে যারা নিযুক্ত থাকে প্রত্যেকেই প্যারেন্টিং এর রোল পালন করে থাকে। শিশু জন্মের পর থেকে তার প্রত্যেকটি কাজের জন্য তার  বাবা-মা কেয়ারগিভার এর উপর নির্ভর করে থাকে। তাই এর মধ্য দিয়ে সন্তান ও বাবা-মার মধ্যকার সম্পর্ক অনেক বেশি দৃঢ় হয়।

একটি শিশুর দৈনন্দিন প্রয়োজনগুলি ( যেমন – খাওয়ানো, কাপড় বদলানো ,কোলে নেয়া, আদর করা, কান্না থামানো) শিশুর প্রয়োজনীয় কাজগুলো যদি তাড়াতাড়ি এবং আন্তরিকতার সাথে করা হয় তা শিশু ও বাবা-মায়ের মধ্যকার সম্পর্ক দৃঢ় হতে সাহায্য করে। এই ভালোবাসার বন্ধন শিশুর সাথে তার বাবামায়ের সম্পর্কের জন্য খুব প্রয়োজন এবং ভাইবোন ও অন্যদের সাথেও ভালো সম্পর্ক তৈরি হয়। মা-বাবা এবং অন্য অভিভাবকদের সাথে যখন শিশুর সুন্দর সম্পর্ক তৈরি হয়, তখন শিশু পৃথিবীতে নিজের অবস্থান  সম্পর্কে ইতিবাচক ভাবতে পারে। 

বাবা-মাকে তার সন্তান বড় হওয়ার সাথে সাথে নিম্নলিখিত কাজগুলোর দিকে খেয়াল রাখতে হবে।  

  • শিশুদের স্নেহ ভালোবাসা প্রদর্শন করুন।
  • শিশুদের সাথে সঠিক ভাবে যোগাযোগ করার মধ্য দিয়ে তাদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরী করুন। যেন সহজেই বাচ্চা তার যেকোনো সমস্যায় আপনার সাহায্যের কথা চিন্তা করে থাকে।
  • শিশুর সাথে আপনিও উদ্দীপনামূলক কাজগুলোতে অংশগ্রহণ করুন এবং তাকে যথাযথভাবে সময় দিন।
  • শিশুদের যেকোনো কাজের প্রশংসা করুন ও তাদের বিভিন্ন গঠনমূলক কাজে অংশগ্রহণ করার জন্য উৎসাহিত করুন।
  • শিশুর পছন্দ-অপছন্দের বিষয়টিকে মূল্যায়ন করুন, পারস্পারিক সম্পর্কের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হোন। এতে শিশুটি সম্পর্কের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে শিখবেন।
  • বাবা-মা নিজেরাও সন্তান জন্মের পর তাদের পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে খাপ খাইয়ে নিতে অনেক প্রতিকূলতার সম্মুখীন হয়ে থাকেন। তাই বাবা-মা নিজেরা যদি কিছু বিষয় মনে রাখেন, সহজেই বাবা-মা শিশু লালন পালনে সক্ষম হবেন।  
  • শিশুদেরকে ভালো কাজের জন্য পুরস্কৃত করুন (Reward good behaviour)।একটি শিশুর প্রাথমিক বিদ্যালয় কিন্তু ফ্যামিলি। শিশু বুঝতে শেখার পর থেকে তার আশেপাশের প্রিয় মানুষগুলোকে অনুসরণ করে থাকে। তাই কাছের মানুষজন অর্থাৎ বাবা-মা-ভাই-বোন যদি ছোট্ট শিশুটিকে তার নিজস্ব কাজের জন্য ইতিবাচক কথা বলে থাকে। তাহলে শিশুটি ভালো কাজ করার ক্ষেত্রে আরো বেশি আগ্রহ পাবে। মনে রাখতে হবে শিশুরা প্রশংসা ও মনোযোগ পেতে পছন্দ করে।
  • ভুলক্রমেও শিশুর কোন নেতিবাচক কাজকে পুরস্কৃত করবেন না। (Don’t accidentally reward bad behavior) যেহেতু একটি শিশুর প্রতিপালনের বিষয়টি বাবা-মাদের ক্ষেত্রে নতুন তাই স্বাভাবিক বাবা-মা’র অনেক সময় বুঝতে পারেনা শিশুর বিভিন্ন ধরনের ব্যবহার কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন। অনেক সময় দেখা যায়, বাচ্চারা অন্যায় আবদার করে অথবা কান্নাকাটি করে তাদের বড়দের কাছ থেকে কোনো কিছু আদায় করে নিতে চাই এবং এই ব্যবহারের ক্ষেত্রে যদি সে মনোযোগ পেয়ে যায়, তাহলে এই ধরনের অন্যায় আবদার দিনকে দিন শিশুটি করে যাবে। তাই শিশুর এমন কোনো আবদারে মনোযোগ দেয়া যাবে না যাতে করে শিশুর ক্ষতি হয়। শিশুকে বুঝিয়ে বিষয়টি খোলামেলা আলোচনা করতে হবে। যেমন অনেক সময় দেখা যায় বাচ্চারা তাদের পছন্দ নয় এমন কোন কাজ নিয়ে অভিযোগ করে থাকে, মন খারাপ করেও কান্নাকাটি করে। সেক্ষেত্রে বাচ্চার ভুলটি ইতিবাচক উপায় বুঝিয়ে দিতে হবে। শিশু যেন একটি দৈনিক রুটিনের মধ্যে থাকে সেই বিষয়ে তাকে উৎসাহ দিতে হবে।
  • খারাপ কাজের জন্য শিশুদের স্বল্প শাস্তির ব্যবস্থা করুন। (Learn about punishment and punish some bad behavior but use mild punishment)

 বাবা-মা সন্তান লালন পালনের ক্ষেত্রে অনেক সময় বুঝতে পারেন না তারা কি ধরনের রোল বা  ভূমিকা পালন করবেন। তারা নিজেদের অজান্তে বিভিন্ন ধরনের প্যারেন্টিং স্টাইল অনুসরণ করে থাকে। যার ফলশ্রুতিতে সন্তানের ব্যক্তিত্বের ধরণ বুঝতে না পারার কারণে  সন্তানের উপর এর নেতিবাচক  প্রভাব পড়ে থাকে । বাবা-মার সুবিধার্থে বিভিন্ন ধরনের পাইন্টিং স্টাইল সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো।  

১। কর্তৃত্বপরায়ন ধরনের ( Authoritarian style)-  এই ধরনটিতে খুব কঠোর এবং মা বাবার সন্তান প্রতিপালন ধরন( Parenting style)-

অনড় নিয়ম আরোপ করা হয়। ফলে শিশুরা অসুখী ও সংঘাতময় হয়।

২- প্রশ্রয়/ আশকারা- অনুমতিদায়ক  ধরনের-(indulgent – Permissive style)  এই ধরনটিতে শিশুরা কোন বিধিনিশেধ মেনে বড় হয় না। মাঝে মাঝে শিশুদেরকে অনুমানযোগ্য কঠোর শাস্তি দেয়া হয়। এই সব শিশুরা মারমুখি, আবেগতাড়িত এবং জীবনের বিভিন্ন কাজে অসফল হয়ে থাকে।

৩। প্রশ্রয়/ আস্কারা- অবহেলা ধরনের ( Indulgent- Neglectful style)- এই ক্ষেত্রে শিশুদেরকে অনেক বেশি আস্কারা দেয়া হয় এবং  তাদেরকে অবহেলা ও করা হয়।  ফলে শিশুদের মধ্যে আত্মর্যাদাবোধ ও আত্মনিয়ন্ত্রণ কম থাকে, এবং বেশি আক্রমণাত্মক হয়।

৪।কর্তৃত্ববাদি- পরস্পর বিনিময়যোগ্য ধরন ( Authoritative reciprocal style )- এই ধরনের প্রতিপালনে উষ্ণ ভালোবাসার পরিবেশের মধ্যেও দৃঢ় নিয়মকানুন প্রতিষ্ঠা করা হয় এবং সিদ্ধান্ত গ্রহনের সময় পরস্পরের মতামতকে মূল্য দেয়া হয়।

এটিকে শিশু প্রতিপালনের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত ও কার্যকরী পদ্ধতি বলা হয়। এর ফলে শিশুরা আত্মনির্ভরশীল ও আত্মমর্যাদা সম্পন্ন হয়ে গড়ে উঠে এবং সামাজিক দায়িত্ববোধ ও তৈরি হয়।

Positive parenting এর মুল উদ্দেশ্য হল শিশুদেরকে এমনভাবে নিয়মানুবর্তিতা শিখানো যাতে করে শিশু ও বাবা–মায়ের সাথে ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠে এবং শিশুরা আত্মর্যাদাসমপন্ন হয়।

Positive parenting  শিশুদের ব্যবহার এবং অনুভুতির উন্নতির সাথে সাথে তাদের স্বকীয়তা এবং ইতিবাচক জীবন দর্শন শিক্ষা দেয়

উদাহরণস্বরূপ-

 -শিশুকে নেতৃত্ব দেয়া শিখালে তারা আত্মবিশ্বাসী হয় এবং ভাল সিদ্ধান্ত ( make good choice ) নিতে পারে

_ ইতিবাচক যোগাযোগ ( communication )  অবিভাবকের সাথে শিশুর সম্পর্কের গুনগতমান বৃদ্ধির সাথে তাদেরকে সামাজিক হতে এবং সমস্যা সমাধান করতে শিক্ষা দেয়।

-উষ্ণ এবং গনতান্ত্রিক লালন পালন শিশুকে আত্মমর্যাদা সম্পন্ন আত্মবিশ্বাসী হতে সাহায্য করে

-শিশু পালনে সায়ত্তশাসন ব্যবহার করলে শিশুর সৃজনশীলতা, empowerment and self determination

-সহায়ক এবং আস্থাশীল শিশু লালন পালন (supportive and optimistic  parenting  শিশুকে তার নিজের এবং ভবিষ্যতের প্রতি বিশ্বাসী হতে সাহায্য করে।

-শিশুর ভাল ব্যবহারকে স্বীকৃতি দিলে শিশুর  self – efficacy  গড়ে ওঠে এবং তারা ইতিবাচক সামাজিক ব্যবহারের প্রতি উৎসাহী হয়। 

শিশুকে বিধিনিষেধ মেনে চলতে শিখালে তারা জবাবদিহিতা  শিখে এবং দায়িত্বশীল হয়ে গড়ে উঠে ।

 একটি শিশু যখন কৈশোর বয়সে পা দেয় তখন তাদের শারিরিক, মানসিক , সামাজিক বিভিন্ন দিকে পরিবর্তন হতে থাকে। তারা  স্বভাবতই স্বনির্ভর এবং সত্ত্বাধিকারী হতে চেষ্টা করে এবং  পরিবারের  চাইতে বন্ধুদের সাথে বেশি সময় কাটাতে পচ্ছন্দ করে।  অভিভাবকেরা এই সময় খুব সাবধানে শিশুর পরিবারের সাথে সম্পর্ক  বজায় রাখতে  এবং তাদের স্বকীয়তা অর্জনে সাহায্য করবেন। যে সব কিশোর কিশোরী পরিবারের  সাথে  ভাল সম্পর্ক রাখতে পারে এবং নিজেকে পরিবারের আবদ্ধ ও মনে না করে তারা সুন্দরভাবে প্রসফুটিত হয়। রিসার্চে দেখা গেছে যেসব টিনেজারদের সাথে  তাদের অ্ভিভাবকেরা উষ্ণ, যোগাযোগপুরন ( communicative ) এবং  reasoned আচরন করেন  তারা সামাজিক ভাবে competent হয়, , নেশায় জড়িয়ে  পড়ে না এবং  Depression or anxiety তে কম ভুগে থাকে। 

বয়ঃসন্ধিকাল এই সময়টাতে কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে নানা ধরনের পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। তারা তাদের ব্যক্তিগত বিষয়গুলো পরিবারের কাছ থেকে গোপন করে থাকে। যার ফলশ্রুতিতে তারা বিভিন্ন ধরনের খারাপ অভ্যাস  সাথে নিজেকে জড়িয়ে ফেলে। বর্তমানকালে লক্ষ করা যায় যায় , মাদক দ্রব্যের ব্যবহার টিনএজ বয়সে বাচ্চাদের ক্ষেত্রে ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে, খারাপ সঙ্গ ও পরিবেশের কারণে তারা সহজেই এই অভ্যাসে নিজেকে জড়িয়ে ফেলছে। তাই বাবা মাকে এ সময়টাতে অনেক সতর্ক থাকতে হয়। বাবা-মা এই বয়সের সন্তানদের লালন পালনের ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো লক্ষ রেখে সন্তানের মাদক ব্যবহারের প্রবনতা যেভাবে কমিয়ে আনতে পারেনঃ

  • আপনার সন্তানের বন্ধুদের জানুন
  • কোনো সমস্যা সমাধান এবং মাদকদ্রব্য বাবহারের ক্ষেত্রে নিজে আপনার সন্তানের রোল মডেল হন।
  • আপনার সন্তান মাদক দ্রব্য ব্যাবহারের ঝুঁকিতে আছে কিনা বোঝার চেস্টা করুন।
  • সন্তানকে মাদক সম্বন্ধে ইনফর্মেশন দিন।
  • সন্তানের ব্যবহার এবং গতিবিধির উপর নজরদারী করুন।
  • ওদের জীবনযাত্রায় কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করুন।
  • সন্তানের সাথে মাদকদ্রব্য নিয়ে খোলাখুলি আলোচনা করুন।
  • আপনার সন্তানের সাথে উষ্ণ ও সহায়ক সম্পর্ক গড়ে তুলুন।

 

সঠিকভাবে সন্তান বড় করার পিছনে বাবা মায়ের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই পজিটিভ প্যারেন্টিং বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ সন্তান লালন পালনের ক্ষেত্রে। সেক্ষেত্রে বাবা-মাকেও মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে হবে এবং মনে রাখতে হবে সঠিক প্যারেন্টিং একটি সন্তানের মানসিক বিকাশে ব্যাপক ভূমিকা রাখে।  

  

শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর শিশু হাসপাতালের কার্ডিয়াক আইসিইউ-তে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) ২টা ৩৯ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে শিশু হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, হাসপাতালের বি ব্লকে আগুন লেগেছে। আগুনের চেয়ে ধোঁয়া একটু বেশি ছড়িয়েছে। ফায়ার সার্ভিস কাজ করছে। ইতিমধ্যেই সব রোগীদের আমরা সরিয়ে নিয়ে আসছি। ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে আগুন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে।

আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা এখনও বিস্তারিত কিছু বলতে পারছি না। তবে আশঙ্কা করছি এসি থেকে আগুন লেগে থাকতে পারে।

এর আগে দুপুর ১টার পর এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় মোহাম্মদপুর ফায়ার স্টেশনের তিনটি ইউনিট। এরপর আগুন নিয়ন্ত্রণে সিদ্দিক বাজার থেকে একটি ইউনিট, তেজগাঁও থেকে আরেকটি ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়।

ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার লিমা খানম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি। এ ছাড়া আগুনে হতাহতেরও কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি।

হাসপাতালের পঞ্চম তলায় কার্ডিয়াক বিভাগ থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে ফায়ার সার্ভিস। গরমের কারণে হাসপাতালটিতে রোগী ও আত্মীয়স্বজনের চাপ ছিল। প্রায় প্রতিটি বেডেই রোগী ছিল।

তীব্র গরমের মধ্যেই ঢাকাসহ তিন বিভাগে ঝড়-শিলাবৃষ্টির আভাস

ঝড়-শিলাবৃষ্টির আভাস। ছবি: সংগৃহীত

সারাদেশে তীব্র গরমে হাঁসফাঁস জনজীবন অবস্থা। এপ্রিল মাসের বাকি সময় জুড়ে এ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে এর মধ্যেই রাজধানী ঢাকাসহ দেশের তিন বিভাগে সুখবর দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এই তিন বিভাগে ঝড়সহ শিলাবৃষ্টি হতে পারে বলে জানানো হয়েছে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকাল ৯টায় দেওয়া বর্ধিত ৫ দিনের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এমন তথ্য জানানো হয়েছে।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ শুক্রবার ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে।

একই সঙ্গে বাগেরহাট, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলাসমূহের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং দিনাজপুর, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, খুলনা, সাতক্ষীরা, বরিশাল ও পটুয়াখালী জেলাসহ ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।

এ দিন সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বৃদ্ধি পেতে পারে।

পরের দিন ময়মনসিংহ এবং সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গো কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে।

তাপমাত্রা সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বৃদ্ধি পেতে পারে। এ ছাড়াও রোববার ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম এবং সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে।

এদিকে যশোর ও চুয়াডাঙ্গায় বৃহস্পতিবার দেশের সর্বোচ্চ ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদফতর। এদিন দেশের সর্বনিম্ন ২০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় কিশোরগঞ্জের নিকলিতে।

ফরিদপুরে মন্দিরে আগুন, সন্দেহের জেরে গণপিটুনিতে ২ ভাই নিহত

ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

ফরিদপুরের মধুখালীর ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লীতে গণপিটুনিতে দুই নির্মাণশ্রমিক নিহত হয়েছেন। এ সময় পুলিশ সদস্যসহ গুরুতর আহত হয়েছেন আরও আটজন। এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সেই সাথে চার প্লাটুন বিজিবি মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার গণপিটুনিতে দুইজন শ্রমিক নিহতের খবর নিশ্চিত করেছেন।

নিহত দুই নির্মাণ শ্রমিক হলেন- মধুখালী উপজেলার নওয়াপাড়া ইউনিয়নের ঘোপেরঘাট গ্রামের শাহজাহান খানের ছেলে আশরাফুল (২১) ও তার ভাই আশাদুল (১৫)।

এর আগে বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লী গ্রামের বারোয়ারী মন্দিরে আগুনের ঘটনা ঘটে। এরপর এই আগুন দেওয়ার অভিযোগে মন্দিরের পাশের স্কুলে নির্মাণকাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের ওপর হামলা চালান স্থানীয়রা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, হিন্দু অধ্যুষিত পঞ্চপল্লী গ্রামের ওই বারোয়ারি মন্দিরের কালী প্রতিমায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় স্থানীয় লোকজন বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। তারা মন্দির থেকে ২০ গজ দূরের পঞ্চপল্লী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওয়াশরুম নির্মাণকাজে নিয়োজিত মুসলিম সাত শ্রমিককে সন্দেহ করে স্কুলের শ্রেণিকক্ষে অবরুদ্ধ করে মারপিট করে।

খবর পেয়ে মধুখালী থানা পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনা স্থলে গেলে হামলাকারীরা তাদেরও অবরুদ্ধ করে রাখে, এবং হতাহতদের উদ্ধারে বাধা দেয়। পরে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার ফরিদপুর, রাজবাড়ী ও মাগুরা জেলা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় ৫ ঘণ্টা পর তাদের উদ্ধার করে মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং ৪ জনকে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুইজন মারা যান। আহত আরও দুজনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।

এ বিষয়ে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম বলেন, এখানে কয়েকজন নির্মাণ শ্রমিক কাজ করছিলেন। উত্তেজিত জনতা ভেতরে ঢুকে তাদের লাঠি দিয়ে বেদম প্রহার করে ও ইট দিয়ে থেতলিয়ে গুরুতর আহত করে। খবর পেয়ে মধুখালী থানার ওসি ফোর্সসহ এখানে আসে। তাদের সঙ্গে মধুখালী উপজেলার ইউএনও ছিলেন। তারা এখানে এসে উত্তেজিত জনতার হাতে আটকে পড়েন। খবর পেয়ে আমরা ফরিদপুর থেকে অতিরিক্ত ফোর্সসহ এসে তাদেরসহ আহতদের উদ্ধার করে অ্যাম্বুলেন্সে ফরিদপুরে হাসপাতালে পাঠাই।

সর্বশেষ সংবাদ

শিশু হাসপাতালের আগুন নিয়ন্ত্রণে
তীব্র গরমের মধ্যেই ঢাকাসহ তিন বিভাগে ঝড়-শিলাবৃষ্টির আভাস
ফরিদপুরে মন্দিরে আগুন, সন্দেহের জেরে গণপিটুনিতে ২ ভাই নিহত
রাজধানীর শিশু হাসপাতালে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৫ ইউনিট
জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস মারা গেছেন
ক্ষেপণাস্ত্র হামলার খবর অস্বীকার ইরানের, তেহরানে বিমান চলাচল স্বাভাবিক
নওগাঁয় ভুয়া সিআইডি কর্মকর্তা গ্রেপ্তার
মানুষ এখন ডাল-ভাত নয়, মাছ-মাংস নিয়ে চিন্তা করে: প্রধানমন্ত্রী
দাঁড়িয়ে থাকা বাসকে পিকআপের ধাক্কা, ১০ পোশাককর্মী আহত
নতুন রেকর্ড গড়ে ইউরোপা লিগের সেমিতে লেভারকুসেন
ইরানে ইসরাইলের হামলা: লাফিয়ে বাড়ছে তেল ও স্বর্ণের দাম
মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এলেন আরও ১৩ বিজিপি সদস্য
চুয়াডাঙ্গায় স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করার লক্ষ্যে কিশোর-কিশোরীদের নিয়ে সেমিনার
ইরানে হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল
নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ, ডিপজলকে শোকজ
টাঙ্গাইলে সেরা ওসি হলেন আহসান উল্লাহ্, পেলেন শ্রেষ্ঠ সম্মাননা পুরস্কার
দেশে প্রতিদিন সড়কে প্রাণ হারাচ্ছেন ১৬ জনের বেশি
টানা তিনদিন চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড, হিট অ্যালার্ট জারি
তীব্র গরমে পশ্চিমবঙ্গে স্কুল ছুটি ঘোষণা
ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক