রবিবার, ১৯ মে ২০২৪ | ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৪৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান

তবে সবচেয়ে আনন্দ হতো প্রবল বাতাসের দিনগুলোতে। পার্কমুখী দালানটা শেষ হয়েছিল এক সময়ের একটা উঁচু চত্বরের গায়ে। আগে হয়ত চত্বরের চারপাশে পাথরের রেলিং দেওয়া ছিল। এখন সেগুলো সিমেন্টের উপরে লাল টালি বিছানো পৈঠার সামনে ঘাসের মধ্যে পড়ে আছে। তিন দিক খোলা চত্বরে দাঁড়ালে পার্কসহ পার্কের বাইরেও দৃষ্টি চলে যেত। একটা গিরিখাত সাহেলের একটা সমতলভূমি থেকে কুবার পাহাড়ি অঞ্চলকে বিছিন্ন করেছে।

আলজিয়ার্সের পূবের হাওয়া সব সময়ই খুব প্রবলভাবে বয়ে যেত। সেই হাওয়া শুরু হলে চত্বরের উপর দিয়ে চাবুক মারতে মারতে চলে যেত। বাচ্চারা বাতাসের তোড়ে বড় বড় তালগাছের সঙ্গে বাড়ি খেত। তালগাছগুলোর চারপাশে ছড়ানো ছিটানো থাকত অনেক দিনের শুকনো তালগাছের বড় বড় ডাল। তারা ডালের গায়ের কাঁটাগুলো কেটে মসৃণ করে রাখত যাতে দুহাতে ধরে রাখতে পারে। তারপর নিজেদের পেছনে ডালগুলো ধরে বাতাসের তোড়ে চত্বরের দিকে এগিয়ে যেত। প্রবল বাতাস ইউক্যালিপটাস গাছের উঁচু ডালে বাড়ি মারত আর শোঁ শোঁ শব্দ তৈরি হত। বাতাস তালগাছগুলোর মাথা এলোমেলো করে দিত এবং রাবার গাছের ডালে প্রবল বেগে বাড়ি মারলে মচমচ শব্দ তৈরি হত। তালগাছের ডালগুলো উঁচু করে বাতাসের ধাক্কায় চত্বরে উঠে আসার খেলার একটা বুদ্ধি কাজে লাগাত তারা। বাতাসের ধাক্কায় ডালগুলো পেছন থেকে তাদের গায়ের সঙ্গে লেগে যেত। খুব কাছে থেকে তারা শুকনো ডালগুলোর গায়ে নাক লাগিয়ে ধুলি আর শুকনো পাতার গন্ধ নিত। ডালগুলো উঁচু করে ধরে বাতাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কে কতক্ষণ টিকে থাকতে পারে সেই চেষ্টা করত। যে সবার আগে হাতে ধরা ডালটা নিয়ে চত্বরে পৌঁছতে পারত সে হত বিজয়ী। তারপর সে ওখানে দাঁড়িয়ে ডালটা উঁচু করে ধরে প্রবল বাতাসের সঙ্গে যুদ্ধ করে যেত। পার্কের ধারে, গাছপালা বোঝাই সমতলভূমির সামনে এবং দ্রুত ধাবমান মেঘভরা আকাশের নিচে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে, জ্যাক সমস্ত ইন্দ্রিয় দিয়ে অনুভব করত দূর থেকে বয়ে আসা বাতাস। উপরের দিক থেকে বাতাস নেমে এসে গাছপালার ডালগুলোকে বাড়ি মারত আর জ্যাকের শরীরে বাতাসের ছোঁয়ায় প্রবল শক্তি তৈরি হত। আনন্দে অবিরাম চিৎকার করতে থাকত সে। এক সময় বাতাসের কাছে হার মেনে হাতে ধরা ডালটা সে ছেড়ে দিত। বাতাস ডালটাসহ তার চিৎকারকে দ্রুত উড়িয়ে নিয়ে যেত। বিকেল বেলা এরকম খেলা থেকে ফিরে রাতে যখন হালকা ঘুমন্ত মায়ের বিছানার পাশের বিছানায় ক্লান্তশ্রান্ত হয়ে শুয়ে চুপচাপ পড়ে থাকত তখনও যেন সে বাতাসের শোঁ শোঁ শব্দ শুনতে পেত। মনে হত, আজীবন সেই অনুভূতি বয়ে বেড়াবে মনের কোণে।

বৃহস্পতিবারে জ্যাক এবং পিয়েরে পাবলিক লাইব্রেরিতেও যেত। হাতের কাছে যেকোনো ধরনের বই পেলেই জ্যাক গোগ্রাসে গেলার মতো করে পড়ে ফেলত। বেঁচে থাকার জন্য, খেলাধুলার জন্য এবং স্বপ্ন দেখার জন্য যে রকম ক্ষুধা ছিল তার মনে সে রকম ক্ষুধা নিয়েই বইপত্র হজম করত সে। তবে পড়াশোনার কারণে সে একটা নিষ্পাপ জগতে প্রবেশ করতে পারত। সে জগতে দারিদ্র এবং ধন-সম্পদ একই রকমের আন্দদায়ক ছিল। কারণ দুটোই ছিল চরমভাবে কাল্পনিক। লা ইন্ট্রেপিডে ছিল ছবিতে ভরা কাহিনীর সিরিজ। তারা সব বন্ধু ওই বইটা একজনের পড়া হয়ে গেলে তার হাত থেকে নিয়ে আরেকজন পড়ত। এভাবে পড়তে পড়তে তারা বইটার মলাটের বাঁধাই ক্ষয় করে ধূসর বানিয়ে ফেলে। পৃষ্ঠার কোণাগুলো ভাঁজ হয়ে ছিঁড়ে যায়। ওই বইটাই তাকে কমেডি কিংবা বীরত্বপূর্ণ জগতে নিয়ে যায়। সেখানেই তার আনন্দ এবং সাহসের পরিতৃপ্তি খুঁজে পায়। তারা গোয়েন্দা কাহিনীগুলো যেভাবে হজম করতে পেরেছিল এবং পারদাইলানের চরিত্রগুলোকে যেভাবে বাস্তবের প্রাত্যহিক জগতের মাঝে স্থাপন করেছিল তাতে সহজেই বলা যায়, তাদের দুজনের মধ্যেই বীরত্ব এবং বড়াইয়ের ভাব খুব প্রবল ছিল। তাদের প্রিয় লেখক ছিলেন মিশেল জেভাকো এবং তাদের প্রিয় জগৎ ছিল রেনেসাঁর সময়ের জগৎ, বিশেষ করে ইতালির। রোম কিংবা ফ্লোরেন্সের রাজপ্রাসাদের কিংবা পোপের জৌলুসপূর্ণ সময়ের পটভূমিতে লিখিত তরবারির এবং বিষের ব্যবহার থাকত ওইসব কাহিনীতে। তারা নিজেদের ওই চরিত্রদের মতোই অভিজাত মনে করত। ধূলিভরা যে রাস্তার কাছে পিয়েরে থাকত সে রাস্তায় প্রায়ই তাদের দুজনকে দেখা যেত একজন আরেকজনের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিচ্ছে কিংবা উচ্চ বেগে ময়লার ঝুড়িগুলোর মাঝে দ্বন্দ্বযুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে। তাদের আঙুলে দীর্ঘস্থায়ী দাগ পড়ে যেত। অন্য কোনো ধরনের বই তাদের আয়ত্বে ছিল না বললেই চলে। কারণ আশপাশের লোকেরা পড়াশোনার অভ্যাসের মধ্যেই ছিল না। যাদের পড়ার অভ্যাস ছিল তারাও নিজেরা বই কিনতে পারত না বললেই চলে। কালে ভদ্রে যদি কিনেই থাকত তাহলে দোকানে পড়ে থাকা সস্তা পুরনো বই ছাড়া অন্য কোনো ধরনের বই কিনতে পারত না।

তবে তারা যখন লিসেতে পড়াশোনা শুরু করে সে সময়েই তাদের এলাকায় একটা পাবলিক লাইব্রেরি চালু হয়। আলজিয়ার্সে দ্রুত বাড়তে পারে এমন সুবাসওয়ালা বৃক্ষ-ঘেরা বাড়িগুলোর অপেক্ষাকৃত অভিজাত এলাকার শুরু এবং জ্যাকের বাড়ির মাঝখানের রাস্তায় ওই লাইব্রেরিটা তৈরি হয়েছিল। সেইন্টে ওডিলে নামের একটা ধমীয় বোর্ডিং স্কুলের চারপাশে ছিল উদ্যানসোভিত ওইসব বাড়ি। ওই স্কুলটাতে শুধু মেয়েদের ভর্তি করা হত। ওই এলাকাটা তাদের বাড়ি থেকে খুব কাছে হলেও তাদের জন্য দূরের ছিল এবং ওখানেই তাদের গভীর আবেগের অভিজ্ঞতা লাভ হয়। তাদের এলাকাটা ছিল ধূলিময়, গাছপালাহীন। ফাঁকা জায়গা বলতে যা ছিল তার সবখানিই খরচ হয়ে গিয়েছিল মানুষ আর বসত বাড়ির দখলে। অন্য দিকে পাশের এলাকাটা গাছপালা আর ফলমুলের বিলাসবহুল সমারোহে ভরা। ওই দুই জগতের মাঝে বিভাজন হিসেবে ছিল প্রশস্ত প্রধান সড়ক এবং তার দুপাশে রোপিত বড় বড় গাছপালা। বিভাজনরেখার এক পাশে সারি সারি উদ্যানশোভিত বাড়ি। অন্য পাশে কম খরচে তৈরি বাড়িঘর। পাবলিক লাইব্রেরিটা ছিল ওই দুই এলাকার সীমান্তে অবস্থিত।

লাইব্রেরিটা বৃহস্পতিবারসহ সপ্তাহে তিন বার খোলা থাকত, কাজের শেষে সন্ধ্যায় এবং সকালে। অনাকর্ষণীয় চেহারার একজন শিক্ষক সপ্তাহে কয়েক ঘণ্টা স্বেচ্ছায় উপস্থিত থেকে কাজ করতেন। কাঠের একটা সাদা লম্বা টেবিলে বসে তিনি বই ধার দেওয়া ফেরত নেওয়ার কাজ করতেন। লাইব্রেরি ঘরটা বর্গাকার এবং এর দেয়াল সাদা তাক আর কালো মলাটে বাঁধানো বইয়ে পরিপূর্ণ। চারপাশে কয়েকটা চেয়ারওয়ালা একটা ছোট টেবিলও ছিল। যাদের খুব দ্রুত কোনো অভিধানের দরকার হত তাদের জন্য ছিল ওই টেবিলটা। কারণ লাইব্রেরিটা মূলত বই ধার দিত পাঠকদের। বর্ণনাক্রমিক কার্ডের একটা ক্যাটালগও ছিল। তবে জ্যাক এবং পিয়েরে কেউই সে ক্যাটালগের ভেতর কোনো দিন দৃষ্টি ফেলে দেখেনি। তাদের কাজ ছিল বইয়ের নাম দেখে কিংবা মাঝে মধ্যে লেখকের নাম দেখে তাকময় বই খুঁজে বেড়ানো। কাঙ্ক্ষিত বইটা পেয়ে গেলে একটা নীল চিরকুটে সেটার নাম লিখে জমা দিত ধার নেওয়ার জন্য। একটা রশিদ আর সামান্য অর্থের বিনিময়ে বই ধার নেওয়ার মতো সদস্য হওয়া যেত। ভাঁজ করা একটা মোটা কাগজে ধার নেওয়া বইটার নাম লেখা হত। আর দায়িত্বরত ওই শিক্ষকের কাছে একটা খাতা থাকত; সেখানেও বইটার নাম লেখা হত।

লাইব্রেরির বইগুলোর মধ্যে বেশিরভাগ ছিল উপন্যাস। তবে অনেকগুলো বই আলাদা করা ছিল এবং সেগুলো পনের বছরের নিচের বয়সীদের জন্য ছিল নিষিদ্ধ। আর পিয়েরে এবং জ্যাকের সজ্ঞামূলক পদ্ধতিতে যে বইগুলো পড়া বাদ ছিল সেগুলোর মধ্যে কোনো বাছাবাছির ব্যাপার ছিল না। তবে সংস্কৃতির ক্ষেত্রে হাতের কাছে কোনো কিছু পেয়ে যাওয়াটা সবচেয়ে খারাপ কোনো পদ্ধতি নয় এবং তাদের দুজনের মতো গোগ্রাসী পাঠক বাছবিচারহীন পড়ার কারণে সবচেয়ে ভালো এবং সবচেয়ে খারাপ উভয়কেই গলাধকরণ করেছে। পড়ার পরে সুস্পষ্টভাবে কোনো কিছু মনে আছে কি না সে বিষয়েও তাদের খেয়াল থাকেনি। তবে কোনো শক্তিশালী এবং অদ্ভূত আবেগ সপ্তাহ, মাস এবং বছরব্যাপী তাদের সঙ্গে সঙ্গে থেকেছে এবং স্মৃতি ও গোটা চিত্রকল্পের জগৎ তৈরি করেছে ও লালন করেছে। ওই স্মৃতি এবং চিত্রকল্পগুলো তাদের দৈনন্দিন জীবনের বাস্তবতার কাছে হার মানেনি কখনও। আর তাদের বাস্তব জীবনও তাদের কাছে কম সন্নিকটস্থ ছিল না। তাদের স্বপ্ন যাপনের মধ্যে যতখানি প্রচণ্ডতা ছিল জীবনযাপনের মধ্যেও তার চেয়ে কম প্রচণ্ডতা ছিল না।

আসলে বইগুলোর মধ্যে উপস্থাপিত কথাগুলো তাদের কাছে বড় ছিল না। লাইব্রেরিতে প্রবেশ করেই তারা কালো মলাটের বই দেখতে পেত— তা নয়, লাইব্রেরির দরজা পার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নতুন নতুন অদ্ভূত সব জগৎ এবং বহুবিধ দিগন্ত খুলে যেত তাদের সামনে। চিরচেনা ভীড়ভাট্টার জগৎ ছেড়ে তারা চলে যেত অন্যখানে। তাদের কাছে বড় ছিল ওইসব জগৎ আর দিগন্ত। তারপর তাদের দুজনের জন্য দুটো বই বরাদ্দ হয়ে গেলে নিঃশব্দ পায়ে তারা নেমে আসত আসন্ন সন্ধ্যার হালকা আঁধার ঢাকা বিথিকার নিচে। ঘন ডালপালাঅলা গাছের নিচে পড়ে থাকা পাকা ফল বেখেয়ালে পায়ের তলায় পিষে ফেলে তারা হিসাব কষতে কষতে যেত কতটা আনন্দ পাবে নতুন বই থেকে। আগের সপ্তাহের বইয়ের সঙ্গেও তুলনা চলত মূল রাস্তায় ওঠা পর্যন্ত। রাস্তার আলো জ্বলে উঠলে সেই আলোর অনিশ্চয়তার মধ্যেই তারা নিজ নিজ বই খুলত। দু-একটা টুকরো কথা দেখতে পেত— যেমন, ‘অমুকের শক্তি ছিল অসাধারণ,’ ইত্যাদি। তাতেই তাদের আনন্দময় বিশাল আশা আরও সুবিস্তৃত হয়ে ছড়িয়ে পড়ত। খুব তাড়াতাড়িই একজন আরেকজনের কাছ থেকে নিজ নিজ বাড়িতে ঢুকে পড়ত। জ্যাক খাবার ঘরের টেবিলের উপরের বাতির নিচে পৌঁছেই বই খুলে ফেলত। বাঁধাইয়ের শুকনো আঠার একটা কড়া গন্ধ নাকে লাগত। অমসৃণ বাধাইয়ের খসখসে ছোঁয়াও লাগত হাতে।

চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৪৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান:পর্ব-৪৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৪৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৪৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৪৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১

আরএ/

Header Ad

মেট্রোরেলের উত্তরা-টঙ্গী রুটে হবে পাঁচ স্টেশন

ছবি: সংগৃহীত

উত্তরার দিয়াবাড়ী থেকে টঙ্গী পর্যন্ত বর্ধিত এমআরটি লাইনে উত্তরা উত্তর স্টেশনের পরে আরও ৫টি স্টেশন হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক।

তিনি বলেছেন, মেট্রোরেলের এমআরটি লাইন-৬ রুটটি বর্তমানে মতিঝিল থেকে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত সম্প্রসারণের কাজ চলছে। এখন মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে টঙ্গী রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত কাজ সম্প্রসারণের প্রক্রিয়া শুরু করেছে।

রেববার (১৯ মে) রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে ডিএমটিসিএল আয়োজিত ঢাকা মেট্রোরেলের ব্র্যান্ডিং সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।

এম এ এন সিদ্দিক বলেন, এ রুটের কাজ শেষ হলে মেট্রোরেল অতিরিক্ত ৫ লাখ যাত্রী পরিবহন করতে পারবে। উত্তরা উত্তর থেকে টঙ্গী রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত এ রুটের দৈর্ঘ্য হবে ৭.৫ কিলোমিটার। এ রুটে নতুন ৫ স্টেশন হবে- দিয়াবাড়ী বাজার, সোনারগাঁও জনপদ রোড পূর্ব, পশ্চিম, টঙ্গী বাজার, টঙ্গী রেলওয়ে স্টেশন।

ভ্যাট বসানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এর আগে মেট্রোরেলে ভ্যাট বসানো হয়েছিল। তখন কথা বলে জুন পর্যন্ত স্থগিত রাখা হয়। এখন সেটা আবার ১ জুলাই থেকে কার্যকরের কথা বলা হচ্ছে। যদি ভ্যাট দিতে হয় তাহলে এটি যাত্রীর দিতে হবে। তাই এটি রিভিউ করার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি।

অনুষ্ঠানের জানানো হয়, মেট্রোরেল চালু করার পর থেকে এ পর্যন্ত বিদ্যুতের দাম তিনবার বেড়েছে। কিন্তু মেট্রোরেলের ভাড়া বাড়ানো হয়নি। এখন ভ্যাট যুক্ত হলে ভ্যাটের টাকা যাত্রীদেরকে দিতে হবে মেট্রোরেলের পক্ষে সেটি বহন করা সম্ভব না। ফলে মেট্রোরেলের ভাড়ার পরিমাণ বেড়ে যাবে।

সেমিনার উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম, বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইয়ামা কিমিনোরি প্রমুখ।

টাঙ্গাইলে নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ থেকে পড়ে প্রাণ হারালো রাজমিস্ত্রী

নিহত সুমন। ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ থেকে পড়ে মো. সুমন (২৬) নামে এক রাজমিস্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে।

রবিবার (১৯ মে) সকালে উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের বিলচাপড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি নির্মাণাধীন ভবনে কাজ করতে গিয়ে এ ঘটনা ঘটে।

সুমন একই ইউনিয়নের রুহুলী মধ্যপাড়া মো. শামসুল মন্ডলের ছেলে।

স্থানীয়রা জানান, বিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন ৪ তলা ভবনের ছাদে কাজ করতে গিয়ে পা ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আহসান উল্লাহ্ বলেন, বিষয়টির ব্যাপারে আমি অবগত নই।

পৃথিবীতে ধেয়ে আসতে পারে আরও ভয়ানক সৌরঝড়

ছবি: সংগৃহীত

অনিন্দ্য সুন্দর নর্দান লাইট বা অরোরা দেখতে পর্যটকদের সাধারণত মোটা অঙ্কের টাকা খরচ করতে হয়। পাশাপাশি, তীব্র ঠান্ডায় ঘোরাঘুরির জন্য শারীরিক ও মানসিকভাবেও প্রস্তুত থাকতে হয়। কিন্তু গত সপ্তাহে বিশ্ব জুড়ে যে অকল্পনীয় রঙের বর্ণালী দেখা গিয়েছিল, তার জন্য এমন কঠিন প্রস্তুতির দরকার হয়নি। কেবল মাথা তুলে আকাশের দিকে তাকালেই মানুষ দেখতে পেয়েছে স্বপ্নের অরোরা।

পৃথিবীতে মূলত উত্তর মেরুর দেশগুলোতে অরোরা দেখতে পাওয়া যায়। কিন্তু গত ১০ মে রাতে মেক্সিকো, দক্ষিণ ইউরোপ, এমনকি দক্ষিণ আফ্রিকার আকাশেও দেখা গেছে রঙিন আলোর খেলা। সবুজ, গোলাপি, বেগুনি- নানা বর্ণের উজ্জ্বল অরোরার ছবিতে ছেয়ে গিয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফরমগুলো।

কিন্তু যে কারণে দেখা দিয়েছিল এমন অনন্য সৌন্দর্য, যার কারণে তৈরি হয়েছিল বিশ্বব্যাপী অরোরা, সেই সৌরঝড়ের কথা ভেবেই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এই মহাজাগতিক ঘটনার পেছনে ভয়ানক বিপদের ছায়া দেখতে পাচ্ছেন তারা।

ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থার (ইএসএ) স্পেস সেফটি প্রোগ্রাম কোঅর্ডিনেটর কুয়েন্টিন ভারস্পিয়ারেন বলেন, আমাদের বুঝতে হবে, এই সৌন্দর্যের পেছনে বিপদ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের স্পেস ওয়েদার প্রেডিকশন সেন্টারের মাইক বেটউইয়ের কথায়, আমরা সৌরঝড়ের আরও ভয়ংকর সম্ভাব্য প্রভাবের দিকে মনোনিবেশ করছি; যেমন-পাওয়ার গ্রিড ও স্যাটেলাইট অচল হয়ে যাওয়া বা নভোচারীরা বিপজ্জনক মাত্রায় বিকিরণের সম্মুখীন হওয়া।

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওসেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফিয়ারিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এনওএএ)-এর স্পেস ওয়েদার প্রেডিকশন সেন্টারের মতে, গত ১০ মে বাংলাদেশ সময় রাত ১০টার পর থেকে বেশ কয়েকটি করোনাল ম্যাস ইজেকশনের (সিএমই)-এর ঘটনা ঘটে। সূর্য থেকে প্লাজমা এবং চৌম্বক ক্ষেত্র বেরিয়ে আসার ঘটনাকে সিএমই বলা হয়ে থাকে।

পরে এটি ‘মারাত্মক’ ভূ-চৌম্বকীয় ঝড়ে রূপান্তরিত হয়। ২০০৩ সালের অক্টোবরে তথাকথিত ‘হ্যালোইন স্টর্মস’-এর পরে এ ধরনের ঘটনা ছিল এটিই প্রথম। ২১ বছর আগের ঐ সৌরঝড়ে সুইডেনে ব্ল্যাকআউট এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় বিদ্যুত্ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এমন ভূ-চৌম্বকীয় ঝড়ের কারণেই গত সপ্তাহে দেশে দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল অরোরা।

তবে সাম্প্রতিক সৌরঝড়ে ক্ষয়ক্ষতি কিছুটা কম হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও স্যাটেলাইট কোম্পানিগুলোর সমস্যা প্রকাশ করতে প্রায়শই সপ্তাহখানেক লেগে যায় বলে জানিয়েছেন বেটউই। তিনি বলেছেন, সৌরঝড়ের কারণে জিপিএস সিস্টেম অচল হয়ে যাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রে কিছু স্বচালিত ট্রাক্টর কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছিল বলে খবর পাওয়া গেছে।

বিপদ শেষ হয়নি: সূর্যের পৃষ্ঠে বিশাল বিস্ফোরণ ঘটলে তা থেকে অবিশ্বাস্য দ্রুতগতিতে প্লাজমা, বিকিরণ এবং কখনো কখনো চৌম্বক ক্ষেত্র নিক্ষিপ্ত হয়। এর প্রভাব পড়ে পৃথিবীতেও। সাম্প্রতিক সৌরঝড়টি এসেছিল পৃথিবীর আকার থেকে ১৭ গুণ বড় একটি সানস্পট ক্লাস্টার থেকে, যা এখনো সক্রিয় রয়েছে।

গত মঙ্গলবার এটি বছরের মধ্যে দেখা সবচেয়ে শক্তিশালী সৌরশিখার বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল। সানস্পটটি সূর্যের ডিস্কের প্রান্তের দিকে ঘুরছে। তাই আশা করা হচ্ছে, সাময়িকভাবে এর প্রভাব বন্ধ হবে। কারণ এর বিস্ফোরণগুলো আমাদের গ্রহ থেকে দূরে নিক্ষিপ্ত হচ্ছে। কিন্তু, মোটামুটি দুই সপ্তাহের মধ্যেই সানস্পটটি ঘুরে আবারও পৃথিবীর দিকে আসবে।

ইএসএর স্পেস ওয়েদার সার্ভিসের সমন্বয়ক অ্যালেক্সি গ্লোভার জানান, এরই মধ্যে আরেকটি সানস্পট নজরে আসছে, যা আগামী দিনগুলোতে বড় ধরনের কার্যকলাপ শুরু করতে পারে। সুতরাং, সৌর কার্যকলাপ অবশ্যই শেষ হয়ে যায়নি। এই সানস্পটগুলো কতটা ভয়ানক হতে পারে বা তারা আরও অরোরা ছড়াতে পারে কি না, তা অনুমান করা কঠিন।

কিন্তু বেটউই বলেছেন, সৌর কার্যকলাপ কেবল তার প্রায় ১১ বছর চক্রের শীর্ষে পৌঁছেছে। তাই এখন থেকে আগামী বছরের শেষের মধ্যে আরেকটি বড় সৌরঝড়ের আশঙ্কা বেশি।

সর্বশেষ সংবাদ

মেট্রোরেলের উত্তরা-টঙ্গী রুটে হবে পাঁচ স্টেশন
টাঙ্গাইলে নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ থেকে পড়ে প্রাণ হারালো রাজমিস্ত্রী
পৃথিবীতে ধেয়ে আসতে পারে আরও ভয়ানক সৌরঝড়
পাকিস্তানে সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ১৪ জন নিহত
স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
ঈদের আগেই মসলার বাজার গরম, ডলারের মূল্যবৃদ্ধির অযুহাত ব্যবসায়ীদের
বান্দরবানে সেনাবাহিনীর অভিযানে ৩ কেএনএফ সদস্য নিহত
বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা কংগ্রেসের ভোটব্যাংক : অমিত শাহ
কারও কাছে ভিক্ষা করে দেশের মানুষ চলবে না : প্রধানমন্ত্রী
যশোরে বিনা যৌতুকে ৫০ জোড়া তরুণ-তরুণীর বিয়ে
বাংলাদেশের স্টাইলে ভোট করতে চাইছেন নরেন্দ্র মোদী : অরবিন্দ কেজরিওয়াল
রাজধানীতে স্বেচ্ছাসেবক লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ছাত্রলীগ কর্মী নিহত
টাঙ্গাইলে পুলিশকে পিটিয়ে আসামি ছিনতাই
পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয় করলেন চট্টগ্রামের বাবর আলী
সৌদি আরবে পৌঁছেছেন ২৮ হাজারের বেশি হজযাত্রী
দুই বাংলাদেশিকে অপহরণ করেছে আরসা
কিরগিজস্তানে হামলা, সাহায্য চাইলেন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা
সৌদি আরবে আরও এক বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু
দুপুরের মধ্যে ১০ জেলায় ঝড়ের আশঙ্কা
বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ সৃষ্টির আভাস, যা জানাল আবহাওয়া অফিস