মঙ্গলবার, ১ জুলাই ২০২৫ | ১৭ আষাঢ় ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস পর্ব-৪৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান

রিউ বাব আজুন শেষ হয়েছে একটা গোলাকার চত্বরে এসে। চত্বরের বামপাশে লিসে এবং তার ডানমুখে একটা ব্যারাক। আরব সিটির খাড়া আর্দ্র রাস্তাগুলো লিসের পেছন থেকেই ওপরের দিকে উঠে গেছে। সমুদ্রের বিপরীত দিকে ব্যারাকগুলোর মুখ। লিসের পেছন পাশে মারেঙ্গো গার্ডেনস। আর ব্যারাকগুলোর পেছনে দারিদ্রপীড়িত আধা স্প্যানিস বাব-এল-ওয়েদ এলাকা। সোয়া সাতটার কয়েক মিনিট পরে, দ্রুত গতিতে সিঁড়ি বেয়ে ওঠার পর পিয়েরে এবং জ্যাক বিশাল দরজার পাশে দ্বাররক্ষীর ছোট প্রবেশ পথ দিয়ে বাচ্চাদের বিশাল ভিড় ঠেলে প্রবেশ করত। এরপর তারা প্রধান সিঁড়ি দিয়ে উঠতে থাকত। দুপাশে অনার রোল লাগানো। তখনও তারা পূর্ণ গতিতেই উঠতে থাকত তাদের প্রধান তলায়। ডান দিক থেকে ওপরের তলাগুলোতে যাওয়ার সিঁড়ি উঠে গেছে। একটা কাঁচঘেরা খিলান মূল উঠোন থেকে ওই তলাটা বিচ্ছিন্ন করেছে। একটা থামের পেছনে দাঁড়িয়ে গণ্ডার মশাই দেরিতে আসাদের দেখতেন। কোঁকড়ানো গোঁফঅলা প্রধান তত্ত্বাবধায়ককে তারা ছদ্মনামে গণ্ডার বলত। ওখানে পৌঁছনোর পর শুরু হতো তাদের অন্য জীবন।

পিয়েরে এবং জ্যাক বৃত্তি পেয়েছিল। বৃত্তির একটা শর্ত হিসেবে তাদের পরিবারের কথা বিবেচনায় এনে তাদের থাকা খাওয়ার অর্ধেক স্কুল থেকে বহন করার সুবিধা দেওয়া হয়েছিল। সুতরাং তারা সারাদিন স্কুলেই কাটাত এবং স্কুলের ডাইনিংয়ে দুপুরের খাবার খেত। ক্লাস শুরু হতো দিন বুঝে: কোনো দিন আটটায়, কোনো দিন নটায়। তবে যারা স্কুল-বোর্ডিংয়ে থাকত তাদের সকালের নাস্তা দেয়া হতো সোয়া সাতটায়। পিয়েরে এবং জ্যাকের মতো হাফবোর্ডারও সকালের নাস্তা করতে পারত স্কুলে। প্রাপ্য সুযোগ কেউ হাতছাড়া করতে পারে তেমন ধারণা তাদের পরিবারের কারো চিন্তায় আসেনি। সুতরাং তারা স্কুলে পৌঁছে যেত সোয়া সাতটার মধ্যেই। তখন স্কুলের বোর্ডিংয়ে থাকা ছেলেরা ঢুলুঢুলু চোখে দস্তা মোড়ানো ডাইনিং টেবিলে বসতে শুরু করেছে মাত্র। সামনে বড় বড় বাটি আর বড় ঝুড়িতে শুকনো রুটির পুরু সব খণ্ড। তাদের সামনে মোটা কাপড়ে শরীর জড়ানো ওয়েটাররা সারি সারি বসা ছাত্রদের মাঝখান দিয়ে বাঁকানো নলঅলা কফির পাত্র হাতে তাদের বাটিতে ফুটন্ত কফি ঢালতে ঢালতে যেত। তরলের মধ্যে কফির চেয়ে ভাজা সব্জির গুঁড়োর পরিমাণই বেশি থাকত। ওয়েটারদের বেশিরভাগই ছিল আরব। নিজেদের প্রাপ্য ওই সুবিধাটুকু অর্জনের পর তারা পনের মিনিট পরে পড়াশোনার হলে যেতে পারত। সেখানে তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করত বোর্ডিংয়েরই একজন ছাত্র। ক্লাস শুরুর আগে ওখানে বসে তারা বড়ির কাজগুলো আরো ভালো করে দেখে নিতে পারত।

পাড়ার স্কুল থেকে লিসের বড় পার্থক্য ছিল শিক্ষকের সংখ্যায়: সেখানে এম বার্নার্ড একাই সবকিছু জানতেন এবং একাই সব পড়াতেন তাঁর নিজের মতো করে। আর এখানে বিষয় অনুসারে শিক্ষক বদল হতো এবং পড়ানোর পদ্ধতিও বদলে যেত শিক্ষক বদলের সঙ্গে। কোনো ছাত্র কোনো শিক্ষককে পছন্দ করতে পারত, নাও করতে পারত। এদিক থেকে পাড়ার স্কুলের শিক্ষক ছিলেন একেবারে বাবার মতো: তিনি তার ভূমিকা পুরোপুরি একাই পালন করতেন। ছাত্রের জীবনে অপরিহার্য বিষয়গুলো তিনিই দেখতেন এবং পুরোপুরি একাই দেখতেন। কাজেই তাকে ভালোবাসা কিংবা না বাসার প্রশ্নই ওঠে না। ছাত্র তার ওপরেই পুরোপুরি নির্ভরশীল হওয়ার কারণে সাধারণত তাকে ভালোবাসাই স্বাভাবিক। আবার যদি এমন হয় যে, ছাত্র তাকে আংশিক পছন্দ করে কিংবা করে না, তাতেও যেহেতু তার ওপরে ছাত্রের নির্ভরশীলতার প্রসঙ্গ থেকেই যায়, ছাত্রের দিক থেকে তাকে ভালো না বাসার ব্যাপার নয় সেটা। অন্য দিকে লিসের শিক্ষকরা অনেকটা চাচা মামাদের মতো যাদের মধ্যে থেকে বাচ্চারা কাউকে কাউকে পছন্দের হিসেবে বেছে নিতে পারে। কাজেই ছাত্ররা তাদের কাউকে অপছন্দও করতে পারত। তাদের একজন শিক্ষক পদার্থবিজ্ঞান পড়াতেন। পোশাক পরিচ্ছদে তিনি ছিলেন অত্যন্ত মার্জিত। কথাবার্তায় ছিলেন অত্যন্ত কড়া। কাজেই জ্যাক এবং পিয়েরে তার কথাবার্তা হজম করতে পারত না মোটেই। অবশ্য কয়েক বছরে তাঁর ক্লাস মাত্র কয়েক দিন পেয়েছিল তারা। অন্য শিক্ষকদের চেয়ে বেশি ক্লাস পেয়েছিল তারা সাহিত্যের একজন শিক্ষকের। তাঁকে তাদের বেশ পছন্দও হয়েছিল। জ্যাক এবং পিয়েরে তাঁর নৈকট্যও পেয়েছিল। কিন্তু সেখানে তাদের পক্ষ থেকে ওই শিক্ষকের ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীলতা ছিল না। তিনি তাদের সম্পর্কে কিছুই জানতেন না এবং তারাও শিক্ষকের সম্পর্কে আর কিছু জানত না। ক্লাস শেষে তিনি ঢুকে পড়তেন আরেক জীবনে। সেখানে তাদের কোনো উপস্থিতি কিংবা প্রবেশ ছিল না। তারাও স্কুল শেষে নিজেদের এলাকায় চলে আসত। সেখানে লিসের কোনো শিক্ষকের থাকার কথা নয়। তাদের জগত এতটাই আলাদা যে, কোনো দিন তারা কোনো শিক্ষককে কিংবা কোনো ছাত্রকে দেখেনি তাদের এলাকায়। তাদের নিম্নাঞ্চলের দিকে চলাচল করত ট্রলিবাসগুলোর শুধু লাল গাড়িগুলো (সিএফআরএ)। অন্য দিকে শহরের অভিজাত এবং উচ্চ মহলের দিকে চলত সবুজ গাড়িগুলো (টিএ)। সবুজ গাড়িগুলো যেত লিসে পর্যন্ত। আর লাল গাড়িগুলো দু গভার্নমেন্টে পর্যন্ত। সুতরাং দিনের শেষে পিয়েরে এবং জ্যাক নিজেদেরকে অন্যদের থেকে আলাদা মনে করত একেবারে লিসের দরজার সামনে থেকে, কিংবা বড়জোর আরেকটু দূর থেকে। স্কুলের আনন্দমুখর সঙ্গীদের ছেড়ে তারা লাল গাড়িগুলোর দিকে এগিয়ে যেত। ওই গাড়িগুলোই তাদের দারিদ্র পীড়িত এলাকার দিকে যেত। তারা বুঝতে পারত, ওইসব গাড়িতে ওঠার সময়েই কেবল তারা অন্যদের থেকে আলাদা হয়ে যেত। অবশ্য নিজেদের অন্যদের থেকে হীন অবস্থানের মানুষ বলে মনে হতো না। তাদের মনে একটা কথা জাগরুক থাকত-তারা অন্য জায়গা থেকে এসেছে। তার চেয়ে বেশি আর কিছু নয়।

অন্য দিকে স্কুলের সময় এরকম কোনো বৈষম্য ছিল না। একজনের পোশাকের চেয়ে আরেকজনের পোশাক হয়তো একটু আধটু বেশি মার্জিত ছিল। কিন্তু দেখতে সবাই একই রকম। তাদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল শুধু ক্লাসরুমের বুদ্ধিমত্তায় আর খেলার সময়ের ক্ষিপ্রতায়। ওই দুই ক্ষেত্রের প্রতিযোগিতায় তারা দুজন কখনওই শেষের দিকে ছিল না। পাড়ার স্কুল থেকে যে কঠিন শিক্ষা তারা পেয়েছিল তাতেই তারা প্রথম বছরেই ক্লাসের ওপরের দিকের কয়েকজন ছাত্রের অন্যতম হতে পেরেছিল। তাদের নির্ভুল বানান, তাদের নির্ভরযোগ্য গাণিতিক জ্ঞান, তাদের প্রশিক্ষিত স্মৃতিশক্তি এবং সর্বোপরি পড়াশোনার প্রতি তাদের শ্রদ্ধাবোধ নিদেনপক্ষে তাদের পড়াশোনার শুরুতে তাদের মধ্যে এরকম বোধ তৈরি করেছিল যে, সব ধরনের জ্ঞানই বড় সম্পদ। হৈ হুল্লোরে স্বভাবের কারণে জ্যাকের নাম বার বার অনার রোলের বাইরে থেকেছে। তার স্বভাব যদি এতটা চঞ্চল না হতো এবং পিয়েরে যদি ল্যাটিনে আরেকটু বেশি গুরুত্ব দিত তাহলে তাদের পূণাঙ্গতা অর্জিত হয়ে যেত। যে কারণেই হোক, শিক্ষকদের কাছ থেকে তারা উৎসাহ পেয়েছে এবং অন্যদের কাছ থেকে তারা সমীহও পেয়েছে। খেলাধুলার কথা বললে ফুটবলের কথাই প্রথমে আসে এবং প্রথম দিনের ক্লাস বিরতির সময়েই জ্যাক তার বাকি বছরগুলোর আনন্দের উৎসটা আবিষ্কার করে ফেলেছে। ডাইনিং হলে দুপুরের খাবারের পর বোর্ডিংবাসী ছাত্র, হাফবোর্ডিং ছাত্র এবং বাইরে থাকা যেসব ছাত্রকে ডিটেনশনে থাকতে হতো তাদের জন্য এক ঘণ্টা বিরতি থাকত। সেসময় ফুটবল খেলা হতো। ওই এক ঘণ্টার বিরতির পর শেষ পিরিয়ডের ক্লাস শুরু হতো চারটের সময়। এক ঘণ্টার বিরতিতে খাবারের সঙ্গে বিশ্রামেরও সময় পেত তারা। কারণ পরবর্তীতে আবার দুঘণ্টা পড়াশোনা করতে হতো পাঠকক্ষে। সেখানে পরবর্তী দিনের বাড়ির কাজগুলোও করত তারা। জ্যাকের জন্য নাস্তার প্রসঙ্গটা ছিল অপ্রাসঙ্গিক। ফুটবলের নেশায় বুদ হয়ে থাকা জ্যাক সিমেন্ট বাঁধানো উঠোনের দিকে ছুটে বের হয়ে যেত। উঠোনের চারপাশ ছিল মোটা মোটা থামের ওপর দাঁড়ানো খিলান ঢাকা। খিলানের নিচে পায়চারি করতে করতে শান্ত স্বভাবের এবং পড়ুয়া ছাত্ররা একে অন্যের সঙ্গে হালকা আলাপ সালাপ করত। চারপাশে ছিল চার পাঁচটা সবুজ রঙের বেঞ্চ এবং লোহার রেলিং দিয়ে ঠেকানো একটা ডুমুর গাছ। উঠোনের দুপাশে দুই দল দাঁড়াত এবং গোলরক্ষকরা দুপাশের থামগুলো গোলপোস্ট বানিয়ে তার মাঝে দাঁড়িয়ে যেত। একটা রাবার বল মাঝখানে রাখা হতো। বলে প্রথম লাথি মারার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়ে যেত দৌড়াদৌড়ি আর চিৎকার চেঁচামেচি। খেলা চলত কোনো রেফারি ছাড়াই। এই মাঠেই জ্যাক ক্লাসের সবচেয়ে ভালো ছাত্রদের সঙ্গে সমকক্ষ হয়ে মিশতে পারত। দুর্বল ছাত্রদের কাছে নিজেকে প্রিয় এবং সম্মানিত করে তুলতেও পারত। দুর্বল ছাত্রদের পড়াশোনার দিক থেকে মন দুর্বল থাকলেও তাগড়া পা আর জোরের ফুসফুসের কারণে তারা ভাগ্যের কাছ থেকে কৃপা পেত। এই খেলার মাঠেই পিয়েরের কাছ থেকে জ্যাকের দূরত্ব বাড়তে থাকে। স্বাভাবিক এবং সুসামঞ্জস্যপূর্ণ শরীর থাকলেও পিয়েরে খেলাধুলা করত না। এই পর্যায়ে এসে জ্যাকের চেয়ে তাড়াতাড়ি লম্বা হয়ে গেল সে। শারীরিক গঠন হয়ে গেলো হালকা পলকা। ক্রমেই তার গায়ের রং উজ্জ্বল হতে লাগল যেন স্থানান্তরের বিষয়টা তার ওপরে বেশি কাজ করেনি। জ্যাকের বৃদ্ধি খুব ধীর গতির হওয়ার কারণে তার ছদ্মনাম হয়ে গেল ‘বামন’ এবং ‘ছোট পাছা’। কিন্তু সেদিকে তার কোনো ভ্রুক্ষেপ ছিল না। সে বরং বলটা দুপায়ের মাঝে রেখে প্রথমে একটা গাছ, পারে প্রতিপক্ষের কোনো খেলোয়ার পার হয়ে উন্মাদের মতো দৌড়ত। তখন তার মনে হতো, সে মাঠের রাজা, গোটা পৃথিবীর রাজা। বিরতি শেষের এবং আবার পড়া শুরু হওয়ার ঘণ্টা বাজার সময় মনে হতো, সে আকাশ থেকে পড়ছে। তাড়াহুড়ো করে ঘর্মাক্ত গায়ে হাঁপাতে হাঁপাতে সিমেন্ট বাধানো উঠোনের ওপর পড়ে গিয়ে তার মনে হতো, বিরতির সময়টা এত ছোট! ধীরে ধীরে সে বর্তমানের অবস্থায় ফিরে আসত, অন্যদের সঙ্গে লাইনে দাঁড়িয়ে যেত এবং শার্টের দুহাতায় মুখের ঘাম মুছত। হঠাৎ করেই মনে পড়ে যেত, জুতার তলার পেরেকের ক্ষয়ে যাওয়ার কথা। স্টাডি হলে ঢোকার আগে পরখ করে দেখত, জুতোর তলার পেরেকটা আগের দিনের চেয়ে বেশি চকচকে হয়ে গেছে কি না। আগের দিনের চেয়ে বেশি ক্ষয়ে গেল কি না খুব স্পষ্ট করে বুঝতে পারত না। সেটাই বরং স্বস্তির ব্যাপার ছিল তার কাছে। কিন্তু কখনও কখনও জুতার কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়েই যেত: জুতার বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া, ওপরের অংশ ছিঁড়ে যাওয়া, কিংবা গোড়ালির কাছে ছিঁড়ে যাওয়া-এরকম কোনো কিছু ঘটলে বাড়ি যাওয়ার পরে তাকে কী পরিস্থিতির সামনে পড়তে হবে সেটা ভাবতে গেলে নিজের মুখের লালা পেটের ভেতর পাঠিয়ে দেওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকত না তার। পড়ার সময়টাতে পেটের গোলমাল বেড়ে যেত। মনের ভেতরকার পাপবোধ তাড়ানোর জন্য জ্যাক কষ্ট করে হলেও পড়ার ভেতর মন আটকানোর চেষ্টা করত। কিন্তু পিটুনি খাওয়ার ভয়ের কারণে শত চেষ্টাতেও মনোযোগ আসত না। স্টাডি হলের এই পড়ার সময়টা খুব দীর্ঘ মনে হতো তার। প্রথমত এই পড়া চলত একটানা দুঘণ্টা এবং চলত রাত পর্যন্ত কিংবা দিন বড় হলে পড়া অবস্থাতেই রাত নেমে আসত। উচু জানালাগুলোর ওপারে দেখা যেত মারেঙ্গা গার্ডেনস। জ্যাক এবং পিয়েরের চারপাশে পাশাপাশি বসা ছাত্ররা অস্বভাবিক রকমের নীরব, শ্রান্ত ক্লান্ত, সর্বশেষ কর্ম শেষ করার কাজে মগ্ন। বিশেষ করে বছরের শেষের দিকে তাদের পড়ার সময়ের মধ্যেই বড় বড় গাছের ওপর, ফুলতলায় এবং পার্কের কলাগাছের ঝোপের ওপর রাত নেমে আসত। আকাশটা নীল থেকে নীলতর হয়ে উঠত। মনে হতো, নগরের কোলাহল কমে এসেছে, দূরে সরে গেছে। ঠিক তখন মনে হতো আকাশটা ফুলে উঠেছে। খুব বেশি গরম হলে জানালাগুলোর কোনোটা অর্ধেকখানি খোলা থাকত। ছোট বাগানের ওপর দিয়ে ভেসে আসা আবাবিল পাখির চিৎকার শুনতে পেত তারা। পড়ার রুমের ভেতরের কালি আর রুলারের এসিড এবং কটু স্বাদের আবহকে ভরিয়ে দিতে প্রবেশ করত সিরিঙ্গা এবং বড় বড় ম্যাগনোলিয়া ফুলের সুগন্ধ। হৃদয়টা ভারি হয়ে উঠলে জ্যাক তখন দিবাস্বপ্নে ডুবে যেত। অল্পবয়সী মনিটর তাড়া দিত। সে নিজেও তাদের সঙ্গে বসে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ সম্পন্ন করত ওখানেই। সবাইকে শেষ ঘণ্টা বাজা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতো।

সাতটার সময় লিসে থেকে ছাত্রদের ভীড়ের স্রোত বের হতো। রিউ বাব আজুন পর্যন্ত হৈচৈ করতে করতে দৌড়ে যেত সবাই। ততক্ষণে সব দোকান আলো ঝলমল চেহারায় ফুটে উঠেছে। খিলানের নিচের ফুটপাতে ভিড়ের ঠেলাঠেলি এত বেশি হতো যে, তাদের অনেককেই রাস্তায় নেমে রেইলের মাঝখান দিয়ে দ্রুত বেগে হাঁটতে হতো। দূর থেকে কোনো ট্রলিবাস কাছাকাছি আসতেই তাদেরকে আবার ঠেলাঠেলি করে সরে দাঁড়াতে হতো। তারপর তাদের সামনে তখন দু গভার্নমেন্টে। আরব ফেরিঅলাদের বর্ণহীন এক ধরনের গ্যাসের আলোয় চারপাশ রাঙিয়ে উঠেছে। ছাত্ররা সেই গ্যাসের গন্ধ নিতে খুব ভালোবাসত। জ্যাক এবং পিয়েরে এগিয়ে গিয়ে দেখতে পেত, লাল ট্রলিবাসটা অপেক্ষমান, তবে ইতোমধ্যে বোঝাই হয়ে গেছে। অবশ্য সকালবেলা ওই বাসেই যাত্রীসংখ্যা থাকত অনেক কম। মাঝে মাঝে তাদের ট্রেইলার গাড়ির চলন্ত পাদানির ওপর চড়তে হতো। ওখানে চড়াটা অবশ্য নিষিদ্ধ এবং কষ্টকরও ছিল। সামনের কোনো স্টপেজে কোনো যাত্রী না নামা পর্যন্ত ওই রকম অবস্থাতেই যেতে হতো তাদের। তারপর তারা মানুষের ভিড় ঠেলে সামনের দিকে এগুতে থাকত। এভাবে একজন আরেকজন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার কারণে কেউ কারো সঙ্গে কথা বলতে পারত না। মানুষের ভিড়ের মধ্যে কনুই চালিয়ে রেলিঙের কাছাকাছি পৌঁছনোর চেষ্টা করত তারা। রেলিংয়ের কাছ থেকে দেখতে পেত, অন্ধকারে ডুবে থাকা বন্দর। বড় বড় স্টিমারগুলোর আবছা চেহারা দেখা যেত শুধু। আকাশ আর সমুদ্রের রাতের ভেতর স্টিমারগুলোকে মনে হতো আগুনে পুড়ে যাওয়া কোনো বাড়ির কঙ্কালের মতো-যেন আগুন পুরোপুরি নেভেনি, কয়লার মতো ধিকিধিকি জ্বলছে। উজ্জ্বল আলোকিত বিশাল ট্রলিবাসগুলো পানির কাছাকাছি এলে যেন গর্জন করতে করতে চলত। তারপর ভেতরের দিকে সরে গিয়ে দারিদ্র পীড়িত এলাকা পার হয়ে চলতে থাকত বেলকোর্ট এলাকার দিকে। সেখানে পিয়েরে এবং জ্যাক একজন আরেকজন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেত। জ্যাক অন্ধকার সিঁড়ি বেয়ে উঠে যেত কেরোসিনের দীপ জ্বালা খাবার ঘরে। সেখানে অয়েলক্লথ মোড়ানো টেবিল এবং চারপাশের চেয়ারগুলোতে আলো পড়লেও ঘরের আর সবকিছুই থাকত ছায়া ছায়া অন্ধকারে ডুবে। জ্যাকের মা তখন টেবিলের সাইডবোর্ডের পাশে টেবিল সাজাতে ব্যস্ত থাকতেন। নানি রান্নাঘরে দুপুরের খাবারের পর বেঁচে যাওয়া খাবার চুলায় গরম করার কাজে ব্যস্ত। আর তার বড়ভাই টেবিলের কোণায় বসে কোনো অভিযানমূলক উপন্যাস পড়ছে। তাকে মাঝে মধ্যে শেষ মুহূর্তে লবণ কিংবা পোয়া পাউন্ড মাখন আনতে যেতে হতো মজাবাইটদের দোকানে, কিংবা গ্যাবির ক্যাফেতে যেতে হতো আড্ডারত আর্নেস্ট মামাকে ডাকতে। রাতের খাবার খাওয়া হতো আটটায় এবং বেশিরভাগ সময়েই নীরবে। মাঝে মধ্যে আর্নেস্ট মামা হাসির দমকে তার আগে বলা কোনো অভিযানের গপ্পো তুলত। সাধারণত লিসের প্রসঙ্গ উঠত না। তবে নানি মাঝে মাঝে জ্যাককে জিজ্ঞেস করতেন সে ভালো গ্রেড পেয়েছে কি না। জ্যাক জানাত, সে ভালো গ্রেড পেয়েছে। তখন মা মুখে কিছুই বলতেন না, শুধু নীরবে জ্যাকের ইতিবাচক উত্তর দেওয়ার দিকে কোমল দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতেন। অন্য সময় তিনি নীরব এবং অন্যমনস্ক থাকতেন। মা নানিকে বলতেন, বসে থাকো। আমি পনির নিয়ে আসছি। তারপর খাওয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত মা আর কিছুই বলতেন না। মা উঠে পড়ার সময় নানি বলতেন, তোর মার কাজে হাত লাগা। কারণ ততক্ষণে সে পারদাইলান হাতে নিয়ে গোগ্রাসে পড়া শুরু করেছে। মাকে থালাবাসন ধোয়ার কাজে সাহায্য করার পর প্রদীপের আলোর কাছে ফিরে মল্লযুদ্ধ আর সাহসের কাহিনী সংবলিত বিশাল ভলিউমের বইটি পিচ্ছিল এবং ফাঁকা টেবিল ক্লথের ওপর রাখত জ্যাক। মা একটা চেয়ার তুলে নিয়ে বাতির আলো থেকে দূরে শীতের সময় হলে জানালার পাশে গিয়ে বসতেন। আর গরমের দিন হলে ব্যালকনিতে গিয়ে বসে রাস্তায় ক্রমবিলীয়মান ট্রলিবাস, গাড়ি এবং পথচারীদের দিকে তাকিয়ে থাকতেন। নানি জ্যাককে আবারো তাড়া দিতেন, শুতে যাওয়ার জন্য। পরের দিন ভোর সাড়ে পাঁচটায় তাকে উঠতে হবে। ঘুমুতে যাওয়ার আগে প্রথমে নানি, তারপর আর্নেস্ট মামা, সবশেষে মা এসে চুমু দিতেন জ্যাককে। মায়ের চুমু দেওয়াটা ছিল সবচেয়ে কোমল এবং অন্যমনস্ক। তারপর মা আবার তার জায়গায় গিয়ে বসতেন। দৃষ্টি সামনের চলমান জীবনের দিকে যেন তিনি কোনো ধীরে বহমান নদীর তীরে বসে আছেন। তার ছেলে তাকে ওই অবস্থায় বসে থাকতেই দেখত যেন অনন্তকাল ধরে। মাকে পিঠ বাঁকিয়ে সামনের দিকে ঝুঁকে আবছা আলোয় ওইভাবে বসে থাকতে দেখে জ্যাকের গলার ভেতর একটা অসহ্য দলা পাকিয়ে উঠত। দুর্বোধ্য এক আবছা বৈরি দমবন্ধ আবহ তার মনটা পুরোপুরি ছেয়ে ফেলত।

 

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৪৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১

 

Header Ad
Header Ad

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৬ কোটি ১০ লাখ টাকার বাজেট পাস

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের জন্য ৭৬ কোটি ১০ লাখ টাকার বাজেট অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ইউজিসি থেকে বরাদ্দ পাওয়া যাবে ৬৯ কোটি টাকা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয় ধরা হয়েছে ৭ কোটি ১০ লাখ টাকা।

সোমবার (৩০ জুন) প্রশাসনিক ভবনের কনফারেন্স রুমে সিন্ডিকেট এর ১০৪তম সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলায়মান এই বাজেট উপস্থান করেন। একই সঙ্গে ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের সরকারি বরাদ্দের ভিত্তিতে ৭৫ কোটি ৬৯ লক্ষ ৪৮ হাজার টাকার সংশোধিত বাজেট অনুমোদন করা হয়।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত বাজেট চাহিদা ৯২ কোটি ৭০ লক্ষ ৪২ হাজার টাকা হলেও প্রায় ১৬ কোটি ৬০ লক্ষ টাকার বাজেট ঘাটতি নিয়েই পাশ হয়েছে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট।

পাশকৃত বাজেটে গবেষণায় বরাদ্দ রাখা হয়েছে দুই কোটি ৯৩ লক্ষ টাকা যা মোট বাজেটের ৩ দশমিক ৮৫ শতাংশ। এই খাতে ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে বরাদ্দ ছিল দুই কোটি ৬১ লক্ষ টাকা। এছাড়া মোট বাজেটের ৬২ দশমিক ৭৫ শতাংশ বরাদ্দ রাখা হয়েছে বেতন-ভাতা ও পেনশন বাবদ। পণ্য ও সেবা বাবদ সহায়তায় বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২৬ দশমিক ৪৯ শতাংশ, গবেষণা অনুদান খাতে ৩ দশমিক ৮৫ শতাংশ এবং ৬ দশমিক ৯১ শতাংশ বরাদ্দ রাখা হয়েছে মূলধন খাতে।

বাজেট নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলায়মান বলেন, '২০০৭-২০০৮ অর্থ বছরে বাজেট ছিল এক কোটি ১০ লক্ষ টাকা, সেখান হতে আজকের বাজেট বৃদ্ধি পেয়ে দাড়িয়েছে ৭৬ কোটি ১০ লক্ষ টাকা। আশার কথা হলো গত বছরের তুলনায় নিজস্ব অর্থায়ন হ্রাস করে সরকারি অনুদান বৃদ্ধি করা গেছে। ভবিষ্যৎ-তে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক চাহিদা অনুযায়ী সর্বমোট বাজেট বৃদ্ধি পাবে।'

তিনি আরো বলেন, 'ইউজিসির বরাদ্দ চাহিদার তুলনায় অপর্যাপ্ত। তবে সংশোধিত বাজেটে ইউজিসির সাথে আলোচনা করে বাজেট আরও বৃদ্ধি করা হবে।'

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো: হায়দার আলী বলেন, 'সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বজায় রেখে বাজেট ব্যয় করা হবে।'

Header Ad
Header Ad

সরকারি চাকরিতে ৪ লাখ ৬৮ হাজার পদ খালি

ছবি: সংগৃহীত

বর্তমানে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে ৪ লাখ ৬৮ হাজার ২২০টি পদ খালি রয়েছে। সোমবার (৩০ জুন) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত ২০২৪ সালের সরকারি কর্মচারীদের পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

পরিসংখ্যানে দেখা যায়, সরকারি চাকরিতে বর্তমানে ১৯ লাখ ১৯ হাজার ১১১টি অনুমোদিত পদ রয়েছে। এর বিপরীতে ১৪ লাখ ৫০ হাজার ৮৯১ জন কর্মরত আছেন; খালি আছে ৪ লাখ ৬৮ হাজার ২২০টি পদ।

সরকারি চাকরিতে ২০১৮ সালে ৩ লাখ ৯৩ হাজার ২৪৭টি, ২০১৯ সালে ৩ লাখ ৮৭ হাজার ৩৩৮টি, ২০২০ সালে ৩ লাখ ৮০ হাজার ৯৫৫ এবং ২০২১ সালে ৩ লাখ ৫৮ হাজার ১২৫টি, ২০২২ সালে ৪ লাখ ৮৯ হাজার ৯৭৬টি এবং ২০২৩ সালে ৪ লাখ ৭৩ হাজার একটি পদ ফাঁকা ছিল।

এখন সরকারি চাকরিতে প্রথম থেকে নবম গ্রেডের (আগের প্রথম শ্রেণি) ২ লাখ ৫৯ হাজার ৬৫৭টি অনুমোদিত পদ রয়েছে। এসব পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন এক লাখ ৯০ হাজার ৭৭৩ জন। ফাঁকা আছে ৬৮ হাজার ৮৮৪টি পদ।

১০ থেকে ১২তম গ্রেডে (আগের দ্বিতীয় শ্রেণি) ৩ লাখ ৬২ হাজার ২৮৯টি পদের বিপরীতে কাজ করছেন ২ লাখ ৩৩ হাজার ৭২৬ জন। ফাঁকা রয়েছে এক লাখ ২৯ হাজার ১৬৬টি পদ।

১৩ থেকে ১৬তম গ্রেডে (আগের তৃতীয় শ্রেণি) ৭ লাখ ৬০ হাজার ৬৩৪টি পদ রয়েছে। এসব পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন ৬ লাখ ১৩ হাজার ৮৩৫ জন। ফাঁকা আছে ১ লাখ ৪৬ হাজার ৭৯৯টি পদ।

অন্যদিকে ১৭ থেকে ২০তম গ্রেডে (আগের চতুর্থ শ্রেণি) ৫ লাখ ১৯ হাজার ৮১২টি পদ রয়েছে। এসব পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন ৪ লাখ ৪ হাজার ৫৭৭ জন। ফাঁকা রয়েছে ১ লাখ ১৫ হাজার ২৩৫টি পদ।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সরকারি দপ্তরে নির্ধারিত ও অন্যান্য কাজের জন্য ১৬ হাজার ১১৬টি পদ থাকলেও এসব পদের বিপরীতে কাজ করছেন ৭ হাজার ৮৯০ জন। ফাঁকা রয়েছে ৮ হাজার ১৩৬টি পদ।

প্রথম থেকে ১২তম গ্রেডের গেজেটেড পদগুলোতে নিয়োগ দেয় সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। আর ১৩ থেকে ২০তম গ্রেডের পদে সরাসরি নিয়োগ দেয় মন্ত্রণালয় ও বিভাগ।

সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে ৬ হাজার ৬৪টি এবং অধিদপ্তর ও পরিদপ্তরে ২ লাখ ৯৬ হাজার ১১২টি পদ ফাঁকা রয়েছে। আর বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ১৫ হাজার ২৯টি এবং স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন করপোরেশনে ফাঁকা রয়েছে এক লাখ ৫১ হাজার ১৫টি পদ।

Header Ad
Header Ad

পুলিশ পরিচয়ে ব্যবহার করা যাবে না সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম: আরপিএমপি কমিশনার

ছবি: সংগৃহীত

রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরপিএমপি) সদস্যদের জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘পুলিশ পরিচয়ে’ ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট পরিচালনায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন কমিশনার মো. মজিদ আলী। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের আচরণ সর্বক্ষেত্রে পেশাদার ও সংবেদনশীল হতে হবে।

সোমবার (৩০ জুন) আরপিএমপির মাসিক কল্যাণ সভায় পুলিশ কমিশনার এই নির্দেশনা দেন।

কমিশনার বলেন, "পুলিশ সদস্যরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেদের পেশাগত পরিচয় ব্যবহার করতে পারবেন না। এ ধরনের কর্মকাণ্ড বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে পারে।"

তিনি আরও যোগ করেন, সদস্যদের অনলাইন জিডি সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা রাখতে হবে, যাতে জনগণ আরও দ্রুত ও কার্যকর সেবা পায়।

সভায় কমিশনার মজিদ আলী বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, দায়িত্ব পালনে সতর্কতা ও পেশাদারিত্ব বজায় রাখা জরুরি। পুলিশ সদস্যদের পেশাগত উৎকর্ষ সাধনের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, "পুলিশের দায়িত্ব শুধু আইন প্রয়োগ নয়, এটি একটি জনসেবামূলক পেশা।"

সভায় আগের মাসের কল্যাণ সভায় উত্থাপিত বিভিন্ন সমস্যা ও সুপারিশের বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়। অনেক বিষয় সমাধানের নির্দেশও দেন কমিশনার।

এ সময় সভায় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন ও অর্থ) নরেশ চাকমা, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) সফিজুল ইসলাম, উপপুলিশ কমিশনার (সদর দপ্তর) হাবিবুর রহমান, উপপুলিশ কমিশনার (অপরাধ দক্ষিণ) তোফায়েল আহম্মেদ, এবং উপপুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) আব্দুর রশিদ।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৬ কোটি ১০ লাখ টাকার বাজেট পাস
সরকারি চাকরিতে ৪ লাখ ৬৮ হাজার পদ খালি
পুলিশ পরিচয়ে ব্যবহার করা যাবে না সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম: আরপিএমপি কমিশনার
ভোলায় চাঁদা না পেয়ে স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ
টাঙ্গাইলের নির্ধারিত স্থানে মডেল মসজিদ নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন (ভিডিও)
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ফোনালাপ
চুয়াডাঙ্গায় ট্রেন থেকে ফেলে পাউবো কর্মচারীকে হত্যা, পরিবারের মামলা
দেশে নতুন করে আরও ২১ জনের করোনা শনাক্ত
ঢাকার প্রতিটি ভবনের ছাদে সৌর প্যানেল বসানোর নির্দেশ হাইকোর্টের
লুঙ্গি পরে রিকশায় প্যাডেল মেরে ঢাকা থেকে বিদায় নিলেন জার্মান রাষ্ট্রদূত
ইসরায়েলের ৩১ হাজারেরও বেশি ভবন গুঁড়িয়ে দিয়েছে ইরান (ভিডিও)
ইরানের সাথে আলোচনা করছি না, তাদের কিছু দিচ্ছিও না: ট্রাম্প
আসিফ মাহমুদের অস্ত্রের লাইসেন্স নিয়ে প্রশ্ন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বললেন ‘আইনটা দেখিনি’
নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে কাজ করতে মুখিয়ে আছে চীন: মির্জা ফখরুল
বিপিএলে নোয়াখালীর অভিষেক, আসছে ‘নোয়াখালী রয়্যালস’
হোটেল থেকে সন্তানসহ স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার, ময়নাতদন্তে যা জানা গেল
আমাদের ডিভোর্স হয়নি, হিরো আলম অভিমান করেছিল: রিয়ামনি
সরকারি উদ্যোগেও কমেনি ইলিশের দাম, খালি হাতেই ফিরছেন ক্রেতারা
মঙ্গলবার ব্যাংক হলিডে, বন্ধ থাকবে সব লেনদেন
বিরামপুরে ১৭০তম সাঁওতাল বিদ্রোহ দিবস পালন