মঙ্গলবার, ১ জুলাই ২০২৫ | ১৭ আষাঢ় ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস পর্ব-৪০

দ্য ফার্স্ট ম্যান

সেই বিস্মৃতিতেই তিনিও ডুবে গেছেন। কোনো রকম শিকড় ছাড়াই শুরু হয়েছিল তাদের জীবন এবং সেই জীবনের পরিণতি ওই বিশাল বিস্মৃতিতে। সময়ের গ্রন্থাগারে হয়তো আছে তাদের মতো কুড়িয়ে পাওয়াদের বসতিস্থাপনের কথা, তাদের দ্বারা গড়ে ওঠা ক্ষণস্থায়ী শহরের কথা। তারা ওইসব ক্ষণস্থায়ী শহর গড়ে তুলেছিল যেন সেখানে নিজেদের মাঝে এবং অন্যদের মাঝে মৃত্যুবরণ করার জন্যই।

মানুষের ইতিহাস যেন পুরনো ভূ-খণ্ডের উপর দিয়ে নিরবধি হেঁটে যায়। খুব বেশি স্পষ্ট পদচিহ্ন রেখে যায় না। যেটুকু চিহ্ন থাকে সেটুকুও চিরন্তন সূর্যের প্রখর তাপে বাষ্পে পরিণত হয়ে যায়। যারা ওই ভূখণ্ড তৈরি করেছিল তাদের স্মৃতিও খুন আর ঘৃণার আগুনে পরিণত হয়েছে। তার আকস্মিক প্রকোপের ফলে ঝড়েছে রক্তের ধারা। দ্রুত তৈরি হয়েছে ক্ষত। আবার দ্রুত শুকিয়ে গেছে ঠিক এই দেশের মৌসুমি নদীগুলোর মতোই। এখন রাত নেমে আসছে, যেন সরাসরি মাটির ভেতর থেকে, দেশের বুকের ভেতর থেকে। যেন সব সময়ের আকাশতলে জীবিত মৃত সবকিছু গিলে খাওয়ার জন্য নেমে আসছে এই রাত। না, জ্যাক বাবাকে কখনো জানতে চিনতে পারবে না।

বাবা ঘুমিয়ে আছেন ওখানে, ওই মাটিতে। তার মুখটা ছাইয়ের মধ্যে মিশে গেছে, হারিয়ে গেছে। বাবাকে ঘিরে ছিল একটা রহস্য। সেই রহস্যের ভেতর সে প্রবেশ করতে চেয়েছে। কিন্তু দেখা গেছে, যে রহস্য পাওয়া গেছে সেটা ছিল দারিদ্রের রহস্য। দারিদ্র মানুষকে তৈরি করেছে নামহীন অবস্থায়। সে মানুষের যেন কোনো অতীত নেই। দারিদ্র তাদের সবাইকে ঠেলে দিয়েছে মৃতদের বিশাল ভীড়ের মধ্যে। ওই মৃতরা পৃথিবী তৈরি করেছে; বিনিময়ে নিজেরাই চিরতরে ধ্বংস হয়ে গেছে। লাব্রাডরে করে যারা দেশান্তরে বের হয়েছিল তাদের নিয়তির সঙ্গে জ্যাকের বাবার নিয়তির এখানেই মিল। সেহেলের মাহুন গোত্রের লোকেরা, উঁচু মালভূমির অ্যালসেসীয়রা ছড়িয়ে পড়েছিল সমুদ্র আর মরুভূমির মাঝের বিশাল দ্বীপাঞ্চলে। পরিচয়হীনতার নীরবতা সেই বিশাল অঞ্চলটা গ্রাস করতে শুরু করে। রক্ত, সাহস, কর্ম আর প্রবৃত্তিও গ্রাস করে ফেলে।

সেই নীরবতা একই সঙ্গে নিষ্ঠুর এবং করুণাময়। আর যে দেশ থেকে, মানুষদের ভীড় থেকে, নামহীন পরিবার থেকে নামহীন অবস্থায় পালাতে চেয়েছিল এবং যার ভেতরে অন্ধকার আর নামহীনতা গজিয়ে উঠেছিল সেও ওই গোত্রেরই একজন হয়ে যায়। সেও ডাক্তারের ডানপাশে থেকে হাঁপাতে হাঁপাতে রাস্তার মোড়ের উচ্চনাদী সংগীতের জোয়ারে ভাসতে ভাসতে, বাদন মঞ্চের চারপাশের আরবদের দুর্বোধ্য মুখগুলো আরেকবার দেখতে দেখতে, ভেইলার্ডের হাসি আর কঠিন চাহনির মুখের দিকে তাকিয়ে রাতের মধ্যে এগিয়ে যেতে থাকে। তার মনে ভেসে ওঠে বোমা পতনের সময় মায়ের মুখের ওপরের মৃত্যু-সদৃশ চেহারা। সেই মুখচ্ছবি তার হৃদয় মিষ্টি আর দুঃখী একটা অনুভূতিতে মোচড়াতে থাকে।

বছরের পর বছর সময়ের ব্যাপ্তি জুড়ে থাকা রাতের ভেতর ঘুরতে ঘুরতে সে চলে যায় বিস্মৃতির দেশে। সেখানে সবাই প্রথম মানব। সেখানে নিজেকে গড়ে তুলতে হয়েছে পিতৃহীন অবস্থায়; বাবা নিজের মুখে ছেলেকে ডাক দিলে কী অনুভূতি জাগে, সে মুহূর্ত কেমন তার জানা হয়নি কখনো। অন্যদের কথা বুঝতে পারার বয়স পর্যন্ত তার জন্য অপেক্ষা করে পরিবারের গোপনীয় বিষয়াদি সম্পর্কে তার সঙ্গে কথা বলার জন্য, কিংবা সুদূর অতীতের কোনো দুঃখ অথবা জীবনের কোনো অভিজ্ঞতা তার সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার জন্য অপেক্ষা করেছে সে। এরকমই কোনো মুহূর্তে হাস্যকর পোলোনিয়াম তার কাছে হঠাৎ করে মহান হয়ে ওঠে যেহেতু সে লিয়ারটেসের সঙ্গে কথা বলে। তারপর তার বয়স হয়ে গেল ষোল, এরপর বিশ।

কিন্তু কেউ তার সঙ্গে কথা বলতে এগিয়ে আসেনি। জীবন জগত সম্পর্কে তাকে নিজে জানতে হয়েছে; ধৈর্য ধারণ করে একা একা বড় হতে হয়েছে। নিজের শক্তি বলে নিজের নৈতিক শক্তি আর সত্যকে খুঁজে নিতে হয়েছে। শেষে মানুষ হিসেবে জন্ম নেওয়া এবং অন্যদের সংশ্লিষ্টতায় শিশু হিসেবে কঠিন অবস্থায় জন্ম নেওয়া, এখানকার পুরুষরা যেমন শিকড় ছাড়া এবং বিশ্বাস ছাড়াই বেঁচে থাকতে শেখে তেমনি নারীরাও। চিরন্তন পরিচয়হীনতা এবং পৃথিবীতে নিজের একমাত্র চিহ্ন মুছে যাওয়ার হুমকির মুখে পড়েছে আজ তারা সবাই। রাত তাদের অস্পষ্ট কবর ফলক ঢেকে দিয়েছে। অন্যদের সংশ্লিষ্টতায় তাদের বেঁচে থাকতে শিখতে হয়েছে। অন্যদের, মানে বিজেতাদের যারা এখন ক্ষমতাবর্জিত হয়ে পড়েছে তাদের সংশ্লিষ্টতায়। এই বিভূঁইয়ে তারাই প্রথম এসেছিল এবং তাদের মধ্যেই বর্তমানের মানুষগুলোকে ভ্রাতৃত্ব, জাতি এবং গন্তব্য খুঁজে নিতে হচ্ছে।

বিমান এখন আলজিয়ার্সের দিকে নেমে যাচ্ছে। সেইন্ট ব্রিউকের ছোট কবরখানার কথা মনে পড়ছে জ্যাকের। ওখানে সৈনিকদের কবরগুলো মনডোভির কবরগুলোর চেয়ে অপেক্ষাকৃত ভালো অবস্থায় রাখা হয়েছে। ভূমধ্যসাগর আমার মনের ভেতরের ভুবন দুভাগে ভাগ করে ফেলছে: এক দিকে স্মৃতি আর নামগুলো পরিমাপমতো জায়গায় সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে। অন্য অংশে খোলা প্রান্তরে মানুষের সব চিহ্ন মুছে দিয়ে গেছে বাতাস আর বালির ঝড়। দরিদ্র, অজ্ঞ আর পশুর মতো জীবন থেকে এবং পরিচয়হীনতা থেকে সে পালাতে চেষ্টা করেছে বর্তমানের বাইরে, কোনো চিন্তা নেই যে জীবনে সেই বোবার মতো অন্ধ সহিষ্ণুতার জীবন যাপন করতে সে পারেনি। অনেক দূরে দূরে সে ভ্রমণ করে বেরিয়েছে।

অনেক কিছু তৈরি করার চেষ্টা করেছে, সৃষ্টি করার চেষ্টা করেছে। মানুষজনকে ভালোবেসেছে। আবার ছেড়েও এসেছে তাদের। তার জীবন মাঝে মাঝেই ভরপুর হয়ে উপচে পড়েছে। তবু এখন সে অন্তরের অন্তস্থল দিয়ে বুঝতে পেরেছে, সেইন্ট ব্রিউক এবং এর সকল তাৎপর্য তার কাছে যেন কিছুই নয়। একটু আগে ছেড়ে আসা ক্ষয়ে যাওয়া নীল আবরণ ধারণ করা কবরস্থানের কথা তার মনে আসছে। মনে আসছে, মৃত্যু তাকে তার সত্যিকারের মাতৃভূমিতে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে ভাবনাটা মনে আসতে কিছুটা যেন আনন্দের ছোঁয়া অনুভব করে সে। যে মানুষটি সমুদ্র পাড়ের ভাগ্যবাহী দেশে এসে কারো সাহায্য ছাড়াই দারিদ্রের মাঝে নিজেকে গড়ে তুলেছিলেন দেশত্যাগী ওই সাধারণ মানুষটিকে মৃত্যু তার বিশাল বিস্মৃতি দিয়ে তার সব চিহ্ন মুছে দেবে। পৃথিবীর প্রথম সকালের আলোয় একাকী স্মৃতিহীন বিশ্বাসহীন অবস্থায় তার সমসাময়িক মানুষদের জগতে, তাদের ভয়াবহ এবং মর্যাদাসম্পন্ন ইতিহাসে তিনি প্রবেশ করেছিলেন।

চলবে...

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১

Header Ad
Header Ad

বছর ঘুরে ফিরল গণঅভ্যুত্থানের জুলাই

ছবি: সংগৃহীত

আজ ১ জুলাই। দিনটি ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছে ‘জুলাই গণ অভ্যুত্থান’-এর সূচনাদিবস হিসেবে। এক বছর আগে এই দিনে দেশের শিক্ষাঙ্গনে শুরু হয়েছিল কোটা সংস্কার আন্দোলনের নতুন ঢেউ, যা পরিণত হয়েছিল ঐতিহাসিক ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে।

প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে বৈষম্যমূলক কোটা ব্যবস্থা বাতিলের দাবিতে রাজপথে নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি), জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি), জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি), রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি)সহ দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

“কোটা না মেধা, মেধা মেধা” স্লোগানে উত্তাল হয়ে ওঠে শিক্ষাঙ্গন। আন্দোলনকারীরা সরকারকে তিন দিনের আলটিমেটাম দেন, যা পরবর্তীতে রূপ নেয় ৩৬ দিনের এক বিরল গণআন্দোলনে। ২০১৮ সালে কোটা পদ্ধতি বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হলেও, ২০২৪ সালের ৫ জুন হাইকোর্ট ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ ৫৬ শতাংশ কোটা পুনর্বহালের আদেশ দেন। এই আদেশের বিরুদ্ধেই ১ জুলাই ঢাবির কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

সেদিন শিক্ষার্থীরা কলাভবন, শ্যাডো, বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ ও হলগুলো ঘুরে ভিসিচত্বর হয়ে রাজু ভাস্কর্যে সমবেত হন। সেখানে তারা উত্থাপন করেন চার দফা দাবি: ১) ২০১৮ সালের কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন বহাল রাখা, ২) মেধাভিত্তিক নিয়োগ অব্যাহত রাখা, ৩) কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল, এবং ৪) কেবল সংবিধান অনুযায়ী অনগ্রসর ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর জন্যই সুযোগ রাখার প্রস্তাব।

আন্দোলনকারীরা স্পষ্ট বার্তা দেন, দাবি না মানা হলে আন্দোলন আরও জোরদার করা হবে। ২ জুলাই ঢাবি থেকে গণপদযাত্রা এবং ৪ জুলাই পর্যন্ত ক্লাস ও পরীক্ষাবর্জনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘৪ জুলাইয়ের মধ্যে সরকারের উচিত আমাদের দাবির চূড়ান্ত আইনি সমাধান ঘোষণা করা।’ তিনি জানান, একইসাথে দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজেও গণপদযাত্রা কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানানো হয়েছে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও ওইদিন আন্দোলনে সরব ছিলেন। তারা জানিয়ে দেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা বৃষ্টিতে ভিজে বিক্ষোভ-সমাবেশে অংশ নেন। তাদের বক্তব্য ছিল স্পষ্ট—"১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল বৈষম্যের বিরুদ্ধে, অথচ আজও আমাদের সঙ্গে বৈষম্য করা হচ্ছে। চাকরিতে কোটা নয়, নিয়োগ হতে হবে মেধার ভিত্তিতে।"

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে জাবির প্রধান ফটকে গিয়ে প্রতীকী অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন। ১০ মিনিট ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের উভয় দিক বন্ধ রেখে সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি দেন তারা—৪ জুলাইয়ের মধ্যে রায় বাতিল না হলে এই মহাসড়ক পুরোপুরি অবরোধ করে রাজধানী অচল করে দেওয়া হবে।

একইসাথে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও বিক্ষোভে অংশ নেন। তারা রায়সাহেব বাজার হয়ে বিক্ষোভ মিছিল শেষে রফিক ভবনের সামনে এসে সমবেত হন। সেখান থেকে তারা ঘোষণা দেন, প্রয়োজনে রক্ত দিয়েও কোটা পদ্ধতির বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।

জুলাই অভ্যুত্থানের প্রথম বর্ষপূর্তিতে নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি ঘোষণা করেছে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ নামের দেশব্যাপী কর্মসূচি। আজ সকালে রংপুরের পীরগঞ্জে শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারতের মাধ্যমে শুরু হবে এ কর্মসূচি। এরপর গাইবান্ধা ও রংপুর সদরে পথসভায় অংশ নেবেন দলটির নেতারা।

অন্যদিকে বিকাল ৩টায় বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে বিএনপির উদ্যোগে একটি আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। এতে অংশ নেবেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা এবং আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের পরিবার।

Header Ad
Header Ad

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৬ কোটি ১০ লাখ টাকার বাজেট পাস

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের জন্য ৭৬ কোটি ১০ লাখ টাকার বাজেট অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ইউজিসি থেকে বরাদ্দ পাওয়া যাবে ৬৯ কোটি টাকা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয় ধরা হয়েছে ৭ কোটি ১০ লাখ টাকা।

সোমবার (৩০ জুন) প্রশাসনিক ভবনের কনফারেন্স রুমে সিন্ডিকেট এর ১০৪তম সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলায়মান এই বাজেট উপস্থান করেন। একই সঙ্গে ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের সরকারি বরাদ্দের ভিত্তিতে ৭৫ কোটি ৬৯ লক্ষ ৪৮ হাজার টাকার সংশোধিত বাজেট অনুমোদন করা হয়।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত বাজেট চাহিদা ৯২ কোটি ৭০ লক্ষ ৪২ হাজার টাকা হলেও প্রায় ১৬ কোটি ৬০ লক্ষ টাকার বাজেট ঘাটতি নিয়েই পাশ হয়েছে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট।

পাশকৃত বাজেটে গবেষণায় বরাদ্দ রাখা হয়েছে দুই কোটি ৯৩ লক্ষ টাকা যা মোট বাজেটের ৩ দশমিক ৮৫ শতাংশ। এই খাতে ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে বরাদ্দ ছিল দুই কোটি ৬১ লক্ষ টাকা। এছাড়া মোট বাজেটের ৬২ দশমিক ৭৫ শতাংশ বরাদ্দ রাখা হয়েছে বেতন-ভাতা ও পেনশন বাবদ। পণ্য ও সেবা বাবদ সহায়তায় বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২৬ দশমিক ৪৯ শতাংশ, গবেষণা অনুদান খাতে ৩ দশমিক ৮৫ শতাংশ এবং ৬ দশমিক ৯১ শতাংশ বরাদ্দ রাখা হয়েছে মূলধন খাতে।

বাজেট নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলায়মান বলেন, '২০০৭-২০০৮ অর্থ বছরে বাজেট ছিল এক কোটি ১০ লক্ষ টাকা, সেখান হতে আজকের বাজেট বৃদ্ধি পেয়ে দাড়িয়েছে ৭৬ কোটি ১০ লক্ষ টাকা। আশার কথা হলো গত বছরের তুলনায় নিজস্ব অর্থায়ন হ্রাস করে সরকারি অনুদান বৃদ্ধি করা গেছে। ভবিষ্যৎ-তে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক চাহিদা অনুযায়ী সর্বমোট বাজেট বৃদ্ধি পাবে।'

তিনি আরো বলেন, 'ইউজিসির বরাদ্দ চাহিদার তুলনায় অপর্যাপ্ত। তবে সংশোধিত বাজেটে ইউজিসির সাথে আলোচনা করে বাজেট আরও বৃদ্ধি করা হবে।'

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো: হায়দার আলী বলেন, 'সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বজায় রেখে বাজেট ব্যয় করা হবে।'

Header Ad
Header Ad

সরকারি চাকরিতে ৪ লাখ ৬৮ হাজার পদ খালি

ছবি: সংগৃহীত

বর্তমানে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে ৪ লাখ ৬৮ হাজার ২২০টি পদ খালি রয়েছে। সোমবার (৩০ জুন) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত ২০২৪ সালের সরকারি কর্মচারীদের পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

পরিসংখ্যানে দেখা যায়, সরকারি চাকরিতে বর্তমানে ১৯ লাখ ১৯ হাজার ১১১টি অনুমোদিত পদ রয়েছে। এর বিপরীতে ১৪ লাখ ৫০ হাজার ৮৯১ জন কর্মরত আছেন; খালি আছে ৪ লাখ ৬৮ হাজার ২২০টি পদ।

সরকারি চাকরিতে ২০১৮ সালে ৩ লাখ ৯৩ হাজার ২৪৭টি, ২০১৯ সালে ৩ লাখ ৮৭ হাজার ৩৩৮টি, ২০২০ সালে ৩ লাখ ৮০ হাজার ৯৫৫ এবং ২০২১ সালে ৩ লাখ ৫৮ হাজার ১২৫টি, ২০২২ সালে ৪ লাখ ৮৯ হাজার ৯৭৬টি এবং ২০২৩ সালে ৪ লাখ ৭৩ হাজার একটি পদ ফাঁকা ছিল।

এখন সরকারি চাকরিতে প্রথম থেকে নবম গ্রেডের (আগের প্রথম শ্রেণি) ২ লাখ ৫৯ হাজার ৬৫৭টি অনুমোদিত পদ রয়েছে। এসব পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন এক লাখ ৯০ হাজার ৭৭৩ জন। ফাঁকা আছে ৬৮ হাজার ৮৮৪টি পদ।

১০ থেকে ১২তম গ্রেডে (আগের দ্বিতীয় শ্রেণি) ৩ লাখ ৬২ হাজার ২৮৯টি পদের বিপরীতে কাজ করছেন ২ লাখ ৩৩ হাজার ৭২৬ জন। ফাঁকা রয়েছে এক লাখ ২৯ হাজার ১৬৬টি পদ।

১৩ থেকে ১৬তম গ্রেডে (আগের তৃতীয় শ্রেণি) ৭ লাখ ৬০ হাজার ৬৩৪টি পদ রয়েছে। এসব পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন ৬ লাখ ১৩ হাজার ৮৩৫ জন। ফাঁকা আছে ১ লাখ ৪৬ হাজার ৭৯৯টি পদ।

অন্যদিকে ১৭ থেকে ২০তম গ্রেডে (আগের চতুর্থ শ্রেণি) ৫ লাখ ১৯ হাজার ৮১২টি পদ রয়েছে। এসব পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন ৪ লাখ ৪ হাজার ৫৭৭ জন। ফাঁকা রয়েছে ১ লাখ ১৫ হাজার ২৩৫টি পদ।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সরকারি দপ্তরে নির্ধারিত ও অন্যান্য কাজের জন্য ১৬ হাজার ১১৬টি পদ থাকলেও এসব পদের বিপরীতে কাজ করছেন ৭ হাজার ৮৯০ জন। ফাঁকা রয়েছে ৮ হাজার ১৩৬টি পদ।

প্রথম থেকে ১২তম গ্রেডের গেজেটেড পদগুলোতে নিয়োগ দেয় সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। আর ১৩ থেকে ২০তম গ্রেডের পদে সরাসরি নিয়োগ দেয় মন্ত্রণালয় ও বিভাগ।

সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে ৬ হাজার ৬৪টি এবং অধিদপ্তর ও পরিদপ্তরে ২ লাখ ৯৬ হাজার ১১২টি পদ ফাঁকা রয়েছে। আর বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ১৫ হাজার ২৯টি এবং স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন করপোরেশনে ফাঁকা রয়েছে এক লাখ ৫১ হাজার ১৫টি পদ।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

বছর ঘুরে ফিরল গণঅভ্যুত্থানের জুলাই
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৬ কোটি ১০ লাখ টাকার বাজেট পাস
সরকারি চাকরিতে ৪ লাখ ৬৮ হাজার পদ খালি
পুলিশ পরিচয়ে ব্যবহার করা যাবে না সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম: আরপিএমপি কমিশনার
ভোলায় চাঁদা না পেয়ে স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ
টাঙ্গাইলের নির্ধারিত স্থানে মডেল মসজিদ নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন (ভিডিও)
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ফোনালাপ
চুয়াডাঙ্গায় ট্রেন থেকে ফেলে পাউবো কর্মচারীকে হত্যা, পরিবারের মামলা
দেশে নতুন করে আরও ২১ জনের করোনা শনাক্ত
ঢাকার প্রতিটি ভবনের ছাদে সৌর প্যানেল বসানোর নির্দেশ হাইকোর্টের
লুঙ্গি পরে রিকশায় প্যাডেল মেরে ঢাকা থেকে বিদায় নিলেন জার্মান রাষ্ট্রদূত
ইসরায়েলের ৩১ হাজারেরও বেশি ভবন গুঁড়িয়ে দিয়েছে ইরান (ভিডিও)
ইরানের সাথে আলোচনা করছি না, তাদের কিছু দিচ্ছিও না: ট্রাম্প
আসিফ মাহমুদের অস্ত্রের লাইসেন্স নিয়ে প্রশ্ন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বললেন ‘আইনটা দেখিনি’
নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে কাজ করতে মুখিয়ে আছে চীন: মির্জা ফখরুল
বিপিএলে নোয়াখালীর অভিষেক, আসছে ‘নোয়াখালী রয়্যালস’
হোটেল থেকে সন্তানসহ স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার, ময়নাতদন্তে যা জানা গেল
আমাদের ডিভোর্স হয়নি, হিরো আলম অভিমান করেছিল: রিয়ামনি
সরকারি উদ্যোগেও কমেনি ইলিশের দাম, খালি হাতেই ফিরছেন ক্রেতারা
মঙ্গলবার ব্যাংক হলিডে, বন্ধ থাকবে সব লেনদেন