শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৪০

নেই দেশের নাগরিক

 

“চল, এবার বেরোনো যাক।“ খাড়া হয়ে দাঁড়াল আতিফ।
“থাম, কটা গয়নাগাটি পরে নিই।“ সাদ্দামের ঠোঁটে চিলতে হাসি।
“গয়নাগাটি!” ঘাড় ঘোরায় আতিফ। চোখ থেকে বেরিয়ে আসছে বিস্ময়ের চাহনি।
“হ্যাঁ, গয়না। গয়না ছাড়া তো আমরা এক কদমও চলতে পারি না। ওগুলোই যে আমাদের রক্ষাকবজ।“
“ওহ, এবার ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছি।“ কিছু একটা আন্দাজ করে বিস্ময়ের ঠোঁট ঢাকা পড়ল রসিকতার হাসিতে।
“তুই বুঝতে পারবি না তাই কখনো হয়? তুই হচ্ছিস বুদ্ধিপাকা মাল। এই বয়সেই তো সব কিছুর তল ঘেঁটে রেখেছিস। তোর মতো জিনিয়াসের কাছে আধখানা ইঙ্গিতই যথেষ্ট।“ দেড় বিগ লম্বা দামাস্ক ভুজালিটা কোমরের গোপন খোলে পুরতে পুরতে বলল সাদ্দাম।
ডানদিকের কোমরে ঢিলে প্যান্টটার ভেতরে সেটে নিল এস আই জি প্রো সেমি অটোমেটিক পিস্তল। কোমরে বেঁধে নিল কার্তুজের বেল্ট। তাতে কয়েক ম্যাগাজিন গুলি বিছের মতো সার বেঁধে আটকানো আছে। বেল্টটাকে বেঁধে নিয়ে সাদ্দাম আতিফকে বলল, “তোর গয়নাপাতি আছে তো?”
“হু।“ থুতনি নিচে করল আতিফ। তার ব্যাগে যে অত্যাধুনিক হেকলার অ্যান্ড স্কচ ভিপি ৭০ পিস্তল আছে, সেটা আর হাট করে সাদ্দামকে দেখাল না।
“সে তো থাকতেই হবে। আমরা তো আর এখন রক্ত-মাংসের মাটির মানুষ নই, আমরা এখন অস্ত্রমানুষ।“ মশকরা করল সাদ্দাম।
“সেভাবে আর অস্ত্রমানুষ কই হতে পারলাম! এখনো তো একটা পাখি মরলে মনটা ধক করে ওঠে। বাড়ির লোকের জন্যে ভেতর হুহু করে কাঁদে। আমরা মনে হয় মানুষ কখনোই পুরোপুরি পাষাণ হতে পারে না। সে হৃদয় যতই আগুনে পোড়ানো হোক, লোহা ঠুকে চিপটানো হোক, দোয়া-মন্ত্র পড়ানো হোক, ভেঙে দুমড়ে মুচড়ে নতুন করে গড়া হোক, কারও বাপ, কারও ব্যাটা, কারও ভাই, কারও স্বামী একটু হলেও ভেতরে থেকে যায়।“
“সে হৃদয়কে তো কবেই কবর দিয়ে দিয়েছি। এখন যেটা আছে সেটা হল একটা খোল। অস্ত্রের যেমন খোল হয়, ঠিক তেমনই আমাদের এই শরীরটা এখন একটা ‘ধারণা’ পুরে রাখা খোল। সে ‘ধারণা’ হলো জেহাদ। সেখানে কোনো বাপ, কোনো ব্যাটা, কোনো স্বামী নেই। যেটা আছে সেটা হলো, একজন মুজাহিদ। খোলের ভেতর পুরে নিয়ে বেড়ানো একজন শহীদ। মাযহাবের জন্যে উৎসর্গ করা একটা জীবন। এ জীবনের বাহ্যিক রঙ সাদা। ফ্যাকাসে। বে-রঙিন। আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতো ঢালও নেই ঢোলও নেই। না আছে কোনো সুর না আছে কোনো বাজনা।“
“মানুষের মনের সবুজ রঙ মরে পুরোপুরি কখনো হলুদ হয় কি? একটু ফ্যাকাসে হতে পারে কিন্তু কখনই পুরোপুরি হলুদ হয় না। প্রতিটি জীবনেরই একটা সুর আছে। কারো ক্ষেত্রে সে সুর বেসুরো হয়, কারো ক্ষেত্রে সে সুর সুরেলা হয়। সুর কিন্তু সবারই বাজে। সে বাজনা কারো ইহলোকের জন্যে বাজে, কারো পরলোকের জন্যে বাজে।“

“চল, আর অত সুর ভেজে লাভ নেই। বেরিয়ে পড়ি।“ লম্বা টর্চটা হাতে নিয়ে বেরোনোর জন্যে উদ্যত হয় সাদ্দাম। ব্যাগ কাঁধে তোলে আতিফ। দুজন বন্ধু ছাউনি ঘরের বাইরে বেরিয়ে এসে আলের উপরে দাঁড়ায়। রাত, ভোর ছোঁব ছোঁব করছে। ঝড়ের তাণ্ডবে মাটিতে শুইয়ে পড়া ধানের শীষ থেকে উঠে আসছে থোক থোক অন্ধকার। ছেঁড়া পাতার ফাঁক দিয়ে উঁকি মারছে কোনো রকমে হাঁটু গুঁজে টিকে থাকা জীবন। সে জীবনের ভয়ার্ত চোখ কুঁকড়ে আছে ধানের উপড়ানো শিকড়ে। তবুও থোড়ের ডগায় ডগায় জীবন জয়ের উচ্ছ্বাস। নুইয়ে পড়া শীষে নতুনকে আহ্বানের ডাক। মাথার উপরের আকাশ ঝাঁট দিয়ে পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে। কে বলবে, কিছুক্ষণ আগে এই আকাশেই অসুরের মতো ধেয়ে এসেছিল হাঁড়িকালো মেঘ! শিকড় উপড়ানো ঝড়! বাতাস তখন নিরাকার থেকে সকার হয়ে উঠেছিল! ভেজা আলে পা রাখল দুজন। চুলের সিঁথির মতো সরু আলপথ। দুদিকে ধানি জমি। পা রাখতেই ভুষভুষ করে পা ঢুকে গেল আতিফের, “এইযযা!” জিভ বের করল আতিফ।
“সাবধানে! মাটি কাদা হয়ে গেছে!” পেছনে ঘাড় ঘুরিয়ে বলল সাদ্দাম। টর্চটা ছোট করে মারল। আতিফের ডান পায়ের কালো শু কাদায় ঢুকে গেছে। ভ্যাড়ভেড়ে কাদা। কাদা-জল-ঘাস আর ধান গাছের ঝরা পাতা ঘেঁটে খিচুড়ি পেকে গেছে। টর্চের সাদা আলোয় চিকচিক করছে।
‘এ তো যাচ্ছে তাই কাদা রে! হেঁটে যাওয়াই তো মুশকিল!” মাজা কুঁকড়ে শু কাদা থেকে টেনে তুলতে তুলতে বলল আতিফ।
“যাকে বলে ভ্যাড়ভেড়ে কাদা। ওই জন্যেই তো এদিকে এত ধান চাষ হয়। দেখছিস ন্যা, নদীর কূল জুড়ে শুধুই ধান আর ধান। যত কাদা তত ফসল ভালো।“
“ওই জন্যেই তো বলে, মনকে কাদা কর, হৃদয় অনেক বড় হবে।“
“আমাদের ওসব কথা শুনে আর কী হবে! আমাদের তো কাদা হলে চলবে না। আমাদের পাষাণ হতে হয়েছে। রুঢ় হতে হয়েছে। এই হৃদয়ে কোনো গাছ জন্মাবে না। এই হৃদয়ে জন্ম নেবে আগুন। সবকিছু পুড়িয়ে ছারখার করে দেওয়া আগুন।“ কাদায় পুঁতে যাওয়া পা-টা তুলে টিপে টিপে হাঁটতে লাগল আতিফ। সামনে চেপে চেপে হাঁটছে সাদ্দাম। ধান গাছের ভেজা শীষ আর পাতা ডালপালা গায়ে ঠেকছে। ভিজে যাচ্ছে পরনের স্যুট। আতিফ বলল, “থাম, প্যান্টটা একটুখানি গুটিয়ে নিই।“
“হ্যাঁ, ঠিকই বলেছিস। আমিও গুটিয়ে নিই। তাহলে ভিজবে না।“ সাদ্দামও কুঁজো হয়ে ঝুঁকে প্যান্টের পায়ের ফোল্ড গুটোতে লাগল। আতিফের কান সবুজ ধান হাওয়াতে ঝুঁকে এসে ছুঁল। যেন কানে কানে বলল, এই দেখো, ঝড়ের পরেও আমি দাঁড়িয়ে আছি। এভাবেই ঝড়ঝঞ্ঝা সহ্য করে টিকে থাকতে হয়। আমার শিকড়ের আটআনা উপড়ে গেছে। ভেঙেছে শাখাপ্রশাখা। কান অবধি ঝরে গেছে রেণু। খড়কুটোর মতো উড়ে গেছে পাতা। তবু আমি থোড় মুখে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি পরবর্তী প্রজন্মের জন্যে। আমার পরবর্তী প্রজন্মরা যে এই মাটিতেই ফসল হয়ে উঠবে।
“ধানের পানিতে গায়ের জামা ভিজে গেল যে!” জামার কলার ঝাড়া দিল আতিফ।
“ধানগাছগুলো যে ভিজে জুবুথুবু। দেখছিস না, পাতার ডগা দিয়ে এখনো টসটস করে পানি ঝরছে?”

প্যান্টের ফোল্ট গুটিয়ে পাদুটো একবার করে ঝাড়া দিল সাদ্দাম। তুলোর মতো নরম তুলতুলে আলপথ। ভুষ ভুষ করে পা বসে যাচ্ছে। ডালপালা ছড়ানো দুর্বা ঘাসগুলো বৃষ্টিতে ভিজে ফুরফুর করছে। কিছু কিছু ঘাস কাদায় লেপ্টে জুবুথুবু। একটা লম্বাফালি ধানি জমির তিন আলের মাথায় ‘ক’ ‘ক’ শব্দ ভেসে এল। ঘ্যাঁচ করে দাঁড়িয়ে গেল সাদ্দাম। পেছন থেকে ঠ্যালা মারা কণ্ঠে আতিফ বলল, “কী হলো? অমন করে থামলি কেন?”
“সাপ!”
“সাপ! ওরে বাপ রে!” তিড়িং করে আলের নিচে ধানের জমিতে লাফ মারল আতিফ।
“অত ভয় পাওয়ার কিছু নাই। মনে হয় সাপে ব্যাঙ ধরেছে।“
“ওসব কথা পরে শুনছি। তুই আগে টর্চটা ঝেরে মার।“ আতিফের চোখে আতঙ্কের ছাপ। সাপে তার দারুণ ভয়। সাপাতঙ্ক তার ছোট বেলা থেকেই। ‘সাপ’ বললেই সে এক লাফে পগারপার। এত কিছুর ঘষামাজা করলেও, এত্ত জেহাদি কালচার করলেও, কিছু জিনিসের প্রতি ভয় তার কাটেনি। তার মধ্যে একটি এই ‘সাপ’। সাদ্দাম তার হাতের আরব থেকে আনা আধহাত লম্বা কালো রঙের টর্চটা ঝেরে জ্বালিয়ে হেস মারল, “আত্মঘাতী মুজাহিদ হয়েও তোর সাপে এত ভয়!”
“যখন গায়ে সেটে থাকা বোতামে আঙুল টিপে নিজেকে উড়িয়ে দেব, তখন তো আর আমি একা একা মরব না? আমার সাথে সাথে আরও শ-খানেক দুশমন মরবে। শত্রুপক্ষের লোক মরবে। আমার মৃত্যুটা তখন স্বার্থক হবে। আমি মরেও শান্তি পাব। আল্লাহকে বলতে পারব, আমি শ-খানেক বিধর্মীকে মেরে মরেছি। আমার শাহাদাত বরণ বিফলে যাবে না। আল্লাহর খাতায় আমি হব একজন ইমানদার শহীদ। আর সাপের কামড়ে মারা গেলে তো, এসবের কিছুই হবে না! বনবাদাড়ে ইঁদুর ব্যাঙের মতো মরে পড়ে থাকব। ও মরার কোনো মূল্য নেই। অ ঘাসপাতার মতো মরা। আরে আমাদের রুহুটা তো আর হাটের পুকড়ে বেগুন নয়, যে ‘ঘ্যাঁচ’ করে কাটলাম ‘ফ্যাচ’ করে ফেলে দিলাম? আমাদের রুহুর উপর একটা রাষ্ট্রের জন্ম নির্ভর করছে, একটা জাতির দুনিয়ায় টিকে থাকাটা নির্ভর করছে। এমন একটা রুহুকে তো আর হেলাফেলাই সাপের মুখে তুলে দিতে পারি না?”

“আরে থাম থাম, আর অত ‘রুহু রচনা’ ফলাতে হবে না। আমার ভুল হয়ে গেছে, তোকে অমন কথা বলা। বাপ রে বাপ! তুই শালা পারিসও বটে।“ নাক কান ধরে মাথা ঝুঁকায় সাদ্দাম। টর্চটা ফেড়ে মারে। টর্চের আলোতে আলের ভেজা ঘাস ফোকলা হেসে ওঠে। সাপে ধরা ব্যাঙটার ‘ক’ ‘ক’ গোঙানি শব্দটা ধীরে ধীরে মরে আসে। আতিফ সাদ্দামের কায়দা দেখে, ফিক করে হাসে। অন্ধকার নরম আলে পা টিপে টিপে রাস্তার দিকে এগোতে থাকে। বেশ কিছুক্ষণ দুজনে আর কথা বলে না। ধানের শীষ ডিঙিয়ে ‘থপ’ ‘থপ’ করে হাঁটতে থাকে। সামনে সাদ্দাম। পেছনে পেছনে অন্ধকার হুটরানো আতিফ। বিঘে দশেক ধানি জমির পর তারা রাস্তায় উঠল। লালমাটির সরু রাস্তা। এবড়োথেবড়ো। খানাখন্দে ভর্তি। মোড়াম রাস্তাটায় উঠেই আতিফ হাফ ছেড়ে বলল, “বাঁচলাম!”
“হ্যাঁ, আলগুলো যাচ্ছেতাই ভুষভুষে হয়ে গেছে! বৃষ্টির ছাট সহ্য করতে পারেনি। এক হড়কা মেঘেই ভেতরের জমাট ছেড়ে গেছে!” পরনের শার্টটা হাত দিয়ে ঝাড়তে ঝাড়তে বলল সাদ্দাম। গায়ের জামাটায় ধানের শীষের সাদা রেণু তুলোর মতো লেগে গেছে।
“এই রেণুই একদিন ধান হত। সে ধান সেদ্ধ করে হত চাল। আর সে চাল ফুটিয়ে কত মানুষে খেত ভাত। আহাঃ, সেদ্ধ ভাতের টাটকা গন্ধ! হাঁড়ির ঢাকনা উপচে যখন সে গন্ধ নাকে এসে লাগত, আমি ফুলের মতো চড়বড় করে ফুটে উঠতাম। ছুটে যেতাম আখারপাড়ে। মা বলত, কী রে, আখারপাড়ে কেন? আমি বলতাম, সেদ্ধভাতের গন্ধ শুঁকতে। মা, মিচকি হেসে বলত, ব্যাটার আমার মজা দেখ, বলে কি না, সেদ্ধভাতের গন্ধ শুঁকবে! একটুখানি দাঁড়া, এক্ষুনি ভাত পাসিয়ে ফ্যানে ভাতে মাখিয়ে দিচ্ছি। গন্ধ শুধু নাকে নিবি ক্যানে, পেটেও নিবি।“
“তুই কবি হলি না কেন? তোর মধ্যে কিন্তু কবিত্বভাব আছে।“
“অত ঠাট্টা করিস ন্যা, সাদ্দাম। কথাটা মনে পড়ে গেল, তাই বললাম।“
“ঠাট্টা করব কেন? একদম মনের কথায় বলছি। তোকে দেখার পর থেকেই এরকম মনে হয়েছে।“
“ধুর, ছাড়! কবি! কবিতা! ওসব করে কি আর রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান হবে?”
“সে হোক না হোক, তোর কবিতা ‘স্বাধীন রোহিঙ্গা দেশ’এর জাতীয় সংগীত তো হতে পারত।“
“তোকে না, আচ্ছা ক্যালা ক্যালাব।“ বলেই আতিফ সাদ্দামকে মশকরার ঠেলা মারতে উদ্যত হলে, সাদ্দাম ‘ফুচ’ করে গা কাত করে ছুটে দূরে পালাল। আতিফও দুধাপ দৌড়ে তাড়া দিল। সাদ্দাম ‘হিহি’ করে হাসতে হাসতে দৌড়ে গিয়ে একটু দূরে থামল। খিকখিক করে মুখে হাসির ফোয়ারা মাখিয়ে বলতে লাগল, “তোকে রাগাতে না আমার হেব্বি লাগে।“
“এখন ঠাট্টা-মশকরা করার সময় নয়, সাদ্দাম। সামনে আমার বড় বিপদ!” মুখ গম্ভীর হয়ে যায় আতিফের। সাদ্দামের হাসি হাসি মুখটাও মুহূর্তে দুশ্চিন্তার কালো ছায়ায় ঢেকে যায়। হাস্যোজ্জ্বল চোখে আচমকা নেমে আসে কালো মেঘের অন্ধকার। আর কিচ্ছু বলে না। মনমরা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। মনের জানালায় ফিরিক করে বসা প্রজাপতিটা ফুড়ুৎ করে উড়ে যায়। খোলা জানালাটা মিনমিন করে বলে, আনন্দ-আহ্লাদ কত ঠুনকো! একটা দমকা বাতাসের মতোও স্থায়ী হয় না! শুধু দরজা ঠেলেই পালিয়ে যায়! এক বেলাও আসন পেতে বসে না! কঞ্চির গিঁটের মতোও তো একবার গেঁড়ে বসতে পারত? কঞ্চি না হোক, বাঁশের একটা মাচানও তো হতে পারত? দুদণ্ড পিঠ পেড়ে শুয়ে থাকতাম। দুদণ্ড পা ঝুলিয়ে বসে, একটা বিড়ির সুখটান দিতে পারতাম। একবার গড়াগড়ি দিয়ে মাচানে ঠিকরে পড়া চাঁদের আলো মেখে নিতে পারতাম। জীবনকে বলতাম, আর কী চাস? এইই তো ঢের সুখ। মাটির দেহে আর কতটুকুই বা সুখ লাগে! মানুষের যে অত সুখ সহ্য হয় না। মানুষ তো পরের সুখেই সুখী।

চলবে...

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৯

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৮

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৭

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-৩০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৯

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৮

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৭

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৬

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৫

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৪

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২৩

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২২

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২১

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-২০

নেই দেশের নাগরিক: পর্ব-১৯

 

Header Ad

সৌদির যেকোনো ভিসা থাকলেই ওমরাহ পালন করা যাবে

ছবি: সংগৃহীত

পবিত্র ওমরাহ পালনে বিদেশিদের জন্য ভিসা ব্যবস্থাপনা আরও সহজ করেছে সৌদি আরব। এখন থেকে যেকোনো ধরনের ভিসায় সৌদি আরব গেলেই বিদেশিরা ওমরাহ পালনের অনুমতি পাবেন।

সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মধ্যপ্রাচ্য-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজ।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে সৌদির হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় বলেছে, যেকোনো দেশ থেকে এবং যেকোনো ভিসায় সৌদি আরবে আগতরা এখন থেকে স্বাচ্ছন্দ্যে ওমরাহ পালন করতে পারবেন।

মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, ব্যক্তিগত, পারিবারিক, ট্রানজিট, শ্রম ও ই-ভিসাসহ সব ভিসাধারী ব্যক্তিরা এ সুযোগ পাবেন। এছাড়া ওমরাহ পালনের অনুমতি ও এ সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়ের জন্য ‘নুসুক’ অ্যাপ ব্যবহার করতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দেশটির সরকার।

এদিকে মসজিদুল হারাম ও মসজিদে নববিতে হজ ও ওমরাহ পালনকারীদের ইবাদত সহজ করতে ‘ডিজিটাল ব্যাগ’ চালু করেছে সৌদি সরকার।

সৌদি আরবের ধর্ম মন্ত্রণালয় জানায়, এই ব্যাগ প্রোগ্রাম হজ ও ওমরাহযাত্রীদের জীবনমান সহজ করবে। তাদের হজ ও ওমরাহ পালন সহজ করবে। মুসল্লিদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে এর মাধ্যমে। বিশেষ করে কখন তারা কোন বিধান পালন করবে, সে বিষয়ে সতর্ক করা হবে।

নাটোরে বোনের বৌভাতে গিয়ে একে একে তিন ভাইয়ের মৃত্যু

নিহত জাওহার আমিন লাদেন। ছবি: সংগৃহীত

নাটোরের বড়াইগ্রামে মামাতো বোনের বউভাতের অনুষ্ঠানে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে জাওহার আমিন লাদেন (১৮) নামে আরও এক কলেজছাত্র হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মারা গেছেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিনজন প্রাণ হারালেন।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) রাত ১১টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউ এ চিকিৎসাধীন তার মৃত্যু হয়

নিহত জাওহার বড়াইগ্রামের গোপালপুর গ্রামের মাদ্রাসা শিক্ষক মাওলানা রুহুল আমিনের ছেলে।

জানা গেছে, গত ১৫ এপ্রিল মামাতো বোনের বৌভাতের অনুষ্ঠানে যায় তিন ভাই। পরে মোটরসাইকেল নিয়ে বেড়াতে বের হন তারা। পথে বড়াইগ্রাম কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠের সামনে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে ধাক্কা লেগে তিনজনই গুরুতর আহত হয়। পরে তাদের উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মামাতো ভাই আকিব হাসান (১৫) ও খায়রুল বাশার ছাগির (১৭) মারা যায়। বুধবার রাতে সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরেক ভাই জাওহারের মৃত্যু হয়।

বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিউল আজম খান বলেন, গত ১৫ এপ্রিল উপজেলার ধামানিয়াপাড়া গ্রামে মামাতো বোনের বৌভাতের অনুষ্ঠানে গিয়ে তিন মামাতো-ফুফাতো ভাই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এতে তিনজন গুরুতর আহত হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনজনই মারা গেছেন।

জনপ্রতি ১২-১৪ লাখ চুক্তিতে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের প্রশ্নফাঁস, গ্রেপ্তার ৫

গ্রেপ্তার প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের পাঁচ সদস্য। ছবি: সংগৃহীত

প্রাথমিকে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত সংঘবদ্ধ চক্রের পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এরপরই বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। চক্রটি এর আগেও বিভিন্ন সময়ে প্রশ্নপত্র ফাঁস করে কয়েকশ’ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। গ্রেপ্তার পাঁচজনের মধ্যে দুইজন ঢাবি শিক্ষার্থী ও তিনজন পরীক্ষার্থী।

ডিবি জানায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জগন্নাথ হলে বসে এ পরীক্ষার প্রশ্নের সমাধান করতেন তারা। পরীক্ষা শুরুর আগেই পরীক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে দেওয়া হতো উত্তরপত্র।

গ্রেপ্তাররা হলেন- ঢাবি শিক্ষার্থী জ্যোতির্ময় গাইন (২৬) ও সুজন চন্দ্র রায় (২৫) এবং পরীক্ষার্থী মনিষ গাইন (৩৯), পংকজ গাইন (৩০) ও লাভলী মণ্ডল (৩০)।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) নিজ কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

ডিবিপ্রধান বলেন, গত ২৯ মার্চ অনুষ্ঠিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের তৃতীয় ধাপের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রামের ২১ জেলার সাড়ে তিন লাখ পরীক্ষার্থী অংশ নেন। এ পরীক্ষা চলাকালে প্রশ্নের উত্তরপত্র ও ডিভাইসসহ মাদারীপুরে সাতজন ও রাজবাড়ীতে একজন শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়।

ডিএমপি অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। ছবি: সংগৃহীত

এ ঘটনায় দুই জেলায় আলাদাভাবে মামলা করে সংশ্লিষ্টরা। রাজবাড়ীতে আটক হওয়া পরীক্ষার্থী আদালতে নিজের দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।

জবানবন্দিতে তিনি জানান, কীভাবে এবং কখন তার মোবাইলে উত্তরপত্র এসেছে। মাদারীপুরে গ্রেপ্তার হওয়া পরীক্ষার্থীদের বেশিরভাগই জামিনে বের হয়ে যান। ঘটনাটি তদন্তের জন্য মাদারীপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মাসুদ আলমের অনুরোধে ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম দক্ষিণ বিভাগ তদন্তে নামে।

মাঠে নেমে গ্রেপ্তার করা হয় চক্রের সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী জ্যোতির্ময় গাইন ও সুজন চন্দ্রকে। তারা দুজনেই ঢাবির জগন্নাথ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।

তারা গোয়েন্দা পুলিশকে জানান, পরীক্ষার আগেই তারা প্রশ্ন সমাধানের জন্য পেয়েছেন। এ প্রশ্ন সমাধানের দায়িত্ব পেয়েছেন জ্যোতির্ময় গাইনের চাচা অসিম গাইনের মাধ্যমে।

প্রশ্ন প্রতি ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা দেওয়ার আশ্বাসে তাদের দিয়ে প্রশ্ন সমাধান করান অসিম। এ প্রস্তাবে জ্যোতির্ময় ও সুজনসহ সাতজন ঢাবির জগন্নাথ হলের জ্যোতির্ময়গুহ ঠাকুরতা ভবনের ২২৪ রুমে বসে তারা প্রশ্নের সমাধান করে পাঠান। অসিম তার ভাতিজা জ্যোতির্ময় গাইনকে প্রশ্ন সামাধানের দায়িত্ব দিয়েছেন।

গ্রেপ্তার প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের পাঁচ সদস্য। ছবি: সংগৃহীত

অন্যদিকে, তিনি পরীক্ষার দুই থেকে তিন মাস আগেই পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন। বিশেষ করে যাদের চাকরির বয়স শেষের পথে, এমন পরীক্ষার্থীদের টার্গেট করতেন। তাদের পরীক্ষায় পাস করিয়ে দেওয়ার জন্য ১২ থেকে ১৪ লাখ টাকায় চুক্তি করতেন।

পরীক্ষা শুরুর কয়েক মিনিট আগেই প্রশ্নের উত্তরপত্র পরীক্ষার্থীদের কাছে পাঠিয়ে দিতেন অসিম গাইন। তাদের সমাধান করে দেওয়া প্রশ্নের মধ্যে ৭২ থেকে ৭৫টিই মিলেছে।

ডিবি প্রধান আরও বলেন, আমাদের তদন্তে এখন পর্যন্ত যে প্রমাণ পেয়েছি, তাতে এ চক্রের হোতা অসিম গাইন। তার বাড়ি মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলায়। তিনি আগেও বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছেন। তিনি অল্পদিনে কয়েকশ’ কোটি টাকা আয় করেছেন। এ টাকা দিয়ে তার গ্রামে বিলাসবহুল বাড়ি নির্মাণ করেছেন।

এলাকায় রাজনৈতিক প্রভাব থাকা অসিমের মানবপাচার, হুন্ডি ব্যবসা ও ডিশের ব্যবসা রয়েছে। যেখানে তিনি প্রশ্ন ফাঁস করে আয় করা টাকা বিনিয়োগ করেছেন। তিনি বর্তমানে পলাতক রয়েছেন। আমরা তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি। তাকে গ্রেপ্তার করলে কীভাবে প্রশ্নগুলো পান, সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারব।

এ ঘটনায় দুজনকে আমরা রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। যারা প্রশ্নের সমাধান করেছেন, আদালতে তারাও স্বীকার করেছেন। যারা প্রশ্ন পেয়ে পরীক্ষা দিয়েছেন, তারাও স্বীকার করেছেন। প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িতদের বিষয়ে তদন্ত চলছে।

প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের পরীক্ষা বাতিলের অনুরোধ জানানো হবে কি-না, এ প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ হারুন বলেন, আমরা এ মামলার তদন্তে নেমে যা যা পেয়েছি সবকিছুই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব। এরপর তারা সিদ্ধান্ত নেবেন পরীক্ষা বাতিল করবেন না-কি বহাল রাখবেন।

সর্বশেষ সংবাদ

সৌদির যেকোনো ভিসা থাকলেই ওমরাহ পালন করা যাবে
নাটোরে বোনের বৌভাতে গিয়ে একে একে তিন ভাইয়ের মৃত্যু
জনপ্রতি ১২-১৪ লাখ চুক্তিতে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের প্রশ্নফাঁস, গ্রেপ্তার ৫
কুড়িগ্রামে হিট স্ট্রোকে নারীর মৃত্যু
রবিবার খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শনিবারও চলবে ক্লাস
বাংলাদেশের উন্নতি দেখে এখন লজ্জিত হই: পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী
মৌসুমের সর্বোচ্চ ৩৯.২ ডিগ্রি তাপমাত্রায় পুড়ছে নওগাঁ
চেন্নাইয়ের হয়ে খেলা সবসময় স্বপ্ন ছিল: মোস্তাফিজ
বৃষ্টি কামনায় টাঙ্গাইলে ইস্তিস্কার নামাজ আদায়
মোবাইল ইন্টারনেট গতিতে আরও ৬ ধাপ পেছালো বাংলাদেশ
বৃষ্টি কবে হবে, জানাল আবহাওয়া অফিস
এফডিসিতে ইউটিউবার প্রবেশ নিষিদ্ধ চাইলেন অঞ্জনা
অনির্দিষ্টকালের জন্য চুয়েট বন্ধ ঘোষণা, ক্ষোভে বাসে আগুন দিল শিক্ষার্থীরা
থাইল্যান্ডে হিট স্ট্রোকে ৩০ জনের মৃত্যু
বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা
প্রতিটি সংসদীয় এলাকায় ‘এমপিরাজ’ তৈরি হয়েছে: রিজভী
অনুমতি মিললে ঈদের আগেই গরু আমদানি সম্ভব: ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত
আবারও ঢাকাই সিনেমায় কলকাতার পাওলি দাম
ময়মনসিংহে সড়ক দুর্ঘটনায় সাবেক কৃষকলীগ নেতাসহ নিহত ২
গোবিন্দগঞ্জে বৃষ্টির জন্য ইস্তিসকার নামাজ আদায়