শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫ | ১৪ আষাঢ় ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৩২

বিষাদ বসুধা

শাহবাজ খান ঘুমের ঘোরে মোহিনীকে ডাকছেন। নীলিমা খান অবাক বিস্ময়ে তার দিকে তাকিয়ে আছেন। ওই নাম শুনে তার শরীরে কাঁপন ধরেছে। বুকের মধ্যে চিনচিন করে ব্যথা শুরু হয়েছে। মাথাটা উথালপাথাল ঘুরছে। আতঙ্ক আর বিস্ময়ভরা কণ্ঠে তিনি বললেন, এ কী সর্বনাশা কাণ্ড! মোহিনী! এ নাম তো আগে কখনো শুনিনি! তার বান্ধবীর তালিকায় আরেকটি নাম নতুন যুক্ত হলো! নাকি মোহিনীর প্রেমে সে দেওয়ানা! ঘুমের ঘোরে কখন মানুষ কারও নাম ধরে ডাকে?

নীলিমা খান উৎকট মদের গন্ধ টের পান। শাহবাজ খান যে রাতভর মদ গিলেছে সেই কথা তিনি ভুলেই গিয়েছিলেন। তিনি জানেন, শাহবাজ খানের পেটে মদ পড়লেই মনের কথা সব বেরিয়ে যায়। মোহিনীর সঙ্গে নিশ্চয়ই তার কোনো বিশেষ সম্পর্ক আছে। অথবা নতুন তৈরি হয়েছে। তা না হলে এই নাম বলার কথা না। মোহিনার নাম শোনার পরই তার মাথায় আগুন ধরে যায়। তিনি শাহবাজ খানের কাছে এগিয়ে যান। তাকে ডাকেন। এই! শাহবাজ! কী হয়েছে তোমার?

শাহবাজ খান এদিক সেদিক মোড়ামুড়ি দিয়ে আবার ঘুমিয়ে পড়েন। নীলিমা শাহবাজ খানের মোবাইল হাতে নিয়ে কললিস্ট দেখেন। কললিস্টে মোহিনীর নাম দেখে তার মেজাজটা আরও বিগড়ে যায়। তিনি নম্বরটা নিজের মোবাইলে সেভ করেন। তারপর বিছানা ছেড়ে সোফায় গিয়ে বসেন। রাজ্যের ভাবনা তার মাথায় ঘুরপাক খায়। মোহিনী কে? কী করে সে? সে কি কোনো মডেল? নাটক-সিনেমা করে? নাকি অন্য কিছু...? নীলিমা মনে মনে এও ভাবেন, শাহবাজ খান কিছুতেই মোহিনীর কথা স্বীকার করবে না। সে যে তার নাম ধরে ডেকেছে এটাকে বলবে, আমার বানানো গল্প। ইস! আমি যদি রেকর্ড করে রাখতাম! এত দ্রুত কি আর রেকর্ড করা সম্ভব! মোহিনী নামটা আগে কখনো আমি শুনিনি। এটা যে নতুন জুটেছে সেটা আমি নিশ্চিত। ঘুম ভাঙার পর তাকে ধরতে হবে। মোহিনী কে তা তাকে বলতে হবে।

এসব কথা ভাবতে ভাবতেই নীলিমা কেঁদে ওঠেন। কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। কান্না চেপে রাখার চেষ্টা করেও পারেন না। কাজের লোকগুলো বাইরে থেকে কান্নার শব্দ পেয়ে দরজার সামনে এসে দাঁড়ায়। কৌতূহলের বসে দরজা নক করে। নীলিমা ধমকের সুরে বলেন, এই কে! মুহূর্তের মধ্যে সবাই চলে যায়। তারা যে যার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। নীলিমা বসে থাকেন। তার মাথায় হাজারো ভাবনা ঘুরপাক খায়। তিনি নিজের মোবাইল হাতে নিয়ে ফেসবুকে ঢোকেন। শাহবাজ খানের ফ্রেন্ডলিস্ট দেখেন। পাঁচহাজার বন্ধু তালিকায় মোহিনী নাম নেই। তার ফলোয়ারের সংখ্যা দুই লাখ। নিশ্চয়ই ফলোয়ার তালিকায় থাকবে। নীলিমা এবার নিজের ফেসবুকে মোহিনী নাম সার্চ দেন। বেশ কিছু নাম তার মোবাইলের স্ক্রিনে ভেসে ওঠে। কেউ ছাত্রী। কেউ চাকরিজীবী। কেউ গৃহিণী। চেহারা দেখে একটাও তার পছন্দ হয় না। তার মনেই হয় না, এর মধ্যে কেউ শাহবাজ খানের বান্ধবী হবে। তারপরও তিনি মনে মনে বলেন, পুরুষ মানুষকে ভিমরতিতে পেলে কাজের লোকের সঙ্গেও শুতে পারে। সে তুলনায় এগুলো তো ভালোই!

নীলিমার কোনো কিছুই ভালো লাগছে না। সবকিছু কেমন এলোমেলো লাগছে। সংসার শুরুর সময়ও সে এ রকম ঝামেলায় পড়েছিল। প্রতিরাতে মদ খেয়ে শাহবাজ খান একেক জনের নাম ধরে ডাকত! কী যে ভয়ঙ্কর ছিল সেই সময়গুলো! তার অসংখ্য বান্ধবী। এদের কেউ না কেউ তার বিদেশ যাত্রার সঙ্গী হতো। এ নিয়ে কত ঝগড়াঝাটি, কান্নাকাটি করেছে! কোনো কিছুতেই যখন কাজ হচ্ছিল না, তখন শ্বশুর-শাশুড়ির কাছে নালিশ করল। তারপর কিছুদিন বন্ধ ছিল। ইদানিং আবার বান্ধবীদের নিয়ে ঘোরাঘুরি শুরু হয়েছে।
নীলিমা মনে মনে সিদ্ধান্ত নেন, এর একটা বিহিত করতেই হবে। সে যদি তার অভ্যাস পরিবর্তন করতে না পারে তাহলে আমি আর থাকব না। অথবা পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করব। তার আগে বিষয়টা কি শ্বশুর-শাশুড়িকে জানাব? বার বার সে একই কাণ্ড করবে; আর আমি শ্বশুর-শাশুড়ির কাছে নালিশ করবে! এই করে কতদিন! আমি বরং তাকেই জিজ্ঞাসা করি। সে আসলে কী চায়? কেন সে আমার সঙ্গে এমন প্রতারণা করছে? সে কি ভাবছে, আমার আর যাওয়ার জায়গা নেই! সেটা যদি ভেবে থাকে তাহলে সে আমাকে ভুল চিনেছে। আমি ছেলে মেয়ে দেখব না। নিজের জীবনই যদি বিপন্ন হয় তাহলে ওসব দিয়ে কী হবে!

নীলিমা আবার কাঁদেন। কাঁদতে কাঁদতে দুই চোখ ফুলে যায়। তিনি বাথরুমে দাঁত ব্রাশ করেন। চোখে পানির ঝাপটা দেন। নিজেকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেন। মনকেও শক্ত করার চেষ্টা করেন। তিনি নিজের সঙ্গে নিজে কথা বলেন। দেখ নীলিমা; তোমাকে অনেক বেশি শক্ত হতে হবে। এভাবে ভেঙে পড়লে চলবে না। তোমার বাবা অনেক সম্পদ তোমার জন্য রেখে গেছেন। তুমি যদি চলেও যাও তাহলে তোমার কোনো সমস্যা হবে না। ইচ্ছা করলে তোমার দুই প্রজন্ম শুয়ে বসে খেতে পারবে। এত কী ভাবছ! তুমি শাহবাজের মুখোমুখি দাঁড়াও। তার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাও। দেখ কি জবাব দেয়। তুমি যদি তার জবাবে সন্তুষ্ট না হও তখন সরাসরি তাকে বলবে। কঠিনভাবে বলবে। দেখ শাহবাজ, তুমি যদি তোমার অভ্যাস পরিবর্তন করতে না পারো তাহলে কিন্তু আমি আর থাকব না। আমাকে তুমি হারাবে।

নীলিমা আবার ঘরে আসেন। সোফায় হেলান দিয়ে বসেন। শাহবাজ খানের জন্য অপেক্ষা করেন। কিন্তু তার ঘুম থেকে ওঠার কোনো লক্ষণ নেই। সম্ভবত আরও কয়েক ঘণ্টা সে ঘুমাবে। সারাদিন ঘুম থেকে নাও উঠতে পারে। নীলিমা আর অপেক্ষা না করে বাইরে বের হন। বাচ্চাদের খোঁজখবর নেন। তারপর বাচ্চাদের নিয়ে নাশতার টেবিলে যান। অনেকদিন পর নীলিমা আবার শাহবাজ খানের মুখোমুখি হন। তার কাছে তিনি জানতে চান, তুমি আমাকে সত্যি করে বলো, হু ইজ মোহিনী? একটুও মিথ্যা বলবে না।
মোহিনী? কেন, কী হয়েছে?
আমি যা জানতে চেয়েছি তার জবাব দাও।
আচ্ছা, হঠাৎ মোহিনীকে নিয়ে তুমি এত উত্তেজিত কেন?
কারণ নিশ্চয়ই আছে। তুমি বলো কে সে?
আমার একটা ফ্রেন্ড। একসঙ্গে পড়েছি।
তাই! কই আগে তো কখনো বলোনি!
বলিনি প্রসঙ্গ আসেনি।
দুয়েক দিনের মধ্যে তার সঙ্গে কি দেখা হয়েছে?
না।
কথা হয়েছে?
হ্যাঁ।
আর তাতেই সারাক্ষণ তার নাম জপছো!
মানে!
ভোরে ঘুমের ঘোরে মোহিনী মোহিনী বলে ডাকাডাকি করেছ। কেন করেছ?
বোগাস কথা বলার আর জায়গা পাও না!
মোটেই না। আমি তাহলে মোহিনীর নাম কি করে জানলাম?
সেটা আমি কী করে জানব?
দেখ, এসব বাদ দাও। আর যদি বাদ দিতে না পারো সেটাও আমাকে খোলাখুলি বলো।
কী বাদ দেব? আমার বন্ধুবান্ধব?
না। তোমার বান্ধবীদের বাদ দেবে।
আচ্ছা, কিছু দিন পর পর তোমার কী হয়? এমন কেন করো তুমি?
তুমি করাও বলেই তো করি! তুমি আমার পাশে শুয়ে আরেক নারীর নাম জপবে; আর আমি তা সহ্য করব? মোটেই না। কিছুতেই না।
আমার মনে হয় তোমার মানসিক সমস্যা আছে।
মানসিক সমস্যা যদি হয়েই থাকে সেটা তোমার কারণে।
বাজে কথা রাখো তো!
কোনটা বাজে কথা?
তুমি যা বলছ।
সত্য কথাগুলো সব বাজে কথা; তাই না?
নীলিমার কথায় শাহবাজ খানের মেজাজ চড়ে যায়। তিনি উত্তেজিত কণ্ঠে বলেন, বেশি বাড়াবাড়ি করবে না। তাহলে কিন্তু ভালো হবে না।
নীলিমা ক্রোধের দৃষ্টিতে শাহবাজ খানের দিকে তাকিয়ে থাকেন। তারপর বলেন, বাড়াবাড়ি আমি করছি না তুমি করছ?
আবার কথা বলো! ভালো না লাগলে তোমার সিদ্ধান্ত তুমি নিতে পারো। আমার ঝগড়াঝাটি ভালো লাগে না।
ঠিক আছে। আমার সিদ্ধান্ত আমিই নেব।
কথা শেষ করে নীলিমা হনহন করে চলে গেলেন। বিরক্তি আর বিস্ময় ভরা দৃষ্টিতে শাহবাজ খান তার চলে যাওয়া দেখলেন।

চলবে...

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৩১

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৩০

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৯

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৭

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৬

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৫

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৪

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২৩

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২২

বিষাদ বসুধা: পর্ব ২০

বিষাদ বসুধা: পর্ব ১৯

 

Header Ad
Header Ad

বিজ্ঞানীদের রক্তের নতুন গ্রুপের সন্ধান

গ্রুপটির নামকরণ করা হয়েছে—গোয়াডা নেগেটিভ। ছবি: সংগৃহীত

রক্তের নতুন একটি গ্রুপের সন্ধান পেয়েছে ফ্রান্সের জাতীয় রক্ত সঞ্চালন সংস্থা ‘দ্য ফ্রেঞ্চ ব্লাড এস্টাবলিশমেন্ট’। ফরাসি এক নারীর শরীরে থাকা রক্তের নতুন গ্রুপটির নামকরণ করা হয়েছে—গোয়াডা নেগেটিভ।

১৫ বছর আগে সংগ্রহ করা নমুনা বিশ্লেষণ করে এই রক্তের গ্রুপের খোঁজ মিলেছে। এ মাসে ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি অব ব্লাড ট্রান্সফিউশন আনুষ্ঠানিকভাবে রক্তের নতুন গ্রুপটিকে স্বীকৃতি দিয়েছে।

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, প্রায় ১৫ বছর আগে ক্যারিবীয় দ্বীপ গুয়াদেলুপ থেকে আসা এক ফরাসি নারীর অস্ত্রোপচারের আগে রক্ত সংগ্রহ করা হয়েছিল। সেই রক্ত পরীক্ষা করেই গোয়াডা নেগেটিভ নামের রক্তের নতুন গ্রুপের সন্ধান পাওয়া গেছে। নতুন রক্তের গ্রুপ শনাক্তের বিষয়ে দ্য ফ্রেঞ্চ ব্লাড এস্টাবলিশমেন্টের বিজ্ঞানী থিয়েরি পেয়ারার্ড জানিয়েছেন, ২০১১ সালে এক নারীর রক্তে বিরল এক অ্যান্টিবডি শনাক্ত করা হয়েছিল। সে সময় রক্তের তথ্য বিশ্লেষণ করতে বিলম্ব হয়। এরপর ২০১৯ সালে ডিএনএ সিকোয়েন্স করে বিরল জেনেটিক মিউটেশন পাওয়া যায়।

মানুষের রক্তের গ্রুপকে চারটি বিস্তৃত ভাগে ভাগ করা হয়। এসব গ্রুপের নাম এ, বি, এবি আর ও গ্রুপ। এদের পজেটিভ ও নেগেটিভ দুটি ভাগে ভাগ করা হয়। যদিও মানুষের রক্তের গ্রুপ আসলে অনেক জটিল। বিজ্ঞানীদের ধারণা, বিরল কোনো রোগের কারণেই সেই নারীর শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। মা–বাবা উভয়ের কাছ থেকে পরিবর্তিত জিন বহন করছেন সেই নারী।

প্রথম রক্তের গ্রুপ প্রায় এক শতাব্দীর বেশি সময় আগে শনাক্ত করা হয়েছিল। জেনেটিক সিকোয়েন্সের সাম্প্রতিক অগ্রগতির ফলে নতুন ধরনের গ্রুপ আবিষ্কারের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণে অনেক বিরল রক্তের গ্রুপ সম্পর্কে জানা যাচ্ছে।

 

Header Ad
Header Ad

গোলাপ জলে গোসল করে রাজনীতি ছাড়লেন আওয়ামী লীগ নেতা

ছবি: সংগৃহীত

মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার বজ্রযোগিনী ইউনিয়নের চূড়াইন গ্রামে এক ব্যতিক্রমী ঘটনার সাক্ষী হলো এলাকাবাসী। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আলী হোসেন মৃধা (৪৮) গোলাপ জলে গোসল করে জনসমক্ষে ঘোষণা দিলেন— তিনি রাজনীতি থেকে স্বেচ্ছায় অবসর নিচ্ছেন।

শনিবার (২৮ জুন) দুপুরে নিজ বাড়ির উঠানে এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে এই ঘোষণা দেন তিনি। এই ঘোষণার মাধ্যমে একদিকে যেমন রাজনৈতিক মহলে আলোচনার জন্ম দিয়েছেন, অন্যদিকে নিজ গ্রামে নানা প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

আলী হোসেন মৃধা ছিলেন বজ্রযোগিনী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। এর আগে তিনি ওই ওয়ার্ডের নির্বাচিত ইউপি সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। চূড়াইন গ্রামের প্রয়াত আব্দুল খালেক মৃধার সন্তান আলী হোসেন মূলত পেশায় একজন ডেকোরেটিং ব্যবসায়ী।

তিনি জানান, ২০১৬ সালে রাজনীতিতে যোগ দিয়েছিলেন এবং তখনই আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড কমিটির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান।

গোলাপ জলে গোসল করে রাজনৈতিক জীবনের ইতি টেনে আলী হোসেন মৃধা বলেন, “আমি মূলত ব্যবসায়ী মানুষ। রাজনীতি আমাকে কখনো খুব টানেনি। তবে এলাকার মানুষের অনুরোধে ও সময়ের প্রেক্ষাপটে আমি যুক্ত হয়েছিলাম।”

তিনি আরও বলেন, “গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সরকারের পতনের পর আমার ভেতরে একটি পরিবর্তন আসে। আমার মনে হয়েছে, রাজনীতি আমার পথ নয়। অনেকেই পালিয়ে গেছেন, কিন্তু আমি এলাকায় থেকে গেছি। আমি কখনো দুর্নীতি বা অনিয়মে জড়াইনি।”

আলী হোসেন মৃধার ভাষায়, এটি ছিল তাঁর ‘বোধোদয়’—একটি আত্মচিন্তার ফল। তিনি স্পষ্টভাবে জানান, “আমি আর রাজনীতি করবো না। আওয়ামী লীগও করবো না। এখন থেকে শুধু ব্যবসা নিয়েই থাকতে চাই।”

স্থানীয়ভাবে এই ঘোষণা বেশ আলোড়ন তুলেছে। কেউ কেউ বলছেন, এটি হয়তো রাজনৈতিক কৌশল, আবার কেউ বলছেন এটি একজন সাধারণ কর্মীর বিবেকের জাগরণ।

অনেকেই মনে করছেন, দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে ব্যক্তি পর্যায়ে এমন অবস্থান নতুন আলোচনার জন্ম দিতে পারে। গোলাপ জলে গোসল করে রাজনীতি ছাড়ার ঘটনা হয়তো বিরল, কিন্তু তা কেবল এক ব্যক্তির সিদ্ধান্ত নয়—বরং এটি একটি সময়ের প্রতিচ্ছবি, যেখানে রাজনীতি নিয়ে মানুষের দ্বিধা, আস্থা ও প্রত্যাশার জায়গাগুলো স্পষ্টভাবে প্রকাশ পাচ্ছে।

Header Ad
Header Ad

সাগরতীরে বিলাসবহুল রিসোর্ট উদ্বোধন করলেন কিম জং উন

ছবি: সংগৃহীত

উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উন ছয় বছর বিলম্বে উদ্বোধন করলেন দেশের অন্যতম বৃহৎ পর্যটন প্রকল্প— ওনসান কালমা সমুদ্র সৈকত রিসোর্ট। পূর্ব উপকূলে অবস্থিত এই বিলাসবহুল রিসোর্টটি আগামী জুলাই মাস থেকে দেশীয় পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা কেসিএনএ। তবে বিদেশি পর্যটকদের জন্য এটি কবে উন্মুক্ত হবে, সে বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি।

গত ২৪ জুন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কিম জং উনের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন তার স্ত্রী রি সল জু এবং কন্যা কিম জু এ। ২০২৪ সালের শুরু থেকে এটি ছিল রি সল জুর প্রথম প্রকাশ্য উপস্থিতি। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার ম্যাটসেগোরাসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরাও, যা উত্তর কোরিয়ার কূটনৈতিক বার্তাও বহন করছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

এক সময় ওনসান শহরটি পরিচিত ছিল উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার ঘাঁটি হিসেবে। কিন্তু কিম জং উন এখন সেই শহরকেই রূপ দিচ্ছেন পর্যটন নগরীতে। নিজের শৈশব কাটানো এলাকা ওনসানে অভিজাতদের ব্যক্তিগত বাড়ি থাকলেও এবার সাধারণ পর্যটকদের জন্যও খুলে দেওয়া হলো সমুদ্রতীরবর্তী বিলাসবহুল রিসোর্টটি।

কেসিএনএর দাবি অনুযায়ী, রিসোর্টটি দৈর্ঘ্যে প্রায় ৪ কিলোমিটার এবং এতে প্রতিদিন ২০ হাজার পর্যটক অবস্থান করতে পারবেন। এতে থাকছে হোটেল, রেস্তোরাঁ, ওয়াটার পার্ক, শপিং মলসহ নানা বিনোদন সুবিধা। তবে এই তথ্যগুলো স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ওনসান রিসোর্টের উদ্বোধন কিম সরকারের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের নতুন কৌশলের অংশ হতে পারে। যদিও উত্তর কোরিয়ায় পর্যটন নিয়ন্ত্রণের কড়াকড়ি রয়েছে, তবুও বিদেশি পর্যটক বিশেষ করে চীন ও রাশিয়া থেকে আসা পর্যটকদের নির্ভরযোগ্য উৎস হিসেবে বিবেচনা করছে দেশটি।

২০২০ সালে কোভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়ার পর কঠোর সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে পিয়ংইয়ং। প্রায় তিন বছর পর, ২০২৩ সালে কিছুটা শিথিলতা আসে এবং ২০২৪ সালে রাশিয়ার পর্যটকদের জন্য সীমান্ত খোলা হয়। তবে ইউরোপীয় ও অস্ট্রেলিয়ান পর্যটকদের জন্য সীমান্ত খোলার ঘোষণা এলেও কিছু সপ্তাহ পরেই সেটি আবার বন্ধ করে দেওয়া হয়, যা উত্তর কোরিয়ার পর্যটন নীতির অনিশ্চয়তা ও অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণের ইঙ্গিত দেয়।

কেসিএনএ জানিয়েছে, ওনসান রিসোর্ট উদ্বোধন “সমগ্র দেশের জন্য একটি মহান ও শুভ ঘটনা” এবং এটি উত্তর কোরিয়ার পর্যটনে “একটি নতুন যুগের সূচনা”।

প্রথমে ২০১৯ সালের অক্টোবরে এই রিসোর্ট খোলার কথা থাকলেও, নির্মাণে বিলম্ব ও কোভিডের অভিঘাতের কারণে তা সম্ভব হয়নি।

ওনসান কালমা রিসোর্টের উদ্বোধন কেবল পর্যটকদের জন্যই নয়, বরং আন্তর্জাতিক সমাজের দৃষ্টিতে উত্তর কোরিয়ার কৌশলগত অর্থনৈতিক মনোযোগেরও প্রতিফলন। বিদেশি পর্যটকদের জন্য এটি কতটা সহজলভ্য হবে এবং আদৌ কি তা বৈদেশিক রাজস্বে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে— তা সময়ই বলে দেবে। তবে রিসোর্টের ছায়ায় লুকিয়ে থাকা রাষ্ট্রীয় ‘নিয়ন্ত্রণ’ ও ‘গোপনতা’ এখনো উত্তর কোরিয়ার পর্যটনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে রয়ে গেছে।

সূত্র: ইনসাইডার, কেসিএনএ

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

বিজ্ঞানীদের রক্তের নতুন গ্রুপের সন্ধান
গোলাপ জলে গোসল করে রাজনীতি ছাড়লেন আওয়ামী লীগ নেতা
সাগরতীরে বিলাসবহুল রিসোর্ট উদ্বোধন করলেন কিম জং উন
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে একজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ২৬২
কূটনৈতিক অস্ত্র পানি নিয়ে ভারতের কঠোর অবস্থান, শঙ্কায় বাংলাদেশ ও পাকিস্তান
পশ্চিমবঙ্গে পদ্মশ্রীপ্রাপ্ত সন্ন্যাসীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও প্রতারণার অভিযোগে তোলপাড়
দুধ আমদানি করা লজ্জার বিষয়: উপদেষ্টা ফরিদা
পাকিস্তানে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ১৩ সেনা নিহত
ছায়ানটের সভাপতি হলেন ডা. সারওয়ার আলী, কার্যনির্বাহী কমিটিতে নতুন মুখ
জুলাই যোদ্ধাদের যথাযথ মর্যাদা দিতে চাই: রিজভী
৮ অঞ্চলে ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস, নদীবন্দরে সতর্কতা
সিন্ধু পানি চুক্তি নিয়ে হেগে পাকিস্তানের আইনি জয়, রায় প্রত্যাখ্যান করল ভারত
আগস্টে ঢাকার ৩ এলাকায় চালু হবে ই-রিকশা
বিনিয়োগকারীদের জন্য বিডার নতুন ওয়েবসাইট চালু
টাঙ্গাইলে যৌনপল্লীতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, ১২টি ঘর পুড়ে ছাই
আবাসিক হোটেল থেকে আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেপ্তার
মেয়াদোত্তীর্ণ ভিসাধারীদের খুশির খবর দিল সৌদি আরব
চীন সফর অত্যন্ত ‘সফল’ ও ‘ফলপ্রসূ’ হয়েছে: মির্জা ফখরুল
ইরানে আবারও বোমা হামলার হুমকি দিলেন ট্রাম্প
ইনিংস ব্যবধানে হারের পরই টেস্ট অধিনায়কত্ব ছাড়লেন শান্ত