রবিবার, ১৯ মে ২০২৪ | ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৫০

দ্য ফার্স্ট ম্যান

বইটা কোন পদ্ধতিতে ছাপা হয়েছে তার উপর নির্ভর করে পাঠক আগেই বুঝতে পারত, ওই বই থেকে কী ধরনের এবং কতখানি আনন্দ লাভ করতে পারবে। জ্যাক এবং পিয়েরে বড় বড় অক্ষরে দুপাশে সুপরিসর মার্জিনঅলা বই পছন্দ করত না। মার্জিত রুচির পাঠকদের জন্য তেমন বই পছন্দ হলেও তাদের পছন্দ ছিল ছোট অক্ষরে টাইপ করা এবং পৃষ্ঠায় কম মার্জিন সংবলিত বই। শব্দ আর বাক্যে পুরোপুরি ঠাসা বই ছিল তাদের প্রিয়। বড় আকারের পুরনো গামলার মধ্যে অনেক পরিমাণ খাবার যেমন ভয়াবহ ক্ষুধা নিবৃত্ত করার পরও কিছু খাবার অবশিষ্ট থাকে তেমনভাবে বইয়ের মধ্যে অনেক কিছু থাকবে যা দিয়ে তাদের পড়ার ক্ষুধা নিবৃত্ত করা যায়। সুক্ষ ব্যাপার স্যাপার তাদের পছন্দ ছিল না। তারা যেহেতু কোনো কিছুই ভালো করে জানত না, তাদের সবকিছুই জানার দরকার ছিল। বইটা সুলিখিত না হলে, কিংবা ভালো বাঁধাই না থাকলেও তাতে তাদের কিছু যেত আসত না। লেখার বক্তব্য হওয়া চাই প্রাঞ্জল এবং পৃষ্ঠা ভরা থাকা চাই অত্তুগ্র ঘটনাবলী। তাহলে ওইসব বই তাদের স্বপ্নের ক্ষুধা মিটাতে পারত এবং ওইসব বই পড়ার মাধ্যমে তারা যেন একটা প্রবল ঘুমের ভেতর ডুবে যেতে পারত।

তা ছাড়া প্রত্যেক বইয়ের ছিল আলাদা আলাদা সুগন্ধ, যে কাগজের উপর ছাপা হতো অক্ষরগুলো সেই কাগজেরও গন্ধ থাকত। বইয়ের গন্ধ সব সময় খুব কোমল আর অনন্য। একেকটা বইয়ের নিজস্ব গন্ধ একেক রকম। চোখ বন্ধ করেই জ্যাক বলে দিতে পারত, বইটা নেলসন সিরিজের কি না। তখনকার দিনে নেলসন সিরিজের বই প্রকাশ করত ফাসকেল। পড়া শুরু করার আগেই একেকটা বই জ্যাককে প্রতিশ্রুতিভরা জগতে টেনে নিয়ে যেত। ওই গন্ধে জ্যাক নিজের অবস্থানের ঘরটা পর্যন্ত ভুলে যেত। বাড়ির আশপাশের এলাকা, এলাকার হৈচৈ, খোদ শহরটা এবং বাস্তবের গোটা জগৎই তার বোধ থেকে মুছে যেত। বুনো অবাধ একটা বোধ নিয়ে পড়া শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে সামনের জগৎটা বিলীন হয়ে যেত। জ্যাক নিজেই অন্যরূপের ভেতর প্রবেশ করত। বার বার তাকে ডাকা হতো, জ্যাক, তৃতীয় বারের মতো টেবিল ঠিক কর। তবু তার চেতনা ফিরত না। আরও ডাকাডাকির পর সে টেবিল সাজাত ঠিকই, তবে তার দৃষ্টি থাকত বইয়ের দিকে। মনে হতো, সে মাতাল অবস্থায় আছে। টেবিলের কাজ সেরে বইয়ের কাছে আবার ফিরে আসত। মনে হতো, সে পড়া ছেড়ে ওঠেইনি। তারপর তাকে বলা হতো, জ্যাক খেতে বসো। খেতে বসলে তার মনে হতো খাবারগুলো বইয়ের কথাগুলোর চেয়ে ভারী, তবে অবাস্তব। খাবার শেষ করে টেবিল পরিষ্কার করে আবার পড়ায় ফিরে যেত সে। কখনো কখনো মা তার নিজস্ব জায়গায় বসতে যাওয়ার আগে তার কাছে আসতেন। মা বলতেন, লাইব্রেরি থেকে আনা। অবশ্য লাইব্রেরি কথাটা মা ঠিকমতো উচ্চারণ করতে পারতেন না। তিনি শুধু তার ছেলের মুখে লাইব্রেরি কথাটা উচ্চারিত হতে শুনেছেন। তার কাছে কথাটার নিজস্ব কোনো অর্থ ছিল না। তবে তিনি বইয়ের মলাটের চেহারাটা ঠিক ঠিক চিনতেন এবং তার কথার সুরে জ্যাক মায়ের দিকে না তাকিয়েই বলে উঠত, হ্যাঁ। মা জ্যাকের কাঁধের উপর ঝুঁকে থাকতেন। মা লেখার লাইনগুলোর দিকে তাকিয়ে থেকে বইয়ের গন্ধ নিতেন। কখনো কখনো তার লন্ড্রির কাজ করে ফোলা আঙুল বইয়ের পাতার উপর ছুঁইয়ে যেতেন যেন বুঝতে চেষ্টা করছেন, বই জিনিসটা আসলে কেমন, যেন ওই রহস্যময় চিহ্নগুলোর আরও কাছে আসতে চাইছেন, দেখতে চাইছেন ওই দুর্বোধ্য চিহ্নগুলো কীভাবে তার ছেলেকে বার বার টেনে নিয়ে যায়। তার বোধের বাইরের এক জগতে ছেলে কীভাবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটিয়ে দিচ্ছে। সেখান থেকে ফেরার সময় তার দিকে এমনভাবে তাকাচ্ছে যেন তিনি অচেনা কেউ। মায়ের খসখসে আঙুলগুলো মাঝে মাঝে জ্যাকের মাথায় আদর বুলিয়ে যেত। মা দীর্ঘশ্বাস ফেলে তার নিজের জায়গায় গিয়ে বসতেন, জ্যাকের থেকে বেশ দূরে। নানি পর পর বেশ কয়েকবার আদেশ দিতেন, জ্যাক, ঘুমোতে যা। না হলে কাল সকালে দেরি হয়ে যাবে। জ্যাক উঠে দাঁড়িয়ে পরের দিনের ক্লাসের বইপত্র ব্যাগে গোছাতে শুরু করত; তবে বইটা তার বগলে ধরাই থাকত। বিছানায় মাতালের মতো ধপাস করে শুয়ে বইটা আস্তে করে পাশবালিশের নিচে চালান দিয়ে ঘুমিয়ে পড়ত।

সুতরাং বেশ কয়েক বছর জ্যাকের অস্তিত্ব দুটো জগতের মাঝে অসমভাবে বিভক্ত হয়ে গিয়েছিল। ওই জগৎ দুটো সে কোনোভাবেই এক করে মেলাতে পারেনি। দিনের প্রায় বারো ঘণ্টার জন্য তাকে থাকতে হতো যে জগতে সেখানে ছিল ঢোলের বাজনা, ছাত্র-শিক্ষকদের আনাগোনা, খেলাধুলা এবং পড়াশোনা। অন্যদিকে প্রাত্যহিক জীবনের দুতিন ঘণ্টা থাকতে হতো বাড়িতে, বাড়ির আশপাশের জগতে, মায়ের সান্নিধ্যে। অবশ্য শুধু গরিব মানুষের ঘুম ছাড়া আর কোনোভাবে মায়ের জগতের সঙ্গে সে নিজেকে মেলাতে পারেনি। যদিও বাড়ির আশপাশের জগৎ ছিল তার জীবনের প্রথমভাগের অংশ, তার বর্তমান এবং ভবিষ্যত ছিল লিসে। সুতরাং তার বাড়ির জগৎটা মিশে থাকত তার রাত, ঘুম এবং স্বপ্নের সঙ্গে। যে রাতে সে সিমেন্টের ওপর পড়ে গিয়েছিল তখনো কি মরুভূমির মতো হয়ে যাওয়া বাড়ির প্রতিবেশ তার সঙ্গেই ছিল?

লিসেতে কারও সঙ্গে কোনো অবস্থাতেই জ্যাক তার মায়ের কথা কিংবা বাড়ির কথা বলতে পারত না। অন্যদিকে লিসের কথা বাড়ির কারও সঙ্গে বলার মতো ছিল না। প্রবেশিকা পরীক্ষার পূর্বে তার কোনো বন্ধু কিংবা কোনো শিক্ষক তার বাড়িতে কখনো আসেননি। বছরে শুধু একবার, জুলাই মাসের শুরুতে পুরস্কার প্রদানের সময় ছাড়া তার নানি এবং মা কখনো লিসেতে যাননি। সেদিন তারা লিসের বিশাল দরজা দিয়ে প্রবেশ করতেন পুরোদস্তুর পোশাকে সজ্জিত সব পিতামাতা এবং ছাত্রদের ভিড়ের মধ্যে। কখনো বাইরে যাবার সময় নানি সাধারণত কালো পোশাক এবং মাথায় ওড়না পরিহিত অবস্থায় যেতেন। লিসেতে যাওয়ার সময়ও সেই পোশাকই পড়তেন। বাদামী জাল আর কালো মোমের তৈরি আঙুরশোভিত হ্যাট, বাদামী রঙের গ্রীষ্মকালীন পোশাক এবং তার একমাত্র উঁচুতলাঅলা জুতা জোড়া পরে যেতেন মা। খোলা গলার কলারঅলা হাফহাতা সাদা শার্ট আর ট্রাউজার পরে যেত জ্যাক। দুটোই আগের রাতে মা খুব যত্ন করে ইস্ত্রি করে রাখতেন। তাদের দুজনের মাঝে হাঁটতে হাঁটতে জ্যাক তাদের লাল ট্রলিবাসের দিকে পথ দেখিয়ে নিয়ে যেত। দুপুর একটার দিকে তারা যাত্রা করত। বাসের মধ্যে নানি এবং মাকে সিটে বসিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকত জ্যাক। মাঝখানের কাঁচের দেয়াল ভেদ করে মায়ের দিকে তাকিয়ে থাকত সে। মা মাঝে মাঝে জ্যাকের দিকে তাকিয়ে হাসতেন। কিছুক্ষণ পর পরই মা তার হ্যাটের কৌণিক অবস্থা পরীক্ষা করে দেখতেন, তার ঢিলা মোজা জোড়া নিচের দিকে নেমে যায় কি না দেখতেন এবং তার গলায় পরা পাতলা একটা মালার সঙ্গে মেরি মাতার ছোট সোনার একটা মেডেল পরোখ করে দেখতেন। দু গভার্নমেন্টে থেকে রিউ বাব আজুন পর্যন্ত পথটুকু জ্যাক তাদের দুজনের সঙ্গে বছরে একবার পাড়ি দিত। মা সেদিন একটা লোশন ব্যবহার করতেন? জ্যাক মায়ের গায়ের লোশনের সুগন্ধ নিতে নিতে হাঁটত। নানি মাথা উচু করে গর্বভরা পদক্ষেপে এগিয়ে যেতেন। পায়ে ব্যথা লাগছে বলে মা কিছু বললে নানি তাকে বকুনি দিয়ে বলতেন, কষ্ট হলেও তার বয়সের তুলনায় ছোট জুতা পড়ার অভ্যাসটা হয়ে যাচ্ছে আপাতত। তখন জ্যাক আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে দুপাশের দোকানপাট এমনকি দোকানিদেরও দেখিয়ে দিত নানি এবং মাকে। বুঝাতে চাইত, তার জীবনে এইসব চাকচিক্য এসেছে তার লিসেতে পড়াশোনা করার কল্যাণে। লিসেতে পৌঁছে দেখতে পেত বিশাল দরজা খোলা। সিঁড়ির উপর থেকে একেবারে নিচ পর্যন্ত টবের গাছ দিয়ে সাজানো হয়েছে। যেসব ছাত্র প্রথম ভর্তি হয়েছে তাদের বাবা মায়েরা প্রথম বারের মতো ওই সিঁড়ি দিয়ে প্রবেশ করবেন। রকমারি পরিবার অনুষ্ঠান শুরুর অনেক আগে এসে উপস্থিত হতো। গরিব লোকেরা সব সময় এ রকম করেই থাকে। কারণ, তাদের সামাজিক দায়দায়িত্ব এবং আনন্দের সুযোগ খুব কমই থাকে। কাজেই যে অল্প সংখ্যক সুযোগ পাওয়া যায় সেখানে যেন অনিয়মানুবর্তিতার ঘটনা না ঘটে। ভেতরের উঠোনের মতো জায়গাটাতে ঢুকে তারা পুরনো ছাত্র এবং অভিভাবকদের জন্য নির্দিষ্ট জায়গায় গিয়ে বসে পড়ত। সারি সারি সুসজ্জিত অনেক চেয়ার। চেয়ারগুলো ভাড়া করা হতো নাচ এবং গানের অনুষ্ঠানের আয়োজক একটা প্রতিষ্ঠান থেকে। ঊঠোনের অন্য প্রান্তে বিশাল ঘড়িটার নিচে উঁচু জায়গার সবটুকু ফাঁকা জায়গা ভরে থাকত সাধারণ চেয়ার এবং হাতলঅলা চেয়ারে। ওই জায়গাটাও জাকজমকপূর্ণভাবে সাজানো থাকত সবুজ গাছপালার টব দিয়ে। আস্তে আস্তে বসার পুরো জায়গাটাই ভরে উঠত। বিচিত্র রকমের হালকা রঙের পোশাক পরা মানুষ, তাদের মধ্যে মহিলাদের সংখ্যা বেশি। যারা আগে আসত তারা গাছের ছায়ার নিচে জায়গা নিয়ে বসত। অন্যরা আরব দেশের তৈরি বিনুনি করা খড়ের সঙ্গে প্রান্তভাগে লাল পশমী সুতোর টাসেলঅলা পাখা দিয়ে নিজেদের বাতাস করত। শ্রোতাদের যারা রোদে বসতে বাধ্য হতো তাদের মাথার উপরের সূর্য নীলাকাশটা আরও বেশি নীল করে জমাট বাধিয়ে দিতে থাকত আর নিচের দর্শকরা ভাজা এবং সিদ্ধ হতে থাকত।

চলবে...

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৪৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৪৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান:পর্ব-৪৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৪৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৪৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব-৪৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১১

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১০

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৯

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৮

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৭

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৬

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৫

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৪

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ৩

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ২

দ্য ফার্স্ট ম্যান: পর্ব ১

 

Header Ad

টাঙ্গাইলে নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ থেকে পড়ে প্রাণ হারালো রাজমিস্ত্রী

নিহত সুমন। ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ থেকে পড়ে মো. সুমন (২৬) নামে এক রাজমিস্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে।

রবিবার (১৯ মে) সকালে উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের বিলচাপড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি নির্মাণাধীন ভবনে কাজ করতে গিয়ে এ ঘটনা ঘটে।

সুমন একই ইউনিয়নের রুহুলী মধ্যপাড়া মো. শামসুল মন্ডলের ছেলে।

স্থানীয়রা জানান, বিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন ৪ তলা ভবনের ছাদে কাজ করতে গিয়ে পা ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আহসান উল্লাহ্ বলেন, বিষয়টির ব্যাপারে আমি অবগত নই।

পৃথিবীতে ধেয়ে আসতে পারে আরও ভয়ানক সৌরঝড়

ছবি: সংগৃহীত

অনিন্দ্য সুন্দর নর্দান লাইট বা অরোরা দেখতে পর্যটকদের সাধারণত মোটা অঙ্কের টাকা খরচ করতে হয়। পাশাপাশি, তীব্র ঠান্ডায় ঘোরাঘুরির জন্য শারীরিক ও মানসিকভাবেও প্রস্তুত থাকতে হয়। কিন্তু গত সপ্তাহে বিশ্ব জুড়ে যে অকল্পনীয় রঙের বর্ণালী দেখা গিয়েছিল, তার জন্য এমন কঠিন প্রস্তুতির দরকার হয়নি। কেবল মাথা তুলে আকাশের দিকে তাকালেই মানুষ দেখতে পেয়েছে স্বপ্নের অরোরা।

পৃথিবীতে মূলত উত্তর মেরুর দেশগুলোতে অরোরা দেখতে পাওয়া যায়। কিন্তু গত ১০ মে রাতে মেক্সিকো, দক্ষিণ ইউরোপ, এমনকি দক্ষিণ আফ্রিকার আকাশেও দেখা গেছে রঙিন আলোর খেলা। সবুজ, গোলাপি, বেগুনি- নানা বর্ণের উজ্জ্বল অরোরার ছবিতে ছেয়ে গিয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফরমগুলো।

কিন্তু যে কারণে দেখা দিয়েছিল এমন অনন্য সৌন্দর্য, যার কারণে তৈরি হয়েছিল বিশ্বব্যাপী অরোরা, সেই সৌরঝড়ের কথা ভেবেই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এই মহাজাগতিক ঘটনার পেছনে ভয়ানক বিপদের ছায়া দেখতে পাচ্ছেন তারা।

ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থার (ইএসএ) স্পেস সেফটি প্রোগ্রাম কোঅর্ডিনেটর কুয়েন্টিন ভারস্পিয়ারেন বলেন, আমাদের বুঝতে হবে, এই সৌন্দর্যের পেছনে বিপদ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের স্পেস ওয়েদার প্রেডিকশন সেন্টারের মাইক বেটউইয়ের কথায়, আমরা সৌরঝড়ের আরও ভয়ংকর সম্ভাব্য প্রভাবের দিকে মনোনিবেশ করছি; যেমন-পাওয়ার গ্রিড ও স্যাটেলাইট অচল হয়ে যাওয়া বা নভোচারীরা বিপজ্জনক মাত্রায় বিকিরণের সম্মুখীন হওয়া।

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওসেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফিয়ারিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এনওএএ)-এর স্পেস ওয়েদার প্রেডিকশন সেন্টারের মতে, গত ১০ মে বাংলাদেশ সময় রাত ১০টার পর থেকে বেশ কয়েকটি করোনাল ম্যাস ইজেকশনের (সিএমই)-এর ঘটনা ঘটে। সূর্য থেকে প্লাজমা এবং চৌম্বক ক্ষেত্র বেরিয়ে আসার ঘটনাকে সিএমই বলা হয়ে থাকে।

পরে এটি ‘মারাত্মক’ ভূ-চৌম্বকীয় ঝড়ে রূপান্তরিত হয়। ২০০৩ সালের অক্টোবরে তথাকথিত ‘হ্যালোইন স্টর্মস’-এর পরে এ ধরনের ঘটনা ছিল এটিই প্রথম। ২১ বছর আগের ঐ সৌরঝড়ে সুইডেনে ব্ল্যাকআউট এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় বিদ্যুত্ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এমন ভূ-চৌম্বকীয় ঝড়ের কারণেই গত সপ্তাহে দেশে দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল অরোরা।

তবে সাম্প্রতিক সৌরঝড়ে ক্ষয়ক্ষতি কিছুটা কম হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও স্যাটেলাইট কোম্পানিগুলোর সমস্যা প্রকাশ করতে প্রায়শই সপ্তাহখানেক লেগে যায় বলে জানিয়েছেন বেটউই। তিনি বলেছেন, সৌরঝড়ের কারণে জিপিএস সিস্টেম অচল হয়ে যাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রে কিছু স্বচালিত ট্রাক্টর কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছিল বলে খবর পাওয়া গেছে।

বিপদ শেষ হয়নি: সূর্যের পৃষ্ঠে বিশাল বিস্ফোরণ ঘটলে তা থেকে অবিশ্বাস্য দ্রুতগতিতে প্লাজমা, বিকিরণ এবং কখনো কখনো চৌম্বক ক্ষেত্র নিক্ষিপ্ত হয়। এর প্রভাব পড়ে পৃথিবীতেও। সাম্প্রতিক সৌরঝড়টি এসেছিল পৃথিবীর আকার থেকে ১৭ গুণ বড় একটি সানস্পট ক্লাস্টার থেকে, যা এখনো সক্রিয় রয়েছে।

গত মঙ্গলবার এটি বছরের মধ্যে দেখা সবচেয়ে শক্তিশালী সৌরশিখার বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল। সানস্পটটি সূর্যের ডিস্কের প্রান্তের দিকে ঘুরছে। তাই আশা করা হচ্ছে, সাময়িকভাবে এর প্রভাব বন্ধ হবে। কারণ এর বিস্ফোরণগুলো আমাদের গ্রহ থেকে দূরে নিক্ষিপ্ত হচ্ছে। কিন্তু, মোটামুটি দুই সপ্তাহের মধ্যেই সানস্পটটি ঘুরে আবারও পৃথিবীর দিকে আসবে।

ইএসএর স্পেস ওয়েদার সার্ভিসের সমন্বয়ক অ্যালেক্সি গ্লোভার জানান, এরই মধ্যে আরেকটি সানস্পট নজরে আসছে, যা আগামী দিনগুলোতে বড় ধরনের কার্যকলাপ শুরু করতে পারে। সুতরাং, সৌর কার্যকলাপ অবশ্যই শেষ হয়ে যায়নি। এই সানস্পটগুলো কতটা ভয়ানক হতে পারে বা তারা আরও অরোরা ছড়াতে পারে কি না, তা অনুমান করা কঠিন।

কিন্তু বেটউই বলেছেন, সৌর কার্যকলাপ কেবল তার প্রায় ১১ বছর চক্রের শীর্ষে পৌঁছেছে। তাই এখন থেকে আগামী বছরের শেষের মধ্যে আরেকটি বড় সৌরঝড়ের আশঙ্কা বেশি।

পাকিস্তানে সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ১৪ জন নিহত

ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তানে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ১৪ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে আটজন শিশু রয়েছে। এ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন।

শনিবার দেশটির খাইবার-পাখতুনখাওয়া প্রদেশের নওশেরায় ব্রেক ফেল করে গাড়ি খাদে পড়ে গেলে হতাহতের এ ঘটনা ঘটে। খবর ডনের।

খুশাবের রেসকিউ ১১২২ ইমার্জেন্সি অফিসার ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ জানান, একই পরিবারের ২৩ জন সদস্য বান্নু থেকে নওশেরা (খুশাব) যাওয়ার সময় ব্রেক ফেল করে ট্রাকটি ২০ ফুট গভীর খাদে পড়ে যায়।

মৃতদেহ ও আহতদের নওশেরার টিএইচকিউ হাসপাতালে এবং জোহরাবাদের ডিএইচকিউ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

যাত্রীরা সবাই শ্রমিক শ্রেণির এবং কাজের জন্য খুশাব শহরে যাচ্ছিলেন।

সর্বশেষ সংবাদ

টাঙ্গাইলে নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ থেকে পড়ে প্রাণ হারালো রাজমিস্ত্রী
পৃথিবীতে ধেয়ে আসতে পারে আরও ভয়ানক সৌরঝড়
পাকিস্তানে সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ১৪ জন নিহত
স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
ঈদের আগেই মসলার বাজার গরম, ডলারের মূল্যবৃদ্ধির অযুহাত ব্যবসায়ীদের
বান্দরবানে সেনাবাহিনীর অভিযানে ৩ কেএনএফ সদস্য নিহত
বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা কংগ্রেসের ভোটব্যাংক : অমিত শাহ
কারও কাছে ভিক্ষা করে দেশের মানুষ চলবে না : প্রধানমন্ত্রী
যশোরে বিনা যৌতুকে ৫০ জোড়া তরুণ-তরুণীর বিয়ে
বাংলাদেশের স্টাইলে ভোট করতে চাইছেন নরেন্দ্র মোদী : অরবিন্দ কেজরিওয়াল
রাজধানীতে স্বেচ্ছাসেবক লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ছাত্রলীগ কর্মী নিহত
টাঙ্গাইলে পুলিশকে পিটিয়ে আসামি ছিনতাই
পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয় করলেন চট্টগ্রামের বাবর আলী
সৌদি আরবে পৌঁছেছেন ২৮ হাজারের বেশি হজযাত্রী
দুই বাংলাদেশিকে অপহরণ করেছে আরসা
কিরগিজস্তানে হামলা, সাহায্য চাইলেন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা
সৌদি আরবে আরও এক বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু
দুপুরের মধ্যে ১০ জেলায় ঝড়ের আশঙ্কা
বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ সৃষ্টির আভাস, যা জানাল আবহাওয়া অফিস
‘বিদেশ ভ্রমণের প্রলোভন দেখিয়ে নারী খেলোয়াড়দের ধর্ষণ করতো’