শুক্রবার, ৯ মে ২০২৫ | ২৬ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৪৯

নেই দেশের নাগরিক

‘নবী!’ শব্দটা দুম করে আপনাআপনি আতিফের মুখ থেকে বেরিয়ে এলো। যেন কথাটা ঠোঁটের কোণে কোনোরকমে ঝুলছিল।

‘নাহ, সে ব্যাপারে কিছু জানা গেল না। কোনো নামই প্রকাশ করা হয়নি। আর জে এফ’এর তরফ থেকেও কোনো মুজাহিদের নাম বলা হয়নি। নামটাম জানতে গেলে আরও কিছুক্ষণ আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। হাত পা গুটিয়ে বসে থাকা ছাড়া কোনো উপায় নেই।’ মিনমিন করে কথাগুলো বেরিয়ে এল সাদ্দামের মুখ থেকে।

আতিফ টিপটিপ করে তাকিয়ে থাকল নদীর দিকে। মনের উঠোনে দুদ্দাড় করে জড়ো হতে লাগল, চিন্তা দুশ্চিন্তার বেড়াজাল। নবী কি শহিদ? না, যে পালিয়েছে সে নবী? যে ধরা পড়েছে সেও তো নবী হতে পারে! নবী যে ধাতের মুজাহিদ তাতে সে জান থাকতে ধরা দেবে না। তবে কি নবী আজরাইলের হাতে ধরা দিয়ে দিয়েছে? চিন্তার ছাল-পাতা-শেকড় আতিফকে পেঁচিয়ে ধরে। আষ্টেপৃষ্টে আঁকড়ায়। আতিফ মনে মনে দোয়া করে, আল্লাহ আল্লাহ করে যে পালিয়েছে সে যেন নবীই হয়। আতিফ জানে, ট্রেনিংএর সময় তাদের বারবার বলে দেওয়া হয়, তাদের নিজেদের মধ্যে একটাই পরিচয়, তারা পরস্পরের মুজাহিদভাই, প্রত্যেকে সমান সম্মানের অধিকারী। কেউ ছোট বড় নেই। কাজ হাসিল করার সময় প্রত্যেককে সমান মর্যাদা দিতে হবে। সমান গুরুত্ব দিতে হবে। রক্তের এবং বন্ধুত্বের সম্পর্ক এখানে নগণ্য। এ সব কাজে মায়া মমতা থাকতে নেই। ওসব মনকে দুর্বল করে দেয়। মনকে মোমের মতো গলিয়ে দেয়। এ লোহা-লক্কড় আর গুলি-বারুদ দিয়ে ঘষামাজা করা মন তো আর মোমের মতো গলে গেলে হবে না? এই মনকে শান দেওয়া অস্ত্রের মতো নিষ্ঠুর হতে হবে। হাজার হত্যাতেও যেন এতটুকু বিচলিত না হয়। চোখের জল এখানে হারাম। নিজেকে আল্লাহর হাতে বানানো একটা অস্ত্র ছাড়া অন্যকিছু ভাবাই যাবে না। এ দেহের, এ মনের, এ ভাবনার একজনই মালিক, আর তিনি হলেন মহান আল্লাহপাক। মনের মধ্যে ভালো করে পুষে নিতে হবে যে, আমাদের চোখই তার চোখ, আমাদের ভাবনাই তার ভাবনা, আমাদের জীবন তারই দান করা রুহু। আল্লাহর পথে আমরা উৎস্বর্গিত প্রাণ, এটাই আমাদের একমাত্র আত্মিকসম্পর্ক। এই আত্মিক টানের যেন কোনো ভেদাভেদ না থাকে। ভেদাভেদ দেখা দিলে, লক্ষ্যে পৌঁছনো যাবে না। মিশন বিফলে যাবে। কিন্তু আর জে এফ’এর ধার্মিক এবং তাত্ত্বিক নেতারা যতই এসব কথা বলুন, কোথাও একটু হলেও বন্ধুত্বের টান যেন উগলে ওঠে। উথলে পড়ে দরদ। হাজার নিষেধ সত্যেও সে টান কোনোভাবেই দমে না। আতিফ জানে নবীর সাথে যারা এই মিশনে গেছেন, তারাও তার নিকটজন, মুজাহিদভাই। জন্মভূমি উদ্ধারের কাজে তাদেরও সমান অবদান। আল্লাহর কাছে তারাও সমান কৃতিত্বের অধিকারী। সমান নেকির ভাগিদার। তবুও এই কটা বছর নবীর সাথে তার যে মাখামাখি সম্পর্ক, মিলমিশ, তাতে তারা দুজন হরিহর আত্মা হয়ে উঠেছে। এক পেট, দুই মানুষ। এক ভাবনা, দুই শরীর। সুতরাং কিছু একটা ঘটলে নবীর কথাই তো চট করে মাথায় খেলবে? নবী যে তার হৃদয়ে ছায়ার মতো মিশে থাকে।

‘অত মনমরা হলে হবে না, আতিফ। যদি সত্যি সত্যি কুখ্যাত বালুখালি চৌকি নবীরা নিশ্চিহ্ন করে দেয়, তাহলে এর চেয়ে আনন্দের আর কী হতে পারে? আমাদের আনন্দে নামাজ পড়া উচিত। আল্লাহর দরবারে দু’হাত তুলে বলা উচিত, হে আল্লাহ তোমাকে শতকোটিবার সিজদাহ। একবার ভাবত, ওই বালুখালি চৌকিতে কত রোহিঙ্গার জীবন গেছে! কত নিরীহ মানুষকে নিষ্ঠুর বার্মা সেনারা নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। আজ বদলা নেওয়ার দিন। প্রতিশোধের দিন। বার্মা সেনারা জানুক, আর জে এফ’এর ছোবল কত বিষাক্ত। আর জে এফ’এর মুজাহিদদের দাঁতে কত বিষ। নখের আঁচড়ে কত যন্ত্রণা।’ আগুনে ফোটার মতো টগবগ করে ফুটছে সাদ্দাম। প্রতিহিংসার আগুনের আঁচ আতিফের মনেও লাগল। আতিফ আচমকা বলে উঠল, ‘ইস! আজ আমি যদি ওখানে থাকতে পারতাম, আমার জাতিকে বুক ফুলিয়ে বলতে পারতাম, এই দেখো, তোমাদের শরীরের একটা দগদগে ক্ষত’কে সমূলে উপড়ে ফেলে দিলাম। দুনিয়ার একটা দোযখ’কে নিশ্চিহ্ন করে দিলাম। আজ আমার বুক গর্বে ভরে উঠছে, নবী আমার বন্ধু। আত্মার আপনজন। নবী, তুই যেখানেই থাক, তুই স্বয়ং আল্লাহর সঙ্গে আছিস।’ ফোটা ফোটা জল লেগে থাকা কড়াই যেমন আচমকা গনগনে আগুনে পুড়ে তপ্ত হয়ে ওঠে, আর তার ওপর পড়ে থাকা জল ফোটাগুলো চিড়বিড় করে বাষ্পিভূত হয়ে যায়, ঠিক তেমনই প্রতিহিংসার আগুনে ছ্যান ছ্যান করে জ্বলে তার চোখ থেকে কাঁদনের অশ্রু উবে গিয়ে চোখদুটো গোলা পাকিয়ে ওঠে আতিফের। সে কণ্ঠ বেলফাটার শব্দের মতো কড়া করে বলল, ‘আমাকে এখানে আর পড়ে থাকলে হবে না, সাদ্দাম। দ্রুত ফিরে যেতে হবে। মনে হয় না, এভাবে হুটপাট করে আর আব্বাদের খুঁজে পাব। তা ছাড়া সামনেই আমার বড় কাজ পড়ে। সে কাজে আমাকে সফল হতেই হবে। শয়তান মায়ানমার সরকারকে কোনোভাবেই আর খাড়া হয়ে দাঁড়াতে দেওয়া যাবে না। একটা ঘা খেয়ে উল্টে পড়ে যাওয়ার পর, আর সোজা হয়ে দাঁড়ানোর আগেই আরেকটা জুতসই ঘা দিতে হবে। যাকে বলে, চড়ের পর চড়, থাপ্পড়ের পর থাপ্পড়।’ দাঁত চিড়বিড় করল আতিফ। সঙ্গে সাদ্দামের দিকে একবার মায়াবি দৃষ্টিতে তাকাল। বলল, ‘তুই কী করবি?’

‘আমি কী করব মানে? যা করছি তাই করব। ওই মগজধোলাইয়ের কাজ। মুজাহিদ সাপ্লাইয়ের কাজ। আমি সাপ্লাই না দিলে তো আর জে এফ সংকটে পড়ে যাবে!’ বুকের ছাতি ফুলে উঠল সাদ্দামের। আতিফ ভ্রূ কুচকাল, ‘কিন্তু, তুই আজ যা কাণ্ড করলি, তাতে করে তুই কি আর নিরাপদে এই চত্বরে থাকতে পারবি? বি জি বি তো তোকে ফাঁসিতে ঝুলাবে।’
‘সে তো ঠিক কথাই, কিন্তু উপায় কী? আমার কাজটা তো অন্য কেউ করতে পারবে না।’
‘তোর ধারণা ভুল। পৃথিবীতে কোনো কাজ কারো জন্যে পড়ে থাকে না। কোনো জায়গা ফাঁকাও থাকে না। একজন গেলে আরেকজন ঠিক চলে আসে। তবে হ্যাঁ, তুই এতদিন ধরে এই এলাকায় থেকে যে পজিশন তৈরি করেছিস, যে প্রভাব তৈরি করেছিস, সোর্সের যে জাল বিছিয়েছিস তা হয়ত অন্যজন হুট করে এসে সে সব করতে পারবে না, কিন্তু কাজটা বন্ধ থাকবে না। একটু একটু করে বাড়তে বাড়তে আগের জায়গাটা ঠিক ফিরে আসবে। তোর তৈরি করা রাজত্বে অন্যজন এসে রাজত্ব করবে, এটাই তো সময়ের নিয়ম। ‘স্বাধীন রাখাইন’ তো আর একদিনে আসবে না। তিল তিল করে ভিত তৈরি করে তবেই তো একদিন চরম শীর্ষে পৌঁছাব। আর সে ভিত একটু একটু করে আমাদেরকেই তো তৈরি করে যেতে হবে। মনে রাখিস, আমরা হচ্ছি এক একটা গাঁথনি। তোকে সে কাজে আমাদের বড্ড দরকার। এত দ্রুত তোকে হারালে চলবে না। তুই এক কাজ কর।’
‘কী কাজ?’
‘তুই, আমার সঙ্গে বান্দরবান চল। আর জে এফ’এর ওপর তলার কর্তাদের বলে, তোকে অন্য কাজে পোস্টিং করে দেব। এই বি জি বি’র হ্যাপা তো থাকবে না।’
‘কিন্তু আমি এ জায়গা ছেড়ে কোত্থাও যাব না। বিপদ ছাড়া তো আমাদের জীবন হতে পারে না। আমাদের তো সবসময় মৃত্যুকে হাতে নিয়েই কাজ করতে হয়। মুজাহিদদের ওসব ভয় থাকতে নেই। আরে সাড়ে তিন হাত শরীরে ‘এই আছি এই নাই, ফুড়ুৎ করে উড়ে যাই’ গোছের তো জীবন। তাতে আর অত মৃত্যুভয় মেখে কী লাভ। বরং ওসব মাথার মধ্যে থাকলে, মাথাটাই একটা ভোঁতা লাউ হয়ে যাবে। কোনো করিৎকর্মে লাগবে না। এক কোপ খেতে না খেতেই ‘ভুষ’ করে ফেসে যাবে! ওসব ভূতিলাউএর মতো জীবন বানানো কী দরকার? ওসব চায়লে তো মুম্বাই শহরে গিয়ে অন্ধকার দুনিয়ার একজন কুখ্যাত খুনি হয়ে উঠতে পারতাম। অথবা, লক্ষ্যহীন উদ্দেশ্যহীন দুনিয়া কাঁপানো যেকোনো জঙ্গিসংগঠনের হয়ে কাজ করে কাড়ি কাড়ি ইনকাম করতে পারতাম। জীবনকে বাজি রেখে এই ঘিঞ্জি শরণার্থী শিবিরে পড়ে থাকতাম না। মনে রাখিস, এই তামাটে রঙের রক্ত-মাংসের দেহের ভেতরে যে রুহুটা আছে, সেটার মালিক আর এখন আমি নই, সেটার মালিক অসহায় শেকড়হীন রোহিঙ্গা জনজাতি। তাদের জন্যেই এ জীবন উৎসর্গীকৃত। তাদের জন্যেই এ জীবন অন্যসব পার্থিব সুখ আহ্লাদ ত্যাগ করে এই নির্বাসনের জীবন কাটাচ্ছে। আমার এই বাইরের খোলটা ঠোঙা মাত্র। এর কোনো জ্বালাপোড়া নেই। ভেতরের রুহুটাই আমার রাখাইন, আমার রোহিঙ্গা। তা ছাড়া সত্যি করে একটা জিনিস ভেবে দেখ, আমি এখানে যত অল্প সময়ে কাজ হাসিল করতে পারব, অন্যরা সেটা পারবে না। শহিদ তো একদিন হতে হবেই। তা না হয়, এখানেই হব।’ একনাগাড়ে বলল সাদ্দাম। তার চোখ ঘোলাটে হয়ে উঠছে। যেন দেহের ভেতরের সেই ‘রোহিঙ্গা রুহু’টা ছিটকে বেরিয়ে আসছে। অন্তরের সেই ‘রুহু’টাই যে বজ্রনির্ঘোষ হুঙ্কার গর্জে উঠছে, তার আঁচ পড়ছে দুইচোখে। ভেতরের সেই জোয়ারি-স্রোত সমস্ত গা-গতর ফুঁড়ে বাইরে হামলে পড়ছে। নাকে মুখে লাগছে হৃদয়ে বারুদ পোড়ার ঝাঁঝ। শান্ত মাথার সাদ্দাম যে আর জে এফ’এর হেলাফেলা মুজাহিদ নয়, সে যে আর জে এফ’এর একজন সাহসী মুজাহিদ, তা তার শরীরের ভেতরের হাড়ের সঙ্গে হাড়ের কটমট দেখে বোঝাই যাচ্ছে। আতিফ সাদ্দামের সেই গনগনে আগুনের মতো জ্বলে ওঠা হৃদয়ে ঘি’এর ছিটা দিল, ‘সবকটা শয়তান বার্মিজ সেনাদের ভিটে ছাড়া করে ছাড়ব, তখন শালোরা হাড়ে হাড়ে টের পাবে, পায়ের তলার মাটি আর মাথার ওপরের ছাদ না থাকার যন্ত্রণা কাকে বলে।’

সাদ্দাম ‘দপ’ করে জ্বলে উঠল, ‘ভিটে ছাড়া কী বলছিস রে! বল, দুনিয়া ছাড়া। সব শালোদেরকে আগুনের গোলায় ছুঁড়ে ফেলে জ্যান্ত পুড়িয়ে মারব। বুঝবে, জাহান্নামের আযাব কাকে বলে।’
‘দুম’ করে একটা বিকট আওয়াজ নদীর দিক থেকে ভেসে এল! সাদ্দাম থতমত করে বলল, ‘এখানে আর দেরি করা একদম ঠিক হবে না, আতিফ। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর পাহারাদাররা মনে হয় টের পেয়ে গেছে যে আমরা এই চোরা বর্ডার দিয়ে পাড়ে উঠে এসেছি।’
‘ওই জন্যেই কি ফায়ারিং করছে!’ চোখদুটো ড্যাবড্যাব করে নদীর দিকে তাকাল আতিফ।
‘সেটাই মনে হচ্ছে। চল, এখান থেকে দ্রুত কেটে পড়ি।’ পা চালাল সাদ্দাম। পলিমাটির আলপথ। চারপাশে ইতস্তত কাশফুলের বুনো ঝাড়। হাওয়াতে ফিনফিন করে দুলছে। নদীর পাড় ছুঁয়ে চিৎ হয়ে শুয়ে থাকা সাদাবালির ওপরে সূর্যের আলো পড়ে চিকচিক করেছে। বালির স্তর যেখানে শেষ হয়েছে, সেখান থেকেই নরম পলিমাটির ওপরে ঝোপ ঝোপ দুব্রো ঘাসের ঝোপ। দূর থেকে মনে হচ্ছে, একটা সবুজ সিঁথি চুল খাড়া করে শুয়ে আছে। আর সেই সিঁথিতে হাওয়ার দোলা লেগে, ধিনধিন করে নেচে উঠছে ঘাসগুলো। দুব্রো ঘাসের আড়ালে মুখ লুকিয়ে আছে হলুদ চাপাটি ঘাস। ডানার মতো থোড় পাতা ছড়িয়ে দিয়েছে মোথা ঘাস। মাঝে মাঝে দঙ্গল বেঁধে ফুটে আছে জংলি ঝুমকা লতা ফুল। কাঁধে কাঁধ মিলে আছে বককন গাছ। দুপুরের ছায়া এদের গোড়ায় ঝুপ মেরে গেছে। পাশের বালির আস্তরণ থেকে একটা মিহি গরম ভাপও গায়ে লাগছে। দূরে নদীর জলও সূর্যের আলো পেয়ে ঝিলমিল করছে।

বি.দ্র. সৌরভ হোসেনের ‘নেই দেশের নাগরিক’ উপন্যাসটি এবারের একুশে বইমেলায় মাওলা ব্রাদার্স থেকে প্রকাশিত হয়েছে। উপন্যাসটি ‘মাওলা ব্রাদার্স’ এর স্টল থেকে সংগ্রহ করতে পারবেন পাঠকরা।

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪৮

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪৭

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪৫
নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৪০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৯

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৮

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৭

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৯

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৮

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৭

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১৯

Header Ad
Header Ad

দেশের তীব্র তাপপ্রবাহ নিয়ে যা বলল আবহাওয়া অফিস

ছবি: সংগৃহীত

দেশজুড়ে শুরু হয়েছে তীব্র গরমের দাপট। চলতি মে মাসের শুরুতে আবহাওয়া তুলনামূলকভাবে সহনীয় থাকলেও গত বুধবার (৭ মে) থেকে বাড়তে শুরু করে তাপমাত্রা।

শুক্রবার (৯ মে) পর্যন্ত দেশের ৪৫টি জেলার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী রোববার (১১ মে) থেকে তাপমাত্রা ধীরে ধীরে কমে আসবে এবং বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে কিছু এলাকায়, যা কিছুটা স্বস্তি দিতে পারে জনজীবনে।

আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, এবার এপ্রিল মাসে সাধারণত যতোটা গরম পড়ে, তার তুলনায় এবারের উষ্ণতা ছিল তুলনামূলক কম। বর্ষার আগমনের আগে এই সময়টিতে স্বাভাবিকভাবেই গরম বাড়ে, তবে এবারের তাপপ্রবাহটি ব্যাপক বিস্তৃত হওয়ায় তা জনজীবনে ভোগান্তি বাড়িয়েছে। আবহাওয়াবিদ মো. হাফিজুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, এপ্রিল মাসে দেশে কিছু এলাকায় তাপপ্রবাহ থাকলেও তা এত বিস্তৃত ছিল না। বর্তমানে দেশের বেশিরভাগ স্থানে তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে রয়েছে।

আবহাওয়া অফিসের বুলেটিন অনুযায়ী, বর্তমানে রংপুর, দিনাজপুর, নীলফামারি, কুড়িগ্রাম, ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, ফেনী, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, বান্দরবান, বরিশাল ও পটুয়াখালীসহ মোট ৪৫ জেলার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।

তাপমাত্রা যদি ৩৬ থেকে ৩৭.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয় তবে তা মৃদু তাপপ্রবাহ হিসেবে ধরা হয়। ৩৮ থেকে ৩৯.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তা মাঝারি তাপপ্রবাহ এবং ৪০ থেকে ৪১.৯ ডিগ্রি হলে তীব্র তাপপ্রবাহ হিসেবে বিবেচিত হয়। এর চেয়ে বেশি হলে তা অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বলে ধরা হয়।

বুলেটিনে আরও বলা হয়, শুক্রবার সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে এবং রাতের তাপমাত্রাও সামান্য বাড়বে। আকাশ থাকবে আংশিক মেঘলা এবং আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকবে।

ঢাকায় এদিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা চলতি বছরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে গত ২৮ মার্চ রাজধানীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ৩৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকাল ৬টায় ঢাকার বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৭৮ শতাংশ এবং পশ্চিম বা দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে বাতাস বয়ে যাচ্ছিল ঘণ্টায় ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার বেগে।

চুয়াডাঙ্গায় এদিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৯.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অপরদিকে, দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল লালমনিরহাটের ডিমলায়—২২.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, বর্তমানে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল হয়ে পশ্চিমবঙ্গ থেকে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত একটি লঘুচাপের বর্ধিতাংশ বিস্তৃত রয়েছে। এর প্রভাবে আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে কিছু এলাকায় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে, যা তাপপ্রবাহ প্রশমনে সহায়ক হতে পারে।

এ অবস্থায় স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা প্রচণ্ড গরমে যথাসম্ভব রোদ এড়িয়ে চলা, হালকা ও ঢিলেঢালা পোশাক পরিধান, পর্যাপ্ত পানি পান এবং ঘন ঘন বিশ্রাম নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

Header Ad
Header Ad

আ.লীগ নিষিদ্ধে গুরুত্বের সাথে সরকার বিবেচনা করছে: সরকারের বিবৃতি

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সাধারণ জনগণের পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাস ও স্বৈরশাসনের অভিযোগে নিষিদ্ধ করার দাবি উঠেছে। এ দাবি সরকার গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র।

সরকার জানিয়েছে, এ বিষয়ে দেশের অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ইতোমধ্যে যোগাযোগ শুরু হয়েছে এবং আলোচনা শেষে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বিষয়টি নিয়ে জাতিসংঘের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনের উল্লেখও করা হয়েছে, যেখানে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিষয় তুলে ধরা হয়েছে।

এ পর্যন্ত সবাইকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছে সরকার। পাশাপাশি জনদাবির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এরই মধ্যে ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে বলে জানানো হয়।

মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেও জানা গেছে।

 

এছাড়া, ফ্যাসিবাদী সরকারের সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বর্তমানে হত্যা মামলার আসামি আবদুল হামিদের বিদেশ গমনের ঘটনায় জনগণের ক্ষোভের বিষয়টিও সরকার পর্যবেক্ষণ করছে। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানিয়েছে সরকার।

Header Ad
Header Ad

টাঙ্গাইলে নাশকতা মামলায় আ.লীগ নেতা রাজ্জাকসহ ২ জন গ্রেফতার

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নাশকতার অভিযোগে ডেভিল হান্টের অভিযানে টাঙ্গাইলের মধুপুরে নাশকতার মামলায় ভূঞাপুরে আওয়ামী লীগ নেতা মো. আব্দুর রাজ্জাকসহ ২ জনকে গ্রেফতার করেছে ভূঞাপুর থানা পুলিশ।

শুক্রবার (০৯ মে) সকালে ভূঞাপুর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) একেএম রেজাউল করিম এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গ্রেফতারকৃত আব্দুর রাজ্জাক উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। গত বৃহস্পতিবার (৮ মে) রাতে উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের বাগবাড়ী এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

তিনি টাঙ্গাইল-২ (ভূঞাপুর-গোপালপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য খন্দকার আসাদুজ্জামানের ছেলে খন্দকার মশিউজ্জামান রোমেলের অনুসারী ছিলেন।

অপরদিকে, একই মামলায় গত বুধবার রাতে উপজেলার গাবসারা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সস্পাদক আলমগীর নামে আরেক নেতাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তাকে গত বৃহস্পতিবার মধুপর থানায় সোপর্দ করা হয়।

এ বিষয়ে ভূঞাপুর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) একেএম রেজাউল করিম জানান, মধুপুর থানায় নাশকতার মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রাজ্জাক ও আলমগীরকে গ্রেফতারের পর মধুপুর থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে। এ ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

দেশের তীব্র তাপপ্রবাহ নিয়ে যা বলল আবহাওয়া অফিস
আ.লীগ নিষিদ্ধে গুরুত্বের সাথে সরকার বিবেচনা করছে: সরকারের বিবৃতি
টাঙ্গাইলে নাশকতা মামলায় আ.লীগ নেতা রাজ্জাকসহ ২ জন গ্রেফতার
অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত আইপিএল
এবার অপেক্ষা তারেক রহমানের ফেরার, চলছে জোরালো প্রস্তুতি
পদ্মার এক ইলিশের দাম সাড়ে ৮ হাজার টাকা
৫ মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে থানায় নেওয়া হলো আইভীকে
জুমার পর যমুনার সামনে বড় জমায়েতের ডাক হাসনাত আব্দুল্লাহর
প্রথম আমেরিকান পোপ হলেন রবার্ট প্রিভোস্ট
একের পর এক ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল ভারত, সীমান্তজুড়ে ব্ল্যাকআউট
নিষিদ্ধ হচ্ছে স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও যুবলীগ
অবশেষে গ্রেফতার আইভী
ভারতের সঙ্গে উত্তেজনার জেরে পিএসএলের বিদেশি ক্রিকেটারদের দেশত্যাগ শুরু
সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার মেয়াদ বাড়ল দুই মাস
মাহফুজ-আসিফ আ’লীগ নিষিদ্ধ চায়, কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে কারা: হাসনাত
জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সিইও পদ ছাড়লেন স্নিগ্ধ
আবদুল হামিদের দেশত্যাগ, ৩ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা
টাঙ্গাইলে ট্রাক-পিকআপের সংঘর্ষে ৩ জন নিহত
ভারতীয় অর্ধশত সৈন্যকে হত্যার দাবি পাকিস্তানের
নওগাঁর পতিসরে বিশ্বকবির কাছারি বাড়িতে জন্মবার্ষিকী ঘিরে উৎসবের আমেজ